Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

নয়নবুধী


ত্রিপুরার ইতিহাসের পটভূমিতে রচিত একটি উপন্যাস


All Bengali Stories    44    (45)    46    47    48    49    50    51    52   

হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর-১৩, আগরতলা

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------


নয়নবুধী
( এক পাঁজালীর প্রেমিকা )
পর্ব ১৩
ত্রিপুরার ইতিহাসের পটভূমিতে রচিত একটি উপন্যাস
হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর, আগরতলা
( এই উপন্যাসের সকল স্বত্ব সরকারি রেজিস্ট্রিকৃত ভাবে লেখক দ্বারা সংরক্ষিত )


নয়নবুধী: সমস্ত পর্বগুলি: All Parts

◕ নয়নবুধী
পর্ব ১৩

চম্পকের কথায় ইন্দ্র মুচকি হেসে বলল, "খুব উস্তাদী হচ্ছে। আমাকে নিয়ে খুব মজা করছিস? তুই যা বলছিস তার উল্টোটাও তো হতে পারে। ধর, নয়না একদিন ফিরে এসে যদি তোকেই বিয়ে করতে চায়, তখন?"

চম্পক আবার হা-হা করে হেসে উঠল। বলল, "ভাই, মনে হয় তুই আমার কথাগুলি ভাল ভাবে শুনিস নি, বুঝিস নি। আমার ভিতরের তাপ মনে হয় এখনো তোর কাছে গিয়ে পৌঁছায়নি। আমি বলেছিলাম, আমার জীবনটা আমার দেশের জন্য, আমার ত্রিপুরার জন্য। এখানে বিয়ের কোনও স্থান নেই। ঐ বুড়ো জ্যোতিষও এ কথাই বলেছেন। তাই আমার বিয়ে-থা না করাই ভাল। এ কারণেই বলছি, নয়না যদি কোনোদিন ফিরেই আসে আর আমাকে বিয়ে করতে চায়, তবে আমি অতি সম্মানের সাথে তাকে ফিরিয়ে দেব। আমি তাকে বউ করে নয়, বোন হিসাবে চিরদিন মনে রাখতে চাই, চিরদিন।"

"আর আমি যদি নয়নাকে বিয়ে করি তখন?"

"তোদের দু'জনকে আজীবন রক্ষা করার দায়িত্ব আমার। কিন্তু, তুই নয়নাকে বিয়ে করবি কী? সে তো রাজধানীর সরকারী কর্মচারীর বউ। এক সরকারী কর্মচারী তার শ্বশুর। সে ওখানে তার শ্বশুর-শাশুড়ি আর জামাই নিয়ে অতি সুখে ঘর করছে। কোন দুখে সে তোকে বিয়ে করবে? কোন দুখে সে এত সুখের সংসার ফেলে তোর সাথে এই বনে-জঙ্গলে ক্ষুধায়-তৃষ্ণায় থাকতে চাইবে? তাছাড়া তুই-ই বা কেন ওর এই সুখের সংসারটিকে নষ্ট করতে চাইবি?"

"না-না, আমি তার সুখের সংসার কখনোই নষ্ট করতে চাই না। সে সেখানে সুখে থাকুক, মহাসুখে থাকুক তাই-ই আমি চাই। তার সকল দুঃখ যেন আমার ভাগে চলে আসে, আর আমার সকল সুখ যেন তার ভাগে চলে যায়। আমি কোনও দিনই তার সুখের সংসারে আগুন লাগাতে চাইব না। বরং তার সুখের জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দেব। তবে তুই একটা কথা ঠিকই বলেছিস, সে এখন অন্যের ঘরের বৌ, তার সম্পর্কে এমন কথা ভাবা আমার অন্যায়। এটা মোটেই ঠিক নয়। কেউ এ কথা জানতে পারলে আমাকে কী বলবে? কী ভাববে? ছিঃ-ছিঃ।"

ঠিক এমন সময় আকাশে অসংখ্য শকুন উড়তে দেখা গেল। বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে সেগুলি বৃত্তাকারে উড়ে-উড়ে সুদূর আকাশে চক্কর কাটতে লাগল। সেদিকে তাকিয়ে চম্পক বলল, "এ কী হচ্ছে রে ইন্দ্র? এ যে এক অশুভ সংকেত দিচ্ছে। আমার মন তো কেমন-কেমন করছে। সেদিনও আকাশে অনেক শকুন উড়ছিল। বাবা বলছিলেন, আকাশে এত শকুন উড়া ভাল নয়, কোনও অশুভ সংবাদ বয়ে আনে। নিশ্চয়ই কোনও অঘটন ঘটতে চলেছে। আমাদের এখুনি সাবধান হতে হবে।"

