Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

নয়নবুধী


ত্রিপুরার ইতিহাসের পটভূমিতে একটি উপন্যাস


All Bengali Stories    44    (45)    46    47    48    49    50    51    52   

হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর-১৩, আগরতলা

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------


নয়নবুধী
( এক পাঁজালীর প্রেমিকা )
পর্ব ৬
ত্রিপুরার ইতিহাসের পটভূমিতে রচিত একটি উপন্যাস
লেখক - হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর, আগরতলা
( এই উপন্যাসের সকল স্বত্ব সরকারি রেজিস্ট্রিকৃত ভাবে লেখক দ্বারা সংরক্ষিত )


নয়নবুধী: সমস্ত পর্বগুলি: All Parts

◕ নয়নবুধী
পর্ব ৬

টিলার উপর থেকে দুটি কুকুর প্রচণ্ড ঘেউ-ঘেউ করতে-করতে নীচে নামতে লাগল, নটুকৃষ্ণের ধারে। নিশ্চয়ই কোনও বিপদের গন্ধ পেয়েছে ওরা! আসন্ন বিপদের আভাস পেয়ে তিন বন্ধুর আবেগপূর্ণ এবং অশ্রুময় মন মুহূর্তে উড়ে গিয়ে সর্তকতায় পরিবর্তিত হল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ওরা আশে-পাশের জঙ্গলগুলি লক্ষ্য করতে লাগল, পরিস্থিতিটি বোঝার চেষ্টা করতে লাগল। এই জঙ্গলময় এলাকায় বড়-বড়-বড় আজগর, বাঘ-ভাল্লুক কিংবা বিষধর সাপের কোনও অভাব নেই। কুকুরগুলি কোনও বিপদ দেখেই এত পাগল-পাগল করছে। কোন্ বিপদের সংকেত দিচ্ছে ওরা?

সমগ্র চেতনায় মেরুদণ্ড টান-টান করে বসল তিন বন্ধু, হাতের মুঠা শক্ত হয়ে এল, চোয়াল কঠিন হয়ে এল। ওরা লক্ষ্য করল কুকুরগুলি জঙ্গলের এক কোনার দিকে মুখ করে ক্রমাগত চীৎকার করে যাচ্ছে, অথচ কোনও কিছু সেখানে চোখে পড়ছে না। এমনটা নিশ্চয়ই এক ভয়ের কারণ। একটা চাপা ডর ধরে এল সবার মনে। কারণ, বাঘ কিংবা অজগর এমনি ভাবে নিঃশব্দে উৎ পেতে বসে থেকে শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরকম বহু ঘটনা ঘটেছে তুলারাম পাড়ায়। এখানেও বাঘ বা অজগর বসে নেই তো? বনের সবুজ চাদরে হত্যার বিষ লুকানো নেই তো?

এই পরিস্থিতিতে কী করবে ওরা কিছুই ভেবে পাচ্ছে না। ঠিক এমন সময়, এমন গুরু-গম্ভীর পরিস্থিতিতে হঠাৎ ইন্দ্র অতি দ্রুত তার কোমরে বাঁধা গামছার গোজা খুলে তা থেকে পাতায় মোড়া ছোট্ট একটি গোলাকার বস্তু বের করল। তারপর তা জঙ্গলের সেই কোনার একটি গাছের ঢালের দিকে অকম্পিত হাতে, অব্যর্থ নিশানায় ছুঁড়ে দিল। গোলাকার বস্তুটি উড়ে গিয়ে নির্দিষ্ট নিশানায়, গাছের ঢালটিতে আঘাত করল আর সাথে-সাথেই শত খণ্ডে খণ্ডিত হয়ে ঝরা-তারার মত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল।

সবাই অবাক, সবাই বোঝার চেষ্টা করল, ইন্দ্র এ কী ছুড়ে দিল? জিনিসটা কী? কী হচ্ছে? কিন্তু কেউ কিছু বুঝার আগেই সেই গোলাকার বস্তুটি তার কামাল দেখাতে শুরু করল, তাতে দুর্দান্ত পরিণাম সামনে এল। সেটি ওখানে এমন আলোড়ন সৃষ্টি করল, পরিবেশটাকে এমন চানকে দিল, এমন তাতিয়ে দিল যে, মুহূর্তের মধ্যে কুকুরগুলির সুর পাল্টে গেল। ওগুলি ঘেউ-ঘেউয়ের পরিবর্তে কেউ-কেউ করতে-করতে, লেজ গুটিয়ে উল্টো দিকে টাট্টু ঘোড়ার মত এমন দৌড় মারল যে, চোখের পলকেই হাওয়া! এই ছিল, এই নাই, মন্ত্রের মত উধাও!

