Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

কান্না ভেজা ডাকবাংলোর রাত


বাংলা রহস্য গল্প


All Bengali Stories    43    44    45    46    47    you are in (48)    49    50    51    52   

লেখক:- শান্তনু দাশ, হাওড়া, কোলকাতা

কান্না ভেজা ডাকবাংলোর রাত
শান্তনু দাশ, হাওড়া, কোলকাতা
১১-০৮-২০১৯ ইং
পর্ব ১০

আগের পর্ব গুলি: পর্ব ১     পর্ব ২     পর্ব ৩     পর্ব ৪     পর্ব ৫     পর্ব ৬     পর্ব ৭     পর্ব ৮     পর্ব ৯    

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



◕ কান্না ভেজা ডাকবাংলোর রাত
পর্ব ১০

এক মুহূর্ত দেরি না করে ত্রিলোকবাবু ছুটে গেলেন, পরে ইন্দ্রদা আর আমি, আর পেছনে সায়ন রায়। প্রায় পাঁচ মিনিট খোঁজাখুঁজির পর বাইরে কাউকে দেখতে না পেয়ে ফিরে এলাম। কাশী তখনও ভয়ে কাঁপছে। অস্ফুট স্বরে সে বলে ফেলল, "একটা বীভৎস মুখ আর লোমশ হাত আমার দিকে আসছিল।"

কাশীকে জেরা করে যে কিছু জানা যাবে তার মত অবস্থায় ও ছিল না। অগত্যা আমরা উঠলাম। যাবার আগে ত্রিলোকবাবুকে বারবার সাবধান করে দিলাম যেন একটু সাবধানে থাকেন। সায়ন রায় ওনার ফোন নাম্বার ত্রিলোকবাবুকে দিলেন আর বললেন কোন অসুবিধে হলে ফোন করতে। ত্রিলোকবাবু ফোন নম্বরটা ডায়রিতে লিখলেন বটে কিন্তু ওনার মুখ দেখে মনে হল উনি অবশ্য ব্যাপারটা seriously নেন নি। ওনার বক্তব্যে যা বুঝলাম, ওনার চাকর কাশী এমনিতেই বড় ভীতু; কি দেখতে কি দেখেছে কে জানে! জিপে ওঠার সময় ঘড়ি দেখলাম সাড়ে সাতটা। গাড়ি চলছে বেশ আস্তে-আস্তে, কারোর মুখে কোনো কথা নেই। তরতর করে ঘটনার চাকা এগিয়ে চলছে। হঠাৎ ইন্সপেক্টরের মোবাইলটা বেজে উঠল।

"হ্যালো ... What? ...আ...আমরা আসছি। তুমি বাড়ি থেকে কোথাও যাবে না। ...আমার নাম্বার পেলে কোথায়?... কাউকে ঘরে ঢুকতে দেবে না। ভয় পাবার কিছু নেই। আমরা আসছি।" ততক্ষণে ইন্সপেক্টর রায় গাড়িতে ব্রেক কষেছেন, "ত্রিলোকবাবু is no more!"

"কি? বলছেন কি?"

"ঠিকই বলছি। গাড়ি back করতে হবে, থানায় একটা ফোন করা দরকার। আরও বেশ কিছু পুলিশ লাগবে dead body নিয়ে যাওয়ার জন্য।"

হাওয়ার গতিতে গাড়ি এসে থামল ত্রিলোকবাবু বাড়ির সামনে। তখনও ব্যাপারটা লোক-জানাজানি বেশি হয় নি। দেখলাম সোফার উপর ঠেস দিয়ে পড়ে রয়েছেন সৌম্যদর্শন ত্রিলোকবাবু, হাতদুটো পেটের ওপর, ঘাড়টা এক দিকে হেলানো। অসহ্য কষ্টে মুখটা বেঁকে- চুরে গেছে। তীব্র যন্ত্রণায় রক্তবর্ণ চোখদুটো যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। মুখটা আধখোলা, দেহে আঘাতের চিহ্ন মাত্র নেই। ইন্দ্রদা মৃতদেহের ডান হাতটা নিখুঁত দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছে। হাতের তালু যেখানে মৃতদেহের পেটের ওপর স্পর্শ করেছে সেখানে ফিকে সাদা গুঁড়ো জাতীয় কিছু পড়ে রয়েছে, খুব সামান্য কিন্তু সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ত্রিলোকবাবু কালো গাউনের মত একটা পোশাক পড়ে রয়েছেন বলে। ইন্দ্রদার দৃষ্টি স্থির। ও এবার কাশীকে ডাকল। কাশী তখনও ভয়ে পাথর। টিউব লাইটের আলোয় এখন মুখটা তার আরও ভয়ংকর দেখাচ্ছে।

