Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

রহস্যময়ী মেয়ে


স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা - ২০১৯ এর একটি নির্বাচিত গল্প


All Bengali Stories    39    40    41    42    43    44    45    46    (47)    48   

লেখক: রীমন চক্রবর্তী, আগরতলা

রহস্যময়ী মেয়ে
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা-২০১৯ এর একটি নির্বাচিত গল্প
লেখক: রীমন চক্রবর্তী, আগরতলা।
০২-০৬-২০১৯ ইং

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



◕ রহস্যময়ী মেয়ে

পর্ব ১

অস্মিতা এই মুহূর্তে বসে আছে থানার কর্তব্যরত অফিসারের সামনে। অস্মিতা এসেছে, এক বছর আগের তার মায়ের খুনির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে।
অস্মিতার অভিযোগ শোনার পর অফিসার বললেন– আপনি আরো একবার ভেবে দেখুন। আপনি যা বলছেন তা কি শুধুই সন্দেহ বা অনুমানের ভিত্তিতে?

– না! আমি যা বলছি সেটাই প্রবল সত্যি, বিশ্বাস করুন অফিসার!

– দেখুন মিস অস্মিতা, আপনি শিক্ষিতা মেয়ে। আপনাকে নতুন করে আইন বুঝানোর দরকার পড়বে না। আপনি জানেন, আইন অনুমান বা সন্দেহের উপর চলে না। আইন প্রমাণে কথা বলে।

– তদন্ত করে প্রমাণসহ আসল সত্য বের করাই আপনাদের কাজ স্যার।

অফিসার অস্মিতার উত্তরে কিছুটা বিব্রত হলেও পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন– আচ্ছা মিস অস্মিতা, আপনার কেন মনে হয় খুনটা আপনার বাবাই করেছে? আর আপনার মা মারা গেছেন আজ থেকে প্রায় এক বছর আগে, তখন কেন আপনি অভিযোগ করেননি? এই বলে সামনে রাখা জলের গ্লাসটি অস্মিতার দিকে এগিয়ে দিলেন অফিসার; ইশারায় জল খেতে বললেন।

গ্লাসটি এগিয়ে দিতেই অস্মিতা ঢক-ঢক করে এক নিমিষে গ্লাসের সব জল শেষ করে ফেললো, যেন অনন্তকাল ধরে বড্ড তেষ্টায় ভুগছিল। অফিসারের কৌতূহল চোখ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন অস্মিতা দিকে।

– বলুন মিস অস্মিতা কেন আপনার মনে হয় খুনটা আপনার বাবাই করেছেন?

– কারণ বাবা এবার আমাকেও খুন করবে! ঠাণ্ডা মাথায় এবং প্লান-মাফিক; ঠিক যেমনটা এক বছর আগে আমার মায়ের রহস্যময়ী মৃত্যু হয়েছিলো, সেইভাবে। আপনি জানতে চাইছেন, কেন আমি তখন বলিনি বা আমার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করিনি? বাবার এই নোংরা ষড়যন্ত্রের আভাস আমি পেয়েছি আজ থেকে মাত্র কয়েক দিন আগে। একদিন বাবার নামে একটি চিঠি আসে, তখন বাবা ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন। চিঠিটা ছিল সাধারণ খামের থেকে আলাদা, অদ্ভুত কালো কারুকার্যের ডিজাইন করা। খামটির পিছনে একটি বাজপাখির দুই ডানার চিহ্ন আঁকা। আমি ছোট থেকেই চরম কৌতূহলী। তাই বাবার ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ধীরে ধীরে খুব কৌশলে খামটি খুলে ফেলি এবং খামের মধ্য একটি চিরকুট পাই। অদ্ভুত কালো একটি কাগজের উপর সিঁদুরের মতো লাল কালিতে গোটা-গোটা অক্ষরে লেখা, 'খুব বেশী দেরী হয়ে যাচ্ছে। পরের কাজটি আরো কৌশলে করতে হবে। এবারও কেউ যেন বুঝতে না পারে, অতীতের মতো। কাজটি কিছু দিনের মধ্যেই করতে হবে তোমার নিজ বাড়িতে। দেখো, যেন কোন ভুল না হয়, তাহলে ঘোর সর্বনাশ হয়ে যাবে।' শুধু এইটুকুই লিখা ছিল সেই চিঠিতে। আমি চিঠিটা পড়ে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে যাই এবং ভয়ে চিঠিটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলি। বাবাকে কিছুই জানাই নি চিঠির কথা। পর-পর এমন তিনটি চিঠি আসে। আমি তিনটি চিঠিই আগুনে পুড়িয়ে ফেলি। প্রতিটি চিঠিতেই কাজটি খুব সতর্কের সাথে করতে নির্দেশ ছিল।

– কিন্তু চিঠির সাথে আপনার মায়ের মৃত্যু কিভাবে সম্পর্কিত? প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন অফিসার অস্মিতার দিকে।

– আমাকে পুড়োটা বলতে দিন অফিসার, তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন।

