Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

শশাঙ্কের শিলমোহর - পর্ব ৯

বাংলা গল্প

All Bengali Stories    116    117    118    119    120    121    122    123    (124)     125    126   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



শশাঙ্কের শিলমোহর - পর্ব ৯
বাংলা গল্প
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতার ( নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার , ২০২১) একটি নির্বাচিত গল্প
Writer: - Dr. Ipsita Bhattacharjee, Sahid Nagar, Dhakuria, Kolkata


অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১    পর্ব ২    পর্ব ৩    পর্ব ৪    পর্ব ৫    পর্ব ৬    পর্ব ৭    পর্ব ৮    পর্ব ৯    পর্ব ১০    পর্ব ১১    পর্ব ১২   

## শশাঙ্কের শিলমোহর - পর্ব ৯
কলকাতার বিমানবন্দরের ডিপারচার গেটে অপেক্ষা করছিল জয়ী। সময় তো প্রায় হয়েই এল। নুরের ফোনও আনরিচেবল বলছে। নুর তো সাধারণত এত দেরী করে না। ওর কোনও ক্ষতি হল না তো! ভোরবেলার কুয়াশায় প্রায় টার্মিনাল ঘিরে রেখেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও লোকের ভিড় প্রচুর। উঁচু ট্রলির-পাহাড়ের কোলাহলে, ছোট বড় মানুষের কল-কাকলিতে ভরে গেছে। উপস্থিত অনেকের মধ্যেই জয়ী দেখল একটা উত্তেজনা উচ্ছ্বাস রয়েছে। বেরানোর আনন্দ স্পষ্টই ফুটে উঠছে। জয়ীর মনেও হয়ত একই রকম উচ্ছ্বাস হত, হয়তো আরও অনেকটা বেশী। কিন্তু অজানাকে জানার যাত্রার যে ভারি প্রতিদান দিতে হয় তা দুর্গামোহনবাবু নিজের প্রাণ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন। জয়ীর উপরও হামলা হতে-হতেও হয়নি। সুতরাং অদৃষ্টে যে কি আছে তা কে জানে! আসাম যাওয়ার পরিকল্পনা সে সমস্ত ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই নিয়েছে। কিন্তু এখন কেন জানি একটা অজানা আতঙ্ক গ্রাস করছে তাকে। বিশেষ করে নুর যখন যাবে বলল। জয়ী তাকে সম্ভাব্য সমস্ত রকম বিপদের কথা বলেছিল। তা শুনে সে রীতিমত 'হাঁ হাঁ' করে উঠল। তাকে নাকি নিয়ে যেতেই হবে। জয়ী সঙ্গী পেয়ে খুশিই হয়েছিল, কিন্তু এখন তার দেরী দেখে উদ্বেগ বাড়ছে। ঘন-ঘন ঘড়ি দেখতে লাগল সে। শেষে একটি নীল উবার থেকে তাকে বেরোতে দেখে নিশ্চিন্ত হল জয়ী। ক্যাব ছেড়ে এগিয়ে এসে নুর বলল, "মিস মার্পেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাজির, ম্যাডাম। আপনি আসাম যাচ্ছেন শুনে নিজেকে আটকাতে পারলাম না। কিন্তু কিভাবে এই ব্যাপারটা ঘটল? কেন যাচ্ছেন? সেইটা কবে বলবেন?"

জয়ী হাসল, "ক্রমশ প্রকাশ্য,চেক-ইন করে নাও। উদ্দেশ্য আর উপলক্ষ্য দুই বলব।"

বিমানবন্দরের ভিতরে লাগেজ স্ক্যানের লাইনে দাড়িয়ে জয়ীর মনে হল কেউ যেন তাকে দেখছে। লাইনে আজ বিস্তর ভিড়। হই-হট্টগোলের মধ্যে দিয়ে চেক-ইন, আর সিকিউরিটি চেকের পর, জয়ী আর নুর বোর্ডিং গেটের সামনে এসে দাঁড়াল। নুর বলল, "হাতে একঘণ্টা সময় আছে? একটু কফি আনি? খেতে-খেতে শুনব।"

জয়ী বলল, "একদম, কিন্তু আমি খাওয়াব, তুমি আরাম করে বস," বলে জয়ী উঠে কাউন্টারের দিকে গেল। কফি কাউন্টারে তিন-চার জন লোক কিউ করে আছে, হাতে কুপন নিয়ে অপেক্ষা করছে ধূমায়মান পেয়ালার স্বাদ পেতে। জয়ী পেমেন্ট কাউন্টারে গিয়ে দুটো কফির অর্ডার দিয়ে কুপন নিল।

ঠিক তখনই তার পিছনে খ্যানখ্যানে গলায় একটি লোক পিছন থেকে বলে উঠল, "ম্যাডাম, দেখুন তো আপনার কিনা?"

