Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

সুন্দর নগরীর কথা


বাংলা রূপকথার গল্প


All Bengali Stories    43    44    45    46    47    48    (49)    50   

লীলা চক্রবর্তী, মেলাঘর, সিপাইজলা, ত্রিপুরা

সুন্দর নগরীর কথা
লীলা চক্রবর্তী, মেলাঘর, সিপাইজলা, ত্রিপুরা
০৭-০৬-২০১৯ ইং

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



◕ সুন্দর নগরীর কথা

পর্ব ১

বহুকাল আগে সুন্দর নগরী নামে এক রাজ্য ছিল। সেই রাজ্যের রাজবাড়ির সামনের দিকে ছিল এক মস্ত বড় ফুলের বাগান। বাগানে তিন রঙের ফুলের গাছ ছিল। বাগানে প্রতিদিন ফুল ফোটাতে আসত তিনজন পরি। লাল পরি লাল ফুল, নীল পরি নীল ফুল আর সাদা পরি ফোটাত সাদা ফুল। সারারাত ফুল ফুটিয়ে ওরা ভোর বেলা ফুল নিয়ে চলে যেত স্বর্গের দেবতার জন্য। সুন্দর নগরী ফুল বাগানটি সাজানো হয়েছিল রাজকুমার হীরেন্দ্রের কথা মত। বাগানের প্রবেশ দ্বারে ছিল লাল ফুলের গাছ, চারপাশ ঘেরা নীল ফুলের গাছ আর বাগানের মাঝখানে সাদা ফুলের গাছ। একদিন রাজকুমার হীরেন্দ্রের ইচ্ছে হল বাগানের গাছগুলির পুনরায় জায়গা অদল বদল করতে। তাই সে শ্যাম নগরীর বাগানের মালীকে ডাকলেন। মালীর নাম মৃত্যুঞ্জয়। তার বড় কৃতিত্ব, তিনি গাছকে টের না পাইয়ে গাছটি স্থানান্তরিত করতে পারেন। রাজকুমারের ইচ্ছায় এবার মালী বাগানের প্রবেশ দ্বারে লাগালেন সাদা ফুলের গাছ, চারপাশে লাল ফুলের গাছ আর মাঝখানে নীল ফুলের গাছ। সেই রাতে ফুল ফোটাতে এসে, লাল পরি, সাদা গাছে লাল ফুল ফোটালেন, ; নীল পরি, লাল গাছে নীল ফুল আর সাদা পরি, নীল গাছে সাদা ফুল ফুটিয়ে দেবতার জন্য ফুল নিয়ে ভোর বেলায় চলে গেলেন।

রাজকুমার সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই বাগানে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন। সেদিন সকালে বাগানে এসে দেখেন, পরিরা সাদা গাছে লাল ফুল, লাল গাছে নীল ফুল আর নীল গাছে সাদা ফুল ফুটিয়ে গেছেন। পরিদের ভুল ফুল ফুটানো দেখে রাজকুমার ভীষণ রেগে গেলেন এবং তৎক্ষণাৎ পঙ্খিরাজ ঘোড়ায় চেপে দেবতাদের স্বর্গ রাজ্য, সুখধামে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সুখধামে থাকেন দেবতাদের রাজা শিবালিক। তিনি একবার রাজকুমার হীরেন্দ্রের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে বর দিয়েছিলেন যে, রাজকুমার হীরেন্দ্র সশরীরে সুখধামে যেতে পারবেন। আর সেই ক্ষমতা বলেই রাজকুমার গেলেন দেবরাজ শিবালিকের নিকট ফুল পরিদের ভুল ফুল ফোটানোর নালিশ জানাতে। দেবরাজ শিবালিক রাজকুমারের কাছে সব কথা শুনে পরিদের শাস্তি দিলেন পাঁচ বছর মর্তে বাস করার। কিন্তু ডানা নিয়ে পরিরা কীভাবে মর্তে থাকবে? তাদের তো মর্তের মানুষদের মতই মানুষের রূপে থাকতে হবে; তাই তিন পরি দেবরাজ শিবালিকের নিকট প্রার্থনা করে বলেন, "হে দেবরাজ, আমাদের ডানা লুপ্ত করে আমাদের ডানা-হীন মানুষ বানিয়ে দিন।"

