All Bengali Stories
87
88
89
90
91
92
93
94
95
(96)
97
-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------
◕
বিদায় বেলায়
লেখিকা – সংঘমিত্রা রায়, Karimganj bazer, Assam
■
বিদায় বেলায়
লেখিকা – সংঘমিত্রা রায়, Karimganj bazer, Assam
পর্ব ৩
প্রকাশের লজ্জা কিছুটা ভেঙেছিল, এরপর থেকে পারমিতার সঙ্গে কথা বলত। পারমিতা ওকে প্রকাশদা বলেই ডাকত।
যত দিন যাচ্ছিল দুজনের সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। পারমিতা অনেক সময় নানা আবদার করত প্রকাশের কাছে। মিষ্টি মেয়েটার আবদার ফেলতে পারত না প্রকাশ, ওর সব কথাই মেনে নিত।
ওদের বন্ধুরা ঠাট্টা করে বলত,"তোর বডি-গার্ড ভালো পেয়েছিস পারমিতা। সবসময় একেবারে আঠার মতো লেগে থাকে তোর পিছনে।"
"কেন রে, তোদের কি হিংসা লাগে নাকি! তোরা একজন জুটিয়ে নে না, কে মানা করেছে!"
"আমাদের গ্রামের ছেলে পছন্দ নয়, জোটালে শহরের ছেলেই জোটাব।"
আসলে প্রকাশ সঙ্গে থাকলে অনিমেষ বাবুও কিছু বলতেন না পারমিতাকে। তিনি জানতেন প্রকাশ খুব ভালো ছেলে। পারমিতা কলেজ পালিয়ে প্রায়ই বন্ধুদের সঙ্গে নানা জায়গায় ঘুরতে যেত, পার্টি করত।
মাঝে-মাঝে প্রকাশকেও জোর করে নিয়ে যেত। আর বাড়ীতে এসে অনিমেষ বাবু, তার মা পরমা দেবী কিছু বললে সব দোষ প্রকাশের উপর চাপিয়ে দিত। সে দোষ না করেও নিজের ঘাড়ে সব দোষ নিত,
তার অনেক অন্যায় আবদার পূরণ করত। পারমিতা খুশী হয়ে তাকে বলত, "লাভ ইউ প্রকাশদা"
এই কথাটা সে অনেকবার বলেছে আর প্রকাশও তাকে ভালোবেসে ফেলেছে। চঞ্চল হরিণীর মতো চটপটে মেয়েটাকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখত প্রকাশ। তার মনে হয়েছিল পারমিতাও তাকে খুব ভালবাসে!
কেটে যায় কয়েক বছর। প্রকাশ ইংলিশ অনার্স নিয়ে বি.এ. পাশ করে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। পারমিতা বি.এ. পাশ করতে পারেনি, তার এসব নিয়ে খুব একটা মাথা ব্যথাও নেই।
খুব সেজে-গুজে বাবার টাকা উড়িয়ে সে আনন্দ ফুর্তিতে মেতে রয়েছে। তখন প্রকাশ ওদের বাড়ীতে খুব আসা যাওয়া করত। একদিন সে পারমিতাকে বলল,"আর বেশীদিন অপেক্ষা করতে হবে না পারমিতা,
একটা চাকরী পেয়ে যাই তারপরই আমাদের বিয়েটা হয়ে যাবে!"
"তোমাকে কে বলল আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই?"
