Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

লুকানো চিঠির রহস্য


ত্রিপুরার বাংলা গোয়েন্দা গল্প


All Bengali Stories    30    31    32    33    34    35    (36)     37      

-হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর - ১৩, আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম )

লুকানো চিঠির রহস্য
( ত্রিপুরার বাংলা গোয়েন্দা গল্প )
রাজবংশী সিরিজের চতুর্থ গোয়েন্দা গল্প
- হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর-১৩, আগরতলা
১৪-১১-২০১৮ ইং

সমগ্র পর্বগুলি: সমগ্র পর্বগুলি

◕ লুকানো চিঠির রহস্য
পর্ব ৬

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

ছোট্ট গুলাবী রুমালে চোখের কোনা মুছতে-মুছতে একটি দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন চন্দ্রবালা। ঠোঁটে একটু হাসি নিয়ে ধীরে বললেন, "আমার স্বামী ছিলেন খুবই রোমান্টিক ধরনের। দেখতেও যেমন রোমান্টিক ছিলেন, কথাবার্তায়ও তেমনি রোমান্টিক। প্রচুর মেয়েকে ওর সাথে বেহায়ার মত যেচে কথা বলতে দেখেছি। ওর স্বভাবে এমন রোমান্টিসিজম ছিল যে, কিছুক্ষণ তার সাথে কথা বললে তাকে পছন্দ না করে আর পারা যেত না। স্বাভাবিক ভাবেই প্রচুর মেয়ে তার পিছু-পিছু ঘুর-ঘুর করত, ওর জন্য পাগল ছিল, মনে-মনে ওকে কামনা করত। এ হেন পুরুষটির সাথে যখন আরও কিছু বিশেষ গুন যুক্ত হয়ে যায় তখন প্রেমের খেলাটা কেমন হবে তা আপনি নিজেই বুঝতে পারছেন! আমার স্বামী কিন্তু দুর্দান্ত কবিতা লিখতে পারত, কবিতাগুলি পড়লে শুধু পড়ে যেতেই ইচ্ছে করে। তার লেখা গল্প গুলি ছিল এক কথায় অসাধারণ। কলেজে পড়ার সময় ও সারাদিন একটি গিটার পিঠে নিয়ে ঘুরে বেড়াত। যেখানে খুশি সেখানেই গিটার নিয়ে বসে যেত। প্রথম-প্রথম ভাবতাম ও বুঝি মেয়েদের ইমপ্রেস করার জন্য এ সব করছে। কিন্তু একদিন যখন ওর গিটার শুনলাম, সে দিন মনের মাঝে সত্যিই এক ঝংকার অনুভব করেছিলাম, এ কথা মিথ্যা নয়। তারপর তার ছবি আঁকা, আপনি না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবে না; এটা কী ছাপানো, না-কি হাতে আঁকা ছবি? এত সুন্দর ছবি আঁকত সে। ধরুন, সে যদি এতক্ষণ সময় আপনার সামনে এখানে বসে থাকত তবে চুপটি করে আপনার অজান্তেই পেন্সিল দিয়ে আপনার হুবহু একটি ছবি খাতায় এঁকে ফেলত আপনার সাথে কথা বলতে-বলতে, আপনি টেরই পেতেন না। পরে ছবিটি দেখে আপনি অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই থাকত না। তবে বুঝুন, কেমন দুর্দান্ত ছবি আঁকতে পারত সে। আমার স্বামী বলে আমি বিন্দু মাত্র বাড়িয়ে বলছি না, আমাদের বাড়িতে গেলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। কাজ, নিজের প্রমাণ নিজেই দেয়; অন্যের বলার অপেক্ষা রাখে না। যারা মহান পেইন্টার তারা তো মহান, তবু সাধারণের মধ্যে আমার স্বামীর মত এমন দুর্দান্ত ছবি আঁকিয়ে আমার চোখে দ্বিতীয়টি পড়েনি। তার এই ছবি আঁকাই আমাকে সবচেয়ে বেশী ইমপ্রেস করেছিল। অবশ্য এই ছবি আঁকার গুন তার পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকেই পাওয়া। তার পূর্বপুরুষদের মধ্যেও নাকি অনেক বড়-বড় আঁকিয়ে ছিল। এবার আপনি নিজেই অনুধাবন করতে পারছেন, রূপে-গুণে কেমন ছিল আমার স্বামী! আমাদের বিয়ের পরেও বেশ কিছু মেয়েকে তার কাছে প্রেম নিবেদন করতে দেখেছি। বাহাদুর ওসব কথা কোনও দিনই আমার কাছে লুকিয়ে রাখেনি। আমাদের মধ্যে সত্যিই ভালবাসার এক সুদৃঢ় বন্ধন ছিল। বাহাদুর কখনোই বদ-চরিত্রের মানুষ ছিল না। দুশ্চরিত্রতা কিংবা মেয়েদের নিয়ে আয়েশি করা তার স্বভাবে কোনও কালেই ছিল না। সে ছিল খোলা মনের এক প্রাণবন্ত মানুষ। আমার মনে হয় না, বাহাদুর কোনও দিন কোনও কিছু আমার কাছে লুকিয়েছে। যে মানুষটি তার মনের সকল কথা আমার কাছে অকপটে খুলে বলত, যার মনের সকল দরজা আমার জন্য খোলা ছিল, যার মনে আমার ছিল অবাধ যাতায়াত, সে কেন এই চিঠির কথা আমার কাছে গোপন করল? তাই তো এই চিঠিটি আমাকে খুব ভাবনায় ফেলেছে। কে লিখল এই চিঠি? কেন লিখল? চিঠিটার মানে কী?"