অফিসার তাকে পুনরায় বলার অনুমতি দিলে অস্মিতা আবার চলে যায় ঘটনায়।

– পরপর তিনটি চিঠিই আমি পুড়িয়ে ফেলি। আমার মনে প্রচণ্ড ভয় আর আতঙ্ক বিরাজ করছিল। আমি আমার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাড়িতে সদস্য সংখ্যা বলতে আমি, বাবা, আর গৃহপরিচারিকারা। মায়ের মৃত্যুর পর মায়ের ঘরে আমি খুব কমই ঢুকতাম। প্রচণ্ড মন খারাপ হলে মায়ের ঘরে গিয়ে বসে থাকতাম। সেদিন মায়ের ঘরে গিয়ে মায়ের পুরানো বইয়ের শেলফটা দেখছিলাম। মা'র বই পড়ার প্রবল নেশা ছিল। হরেক রকমের বইয়ে শেলফ ছিল পরিপূর্ণ। আমি একটি বই নিয়ে বইটি খুলতেই আঁতকে উঠি! কারণ সেই একই রকম খাম ঐ বইয়ের মধ্যেও; কিন্তু ভিতরে কোন চিরকুট নেই। এমন সময় হঠাৎ জানলা দিয়ে দেখি সেই চিঠি দেওয়া লোকটি আমাদের বাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। সর্বনাশ! বাবা যে আজ বাড়িতে! আমি দ্রুত বেগে দোতলা পেরিয়ে সিঁড়ি ভেঙে নিচে গিয়ে দেখি, চিঠিটা ততক্ষণে বাবার হাতে পৌঁছে গেছে। আমাকে দেখে বাবা চিঠিটা লুকিয়ে ফেললেন এবং দ্রুত তার ঘরে চলে গেলেন। ঘণ্টা দুয়েক পর বাবা আমাকে ডেকে পাঠালেন। খুবই গম্ভীর দেখাচ্ছিল তাকে। আমার বাবা প্রচণ্ড রাশভারী রাগী ব্যক্তি। মায়ের মৃত্যুর পর বাবার সাথে আমার প্রয়োজন ব্যতীত কখনোই কথা হয় নি। বাবা মাথা নিচু করে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে বললেন, 'বাকি চিঠিগুলো তুমি কি করেছো অস্মিতা?' আমি কিছুটা আঁতকে উঠি এবং আমতা-আমতা করে বলি, 'চিঠি! কিসের চিঠি বাবা?' বাবা এবার কর্কশ স্বরে চেঁচিয়ে উঠলেন, 'বুঝতে পারছ না তুমি কিসের চিঠি? তোমার পরিণতিও তোমার মায়ের মতোই হবে!' সেদিনের পর থেকে বাবার সাথে আমার আর কথা হয়নি। গত সপ্তাহে বাবার কাছে আবার সেই চিঠি আসে। বাবা দুপুরে ঘুমলে আমি চুপি-চুপি বাবার ঘরে যাই আর খুব সাবধানে চিঠিটি খুঁজতে থাকি। খুঁজতে-খুঁজতে একটি পুরানো বইয়ের মধ্যে চিঠিটি পেয়ে যাই। সেই একই খামে, একই কাগজে লেখা সেই একই চিরকুট, শুধু কথাগুলি আলাদা। এবার লেখা ছিল, 'খুব দ্রুত কাজটি করতে হবে, এ মাসেই।' আমি চিঠিটি পড়ে পুনরায় খামের মধ্যে রেখে চলে আসি। স্যার, আজ মাসের ২৭ তারিখ। মাস শেষ হতে আর মাত্র তিন দিন বাকি। আমার বিশ্বাস, এই তিন দিনের মধ্যে আমার সাথে ভয়ানক কিছু ঘটতে চলছে। এবং আমি এটাও জোর দিয়ে বলতে পারি, আমার মায়ের মৃত্যুর পিছনে আর কেউ না, আমার বাবাই দায়ী। আমার বাবাই আমার মায়ের খুনি।

অফিসার এতক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মতো সব শুনছিলেন। তিনি অস্মিতার দিকে তাকিয়ে বললেন– কেসটা অনেক জটিল মিস অস্মিতা! একে তো আপনার কাছে কোন প্রমাণ নেই। তারপরে আপনি চিঠিগুলোও পুড়িয়ে ফেলেছেন। আবার আপনার কথা অনুযায়ী সব সত্যি হলে আপনার জীবনটাও খুব বিপদের মুখে। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ ব্যতীত আপনার বাবাকেও তো এই মুহূর্তে এরেস্ট করতে পারছি না।

– স্যার, আমার আপনার সাহায্য প্রয়োজন। আপনি আমাদের বাড়িতে আসলে হয়তো বা আমাকে সাহায্য করার পাশাপাশি অনেক কিছু বুঝতেও পারবেন। আপনাকে আমাদের বাড়িতে একবার আসতেই হবে স্যার।

– ঠিক আছে মিস অস্মিতা, আমি যাবো। তবে আমাকে একটু সময় দিন। এই হল আমার ফোন নাম্বার, কোনও রকম বিপদের আভাস পেলে সাথে-সাথেই আমাকে একটা ফোন করবেন।

– ঠিক আছে, স্যার। আজ তাহলে আমি আসি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আমাকে সহযোগিতা করার জন্য। এই বলে অস্মিতা দ্রুত থানা থেকে বেরিয়ে গেল।

Next Part


গোয়েন্দা গল্প ও উপন্যাস:
নয়নবুধী   
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
লুকানো চিঠির রহস্য   


All Bengali Stories    39    40    41    42    43    44    45    46    (47)    48   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717