Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

নবরত্ন সভা

নবরত্ন সভা

Choose language:   English     Bengali

◄ All Articles

This article is regarding the Navaratna Sava.
Last updated on: .
Language: Bengali.
Choose language:   English     Bengali



-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

পরিচয়
ভারতের ইতিহাসে ২টি নবরত্ন সভা ছিল।

প্রথম নবরত্ন সভা ছিল দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের সভাতে। উনাকে আমরা বিক্রমাদিত্য নামেও চিনি। দ্বিতীয় নবরত্ন সভা ছিল আকবরের সভাতে।

নবরত্ন মানে হল নয়টি রত্ন। এই নবরত্নরা প্রত্যেকেই নিজের নিজের বিদ্যায় অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। নিজের বিদ্যাতে তারা ছিলেন স্বয়ং সম্পূর্ণ। প্রত্যেকেই ছিলেন প্রচণ্ড প্রতিভাবান, জ্ঞানী, তীক্ষ্ণ বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তি।

নীচে প্রত্যেকের বর্ণনা দেওয়া হল।

আকবরের নবরত্ন সভা

আকবরের নবরত্ন সভাতে যারা ছিলেন তাদের নাম হলঃ

১. আবুল ফজল Abul Fazal
২. আব্দুল রহিম খান Abdul Rahim Khan
৩. বীরবল Birbal
৪. ফইজি Faizi
৫. ফকির আজিওদ্দিন Faqir Aziao Din
৬. মান সিং Man Singh
৭. মোল্লা দো পিয়াজা Mullah Do Piaza
৮. তানসেন Tansen
৯. তোডর মল Todar Mal

◕ ১. আবুল ফজল
আমরা উনাকে আকবরের রাজত্ব কালের ধারাভাষ্যকার বলতে পারি। তিনি ছিলেন আকবরের আত্মজীবনী, আকবর-নামা'র লেখক। তিনি অনেকগুলি বই লিখেছিলেন। তাদের মধ্যে আকবর-নামা এবং আইন-ই-আকবরই প্রধান। আইন-ই-আকবরই ছিল আকবরের আইন-কানুন বিষয়ক বই।

এত সবের পাশাপাশি তিনি একজন যোদ্ধাও ছিলেন। তিনি আকবরের দাক্ষিণাত্য অভিযানের সময় একটি মোগল বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই দাক্ষিণাত্য থেকে ফিরার সময় আবুল ফজলকে হত্যা করা হয়। উনার হত্যাকারীর নাম ছিল বীর সিং। রাজকুমার সেলিমের আদেশে বীর সিং আবুল ফজলকে হত্যা করেছিল। কারণ আবুল ফজল, সেলিমের সিংহাসন লাভের বিরোধিতা করছিলেন।

◕ ২. আব্দুল রহিম খান
তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত কবি, গায়ক, গীতিকার ও জ্যোতিষশাস্ত্রী। তিনি ছিলেন সেই বৈরাম খানের পুত্র, যিনি হুমায়ুনের মৃত্যুর পর সম্রাট আকবরের অভিভাবক হিসাবে সাম্রাজ্য পরিচালনা করেছিলেন। আব্দুল রহিম খান, উনার হিন্দু দোহার জন্য খুব প্রসিদ্ধি পেয়েছিলেন। উনার দোহা আজো আমরা গাই। উনাকে আমরা রহিম নামেই চিনি।

◕ ৩. বীরবল
বীরবলের আসল নাম ছিল মহেশ দাস। তিনি বহু ভাষাতে পারদর্শী ছিলেন। তিনি ব্রজবুলি ভাষায় গান ও কবিতায় অত্যন্ত পারদর্শী ছিলেন। গায়ক ও কবি হিসেবেই প্রথমে তিনি আকবরের সভাতে নিযুক্ত হয়েছিলেন। পরে তিনি উনার প্রতিভা, উপস্থিত বুদ্ধি ও বিচক্ষণতায় আকবরের সভার মুখ্য সদস্য হয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি মুখ্যত শাসন ব্যবস্থা ও সেনা পরিচালনার কাজে নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি উত্তর পশ্চিম ভারতের স্বাত ঘাটিতে ( বর্তমানে যাহা পাকিস্তানে অবস্থিত ) আফগানে উপজাতিদের সাথে এক যুদ্ধের সময় মারা যান।

