Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

গরল

বাংলা গোয়েন্দা গল্প

All Bengali Stories    100    101    102    103    104    105    106    107    (108)     109    110   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



গরল
( গোয়েন্দা গল্প)
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতার ( নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার , ২০২১) একটি নির্বাচিত গল্প
লেখিকা- সন্দীপা সরকার মুখার্জী, পিতার নাম- শ্রী সুকুমার সরকার, তালপুকুর, শ্রীরামপুর, হুগলী


30 th June, 2021

## গরল
( গোয়েন্দা গল্প)
লেখিকা- সন্দীপা সরকার মুখার্জী, পিতার নাম- শ্রী সুকুমার সরকার, তালপুকুর, শ্রীরামপুর, হুগলী
পর্ব ২

অন্যান্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১     পর্ব ২     পর্ব ৩    

গরল
পর্ব ২
#
অরিজিত রাজন্যার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। গাড়ির গতি থামল বিনীতা খাস্তগিরের বাড়ির সামনে। অরিজিত দরজায় বেল দিতেই একজন ভদ্রলোক এসে দরজা খুললেন। বাড়িতে সেদিন শোক পালনের জন্য বেশকিছু লোক জমায়েত হয়েছেন। বিনীতা খাস্তগিরের ছবিটা সাদা ফুলের মালায় ঢেকে গেছে। পুলিশের পোশাকে অরিজিতকে দেখে সকলের মুখে প্রশ্ন চিহ্ন। মন্ত্রোচ্চারণ চলছে পারলৌকিক কর্মের। ওদের দেখে একটি মেয়ে এগিয়ে এসে নিজের পরিচয় দিলেন, তিনি বিনীতা খাস্তগিরের মেয়ে, নন্দীতা বনসল। আমেরিকা থেকে গতকাল এসেছেন। আর যে পারলৌকিক ক্রিয়া করছে, সে হল ছেলে নিলয়। সেও আমেরিকাতেই সেটেলড।

"আমি এই কেসটার ইনভেস্টিগেটিভ অফিসার অরিজিত ঘোষ। ইনি হলেন প্রাইভেট ডিটেক্টিভ রাজন্যা রায়। আমার সাথে ইনিও এই কেসটা নিয়ে তদন্ত করছেন। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য আমাদের।"

"নিশ্চয়ই, আমরা আমাদের মায়ের খুনিকে ধরতে যা-যা করণীয় করব।"

রাজন্যাকে অরিজিত বলল , "তোমার যা কিছু জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দাও।"

কথাটা শুনে নন্দীতা ওদের অন্য একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে বলল, "কি জানতে চান বলুন?"

"আচ্ছা নন্দীতা, আপনাদের কাউকে সন্দেহ হয়? এমন কেউ, যিনি আপনার মায়ের শত্ৰুছিলেন বা আপনাদের পারিবারিক শত্র?"

"এমন তো কিছু মায়ের মুখে কোনদিন শুনি নি। তাছাড়া বছর পাঁচেক হলো আমি বিবাহ সূত্রে আমেরিকাবাসী। দাদা তো তারও বছর তিনেক আগে বেটার চান্স পেয়ে আমেরিকাতে চলে গিয়েছিল। দাদার কলিগের সাথেই আমার বিয়ে হয়। তার আগেও কিন্ত আমরা মায়ের মুখে কোন শত্রর নাম শুনিনি। ইনফ্যাক্ট মাকে একজন এক্স ওয়েট লিফটার হিসেবে সকলেই সম্মান করতেন। পারিবারিক শত্রতারও প্রশ্নই ওঠে না। আমার পিতামহের সন্তান বাবা একাই ছিলেন। সম্পত্তিগত বিবাদের জেরে কেউ এই কাজ করবেন সেটারও প্রশ্ন ওঠে না। কে, কেন খুন করলেন তা আমাদের কাছেও রহস্য।"

"বিনীতাদেবীর ঠিক কি রোগ ছিল?"


"মা একাকিত্বতা থেকেই হয়ত ডিপ্রেশনের শিকার হয়েছিলেন। কোনদিন সেভাবে কিছু বলতেন না। জিজ্ঞাসা করলে'ভাল আছিই বলতেন। তবে ডিপ্রেশনের ওষুধটা খুব বেশীদিন ধরে খেতেন না, মাস ছ'য়েক ধরে খাচ্ছিলেন।"

"সারা বাড়িতে কি উনি একাই থাকতেন?"