"কাশী আমরা যাবার পর ঠিক কি-কি হল? একটা মিথ্যে বললে কিন্তু তোমার এই মিথ্যে ভয় পাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।"ইন্দ্রদার গলার স্বর শক্ত হয়ে গেছে।

"আপনারা চলে যাবার পর আমি বাবুর কাছে যাই রাতে কী রান্না হবে জানবার জন্য। দেখি উনি রুমে পায়চারি করছেন। কিছু একটা নিয়ে ভাবছিলেন। আর বেশি চিন্তা করলেই উনি সিগারেট খান। আমি তখন বিরক্ত না করে চলে আসি। পাঁচ মিনিট পর যখন আবার যাই তখন দেখি বাবুর এই অবস্থা। অনেক ডাকার পর কোনো সাড়া পেলাম না, তখন বাবুর টেবিলে ডায়রিতে আপনার নম্বর লেখা দেখে ফোন করি। এর বেশি আমি কিচ্ছু জানি না, বিশ্বাস করুন।"

"আমরা চলে যাবার পর ওনার সাথে কেউ দেখা করতে আসে নি?"

"না বাবু।"

"সদর দরজা খোলা ছিল?"

"না। আপনারা যাবার পর তা বন্ধ করে দিই।"

"তোমার বাবুর ঘরে ঢোকার আর অন্য কোন রাস্তা আছে কি?"

"না।"

থানার লোকেরা চলে এসেছে। সায়ন রায়ের কথা মতো দুজন কনস্টেবল কাশীকে থানায় নিয়ে গেল আর মৃতদেহ post mortem এর ব্যবস্থা করতে মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হল। কিছুক্ষণ পর আমরা বাসায় ফিরলাম। ইন্সপেক্টর আমাদের পৌঁছে দিয়ে চলে গেলেন। কিন্তু ভজহরিবাবু কোথায়? একটু পরেই দেখি গুটি-গুটি পায়ে আসছেন উনি।

উনি বললেন, "যা hot পড়েছে, ফাঁকা field টায় একটু বসেছিলাম আর কি। মানে যাকে বলে সান্ধ্যভ্রমণ।"

ইন্দ্রদা দেখি ওনাকে পাশ কাটিয়ে ঘরে চলে গেল। ওর মুখ গম্ভীর। তবে ত্রিলোকনাথ মুখুজ্জের জন্য আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। লোকটা বেশ সাহসী। আমি ভজহরিবাবুকে বলেই ফেললাম, "আপনাদের গ্রাম প্রধান মারা গেছেন। মনে হচ্ছে স্বাভাবিক মৃত্যু নয়।"

"বলো কি?"

অদৃশ্য ক্লু
"ঠিকই বলছি ইন্দ্রদা, ঐ লোকটাকে আমার ঠিক সুবিধের মনে হচ্ছে না।"

ছাদে খাওয়ার পরে আমাদের দুজনের কথোপকথন হচ্ছিল। মৃদুমন্দ বাতাস আর একটানা ঝিঁঝিঁর ডাক আসছে নিচের অন্ধকার বনটার মধ্যে থেকে। চারিদিকে ফটফটে চাঁদের আলো রূপালী চাদর অঙ্গে জড়িয়ে দিয়েছে।

"দ্যাখ সন্দেহ আমি একজনকেই করছি সৌম্য, কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাব। আচ্ছা প্রথম থেকে ঘটনাগুলো একটু ভাবতো।"

"প্রথমে ঘন বনের মধ্যে আমাদের গাড়ির চাকা খারাপ হল। তারপর..." "Wait! wait! wait! গাড়ির চাকা আমাদের খারাপ হয়নি, গাড়ির চাকা burst করানো হয়েছে। আমি সে রাতে টর্চ জ্বেলে বনের মধ্যে অনেকগুলো পেরেক পড়ে থাকতে দেখেছিলাম।"

"তার মানে কেউ ইচ্ছে করে আমাদের গতিরোধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু কেন এরকম কেউ করবে?"