◕ ৪. ফইজি
তিনি ছিলেন একজন বিদ্বান ও একজন কবি। তিনি ছিলেন আবুল ফজলের বড় ভাই। আকবর উনার প্রতিভা ও জ্ঞানে এতই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি ফইজিকে নিজের পুত্রদের শিক্ষার কাজে নিযুক্ত করেন। তিনি পঞ্চতন্ত্র, রামায়ণ ও মহাভারত পার্সি ভাষাতে অনুবাদ করেছিলেন।

◕ ৫. ফকির আজিওদ্দিন
তিনি ছিলেন আকবরের একজন মুখ্য উপদেষ্টা এবং আকবরের খুব ঘনিষ্ঠদের মধ্যে একজন। আকবর উনার উপদেশ বা যুক্তিকে খুব গুরুত্ব দিতেন।

◕ ৬. মান সিং
তিনি অম্বরের রাজা ছিলেন। বর্তমানে যাহা জয়পুর নামে অবহিত। তিনি আকবরের খুব বিশ্বস্ত ছিলেন। বহু যুদ্ধে তিনি আকবরকে খুব সাহায্য করেছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল বিহার, উড়িষ্যা ও দাক্ষিণাত্যের যুদ্ধ। তিনি মোগল সাম্রাজ্যের আফগান ও পরে বাংলা প্রান্তের মোগল প্রতিনিধি ছিলেন।

◕ ৭. মোল্লা দো পিয়াজা
তিনি ছিলেন লোক গাথা ও লোক সংগীতে মাহির। পাশাপাশি বীরবলের মতই তিনিও ছিলেন প্রতিভাবান, বিচক্ষণ ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধির একজন সভাসদ। উনাকে বীরবলের প্রতিপক্ষ হিসেবেই ধরা হয়। তিনিও সম্রাট আকবরের একজন মুখ্য উপদেষ্টা ছিলেন।

◕ ৮. তানসেন
তিনি ছিলেন ভারতের সর্বকালের সেরা সংগীতজ্ঞ। তিনি ছিলেন একজন মহান শাস্ত্রীয় গায়ক, গীতিকার, বাদক। এই কালজয়ী সংগীতজ্ঞ অনেক রাগ রাগিণীর জন্ম দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হল মিঞা কী মলহার, মিঞা কী তোডী, দরবারী কান্ডারা ইত্যাদি। উনার বাবা ছিলেন মুকুন্দ পাণ্ডে , একজন কবি ও গায়ক যিনি কিছুদিনের জন্য বারানসিতে এক মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন। তানসেনের ছেলেবেলার নাম ছিল রামতনু পাণ্ডে। তিনি তখন তন্না মিশ্রা নামেও পরিচিত ছিলেন। বৃন্দাবনের মহান হরিদাস স্বামী ছিলেন তানসেনের গুরু। তানসেন নামটি রাজা মান সিং তোমরের দেওয়া। পরবর্তী সময় তানসেন মোহম্মদ আত্তা খান নামেও পরিচিত ছিলেন।

◕ ৯. তোডর মল
তিনি ছিলেন আকবরের অর্থ মন্ত্রী। তিনি ছিলেন ঐ সময়ে পৃথিবীর কয়েন শ্রেষ্ঠ গণিতজ্ঞের মধ্যে একজন। আকবরের অর্থমন্ত্রী হওয়ার পূর্বে তিনি ছিলেন সম্রাট শের শাহের অর্থমন্ত্রী। শের শাহ মারা যাবার পর, সম্রাট আকবর, তোডর মলের প্রতিভা, নিষ্ঠা, পরিকল্পনা ও জ্ঞান দেখে অভিভূত হয়ে যান ও উনাকে নিজের অর্থমন্ত্রী করে রাখেন। উনি বহুদিনের নিরীক্ষণ ও গবেষণার পর মানুষের আয় ও তার জমির পরিমাণের সাথে তার প্রদেয় করের পরিমাণ ঠীক করে দেন। কর এবং আয় নিয়ে উনার অনেক ধারনা ও গণনা আজো ভারতের সহ বহু দেশে প্রচলিত আছে। উনি কাশির বিশ্বনাথ মন্দিরকে ১৫৮৫ সালে পুনরায় ঠিক, ঠাক করে তৈরী করেছিলেন। তিনি পার্সি ভাষায় ভাগবত পুরাণ অনুবাদ করেন।