"না না, মায়ের কাছে সর্বদা কাজের মহিলা থাকেন। মলিনামাসি। বেশ বিশ্বস্ত। আমাদের ছোটবেলা থেকেই উনি আছেন।"

"ওর সাথে একটু কথা বলব। একটু ডেকে দিন।"

"সিওর, ডেকে দিচ্ছি।"

নন্দীতা ঘর থেকে বেরিয়ে আবার ড্রয়িং রুমে, যেখানে বিনীতাদেবীর কাজ চলছে সেখানে গিয়ে একজন মহিলা যিনি সকল অতিথি অভ্যাগতদের সরবত এগিয়ে দিচ্ছেন, তাকে পাশে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে কথা বলে রাজন্যাদের কাছে নিয়ে এলো।

"মাসি, উনি হলেন রাজন্যা আর উনি পুলিশ অফিসার অরিজিতবাবু। এরা দুজনেই মায়ের খুনের তদন্ত করছেন। তোমার থেকে যা জানতে চাইছেন বলো।"

মলিনা আঁচলে হাত মুছতে-মুছতে বলল, "বলেন, কি জাইনতে চান? মেলা কাজ পড়ে আছে।"

রাজন্যা বলল, "এই বাড়িতে আপনি আর বিনীতাদেবী থাকতেন, তাই তো?"

"হাঁ। তবে মাস চারেক হল একটি মেয়েকে বৌদিমনি ঘরে এনে তুইলেছিলেন।"

"ঘরে এনে তুলেছিলেন মানে? ঠিক বুঝলাম না। একটু ক্লিয়ারলি বলুন। "

"এই তো মাস চারেক আগে একটা কেলাব থেকে পেরাইজ দিতে ডেকে চিল বৌদিমনিকে। সেখানেই এই মেয়েটি এয়েচিল পেরাইজ নিতে। গরিব ঘরের মেয়ে। পয়সার অভাবে টিক করে খেলার টেরেনিং নিতে পারে না। বৌদিমনির ওজন তোলার টেরেনিং ইস্কুলে মেয়েটাকে এনে ভত্তি কইরেচিল। মেয়েটা এই বাড়িতেই তাকতে শুরু কইরলো। বৌদিমনির যতন আত্তিও কইরতে লাগলো। সে মেয়ে তো আমার চেয়েও আপন হয়ে উইটেচিলা মেয়েটা আসার মাসখানেক পর তিকেই বৌদিমনি অসুস্ত হলো। তবে মিত্তে বইলবুনি, মেয়েটা বৌদিমনির কেয়াল রাকত। ভালবাসতো নিজের নোকের মত।"

"তা সে মেয়েটি কোথায়? তার সাথে একটু কথা বলা যাবে?"

"তা সে মেয়েকে কোতায় পাবেন, সেতো মাসকানেক হলো একান তেকে চইলে গিচে। ওর তো বে টিক হইচো। শ্বউর ঘরে খেলা চইলবু নি বলে সে তো খেলাও কইরবে না করে চইলে গিল।৷ সে কি কান্না বৌদিমনিকে জইড়ো..."

"তা মেয়েটি যখন চলে গেল তখন বিনীতাদেবী কি একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে গেছিলেন?"

"না, তবে হাতে-পায়ে জোর পেতো নাকো। মেয়েটিকে ধরে বাতরুমে যেত। মেয়েটি চইলে যাওয়ার পর সব কাজ আমিই কইরতাম। সারাদিন চুল ঝইরে যেত বলে দুক্কু কইরে বইলতেন, 'দেক মলিনা, মানষের রূপ চেরকাল তাকে নাকো। ওমন ডাগোর চেয়ারা কেমন যেন শুইকে যাচ্চিল দিনকে দিন।"

"উনি ডাক্তার দেখাতেন নিশ্চয়ই। তা ডাক্তার কিছু বলেন নি! কেন এমন হচ্ছে?"

"অতশত জানিনে বাপু, বৌদিমনি যতটুক বইলতেন শুইনতেম। উনি বেশী পেশ্ন পচন্দ কইরতেন নাকো। শরীলের যন্তনাতে মানুষটা কেমন খিটখিটে হয়ে পইড়েচিল। যা জানি বইললুম। এর বেশী কিচ্ছুটি জানিনেকো। তবে কয়ে দিলুম, যে মানষে এমন ধারা কম্ম। করেছে, সে ওলাওটা হয়ে মইরবে। মলিনার কতা ফইলবেই। চলি দিদিমনিরা ওদিক পানে অতিতিরা বয়ে আছেন।"