দেবরাজ তিন পরিকে মায়াকান্তা দেবীর নিকট পাঠালেন। মায়াকান্তা দেবীর অসীম মায়া বলে তিন পরি হলেন অপূর্ব সুন্দরী তিন কন্যা। মর্তে পা রাখতেই তার ভুলে গেলেন তাদের পরি জীবনের কথা। ওরা কোথা থেকে এলেন, কেন এলেন, কিছুই তাদের আর মনে রইল না, শুধু মনে রইল ওরা তিন বোন। লাল পরি বড় বোন, নীল পরি মেজ আর সাদা পরি সবার ছোট বোন।

ওরা মর্তে তো এলেন, কিন্তু থাকবেন কোথায়? সারাদিন এক বনের পথে হাঁটতে-হাঁটতে বড়ই ক্লান্ত, তবু কোনও লোকালয় খুঁজে পাচ্ছেন না। বনের পথে আরও কিছুদূর এগিয়ে যেতেই ওরা দেখতে পেলেন একটি স্রোতস্বিনী নদী। নদীতে জলপান করতে গিয়ে ওরা শুনতে পেলেন এক কণ্ঠস্বর, "কে এলে গো এই পথে? আমায় একটু জল খেতে দেবে?"

তিন বোন নদীর পাশেই দেখতে পেলেন একটি গাছের নীচে দাঁড়ানো একটি ঘোড়া, তার পাসে শুয়ে আছেন রাজ পোশাক পরিহিত এক রাজকুমার।

পরিরা এগিয়ে গেলেন রাজকুমারের কাছে। তাদের দেখে রাজকুমার অবাক হয়ে বললেন, "কে গো তোমরা? আমাকে একটু সাহায্য করবে?"

লাল পরি জিজ্ঞেস করলেন, "কী সাহায্য দরকার? আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করব।"

রাজকুমার তাদের পরিচয় জানতে চাইলেন। লাল পরি বললেন, "আমরা তিন বোন। আমি বড়। আমার নাম হিমাদ্রি, ও আমার মেজ বোন। ওর নাম হৈমবতী। সে আমাদের সবার ছোট বোন। তার নাম হৈমন্তী। শৈশবেই আমরা আমাদের পিতা-মাতাকে হারিয়েছি। আত্মীয়-স্বজন কেউ নেই। যেখানে ঠাই পাই সেখানেই থাকি। যা সংগ্রহ করতে পারি তাই-ই তিন বোন মিলে খাই।"

সাদা পরি রাজকুমারকে জিজ্ঞেস করলেন, "আপনি কোন রাজ্যের রাজকুমার? এখানে আপনার এই অবস্থা কেন?"

রাজকুমার বললেন, "আমি ভৈরব রাজ্যের রাজকুমার। আমার নাম হর্ষদত্ত। সৈন্য-সামন্ত নিয়ে শিকারে এসেছিলাম। একটা হরিণের পিছু ধাওয়া করতে-করতে পথ ভুলে এখানে এসে পৌঁছেছি। হরিণ শিকারে এমন মগ্ন হয়ে গিয়েছিলাম যে, কখন সঙ্গীদের কোথায় ফেলে চলে এসেছি বলতে পারব না। ছুটতে-ছুটতে এতই ক্লান্ত হয়ে গেছি যে আর নড়তে পারছি না। গায়ে এক বিন্দু শক্তি বেঁচে নেই। ওদিকে হরিণটাও পালিয়ে গেছে।"

রাজকুমারের কথা শেষ হতেই অঞ্জলি ভরে নদী থেকে জল নিয়ে এলেন হিমাদ্রি। সেই জল পান করে রাজকুমার বড়ই তৃপ্ত হলেন। হিমাদ্রির সেবায় রাজকুমার ধীরে-ধীরে সুস্থ হলে, তিনি তিন বোনকে নিয়ে গেলেন নিজের রাজপুরীতে। এত সুন্দর তিন কন্যাকে দেখে রাজ্যবাসী খুবই আনন্দিত। রাজা মহা ধুমধামে রাজকুমারের সাথে হিমাদ্রির বিয়ে দিয়ে হিমাদ্রিকে ঘরের বৌ করলেন। তারপর তিনি হৈমবতী ও হৈমন্তীর জন্য স্বয়ংবর সভা করলেন। হৈমবতীর বিয়ে হল অরণ্য রাজ্যের রাজকুমারের সাথে আর হৈমন্তীর বিয়ে হল বিশাল রাজ্যের রাজকুমারের সাথে। ( চলবে)



গোয়েন্দা গল্প ও উপন্যাস:
নয়নবুধী   
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
লুকানো চিঠির রহস্য   


All Bengali Stories    43    44    45    46    47    48    (49)    50   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717