লোকটির আপাদমস্তক একটি কালো অভারকোটে ঢাকা গাল ভর্তি দাড়ি, বেশ লম্বা এবং দাঁতগুলো যেন তুলনায় একটু ছোট; সব মিলিয়ে একটু অবাকই লাগল জয়ীর। দুটো ১-টাকার কয়েন পড়েছে মাটিতে, হাত বাড়িয়ে সেইটাই এগিয়ে দিল আগন্তুক। পয়সা পার্সে ঢুকিয়ে, কফি দুটো হাতে নিয়ে, "থ্যাঙ্ক ইউ" বলে সিটের দিকে পা বাড়াল জয়ী। খানিকদূর এগিয়ে একবার ঘুরে তাকিয়ে দেখল সেই আগন্তুক তার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। হয়তো কিছুই না, কিন্তু ভীষণ অস্বস্তি লাগতে শুরু করল জয়ীর।

"এদিকে দিন ম্যাডাম," সিটে আসতেই নুর এগিয়ে কফির ট্রেটা নিয়ে জয়ীকে বসার জায়গা করে দিল, "বাঃ, বেশ করেছে কফিটা, নিন এইবার বলুন কি ব্যাপার?"

সিটে হেলান দিয়ে জয়ী বলল, "এই বিষয়টাতে ভাষাতত্ত্বের এক বিশেষ যোগাযোগ আছে। সময়-সময় এই ভাষা এক একটি করে সূত্র যুগিয়ে চলেছে। প্রথম ঘটনাটা মনে পড়ে? সেই ক্যালেন্ডার? সেই ক্যালেন্ডারে এবং পাঁচ তারিখে চিহ্ন দেখে, আমার প্রথম মনে হয় যে দুর্গাবাবুর সাথে তার কোনও অমীমাংসিত বা অসমাপ্ত গবেষণার যোগ আছে। যদিও অফিসার, অতুলবাবু, শেরি আমার এই থিয়োরির সাথে একমত হন না। কিন্তু ওনার মৃত্যুর সাথে যে আন্তর্জাতিক কোনও দল নয়, এতে স্থানীয় কোনও দলের যোগাযোগ আছে... এই দেখ," বলে জয়ী ডাকে পাওয়া আগের দিনের হুমকির চিঠি বাড়িয়ে দিল।

অবাক হয়ে নুর কাগজটা নিয়ে নিল এবং দেখে, সে প্রায় কেঁপে উঠে বলল, "এ...এ তো হুমকি।"

জয়ী হেসে বলল, "সেইটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। লেখাগুলো দেখ। খুব ভাল করে "র" লেখাটা লক্ষ্য কর। নির্দ্বিধায় বলা চলতে পারে যে এটা অসমীয়া হরফের মত করে লেখা। আর এই কেসটার সূত্রপাত ও আসাম থেকে। আসামের একটি শৈব কাল্ট থেকে দুর্গাবাবু শিলমোহরটি পান। এরপর প্রায় তিন বছর নানা রকম খোঁজ, গবেষণা ও পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন যে শিলমোহরটি সত্যিই অতি প্রাচীন। আমার ধারণা উনি অনেক আগেই ঐ শিলমোহর মিউজিয়ামে তুলে দিতেন, যদি না..."