ওদিকে জঙ্গলের কোনা থেকে কয়েকটি শিয়াল ঝড়ের মত ঊর্ধ্ব শ্বাসে ছুটে পালাতে লাগল, যেন প্রাণ হাতে পালাচ্ছে। তাদের চোখে উঁচু-নিচু, পাহাড়-জল সব সমান তখন। শিকার করতে এসে বাদ-প্রতিবাদ শেষ, ভালমন্দ হাওয়া, সকল সাড়াশব্দ ছেড়ে এখন দৌড়তে-দৌড়তে প্রাণ বাঁচাতে পারলে বাঁচে। এ কী নিদারুণ বিভ্রাট? প্রাণের উপর এমন চাপ-দণ্ড পড়েছে যে, শ্বাস ফেলার সময় পর্যন্ত নেই। অধমের প্রাণটা বুঝি এই যায়, এই যায়।

খুব জিজ্ঞাসু চোখে নয়নবুধী তাকিয়ে রইল ইন্দ্রের দিকে, চম্পকও। ঘটনাটি কী ঘটল? কী ছুড়ে দিল ইন্দ্র? কুকুর-শিয়ালগুলি কেন এমন ভাবে পালাচ্ছে?

একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে, গা ঢিলা করে, গাল বেঁকিয়ে, ইন্দ্র একটু হেলা ভরে বলল, "হেঁ-হেঁ, বিষ-গোলা, বাঘামল!"

নয়নবুধীর মনে পড়ল, ছেলেবেলার সেই আতঙ্কিত দিনে জঙ্গলের মাঝে মা'য়ের দেখানো আত্মরক্ষার সেই অব্যর্থ উপায় আট-দশটা বছর পরেও ভুলেনি ইন্দ্র, ঠিক মনে রেখেছে। চিতাবাঘের মলের গন্ধ পেলে বাকী জঙ্গলি পশু-পাখীরা ভাবে কাছাকাছি নিশ্চয়ই চিতাবাঘ আছে। চিতাবাঘের ভয়ে তখন ওরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালায়।

আসল কারণটি বুঝতে পেরে, ইন্দ্রের এই বিনা-যুদ্ধে যুদ্ধ-জয় দেখে এবং কুকুর-শিয়ালগুলির এমন বীরের মত পালানো দেখে, কান্না ভুলে 'হা-হা' করে হাসিতে ফেটে পড়ল নয়নবুধী, আর হাসতেই থাকল। তার হাসি আর থামে না। নয়নবুধীকে এমন ভাবে হাসতে দেখে, এবার সত্যি-সত্যিই ছল-ছল চোখে নয়নবুধীর দিকে চেয়ে রইল ইন্দ্র, নয়নবুধীকে প্রাণ ভরে দেখতে লাগল। "এই হাসি দেখার দিন বুঝি প্রায় শেষ! আজকাল কেন এত কষ্ট হচ্ছে নয়নবুধীর জন্য? আগে তো সে কত গভীর ভাবে বন্ধুর মত মেলা-মেশা করত নয়নবুধীর সাথে, এখন কেন এত বাঁধো-বাঁধো লাগে?" ইন্দ্র ড্যাব-ড্যাব চোখে তাকিয়ে রইল নয়নবুধীর দিকে। গাছ-গাছালির ফাঁকে-ফাঁকে সুদূর বনদেবীর গান ভাসতে লাগল মনে,
যে হাসি হাসো তুমি মোর কারণে-
তাহাই ফিরে বিঁধে বুকে, আমারই বাণে।
অপর আকাশের চাঁদ তুমি, অন্যের ঘরের,
তবু এত পূর্ণিমা, কেন এ মনের?
তব সব এই তীরে, তবু সব ঐ তীরের-
চিত্তে মোর বন্যা কেন, নীরব আঁখি নীরের?
বল আজি বাঁধি পরান, কোন সান্ত্বনার বাধনে?
ইন্দ্র আমি ইন্দ্র-চ্যুত তব সিংহাসনে।।

Next Part

গোয়েন্দা গল্প:
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
লুকানো চিঠির রহস্য   
কান্না ভেজা ডাকবাংলোর রাত    


All Bengali Stories    44    (45)    46    47    48    49    50    51    52   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717