Last updated on: 23rd Aughust 2017.
কসবা কালীবাড়ি ও ভাদ্র মেলা
■ ত্রিপুরার ভাদ্র মেলা
প্রতি বছর ভাদ্র মাসের ভাদ্র আমবশ্যার আগে ত্রিপুরার কসবা কালীবাড়িতে মহা ধুমধাম করে ভাদ্র মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এই মেলাতে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ভারত-বাংলাদেশের প্রচুর লোক সমাগম হয়।
এই বছর ২০.০৮.২০১৭ তারিখে কসবা কালীবাড়িতে ২ দিন ব্যাপী ভাদ্র মেলা শুরু হয়েছে।
■ কসবা কালীবাড়ির প্রতিমা
কালীবাড়ি হিসেবে পরিচিতি পেলেও বাস্তবে মূর্তিটি দেবী দুর্গার।
মহিষাসুরমর্দিনী সিংহবাহিনী দেবীর দশ হাত। দশ হাতে দশ রকমের অস্ত্র। পদ প্রান্তে রয়েছে শিবলিঙ্গ। মূর্তিটি কালো কষ্টিক পাথরে তৈরী। মায়ের এমন প্রতিমা পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই।
তাই ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে এই কালীবাড়ির ঐতিহ্য বিশ্বে বিরল।
■ মন্দির প্রতিষ্ঠা
আজ থেকে প্রায় ৫২০ বছর আগে মহারাজ ধন্যমাণিক্য এই মন্দির ও মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। তবে কথিত আছে যে, মহারাজ কল্যাণ মাণিক্য স্বপ্নাদেশে এই মূর্তির খোঁজ পেয়েছিলেন।
তিনি স্বপ্নাদেশ মত তৎকালীন শ্রীহট্ট জেলার হবিগঞ্জের এক ব্রাহ্মণ পরিবার থেকে অতি সম্মানের সাথে এই প্রতিমা কৈলারগড়ে নিয়ে আসেন।
পরবর্তী সময় মহারাজ ধন্যমাণিক্য কসবাতে মন্দির তৈরী করে প্রতিমাটি প্রতিষ্ঠিত করেন। এখনো এই মন্দিরে পূজার সময় রাজবংশের নামেই সংকল্প করা হয়।
■ মন্দিরের পুরোহিত
তিনি এই মন্দিরে পূজা দেবার জন্য তৎকালীন কসবার জাজিশার থেকে দুটি ব্রাহ্মণ পরিবারকে মন্দিরে নিয়ে আসেন।
আজো তারাই কসবা কালীবাড়িতে মায়ের পূজা দিয়ে আসছেন।
■ মন্দিরের পূজা অর্চনা
এই মন্দিরের পূজা অর্চনাও এ বিরল ও ভিন্ন প্রথা মেনে হয়। কালীবাড়ি হিসাবে পরিচিতি পেলেও সাধারণ কালী পূজার কোনও নিয়ম বা মন্ত্রোচ্চারণ এখানে হয় না। কালী নামেও ভক্তদের অঞ্জলি দেওয়া হয় না।
সাধারণ কালি পূজা বা দুর্গা পূজার নিয়ম ও মন্ত্রাদি থেকে এই পূজা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পূজা অর্চনার যে রীতি স্বপ্নাদেশে পাওয়া গিয়েছিল, তা মেনেই আট প্রজন্ম ধরে পুরোহিতরা এখানে পূজা করে আসছেন।
একমাত্র দেওয়ালি রাত ছাড়া এই মন্দিরে কোন নিশিপূজা হয় না। সন্ধ্যা আরতির পরেই মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। একমাত্র দেওয়ালীর রাতে এখানে নিশিপূজা হয় এবং মন্দিরের দোয়ার সারা রাত খোলা থাকে।
আবার ভাদ্র অমাবস্যায়, ভাদ্র মেলার সময় মন্দিরে দিনের বেলায় যে পূজা হয় তার নিশিপূজা হয় আগরতলার রাজবাড়ি সংলগ্ন দুর্গাবাড়িতে।