Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

শিলা বৈষ্ণব

-হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর - ১৩, আগরতলা, ত্রিপুরা

All Stories   ◍    7    8    9    10    (11)     12    13    14    ...

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

আমাদের পাড়ায় শিলা নামে একটি মহিলা ছিল। দেখতে হেংলা-পাতলা, মস্ত কালো। স্বামী আর দুইটি ছোট ছেলে এই নিয়েই তার সংসার। শিলার স্বামী দিন মজুরের কাজ করত। গরীব সংসার তাই শিলাও লোকের বাড়িতে ঝি এর কাজ করত। সে কাজ কর্মে আর কথায় খুব পটু ছিল। তাই লোকে তাকে কাজের জন্য ডাকত।

তার কাছে টাকা পয়সা এত বড় ছিল না যত বড় ছিল তার স্বভীমান। সে সব খানেই হেসে খেলে কাজ করত। বাড়ি মহিলারাও তার কথায় আনন্দ পেত আবার তার কাজে খুশি হত।

পাড়ার এক কোনে থাকত এক বৈষ্ণবী। তার নাম ছিল বিধিলা। যতটুকু ছিল তার ভক্তি তার হাজার গুন ছিল তার অভিমান, ছুঁয়া-ছুত। সে ঠাকুরের নাম করত কম আর নিয়ম করত বেশী। আর নিয়ম সে কিছু কিছু নিজেই বানিয়ে ফেলত।

কিছুদিন হল পাড়াতে খবর রটেছে বিধিলা বৈষ্ণব নাকি শিব ঠাকুর পেয়েছে। বিধিলা বৈষ্ণব যখন ধ্যানে বসে তখন নাকি শিব ঠাকুর তার উপরে ভর করে আর বিধিলা বৈষ্ণব অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। বেহুশ অবস্থাতেই সে লোকের প্রশ্নের জবাব দেয়, লোকের সমস্যার সমাধান করে।

বিধিলা বৈষ্ণবের বেশ দাম বেড়ে গেল। তার কুঠিরে পাড়ার মহিলাদের খুব ভিড়। সবাই তাকে নিমন্ত্রণ করে সেবা করে। যেখানেই বিধিলা বৈষ্ণবের ডাক পড়ে সেখানে কাজের জন্য শিলার ও ডাক পড়ে। এটা বিধিলা বৈষ্ণবের এত ভাল লাগল না। সে শিলাকে সব সময়ই যা-তা বলত, গালি-গালাজ করত। শিলাও এমনি ছেড়ে দেবার পাত্রী নয়। সেও সময়ের অপেক্ষায় রইল।

একদিন সময় এসে গেল। রায় বাড়িতে অনুষ্ঠান। বিধিলা বৈষ্ণব এলো, শিলাও গেল। অন্ন ভোগের জন্য সব কাজ-কর্ম চলছে। রান্না বান্না চলছে। অন্ন ভোগের রান্নার জন্য শিলা সব্জী কেটে দিল, চাল-ডাল ধোয়ে দিল, পাটাতে হলুদ বেটে দিল, জিরা বেটে দিল। ততক্ষণে বিধিলা বৈষ্ণব পূজা করতে বসে শিব ঠাকুর পেয়ে বসেছে। অজ্ঞান হয়ে লোকের সমস্যা সমাধান করছে। অনেক্ষন হল শিব ঠাকুর আর যায় না, বিধিলা বৈষ্ণবের অজ্ঞানতা ও আর কাটে না। মহিলারা ভেবে পাচ্ছে না এখন কি হবে? হৈ-চৈ পড়ে গেল। কে যেন বলল "পূজার শঙ্খের জল তাড়াতাড়ি চোখে মুখে ছিটিয়ে দাও।" ব্যাস। শিলা তখন পাটাতে মরিচ পিষছিল। ও কথা শোনা মাত্রই সে এক দৌড়ে সেই শঙ্খ হাতে নিয়ে তার জল বিধিলা বৈষ্ণবের চোখে মুখে ছিটিয়ে দিল। বিধিলা বৈষ্ণবে কি অবস্থা হল তা সহজেই অনুমেয়। নকল শিব ঠাকুর পালানোর আগেই, এক লাফে বিধিলা বৈষ্ণব উঠে বসল আর মরিচের জ্বালায় চীৎকার করতে লাগল। কেউ কিছু বুঝতে পারছে না, কি হয়েছে, কি লাগবে?

বিধিলা বৈষ্ণব জল জল বলে কান্না জুড়ে দিল। সবাই ছুটাছুটি করে জলের পর জল নিয়ে গেল। সামান্য জলে সেই জ্বালা মিটল না। আর ওদিকে শিলাকে আর বেশ কিছুদিন খোঁজেই পাওয়া গেল না। সে সোজা বাপের বাড়ি।

তার পর থেকে বিধিলাকে আর শিব ঠাকুর ভর করে না। পাড়ার দুষ্ট ছেলেরা বিধিলা বৈষ্ণবের নতুন নাম দিল শিলা বৈষ্ণব। তার পেছনের কারণ হল কেউ বিধিলা বৈষ্ণবের সামনে শিলার নাম উচ্চারণ করলেই বিধিলা বৈষ্ণব প্রচণ্ড রেগে যেত। পাড়ার দুষ্ট ছেলেরা একটা ছড়াও বানাল “শিলা তুমি কি করিলা? বিধিলার ধ্যান ভাঙ্গিলা?” পাড়ার ছেলে-বুড়ো সবার মাঝেই ছড়াটা বেশ জনপ্রিয় ছিল।


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717
All Stories     7    8    9    10    (11)     12    13    14    ...