Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

রহস্যময়ী মেয়ে


স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা - ২০১৯ এর একটি নির্বাচিত গল্প


All Bengali Stories    39    40    41    42    43    44    45    46    (47)    48   

লেখক: রীমন চক্রবর্তী, আগরতলা

রহস্যময়ী মেয়ে
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা-২০১৯ এর একটি নির্বাচিত গল্প
লেখক: রীমন চক্রবর্তী, আগরতলা।
০৩-০৬-২০১৯ ইং

আগের পর্ব: পর্ব ১

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



◕ রহস্যময়ী মেয়ে

পর্ব ২

৩০ তারিখ বিকেল বেলা অস্মিতার ফোন পান পুলিশ অফিসার। অস্মিতার গলার স্বর অতি ভয়ার্ত মনে হল তার। অস্মিতা উনাকে অতি দ্রুত তার বাড়িতে আসতে বলল। অফিসার যখন অস্মিতার বাড়িতে পৌঁছলেন তখন প্রকৃতি তার দিনের আলো গুটিয়ে ফেলে রাতের অন্ধকার ছড়িয়ে দিয়েছে। বাড়িটি পুরানো আমলের দোতলা বাড়ি। সামনের রাস্তাটি পিচ-ঢালা, দুইপাশে সারিবাঁধা সুপারি গাছ লাগানো। বাড়িটিতে ঢুকতেই সদর দরজায় একটি বিশাল আকারের সিংহের মূর্তি। বাড়িটা কেমন যেন অদ্ভুত, গা ছমছম করা পরিবেশ। অফিসার চারিদিকে তাকিয়ে বাড়িটা দেখে নিলেন আরেকবার। পকেটে হাত দিয়ে দেখলেন রিভলভারটা ঠিকঠাক আছে কি-না। একটি বৃদ্ধের মত লোক এগিয়ে এল হাতে লন্ঠন নিয়ে। লন্ঠনটি উঁচু করে ধরে হলদে দাঁত বের করে বিশ্রী এক হাসি দিয়ে বলল- অস্মিতা দিদিমণি উপরের ঘরে আছেন। আপনাকে উপরে যেতে বলেছেন।

সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলেন অফিসার। দোতালার একটা রুম থেকে আলো দেখা যাচ্ছে, সম্ভবত সেই রুমেই আছে অস্মিতা। অফিসার সে দিকে এগিয়ে গেলেন। কিন্তু যেই তিনি দরজায় নক করতে যাবেন ঠিক তখনই পিছন থেকে শুনতে পেলেন অস্মিতার চাপা কণ্ঠস্বর।

– স্যার ওদিকে নয়, এদিকে আসুন। ঘাড় ঘুরাতেই অফিসার দেখতে পেলেন অস্মিতাকে। অস্মিতা ইশারায় তাকে কথা বলতে নিষেধ করছে এবং তাকে অনুসরণ করতে বলছে। দোতলার বারান্দা দিয়ে ছাদে গিয়ে থামল অস্মিতা। নিঃশব্দে অফিসারও তাকে অনুসরণ করে ছাদে গিয়ে থামলেন।

– কোনও অসুবিধা হয়নি তো স্যার, এই বাড়িতে পৌঁছাতে?

– না, কোনও অসুবিধা হয়নি। কিন্তু আপনার বাবা কোথায়? আর ঐ ঘরটিতে কে আছে?

– কিছুক্ষণের মধ্যেই সব জানতে পারবেন স্যার। আপনি বরং ছাদেই লুকিয়ে থাকুন, আমি আপনাকে সময়মত ডেকে নেব। এখন আর কোন প্রশ্ন নয়।

এই বলে উত্তরের অপেক্ষা না করে দ্রুতবেগে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে গেলো অস্মিতা। ছাদটিতে ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আবহাওয়া শীতল থাকার পরেও রীতিমতো ঘামছিলেন অফিসার। এভাবে অনেকক্ষণ সেই ছাদে থাকার পর, হঠাৎ একটি চিৎকার উনার কানে এসে পৌঁছল। আর অপেক্ষা না করে দ্রুত বেগে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে অন্ধকারে কারোর শরীরের সাথে ধাক্কা খেলেন তিনি। উনাকে অবাক করে অন্ধকারের সেই আগন্তুকটি ক্রমাগত উনাকে নিচে নামতে বাধা দিতে লাগলো। এইদিকে 'বাঁচাও-বাঁচাও' বলে চিৎকার তখনো হয়েই যাচ্ছে। অনেক ধস্তাধস্তির পর সেই আগন্তুককে কাবু করে অফিসার ছুটে গিয়ে সেই আলো জ্বলানো রুমটির বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়ালেন। হ্যাঁ, চিৎকার এই ঘর থেকেই আসছে। অফিসার তার গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে সজোরে বার কয়েক দরজায় লাথি দিতেই দরজাটা বিকট শব্দে খুলে যায়। রুমে ঢুকেই অফিসার গর্জে উঠেন– মিস অস্মিতা, আমি বলছি আপনি থামুন! নতুবা আপনার সকল অপকর্মের, সকল অপরাধের শাস্তি এই মুহূর্তেই পেয়ে যাবেন। উনার রিভলভারটি তাক করা অস্মিতার দিকে।

অস্মিতার হাতের ছুরিটি তখনো তার বাবার গলায় ধরে রাখা। বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকায় অস্মিতা, অস্পষ্ট স্বরে বলে উঠে– অফিসার!

