All Bengali Stories
84
85
86
87
88
89
90
(91)
92
93
-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------
◕
লাবণ্য ( পর্ব ৩)
লেখিকা - রিয়া পণ্ডিত, দক্ষিণ তারাপুকুর, আগরপাড়া, কলিকাতা- ১০৯
অন্য পর্বগুলিঃ
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
পর্ব ৪
◕ পর্ব ৩
অনিরুদ্ধর কপালে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট -- তুই এখানে?
লাবণ্য -- কেন না আসলেই বোধ হয় ভালো হতো, তাই না? একসাথে দু-নৌকায় পা দিয়ে চলাটা খুব সহজ হতো তোর পক্ষে, তাই তো? লাবণ্যর গলায় কান্নার ছাপ স্পষ্ট।
অনিরুদ্ধ -- তুই ভুল বুঝছিস লাবণ্য!
লাবণ্য -- থাম!! আর কত মিথ্যা বলবি অনি, তোদের এত ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখার পরও বলবি আমি ভুল বুঝছি?
লাবণ্যর চোখ থেকে অনবরত জল গড়িয়ে চলেছে। ও আর এক সেকেন্ডও সেখানে দাড়িয়ে থাকতে পারলো না। দৌড়ে চলে গেল সেখান থেকে। ওকে কাঁদতে দেখে নীচে সবাই জিজ্ঞেস করল- কী হয়েছে লাবণ্য?
কিন্তু লাবণ্য কারোর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে গেল সে।
কোনোক্রমে ট্যাক্সি ধরে বাড়ির জন্য রওনা দিল ও।
বাড়ি পৌঁছে কোনওমতে নিজের চোখের জল লাবণ্য মায়ের কাছে আড়াল করে নিজের রুমে ঢুকে বাথরুমে গিয়ে সাওয়ার ছেড়ে বসে পড়লো সাওয়ারের নীচে।
এতটা কষ্ট লাবণ্য আগে কখনো পায়নি, যন্ত্রণায় বুক ফেটে যাচ্ছে ওর।
লাবণ্য কাঁদতে-কাঁদতে বলল -- কেন করলি এটা অনি? এভাবে কেনও......... কথাটা সম্পূর্ণও করতে পারলো না আবারও ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।
একঘণ্টা এভাবে কান্নাকাটি করে পোশাক বদলে বাইরে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লো সে, চোখের জল কোনও বাধা মানছে না, শ্রাবণের ধারার মতো ক্রমশ বয়ে চলেছে।
লাবণ্যর মা লাবণ্যর ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলেন - কীরে শরীর ঠিক আছে তো? ডিনার করবি না?
লাবণ্য কোনওমতে চোখ মুছে মায়ের দিকে ফিরে মিথ্যে হাসি এঁকে বলল -- আমি খেয়ে এসেছি মা, তোমারা থেমে নাও। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।
লাবণ্যর মা লাবণ্যর মাথায় হাত বুলিয়ে চলে গেল। মা চলে গেলে আবারও বালিশে মুখ গুজে কাঁদতে থাকলো লাবণ্য। এভাবে কাঁদতে-কাঁদতে কথন গভীর নিদ্রায় মগ্ন হয়ে গেল নিজেও বুঝতে পারলো না।
পরদিন অনিচ্ছা স্বত্বেও জরুরি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার জন্য কলেজে চলে গেল। অনিরুদ্ধ অনেকক্ষণ থেকেই লাবণ্যর জন্য কলেজের গেটে অপেক্ষা করছিল।
লাবণ্য কলেজে ঢুকতেই অনিরুদ্ধ ওর পথ আটকে দাঁড়াল -- সরি লাবণ্য ক্ষমা করে দে, প্লিজ ভুল হয়ে গেছে।
লাবণ্য অনিরুদ্ধর গালে সজোরে চড় মেরে বলল -- তোর লজ্জা করে না অনি, ও সরি মিঃ অনিরুদ্ধ সেন, কোন মুখে সরি বলছিস? তোর কি মনে হয় এতকিছু নিজের চোখে দেখার পরও আমি তোকে বিশ্বাস করবো?