"হ্যাঁ, তুমি যাও... আমাকে মা ফোনে সবকিছুই শেয়ার করতেন। যতটুকু জানি বলছি। মায়ের বছরখানেক হল অ্যাজমাটিক ভাব এসেছিল। ডাক্তার ওষুধ দিয়েছিলেন। সিরাপ আর কিছু ট্যাবলেট খেয়ে বেশ সুস্থ বোধ করছিলেন। সাথে ইনহেলার নিতেন। তবে ডাক্তার বলেই দিয়েছিলেন, এই রোগ ওষুধ না খেলেই বাড়বে। তাই মা বেশী করে ওষুধ কিনে মজুত রাখতে শুরু করলেন। বেশ কয়েক মাসের ওষুধ কিনে রাখতেন। তবে এই তিনমাসের ভেতর ডাক্তার দেখাতে পারেননি মা। কারণ ডাক্তারবাবু নিজস্ব কাজে ছ'মাসের জন্য বিদেশে গেছেন। এখনো ফেরেননি। ফোনে সব শুনে আরো কিছু ওষুধ দিয়েছিলেন। মা কিনে খাচ্ছিলেনও। মা অন্যকোন ডাক্তারকে বিশ্বাস করতেন না। সে কারণে ডাক্তারবাবুর আসার অপেক্ষা করছিলেন। এলেই দেখাবেন, কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল, "কথাটা শেষ করেই নন্দীতা কান্নায় ভেঙে পড়ল। রাজন্যা সান্ত্বনা দিতে-দিতেই জিজ্ঞাসা করল "এগুলো তো শুনলাম। এছাড়া আর কোন শত্ৰু কি ছিল বিনীতাদেবীর?"

"মায়ের মত মানুষের শত্রু! আমার মা উপকার ছাড়া অপকার করেননি কারো কোনদিন যেকোন মানুষ বিপদে পড়ে যদি সাহায্য চাইতেন, মা সঙ্গে-সঙ্গে তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। তাকে কে বিষ দেবে, এটাই তো বুঝতে পারছি না! তাও সিল করা বোতলের ভেতর বিষ! অবাক লাগছে।"


এটাই তো জানার বিষয়। ঠিক আছে, আজ চলি, আপনার অনেক সময় নিয়ে নিলাম। প্রয়োজনে আবার আসব।।"

ওখান থেকে দু'জনে বেরিয়ে অরিজিতের গাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল। "কিছু বুঝতে পারলে রাজন্যা?"

"নাহ্, তবে আমাদের ওই মেয়েটির সাথে কথা বলতে হবে। যাকে ইদানিং বিনীতাদেবী বেশ ট্রাস্ট করতেন এবং বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এই যাঃ, কথায়-কথায় তো মেয়েটির নাম, ঠিকানা কিছুই নেওয়া হল না।"

"মেয়েটি তো মাসখানেক আগেই চলে গেছে। ও কি করে জানবে কে খুন করেছে?"

"খুনিকে না ধরাতে পারুক, এমন কিছু তথ্যও তো পেতে পারি, যা থেকে গোপন শত্রতার কথা জানলেও জানতে পারি। চেষ্টা তো করতেই হবে। সেজন্য সবার সাথে কথা বলতে হবে।"

"ঠিক আছে, এখন তোমাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে থানায় যাব। আজ বিনীতাদেবীদের বাড়িতে একটা অনুষ্ঠান চলছে, আগামীকাল বিনীতাদেবীর বাড়িতে ফোন করে ঠিকানা চেয়ে নেব।"

পরেরদিন বিনীতাদেবীর বাড়িতে রাজন্য ফোন করতে মলিনা ফোনটা তুলল, "হালু, কে কইতেচেন?"

"আমি রাজন্যা, গতকাল গিয়েছিলাম আপনাদের বাড়িতে। বিনীতাদেবীর খুনের ব্যাপারে তদন্ত করতে।"

"হ, দিদিমনি কয়েন।"

"যে মেয়েটি কিছুদিন বিনীতাদেবীর আশ্রয়ে থাকছিল তার নাম, ঠিকানা একটু বলুন।"

"সে মেয়ের নাম তো রিমা বিশ্বাস। টিকানা বাপু কইতে পারবুনি। তবে রেইল গেটের ওদিকে বাড়ি শুইনেছিলাম। আমি বাপু কুনদিন জাইনতেও চাইনিকো।"

"রেলগেট মানে? আপনাদের বাড়ি আসার পথে যে রেলগেট পড়ে?"

"হ, তাই তো শুনেছিলাম।"

"অনেক ধন্যবাদ মলিনামাসি।" "ও দিদিমনি, কিছু জাইনতি পাইরলে এটু জানিও কিন্তু বাপু। কাজের নোক বইলে চাইপ্যা যেওনি। বৌদিমনি আমারে কুনদিন কাজের নোক ভাবেনিকো। নিজের বুইন ভাইবত। আর কাজের নোককে আপনি, আজ্ঞে করতে হইবেনিকো দিদিমনি। আমারে তুমি কইর্যা কও।"

"আচ্ছা বেশ, তুমি করেই বলব। তুমি একদম ভেবো না। আমি খুনির খোঁজ পেলেই আগে তোমাকে জানাব। কথা দিলাম..." রাজন্যা ফোনটা রেখেই অরিজিতকে ফোন লাগালো।
Next Part


All Bengali Stories    100    101    102    103    104    105    106    107    (108)     109    110   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717