"সেটা সময় হলেই জানতে পারবি। যাইহোক তারপর কি হল বল তো?"

"তারপর এক ভালুকের আবির্ভাব। পরে গাড়ির কাছে পেলাম কালো লোম, কিছু দূরে একটা কাটা হাত। তার মানে হয়তো কেউ ভালুকের পোশাক পড়ে ভয় দেখাতে এসেছিল। সেবার মামা-ভাগ্নে পাহাড়ের কথা তোমার মনে নেই? ভালুকের পোশাক পড়া মানুষ, অবাক হবার কিছুই নেই। কিন্তু কাটা হাতটা অদৃশ্য হল কী করে বলোতো?"

"এর থেকে বোঝা যাচ্ছে কারোর একজনের পক্ষে আমাদের চোখে ধাঁধা লাগানো সম্ভব নয়। যাইহোক আমরা এলাম ডাকবাংলোতে। সেখানে শুধু একজনের সাথেই দেখা হল, নাম রামনাথ। সত্যিই যদি সে মারা গিয়ে থাকে তাহলে.."

"আমার মনে হয় ইন্দ্রদা, ও অন্য কেউ ছিল। কেউ কি জানে চাকর রামনাথের চেহারা কেমন ছিল? সব থেকে রহস্যজনক ওই অন্ধকার ঘরের নারী কণ্ঠের ছড়া।"

"সৌম্য, এবার তোর কাছে গুপ্তধনের ছকটার মানে শুনবো।"

"দ্যাখো, সেদিন সকালে যখন বাংলো বাড়িটাতে গিয়েছিলাম তখন আমি ভালো ভাবে লক্ষ্য করি দেয়ালে সাঁটা একটা বন্ধ দেয়াল ঘড়িকে। আমি damn sure, ওটার মধ্যেই আছে hidden treasure, কবিতার লাইনগুলো মনে করো,
'সাত সাগর আর বারো নদী', মানে ঘড়ির কাঁটা দুটোর একটাকে আনতে হবে সাতের ঘরে, ও অন্যটাকে বারোর ঘরে। অর্থাৎ সাতটা বাজলে যেমন দেখতে লাগে।
' লাল কমলের লাল কাঁটা আর নীল কমলের নীল কাঁটা' আসলে ঘড়ির কাঁটা ছাড়া কিছুই নয়। লক্ষ্য করেছি ঘড়ির মিনিটের কাঁটা নীল আর ঘণ্টার কাঁটা লাল। এরকম অবস্থাতে আনলে হয়তো ঘড়িটা দেয়াল থেকে বেরিয়ে আসবে। তবে সবই একটা অনুমান মাত্র।"

"Very good! excellent!"

"তারপর বলি?"

"হ্যাঁ বল।"

"ওই নারী কণ্ঠের অট্টহাসি শোনার পর আমরা অজ্ঞান হয়ে যাই, ঘুম ভেঙ্গে দেখি গাড়িতে রয়েছি।"

"একটা important জিনিস omit করলি।"

"ও হো মাঝখানে অবশ্য রামনাথ ঢুকেছিল।"

"হাতে কী ছিল?"

"হাতে...হাতে...হাতে মোমবাতি।"

"হ্যাঁ, আর তাতে ছিল সুগন্ধি যুক্ত জৈব গ্যাস যা মানুষের never কে senseless করে দেয় প্রায় বারো ঘণ্টার জন্য। অথচ ওটা ক্ষতিকারক নয়। আমরা অজ্ঞান হয়ে যাবার পর আমাদের তুলে নিয়ে গিয়ে, গাড়ির চাকা সারিয়ে, আমাদের গাড়িতে বসিয়ে দেওয়াটা আর কি এমন কঠিন কাজ?"