বিক্রমাদিত্যের নবরত্ন সভা

বিক্রমাদিত্য ভারতের ইতিহাসের একজন কালজয়ী শাসক ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন জ্ঞানী, সাহসী, পরাক্রমী ও বুদ্ধিমান রাজা। রাজা বিক্রমাদিত্য সম্পর্কে হাজারো গল্প ছড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে বেতাল পচ্চিসী এবং বত্রিশ সিংহাসন প্রধান। বিক্রমাদিত্যের শাসন কালে চীনা পরিব্রাজক ফা হিয়াং ভারতে এসেছিলেন। তিনি উনার রচনাতে বিক্রমাদিত্য সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য লিখে রেখে যান।

বিক্রমাদিত্যের যে নবরত্ন সভা ছিল তার মধ্যে ছিলেনঃ
১. অমরসীমা Amarasimha
২. ধন্বন্তরি Dhanvantari
৩. ঘাটকাপুরা Ghatakarpura
৪. কালিদাস Kalidasa
৫. ক্ষপণক Kshapanka
৬. শঙ্কু Shanku
৭. বরাহমিহীর Varahamihira
৮. বররুচি Vararuchi
৯. বেতাল ভট্ট Vetala Bhatta

◕ ১. অমরসীমা
অমরসীমা অথবা অমর সিংহ ছিলেন একজন সংস্কৃত কবি ও ব্যাকরণবিদ। তিনি ছিলেন প্রাচীন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিধান রচয়িতা। তার নামেই অভিধানটি অমর কোষ নামে পরিচিত। সংস্কৃত ভাষায় রচিত এই অমর কোষ একটি বিশাল জ্ঞানপুঞ্জ। এই অমর কোষ হল মুখ্যত সংস্কৃত এক শব্দ ভাণ্ডার। এটিতে স্বর্গবর্গ, ব্যোমবর্গ, পাতালবর্গ, কালবর্গ ও বনৌষধিবর্গ ইত্যাদি বিভাগ ছিল। এটি পদ্য ও শ্লোক আকারে রচিত ছিল। উনার সম্পর্কে আমরা খুব বেশী জানতে পারিনা কারণ উনার প্রায় সব লেখা বা বর্ণনা ধ্বংস হয়ে যায়।

◕ ২. ধন্বন্তরি
উনাকে সর্বকালের সেরা চিকিৎসক হিসাবে দেখা হয়। আয়ুর্বেদ ও শল্যচিকিৎসায় উনি এক দীপ্তিমান সূর্য ছিলেন।

◕ ৩. ঘাটকাপুরা
যদিও উনি একজন সংস্কৃত কবি ছিলেন তবে তিনি তার বাস্তুকারীতা ও বাস্তুশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করেছিলেন।

◕ ৪. কালিদাস
সমগ্র পৃথিবীর সর্বকালের সেরা কবিদের মধ্যে কবি কালিদাস অন্যতম। উনি সংস্কৃত ভাষায় কালজয়ী লেখা লিখে রেখে গেছেন। উনার লেখাগুলির মধ্যে অন্যতম হল অভিজ্ঞানশুকুন্তলম, রঘুবংসম, কুমারসম্ভব, মেঘদূত প্রভৃতি।

◕ ৫. ক্ষপণক
তিনি ছিলেন বিক্রমাদিত্যের সভার একজন মহান জ্যোতিষশাস্ত্রী।

◕ ৬. শঙ্কু
তিনি ছিলেন একজন অতি দক্ষ ও কুশল বাস্তুকার।

◕ ৭. বরাহমিহীর
তিনি ছিলেন একজন গণিতজ্ঞ, একজন জ্যোতির্বিদ। উনার লেখা পঞ্চসিদ্ধান্তিকা ছিল উনার শ্রেষ্ঠ কর্ম গুলির মধ্যে একটি।

◕ ৮. বররুচি
তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত ও ব্যাকরণবিদ।

◕ ৯. বেতাল ভট্ট
তিনি ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ। উনার লেখা ১৬ পঙক্তির নীতি প্রদীপের জন্য পৃথিবী চিরকাল উনাকে স্মরণ করবে।
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717


◕ বাংলা উপন্যাসঃ
কানামাছি
দেহরক্ষী