রাজবংশী বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইল। গভীর মনে কী যেন চিন্তা করল। তারপর বলল, "খুনের সময় আপনি কোথায় ছিলেন, বললেন?"

রাজবংশীর এই প্রশ্ন শুনে বেশ অবাক হল সদানন্দ। সে ভাবতে লাগল, "রাজ কেন আবার একই প্রশ্ন করল? চন্দ্রবালা দেবী তো একটু আগেই এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ঐ সময় তিনি স্কুলে ছিলেন। একই কথা রাজ কেন আবার জিজ্ঞেস করছে?" এ কথা ভাবতে-ভাবতে সদানন্দ যেই রাজবংশীর মুখের দিকে তাকাল অমনি সে ঘাবড়ে গেল। রাজবংশীর চোখ যেন কিছু কথা বলছে। যেন এই প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সমাধানের সূত্র। "চন্দ্রবালা দেবী কী তবে কিছু লোকাতে চাইছেন? সত্যি কথা বলছেন তো তিনি?" সন্দেহ দেখা দিল সদানন্দের মনে।

রাজবংশীর প্রশ্নটি চন্দ্রবালার কাছেও একটু বেমানান ঠেকল, কারণ তিনি আগেই এর জবাব দিয়েছিলেন। এক প্রকার অপ্রস্তুত হয়ে একই কথা আবার তিনি বলতে লাগলেন, "ঐ দিন আমি স্কুলেই ছিলাম। তখন তৃতীয় কি চতুর্থ ক্লাস চলছিল। হঠাৎ হেড-মাস্টার মশাই আমাকে জরুরী তলব করলেন। আমি উনার রুমে যেতেই বললেন, উনার কাছে ফোন এসেছে বাহাদুর নাকি খুব অসুস্থ, এখুনি আমাকে বাড়ি যেতে হবে। উনি স্কুলের গাড়ি দিয়েই-"

চন্দ্রবালা দেবীকে কথা শেষ করতে দিল না রাজবংশী। কথার মাঝেই বলে উঠল, "আলমারি ভেঙ্গে খুনিরা কী-কী নিয়ে গেছে?"

কথা থামিয়ে একটু অবাক হয়ে চন্দ্রবালা বলতে লাগলেন, "টাকা-পয়সা তো সব ব্যাঙ্কেই থাকে, তবু ক্যাশ ২৫ হাজার টাকা ছিল, তা নিয়ে গেছে। তবে প্রচুর গয়না ছিল; সব মিলিয়ে ১০ ভরি সোনার হবে। সাথে মোবাইল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা কিছু বাদ রাখেনি। যেটা সামনে পরেছে সেটাই নিয়ে গেছে।"

"এখুনি একবার আপনার বাড়িতে যেতে পারলে ভাল ছিল?"

"আপনি আমার মনের কথাটিই কইলেন মিস্টার রাজবংশী। চলুন, আমার সাথে গাড়ি আছে।"

"কিছু ভাববেন না চন্দ্রবালা দেবী, আমি আর সাধুদা বাইকে আসছি। আপনি চলুন, আমরা আপনার পিছু-পিছু আসছি।"

Next Part

সমগ্র পর্বগুলি: সমগ্র পর্বগুলি

রাজবংশী সিরিজের অন্য গোয়েন্দা গল্প:
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
গোয়েন্দা গল্পের সম্পূর্ণ তালিকা

All Bengali Stories    30    31    32    33    34    35    (36)     37   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717