আমরা বিছানায় আসার পরও আমাদের আলোচনা থামেনি। আমি বেড-সুইচটা অফ করে ইন্দ্রদাকে কথাটা বলেই ফেললাম, "ইন্দ্রদা, ওই যে ভোলাবাবা আছে না, আমি নিশ্চিত ওটা ওর ছদ্মবেশ।"

"You are great সৌম্য। এটা আমার মাথাতেও এসেছে। Good point।"

"সেদিন আমার দুটো জিনিস খটকা লেগেছিল ইন্দ্রদা। প্রথমত উনি বললেন বাইরে বেরোন না, তার মানে শয্যাশায়ী। অথচ ঘরে ঢোকার সময় দেখি এক জোড়া চপ্পল আর তাতে বেশ খানিকটা ধুলো লেগেও রয়েছে। ওটা নিশ্চয় নয়নের নয়? দ্বিতীয়ত, উনি একটা কথা বলেছিলেন, মনে আছে ইন্দ্রদা? আমরা তদন্ত করি ক্লু দেখে, সেখানে ওনার তথ্যের কোনো মূল্য নেই। পরেই তিনি বলেন একটা শব্দ "ইনস্পেক্টর রায়’। উনি কি করে সায়ন রায়কে ইন্সপেক্টর রায় বললেন? আমরা তো কেউই আমাদের পরিচয় দিই নি।"

"Really সৌম্য, তুই আমার ভাবনার আর একটা নতুন দিক খুলে দিয়েছিস। আর একটা কথা শুনলে তুই আরো shocked হবি, ডাকবাংলোর সেই রাতে যে নারী কণ্ঠ শুনেছিলি সেটা ছিল নয়নের।"

"তা কি করে হয়?"

"Of course হয়। আমি নয়নকে যেদিন প্রথম দেখি সেদিনই ওর গলা শুনে অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়েছিলাম। গলার মিলটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।"

তবে কে?
"না আর কোনো কিন্তু নয়। এবার বলুন তো আসল অপরাধী কে?"ইনস্পেক্টর রায় জিজ্ঞেস করলেন।

"কেন এই তো আমার সামনে?" ইন্দ্রদার উত্তর।

"তার মানে?"

"I mean to say, you! মানে আপনি, সায়ন রায়, সবকিছুর কর্মকর্তা..."

"দেখুন ইন্দ্রজিৎবাবু, I can’t tolerate this type of practical joke."

ইন্দ্রদা হেসে বলল, "Sorry Sir, don’t mind. আসলে গোয়েন্দাদের কাউকে harassment করাটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে।"

"আসল কথায় আসুন, who is he?"

"দীপেন গাঙ্গুলি।"

"Are you sure?"

"হ্যাঁ। কিন্তু উনি এখন কোথায় সেটা তো আমরা জানি না। আশা করি উনি যে বাড়ির ঠিকানাটা দিয়েছিলেন সেটা ভুল।"

"তবে?"

"আমাদের খেলতে হবে চাল। ফাঁদ পেতে ধরতে হবে অপরাধীকে। শুনুন তবে আমার প্ল্যান..." আমাদের এত সব কথা থানায় হচ্ছিল। আমরা বাড়ি ফিরে এলাম। আমার সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিল। রহস্যটা এত অ-নাটকীয়ভাবে শেষ হতে পারে না।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:- তামাক সেবন স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। এই Website কোনও রকমের তামাক কিংবা নেশা জাতীয় পদার্থের সেবন সমর্থন করে না।
Next Page


আগের পর্ব গুলি: পর্ব ১     পর্ব ২     পর্ব ৩     পর্ব ৪     পর্ব ৫     পর্ব ৬     পর্ব ৭     পর্ব ৮     পর্ব ৯    

উপন্যাস ও গোয়েন্দা গল্প:
নয়নবুধী   
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
লুকানো চিঠির রহস্য   


All Bengali Stories    43    44    45    46    47    you are in (48)    49    50    51    52   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717