চম্পকের কথা শুনে ইন্দ্র একটু বাঁকা হাসল। হেলা ভরে বলল, "ধুর! তুই কী যে বলিস? তুই হবি দেশের ভাবি সেনাপতি, আর তুই-ই কি-না এত কুসংস্কার মানিস? তোকে কী এত কুসংস্কার মানায়? তোর অনুমান ভুলও তো হতে পারে। বিপদ আসলে আসবে, তখন দেখা যাবে। কে আর তাকে আটকাবে? মরতে যদি হয়ই, মরবো। মরণকে আমি ভয় পাই না।"

ইন্দ্রের কথা শুনে চম্পক দৃঢ় কণ্ঠে বলল, "না ইন্দ্র, মরে যাওয়াই সমস্যার সমাধান নয়। মরে গেলেই যদি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়, তবে মরতে আমিও ভয় পাই না। কিন্তু মরে গিয়ে যুদ্ধ জেতা যায় না। মরেই যদি গেলাম তাহলে যুদ্ধ জিতবে কে? আসল কথা হল, বেঁচে থেকে জয়ী হওয়া। জয়ী হয়েই আমাদের বাঁচতে হবে। যুদ্ধও করতে হবে, জয়ীও হতে হবে আমার বেঁচেও থাকতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, নিজেও বাঁচব, অপরকেও বাঁচাব। আমি জানি, কাপুরুষ তুইও না, আমিও না। তবে বুদ্ধি, শক্তি আর সময় থাকতে আমরা হারব কেন? মরবো কেন? এই যে তুই কুসংস্কার আর অনুমানের কথা বললি, কুসংস্কার আমিও মানি না; ঘৃণা করি। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতি বিচার করে, সংকেত বুঝে কোনও কিছুর অনুমান করা মোটেই দোষের নয়। কারণ প্রত্যেক ঘটনাই কোনও না-কোনও কারণে হয়। আমার অনুমান ভুলও হতে পারে। ভুল হলেই তো ভাল, কিন্তু যদি ঠিক হয়, তখন? তাই সময় থাকতে বিপদকে চিনে তার মোকাবেলা করার পরিকল্পনা করাই তো বুদ্ধিমানের কাজ। সেই মত প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চয় করে রাখাই তো উচিত। এটাই তো দূরদর্শিতা। এই তুই যে বললি, 'ঘটলে দেখা যাবে'; আসলে এমনটা নয়, বরং 'ঘটলে ঘটিয়ে দেব।' তাই বলছি, আর দেরী করা ঠিক হবে না। চল, এখুনি গিয়ে সর্দারকে সব কিছু জানাই, কিছু একটা ব্যবস্থা করি।"

চম্পকের যুক্তি-তর্ক ইন্দ্র আর ফেলে দিতে পারল না। সেও উঠে গেল, চম্পকের পিছু-পিছু হাটতে লাগল।

সর্দার চম্পকের কথা শুনে সব কিছু খুব অবহেলায় হেসেই উড়িয়ে দিল। বিপদ আসছে, এটা শুধু অনুমানের অনুমান। কিন্তু বিপদটা কী, কোথা থেকে আসছে, তার জবাব কিছুই দিতে পারল না চম্পক আর ইন্দ্র। সর্দার চম্পকের কোনও কথাই আর শুনল না। ফিরিয়ে দিল দু'জনকেই। কিন্তু চম্পকও বসে থাকার পাত্র নয়। সে ইন্দ্রকে সাথে নিয়ে নিজেরাই প্রস্তুত হতে লাগল। দু'জনে মিলে চার-পাঁচটি টাক্কাল খুব ভাল করে ধার দিল। ক্রমে রাত ঘনিয়ে আসতে লাগল। দুই বন্ধু ইন্দ্রের টং ঘরে পাশাপাশি ঘুমানোর ব্যবস্থা করল। টাক্কালগুলি শিয়রে, হাতের কাছেই রাখল। কিন্তু চোখে খুব আসছে না ওদের। রাতের পাখীরাও যেন আজ নীরব। অন্ধকারও যেন ভয়ে-ভয়ে পা ফেলে হেঁটে চলছে। তার সেই অশুভ পদধ্বনি চম্পক যেন ঠিক শুনতে পারছে। কিন্তু চিনতে পারছে না ভয়ঙ্কর সেই দানবের রূপ আর চেহারা।

তুলারাম পাড়ার নিয়মিত যে দু'জন পাহারাদার আছে ওরা একটি টং ঘরের সামনে বসে মদ গিলছে। তাদের অসংলগ্ন, অস্পষ্ট কথাবার্তা হালকা-হালকা কানে আসছে। রাত গভীর থেকে গভীরতর হতে লাগল। ঠিক মাঝরাতে একসময় ইন্দ্র ঘুমিয়ে পড়ল।
Next Part

গোয়েন্দা গল্প:
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
লুকানো চিঠির রহস্য   
কান্না ভেজা ডাকবাংলোর রাত    


All Bengali Stories    44    (45)    46    47    48    49    50    51    52   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717