Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

শশাঙ্কের শিলমোহর - পর্ব ৪

বাংলা গল্প

All Bengali Stories    116    117    118    119    120    121    122    123    (124)     125    126   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



শশাঙ্কের শিলমোহর - পর্ব ৪
বাংলা গল্প
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতার ( নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার , ২০২১) একটি নির্বাচিত গল্প
Writer: - Dr. Ipsita Bhattacharjee, Sahid Nagar, Dhakuria, Kolkata


অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১    পর্ব ২    পর্ব ৩    পর্ব ৪    পর্ব ৫    পর্ব ৬    পর্ব ৭    পর্ব ৮    পর্ব ৯    পর্ব ১০    পর্ব ১১    পর্ব ১২   

## শশাঙ্কের শিলমোহর - পর্ব ৪
"আপনি তো পুরো গোয়েন্দা হয়ে গেলেন ম্যাডাম..." গদগদ স্বরে নুর ফোন করে বলল দুদিন পর।

জয়ী তখন অফিসে, কিন্তু আজ শেরি স্যার আশেপাশে ছিলেন, তাই রিসিভ করতে পারেনি জয়ী। বাড়ি ঢুকেই নুরকে ফোন করল জয়ী।

"ডঃ দুর্গামোহন মুখোপাধ্যায় আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে, ভৈরব নামে একটি কাল্টকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন। আমার সোর্স অনুযায়ী দুর্গাবাবুর সাহায্য ছাড়া পুলিশ কিছুতেই এদের চিহ্নিত করতে পারত না। তারা ব্যাপারটা সিরিয়াল কিলিং-এর দিক থেকে তদন্ত করছিল। দুর্গাবাবুই নাকি এই দলটার অস্তিত্বের আবিষ্কার করে। এদের নাকি একটা প্যাটার্ন ছিল, এরা ভিকটিমের এক-একটি হার বা অস্থি সংগ্রহ করে ভৈরবের একটি বিগ্রহ বানিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করত। এদের এই বিষয়টা নাকি এর... মানে...ইউনিক।" ফোন তুলেই এক নিশ্বাসে বলে গেল নুর। এসব কথা শুনে জয়ীর গা গুলোচ্ছিল। তবে তার সঙ্গে আর একটা জিনিসও মনে হচ্ছিল। এবং সে সেইটা স্বগতোক্তির মত বলে ফেলল, "যারা এর সঙ্গে জড়িত, তারা যদি কোনরকম সাজা পেয়ে থাকে, তবে প্রতিহিংসা থেকেও তো..."

নুর বলে উঠল, " কি বলছেন ম্যডাম! এতো সাংঘাতিক কাণ্ড!!"

"সম্ভাবনা কিন্তু থেকে যাচ্ছে একটা..." তারপর এক মুহূর্ত চুপ করে বলল, "অতুলবাবু, হ্যাঁ, অতুলবাবু এ বিষয়ে কিছু জানতে পারেন। না হলেও ওর জানা দরকার। নুর, আমি ওনাকে সব বলব। কিন্তু তুমি একটু সময় করে একটু দেখা কর, প্লিজ, আমার হয়ে।"

নুর বুঝে পেল না কি বলবে। একটু আমতা-আমতা করে বলল, "আমার কথার চাইতে আপনার কথায়...মানে ....কাজ হবে বেশী।"

"আমি বলবই, কিন্তু তুমি প্লিজ একবার দেখা করো।"

কিন্তু এর কোনটাই হয় নি। অতুলবাবু যেন উবে গেছেন। ফোন সুইচ অফ, ই-মেইলের উত্তর নেই। নুরও পরদিন জানাল যে, মিউজিয়ামে গিয়েও বিফল হয়েছে সে। জয়ী শেষে বাধ্য হয়ে দুর্গাবাবুর সেক্রেটারিকে একটা মেইল করল। তাদের সদ্য আবিষ্কৃত তথ্য সংক্ষেপে লিখে এও জানাল যে, তিনি অনায়াসে এই তথ্য পুলিশের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন।

তারও কোনও উত্তর এল না। হঠাৎ উত্তর এলো অন্য ভাবে।

সেইদিন অফিসে আচমকা রিসেপশন থেকে ডাক পড়ল জয়ীর। এক্সটেনশন-এ ফোন তুলে উত্তর দিল জয়ী। রিসেপশন থেকে মিস বোস, "আপনার একটা ফোন আছে।" তারপরে অপর প্রান্তে এক কণ্ঠ বলে উঠলেন, " জয়ী বোস কথা বলছেন?"

"বলছি" ভ্রু কুঁচকে বলল জয়ী।

"আমি রজত বলছি, দুর্গাবাবুর ..."

"বলুন, বুঝতে পেড়েছি, কেমন আছেন আপনি?" ভীষণ অবাক হয়ে বলল জয়ী। এই ফোনটার জন্য মোটেই তৈরি ছিল না সে।

"কিছু মনে করবেন না, আপনাকে এইভাবে অফিসে যোগাযোগ করলাম বলে। আমার মোবাইলটা আসলে চুরি গেছে। তাই বাধ্য হলাম এইভাবে ...আর কি।"

"না, কোনও ব্যাপার না, বলুন..."