যদি এটা ভেবে থাকিস তাহলে ভুল ভাবছিস। বাচ্চা নই আমি যে, এত বড় অন্যায় করার পরও এসে আমার কাছে ভালো সাজার অভিনয় করবি আর আমি তোর ভালো মানুষীতে গলে যাবো.... থাক বাদ দে।
আমি জানি না তুই এ কাজটা কেন করলি, ইনফ্যাক্ট আমি জানতেও চাই না। তবে একটা কথা শুনে রাখ আমার সাথে তোর আর কোনও সম্পর্ক নেই; সব শেষ।
আমার সামনে আর কোনও দিনও আসবি না। কথাটা বলে ওখান থেকে চলে গেল লাবণ্য। অনিরুদ্ধও জানে, ও যে কাজটা করেছে সেটা ক্ষমার অযোগ্য, তাই সে আর আটকাবার চেষ্টা করলো না লাবণ্যকে।
বাড়ি ফিরে লাবণ্য নিজের রুমে চলে গেল। ছোটো বেলা থেকেই ওর অভ্যাস, যখন ওর কোনও কারণে কষ্ট হয় তখন দু-এক লাইন ডায়েরী লিখে রাখে। তাতে মনটা একটু হালকা হয়, কষ্টটাও একটু হলেও কমে।
ঘরে ঢুকতেই ডায়েরী নিয়ে লিখতে বসলো সে -
চাই না অমন ভালোবাসা, যা ক্ষণিকের সুখ দিয়ে - চলে যাবে হৃদয়কে শূন্য করে।
চাই না অমন ভালোবাসা, যা আমার হয়েও - হয়ে যাবে অন্য কারও।
তারপর দেখতে-দেখতে পাঁচটা বছর পার হয়ে গেল। লাবণ্য এখন একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করে। নিজেকে অনেকটাই ব্যস্ত করে রাখে তবে আগের চেয়ে, অনেকটাই স্বাভাবিক করে তুলেছে নিজেকে।
প্রথম-প্রথম জীবনটা অগোছালো হয়ে পড়লেও আস্তে-আস্তে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে লাবণ্য, কিন্তু মানুষের ওপর থেকে যে বিশ্বাসটা হারিয়ে ফেলেছিল সেটা এখনও ফিরে পেতে পারেনি।
এখন আর কারো সাথে বন্ধুত্ব তো দূরের কথা, সামান্য কথা বলতেও ওর ইচ্ছে করে না। একবার বিশ্বাসটা ভেঙে গেলে সেটা আবার ফিরে পাওয়া অতোটা সহজ নয়, লাবণ্যও পেরে ওঠেনি আবারও কাউকে বিশ্বাস করতে।
একমাত্র আপনজন বলতে বাবা - মা'ই ওর সব। লাবণ্য পরে ওর মাকে সবটাই জানিয়েছিল। মেয়ের এভাবে চুপচাপ হয়ে যাওয়া, ভেতরে-ভেতরে তিলে-তিলে শেষ হয়ে যাওয়া কোনও বাবা - মা মেনে নিতে পারেন না।
তাই বাবা - মা'র অনেক বোঝানোর পর জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করে চলেছে লাবণ্য।
সেদিনের পর থেকে অনিরুদ্ধও আর যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি ওর সাথে। এক বন্ধুর কাছে লাবণ্য জানতে পেরেছিল, কিছুদিন পরেই ঈশানীর সাথে একটা রিলেশান তৈরি হয়েছিল অনিরুদ্ধর কিন্তু পরে সেটাও ভেঙ্গে যায়।
লাবণ্যও আর ওই কলেজে যেতে পারেনি, হয়তো নিজেকে সামলে উঠতে পারতো না। বাধ্য হয়ে কলেজ চেঞ্জ করে ফেলেছিল, দেখা হওয়ার আর প্রশ্নই ওঠেনি।
কিছুদিন যাবত লাবণ্যর বিয়ের কথা উঠেছে বাড়িতে। যতবারই পাত্র পক্ষ দেখতে আসার কথা ওঠে, কোন-না কোন বাহানায় ব্যাপারটা এড়িয়ে যায় লাবণ্য।
কিন্তু বুঝতে পারে ওর এরকম ব্যবহার বাবা - মাকে অনেকটাই কষ্ট দেয়। সব বাবা-মা চান তাদের ছেলে মেয়েকে সুখী দেখতে, যোগ্য ছেলের হাতে তাদের মেয়েকে তুলে দিতে।
কিন্তু লাবণ্যর নতুন করে কাউকে বিশ্বাস করতে ভয় হয়, যদি আবারও ওর বিশ্বাসটা ভেঙে যায়!
পাঁচ বছর ধরে এই ভয়টাই ওকে শেষ করে দিচ্ছে ভেতর-ভেতর। অনেকবার না-না করেও শেষ অব্ধি বাবার কথা রাখতে বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায় লাবণ্য।
পাত্র লাবণ্যর বাবার বন্ধুর ছেলে, পেশায় ডাক্তার; নাম সৌদার্য রায়। লাবণ্যর ফোটো দেখেই ওদের সবার পছন্দ হয়ে যায়, তাই আর দেরি না করে লাবণ্যর মতামত নিয়ে বিয়ে ঠিক করে ফেলে।
আজকে ওর সাথেই লাবণ্যর দেখা করতে যাওয়ার কথা। সৌদাৰ্যই প্রস্তাবটা লাবণ্যর বাবাকে দিয়েছিল। ওর ইচ্ছে বিয়ের আগে দু'জন - দু'জনকে ভালো ভাবে জেনে নেওয়ার।
Next Part
অন্য পর্বগুলিঃ
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
পর্ব ৪
Next Bengali Love Story
All Bengali Stories
84
85
86
87
88
89
90
(91)
92
93
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717