"কি??" প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করল নুর।

"যদি না তিনি ঘটনাচক্রে, মোহরটির পিছনে কিছু লেখা আবিষ্কার করতেন। সাধারণ ক্ষেত্রে এইধরনের শিলমোহরে শ্রীমন্তের বা মহারাজের কোনও কৃতিত্ব বা গৌরব উল্লিখিত থাকে। গোঁড়ায় দুর্গাবাবুও সেইরকম ভেবেছিলেন। কিন্তু শিলমোহরটি যেহেতু ক্লাসিফাইড নয় অর্থাৎ তখনও পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত ছিল, তাই নিজেই বক্তব্যটি উদ্ঘাটন করার চেষ্টা করেন। এবং সেই করতে গিয়ে ওনার হাতে এক অজানা লুকিয়ে থাকা ইতিহাস বেরিয়ে আসে। দুর্গাবাবু চেয়েছিলেন তার প্রিয়পাত্র রজতবাবু এই ইতিহাসটি সবার সামনে বের করে আনুন। কিছুদূর হয়তো উনি এগিয়েও ছিলেন, কিন্তু শেষে তিনিও আক্রান্ত হন।"

নুর হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।

জয়ী বলে চলল, "দুর্গাবাবু কিভাবে ঐ স্ক্রিপ্টগুলো ডিডিউস করলেন তা আমি জানি না। শুধু এ কথা জানি যে, তিনি পেরেছিলেন, এবং সে তথ্য তিনি একটি মরণোত্তর চিঠি লিখে রজতবাবুকেও জানান। ওনার ধারণা ছিল যে, এই শিলমোহর একটি সংকেত। দুর্গাবাবু যা লিখে গেছেন তার ভিত্তিতে এটা অবশ্য আমার একটা থিয়োরি এই যে, এই মোহর তৈরি হয় মহারাজ শশাঙ্কের মৃত্যুর পর। রাজ্যের কোনও উচ্চপদস্থ ব্যক্তির নির্দেশে এই মোহর তৈরি করানো হয়। আমরা ইতিহাসে জানতে পারি যে, শশাঙ্কের পুত্র মানবদেব প্রায় ৮ মাসের রাজত্বের মধ্যে মহারাজ হর্ষবর্ধন ও ভাষ্করবর্মার সেনা গৌড় আক্রমণ করেন। এই শিলমোহর সম্ভবত যুদ্ধের সায়ন কালে বা তার পরবর্তী সময়ে লেখা হয়। আমার ধারনা মহারাজ শশাঙ্কের পরিবার যুদ্ধশেষে নিজের কিছু অনুগতদের নিয়ে পালিয়ে যান। হয়তো কিছুদিন আত্মগোপন করেও থাকেন। কিন্তু এই মোহর অনুযায়ী একটি স্থানের কথা উল্লেখ করা আছে, যে স্থানে লেখক মহারাজের সৈন্যদের আহ্বান করেছেন, পুনরায় একটি বিরোধী সৈন্য-শক্তি গড়ে তোলার জন্য। দুর্গাবাবুর ধারণা, এই স্থানেই লুকিয়ে ছিল মহারাজ শশাঙ্কের বংশধরেরা। এই জায়গাই তিনি রজতবাবুকে খুঁজতে বলেছিলেন। তবে, ডঃ দুর্গামোহন মুখোপাধ্যায় ছিলেন মজার লোক। সবকিছু খোলসা করলেও তিনি সঠিক স্থানটা রজতবাবুকে সরাসরি বলেননি। তাঁকে ডিকোড করে চিহ্নিত করতে হত। আমার ধারণা উনি এই কাজেই আমার সহায়তা চেয়েছিলেন। এবং এটাও আঁচ করতে পেরেছিলেন যে, এই শিলমোহরের পিছনে সাংঘাতিক কোনও ব্যক্তি বা দল লেগেছে।"

নুরের কফি খাওয়া শেষ হয়েছে অনেকক্ষণ, কিন্তু খালি কাপটা সে হাতে নিয়ে বসে একমনে শুনে যাচ্ছিল। জয়ীর কথায় ছেদ পড়ায় উঠে গিয়ে নিজের কফির কাপ ফেলে টানটান হয়ে বসে বলল, "তাহলে শশাঙ্কের বংশধরেরা কোথায় আত্মগোপন করেছিল, সে খবর আপনি জানতে পেরেছেন?"

জয়ীর চোখে একটা ঝিলিক খেলে গেল। সে মুচকি হেসে নিজের ফোন বাড়িয়ে দিল নুরের দিকে। খুব মন দিয়ে পড়তে থাকল নুর, "এ কি লেখা!! এ... বুঝতে পারছি না তো!"