"ঠাট্টা করছ, বুঝেছি আমি, তুমি তো সবসময়ই বল, 'লাভ ইউ', তার মানে তুমি আমাকে ভালোবাসো, আমিও তোমাকে খুব ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া জীবন কাটানোর কথা ভাবতেই পারি না।"
"বোকা কোথাকার! আমি তো অনেক ছেলেকেই 'লাভ ইউ' বলে থাকি, তার মানে কি আমি সবাইকে বিয়ে করব? নিজের দিকে চেয়ে দেখেছ,
তোমার মতো ছেলেকে আমার বডি-গার্ডই মানায়। আমার জন্য কোনও রাজকুমার অপেক্ষা করছে! আর ভুল করেও কক্ষনও এরকম কথা বল না।"
কথা গুলো যেন প্রকাশের বুকে পেরেক ঠুকে দিল। মনে খুব কষ্ট পেয়ে বাড়ি চলে এসেছিল, আর কলকাতায় যায়নি। বাবা, মায়ের শত অনুরোধেও এম. এ. কমপ্লিট করেনি।
কিছুদিন পর সে পলাশপুরের হাই-স্কুলে চাকরী পেয়ে যায়। তার বাবা,মা অনেক চেষ্টা করেও তার বিয়ে দিতে পারেন নি। তার মনে পারমিতা ছাড়া আর কাউকে বসাতে পারেনি সে, আর কথাটা কাউকে বলেও নি।
পলাশপুরে নিজেদের জমিতে কিছু অনাথ বাচ্চা, দুঃস্থ মহিলার জন্য আশ্রম করেছে। তার চাষবাস আর চাকরীর টাকায় আশ্রম চলে। পড়াশোনার পাশাপাশি সবাইকে সে নানা ধরনের হাতের কাজ শেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
আশ্রমে এখন ত্রিশটি ছেলে-মেয়ে আর দশ জন দুঃস্থ মহিলা আছে। আশেপাশে কারো বিপদ দেখলে এদের নিয়ে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। এদের নিয়েই চলছে তার জীবন।
সবাই তাকে ভালোবেসে 'দাদাবাবু' বলে ডাকে। পলাশপুরের মানুষ তাকে খুব ভালবাসে।
প্রকাশ বাবু শুয়ে থাকা অবস্থায় বুঝলেন কেউ তার পায়ে হাত দিয়েছে। উঠে দেখলেন সেই মহিলা। বললেন," একি আপনি! শরীর কেমন আছে আপনার?"
"প্রকাশদা তুমি আমাকে চিনতে পারলে না, আমি পারমিতা!"
চমকে উঠলেন প্রকাশবাবু,"তুমি!! তোমার এ অবস্থা কি করে হল পারমিতা?"
"আমার রূপের অহংকারের জন্য যে আমাকে ভালবেসেছিল তাকে চিনতে পারিনি। বাবা, মা আমার কয়েকবার বিয়ে ঠিক করেছিল, কিন্তু আমার কাউকে পছন্দ হয়নি।
ভেবেছিলাম যার এত রূপ তার জন্য কোন রাজকুমারই আসবে। তারপর বাবা-মা দু'জনে চলে গেলেন, ব্যবসাও নষ্ট হয়ে যায়। এক শয়তান আমাকে ভালোবাসার নাম করে আমাকে ভোগ করে
একসময় আমার সব টাকা নিয়ে তার স্ত্রীর কাছে চলে যায়। আমি আগে জানতাম না সে বিবাহিত। আমি একা হয়ে পড়ি এরপর আমি বেস্ট-ক্যান্সারে আক্রান্ত হই।
চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ সম্বল বাড়ীটাও বিক্রি করি। আমার একটা বেস্ট কেটে ফেলা হয়েছে কিন্তু তারপরও আমি ভালো হই নি, আবার আক্রান্ত হয়েছি।
আজ আমি নিঃস্ব আমার রূপ, অর্থ কিছুই আর নেই। ডাক্তার বলেছে আমি আর ভালো হব না, আর মাত্র কিছুদিন বাঁচব। তাই অনেক কষ্টে তোমার ঠিকানা জোগাড় করে এখানে এসেছি।
আমাকে তোমার চরণে ঠাই দাও। তোমার মতো মানুষকে আমি চিনতে পারিনি। মৃত্যুর আগে আমি তোমার কাছে এসেছি যাতে তোমার কোলে মাথা রেখেই মরতে পারি।
আমার বিদায়বেলায় শেষ ইচ্ছেটা পূরণ করবে না প্রকাশদা?" পারমিতা মেঝেতে বসে কাঁদতে থাকে। প্রকাশবাবু্র আশে-পাশে যারা ছিল সবার চোখে জল এসে গেল।
কেউ সেখানে দাঁড়াল না, বাইরে চলে গেল। প্রকাশ বাবুর মনটা বরাবরই নরম, তিনি সব সময় ক্ষমাশীল। তার ভালোবাসার মানুষের এমন অবস্থা দেখে তার বুক কেঁপে উঠল।
প্রকাশবাবু পারমিতাকে দু'হাত দিয়ে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন,"আমি যে এখনও তোমাকেই ভালোবাসি পারমিতা! আমি তোমাকে কিছুতেই মরতে দেব না। আমি তোমাকে যেমন করেই হোক সুস্থ করব!"
দুজনের চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে, কেউ আর কোন কথা বলতে পারছে না।
সমাপ্ত
Next Bengali Story
All Bengali Stories
87
88
89
90
91
92
93
94
95
(96)
97
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717