"আপনার মেইলটা পেলাম। এই বিষয়ে আমি হয়ত কিছু আলোকপাত করতে পারি। আপনি কি পরশু একবার এইদিকে আসতে পারেন। মানে মালদায়। বেশ জরুরী বিষয়।"

এক মুহূর্ত ভাবল জয়ী। রজতবাবুর স্বরে এক রকম দৃঢ়তা ছিল যেটা কিছুতেই অগ্রাহ্য করা যায় না। "আমি কালই বিকেলে আসব, " বলল জয়ী।

#
বারান্দার দাড়িয়ে সামনের রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন রজতবাবু৷ এই সময়টায় তিনি ডঃ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির ছাদটায় গিয়ে কাজ করতেন। বিকেলের শেষ আলো কমে আসার সঙ্গে-সঙ্গে সামনের গলিটার হ্যালোজেন ল্যাম্পগুলো জ্বলে উঠল। শীতের সময়টা এই আলো আর কুয়াশা মিলেমিশে এক ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে। কতদিন পরে তিনি এইভাবে নিশ্চিন্তে রাস্তা দেখতে পারছেন। শুধু...

সামনের রাস্তায় বেশ কিছু মানুষ অলস ভাবে হাঁটাচলা করছে। আজকে এমনিতেই ছুটির দিন, তাই লোকজন বেশ কম। কিন্তু এই পরিবেশেও এক রকম উদাসীনতা গ্রাস করে চলছে তাকে। ভাবতে কষ্ট হচ্ছে যে, ডাঃ মুখার্জির ঐ সুন্দর ছাদটায় আর কোনদিন যাওয়া হবে না। ঐ মহান মানুষটার সাথে আর কখনও কথা হবে না। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন রজত।

শেষ ক'টা দিন তার খুব উত্তেজনায় কেটেছে। পুলিশ, জেরা, খবরের কাগজ...তিলে-তিলে শেষ করে দিচ্ছিল রজতকে। এমনকি এক সময় সে তার মেন্টর দুর্গাবাবুকেও দুষতে শুরু করেছিল। কিন্তু তারপরেই, আদিত্যবাবু আসায় জেরা খানিকটা হাল্কা হয়। ওনার আসার পড়েই অনুমতি নিয়ে রজত নিজের বাড়ি চলে যায়। এক গাদা চিন্তার ভিড়ের মাঝখানে রজত নিজের মোবাইলটায় নজর দিল। কল লগ থেকে জয়ীতা বোসের নাম্বারে ফোন করল। নাঃ, ফোন লাগছে না। অনেক সময় ট্রেনে থাকলে নেটওয়ার্ক থাকে না। তাহলে ট্রেন হয়তো ঢোকেনি। ম্যাডামের সাথে শীগগির কিছু কথা বলা দরকার। এবং শুধুমাত্র রজতই পারে তাকে সাহায্য করতে।

"আপনি কি আমায় দুর্গাবাবুর আত্মীয়ের ব্যাপারে বলতে পারেন? ওনারা কিছু যদি...." বলেছিল জয়ী।

@@ রজতবাবু, ফোন নম্বর ও ই-মেইল আইডি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এও জানতেন, জয়ীতা যা জানতে চান, তা আদিত্যবাবু বা তার বোন জানাতে পারবেন না। ডাঃ মুখার্জির ছেলে-মেয়েরা তার কাজ এবং মানুষটার থেকে বরাবরই দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন। বেঁচে থাকতে অকপটে এ কথা স্বীকার করতেন ডঃ মুখোপাধ্যায়। ওনার মৃত্যুর পর অবশ্য রজত নিজেই বিষয়টা বুঝে গেছিল। দুর্গাবাবুর উইল রিডিং-এ আমন্ত্রণ পেয়ে প্রথমটা অবাকই হয়েছিল রজত। এক দু-বার ভেবেছিল যাবে না। কিন্তু আদিত্যবাবুর অনুরোধ অগ্রাহ্য করতে পারেনি সে। বিশেষ করে যখন তার সুপারিশেই জেরার থেকে খানিক নিষ্পত্তি হয়েছিল রজতের। কিন্তু চমকটা সে পেয়েছিল সেইখানে যাওয়ার পরে।

"ইয়ে, মানে তোমাকে ডাকার উদ্দেশ্য একটা আছে। বাবা তোমাকে নিজের যাবতীয় গবেষণা ও পড়াশোনার কাগজপত্রের ট্রাস্টি করে গেছেন। আমরা চাই তুমি অবিলম্বে এর দায়িত্ব নাও। দেখ, আমরা বাবার কাজ থেকে বরাবরই দূরত্ব রেখে এসেছি। এটা বলতে দ্বিধা নেই যে বাবার মৃত্যুর জন্য তার কাজেকর্মের বড় একটা অবদান আছে। তুমি এইগুলোর দায়িত্ব নিয়ে, আমাদের দায়মুক্ত কর।" বলেছিলেন ডাঃ মুখার্জির পুত্র আদিত্যবাবু। তারপর ডঃ মুখোপাধ্যায়ের সমস্ত Intellectual Property-র মালিকানা চলে আসে রজতের কাছে। এক ফেরিওয়ালার হাঁকে রজতের পুরানো চিন্তায় ছেদ পড়ল। জয়ীতা ম্যাডামের এতক্ষণে চলে আসার কথা। ঝটিতি মোবাইলটা নিয়ে একটা কল করল। তার ফোন এখনও সীমানার বাইরে। তাহলে কি ট্রেন লেট করছে? ট্রেনের তথ্য যে ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়, সেইটা খুলতে যাবে, এমন সময় একটা আওয়াজে চমকে উঠল রজত। অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। রজতের ঘরে কেবলমাত্র সামনের হ্যালোজেনের আলো প্রতিফলিত হচ্ছে। কেউ একজন দরজা খুলে ঘরে ঢুকেছে। কিন্তু দরজা তো রজত নিজে বন্ধ করেছিল! তবে!
Next Part


All Bengali Stories    116    117    118    119    120    121    122    123    (124)     125    126   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717