– আপনার বাবাকে এখুনি ছেড়ে দিন আর সারেন্ডার করুন। আপনার সব চালাকি আর নাটক শেষ। কোনোভাবেই আপনি আজ বাঁচতে পারবেন না। আপনার বাবার গলায় ছুরি বসানোর সাথে-সাথেই এই রিভলভারের গুলিতে আপনার মগজ ঝাঁঝরা হয়ে যাবে।

হো-হো করে পৈশাচিক অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে অস্মিতা। বলল– আমি বাঁচতে পারবো না? নাকি আজ এখান থেকে তুই বেঁচে ফিরতে পারবি না। তোদের দুজনকেই আজ আমি বলি দেব। বোকা অফিসার, তুই বড্ড বোকা! আমার হাত থেকে আজ তোদের রক্ষা নেই। এখান থেকে পালানোর পথ বন্ধ। তোরা দুজনই মরবি, কিন্তু আগে তুই।

এই বলে অস্মিতা তার অতি বৃদ্ধ বাবাকে ফেলে অফিসারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। ঠিক সেই সময়েই হুড়মুড় করে কিছু পুলিশ দরজা দিয়ে ঢুকে অস্মিতাকে ধরে ফেলল। অস্মিতা নিজেকে মুক্ত করতে অহেতুক কিছুক্ষণ ব্যর্থ প্রয়াস করল, অবশেষে থেমে গেলো।

অস্মিতাকে দোতলা থেকে নিচে নামিয়ে বিশাল হল-রুমে বসানো হল। অস্মিতার বাবাকেও ধীরে-ধীরে নামিয়ে আনা হল। তখনো রাগে দাঁত কড়মড়িয়ে বিজবিজ করছে অস্মিতা। অফিসার এগিয়ে গেলেন এবং বললেন– আজ এই ভয়ানক রাতের সাথে-সাথেই আপনার সব নাটক শেষ হল অস্মিতা। মানতেই হবে আপনি একজন নিখুঁত অভিনেত্রী। তবে আপনি যখন আমার কাছে অভিযোগ করতে এসেছিলেন তখনই কিন্তু আপনাকে আমার সন্দেহ হয়েছিলো। আপনি চলে আসার পর আপনার মায়ের ফাইলটি ওপেন করি। সেখানে আপনার মায়ের মৃত্যুর পোস্টমর্টেম রিপোর্টে লেখা ছিল, ভদ্রমহিলার মাথায় আঘাত লাগার কারণে মারা গেছেন। কিন্তু ঘটনাটির দিন আপনার বাবা বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি যে ঐ সময় বাইরে ছিলনে তার প্রমাণও সেই ফাইলটিতে আছে। সেই ফাইলটিতে এটাও লেখা আছে যে, ঐ দিন বাড়িতে শুধু আপনিই ছিলেন। আপনার কিছু গোপন অসামাজিক কাজের কথা আপনার মা জানতে পেরে গিয়েছিলেন। তাই আপনি আপনার মাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। ঠিক একই কারণে নিজের বাবাকেও মারতে চাইলেন! আপনি দারুণ অভিনয় করেছেন, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু কিছু ছোট ভুলের জন্য আপনার প্লানটি সফল হল না। আপনার ক্ষুদ্র ভুলটি কি জানেন মিস অস্মিতা? আমাকে ফোন করে একা আসার জন্য অনুরোধ করা । সব থেকে বড় খটকাটা এখানেই লাগল আমার! যেখানে আপনার জীবন সংকটে সেই মূহুর্তেও কেন আপনি আমাকে একা আসতে বললেন? তাহলে অবশ্যই কোন-না কোন রহস্য লুকিয়ে আছে!

অবাক স্বরে অস্মিতার বাবা বললেন - অস্মিতা তো সহজেই আমাকে খুন করতে পারত, তাহলে সে আপনার কাছে গিয়ে কেন অভিযোগ করল? আর কেনই বা আপনাকে আসতে বলল?

হেসে ফেললেন অফিসার। বললেন– কারণ তার উদ্দেশ্য ছিল আপনাকে মারার পর পুলিশ যেন কোনোভাবেই তাকে সন্দেহ না করে। আর যদি পুলিশ জানতে পেরে যায় তাহলে যেন ভাবে, নিজের আত্মরক্ষার জন্য সে তার বাবাকে খুন করেছে। এই-ক্ষেত্রে আইন তাকে অনেকাংশে ছাড় দেবে। আর আমরা যদি দু'জনেই খুন হতাম, তখন আরো ভালোভাবে মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া যেত। কেননা, তখন সবাই ভাবতো আমরা একে-অপরের সাথে লড়াইয়ে খুন হয়েছি। কী বলেন অস্মিতা দেবী, আমার কথাগুলি ঠিক তো?

অস্মিতা তখনো ফ্লোরে বসে রাগে ফুঁসছে আর বিজবিজ করে কী যেন বলে যাচ্ছে।

অফিসার এক ধমক দিয়ে বললেন– এইবার থামুন মিস অস্মিতা। বাকি বকবক জেলে বসে করবেন। ( সমাপ্ত )

আগের পর্ব: পর্ব ১

গোয়েন্দা গল্প ও উপন্যাস:
নয়নবুধী   
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
লুকানো চিঠির রহস্য   


All Bengali Stories    39    40    41    42    43    44    45    46    (47)    48   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717