জয়ী বলল, "এ তো বাংলা লেখা, পড়তে পারছ না? আচ্ছা, ভাষাতত্ত্বের কথাটা বলেছিলাম মনে আছে? এ হচ্ছে পূর্ব নাগরী লিপি- অর্থাৎ বাংলা এবং আসামী ভাষার পূর্বপুরুষ। ৬ এবং ৭ম শতাব্দীতে এই লিপি চালু ছিল। এই শিলমোহরে গোপনীয়তার কারণে গুপ্ত স্থানটি একটি ধাঁধার মাধ্যমে দেওয়া হয়, এবং ধাঁধাটি উপস্থাপিত করা হয় নাগরী লিপিতে। এটা ধরে নেওয়া বোধহয় সমীচীন যে, যাদের জন্য এই মোহর বিলি করা হয় তারা নাগরী লিপি পড়তে জানত এবং ধাঁধাটার মানেও বের করে নেবেন বলে এই মোহরের নির্মাতা মনে করে ছিলেন।"

নুর বলল, "আপনি কি ধাঁধার অর্থ বের করে ফেলেছেন?"

জয়ী কিছু উত্তর দেওয়ার আগেই সামনের কাউন্টার থেকে নারীকণ্ঠ ভেসে উঠল, "যে সমস্ত যাত্রীরা নিউজেট ১ গি হি কলকাতা থেকে গোয়াহাটি সফর করছেন, তাদের অনুরোধ করা হচ্ছে অবিলম্বে গেট ৫ এর কাছে এগিয়ে আসুন।"

অগত্যা উঠে পড়ল জয়ীরা। লোকজন চারিদিকে তখন ভিড় করেছে বোর্ডিং গেটের দিকে। ব্যাক-প্যাক পিঠে চাপিয়ে এগিয়ে গেল জয়ীরা। হঠাৎই জয়ী দেখল কফি কাউন্টারের ওইখানে দেখা সেই লোকটা দূর থেকে তাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে।

#
আদিরিপু রূপ যারা অগ্রাহ্য করে
চন্দ্ৰবাহীনি চলে তাহাদের ঘরে
১০০০ বানের নৃপ যে দেবকে প্রণমে,
ঈশানকোণে ত্রিশত পদযোগে সে স্থানে গমি

"এটা কি?" কাগজটা দেখে বলল নুর।

গাড়ি এখন পাহাড়ি রাস্তা বেয়ে চলেছে গন্তব্যের দিকে। কাঁচের ফাঁক দিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়া ধেয়ে আসছে গাড়ির ভেতর। সকাল ১১ টাও বাজেনি, তবু মেঘের আস্তরণের ফলে গোটা উপত্যকাটা গুম হয়ে আছে। বাইরে দুদিকে ঘন সবুজ জঙ্গল, জায়গাটা ফরেস্ট বেল্ট-এর অন্তর্গত।

জয়ী আওরে চলল, "'আদিরিপু রূপ যারা অগ্রাহ্য করে' এইখানে কিসের কথা বলছে বল তো?"

নুর বলল, "শশাঙ্কের পরিবারের কারুর কথা কি?"

জয়ী হেসে মাথা নেড়ে বলল, "হল না... এইখানে একটা জায়গার কথা উল্লেখ আছে। 'আদি' অর্থাৎ 'প্রথম'; 'রিপু' মানে ষড়-রিপুর প্রথম রিপু..."

নুর চেঁচিয়ে উঠল, "কাম...কাম...কামরূপ!!"

জয়ী, "ভয়লা, দুর্দান্ত ব্যাপার। এইবার দেখ তো বাকিটা বুঝতে পার কিনা.. 'চন্দ্ৰবাহীনি চলে তাহাদের ঘরে'"

নুর বলল, "না না, ও ম্যাডাম আপনিই করে দিন।"

জয়ী বলল, "পারবে না কেন? আচ্ছা বল, শশাঙ্ক কথার অর্থ কি?"

নুর বলল, "মানে, মানে চাঁদ, চাঁদ, চন্দ্র... মানে কি ওনার পরিবারের কথা বলা হচ্ছে?"

জয়ী বলল, "একদম!! অর্থাৎ শশাঙ্কের পরিবার কামরূপ চলেছে। এই পরিকল্পনা যার, মানতেই হবে সে যথেষ্ট বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। শশাঙ্কের শত্রু ভাষ্করবর্মার রাজ্যে আত্মগোপন করা!! কারণ, শত্রু যেখানেই খুঁজুক নিজের রাজ্যে খুঁজবে না। ব্রিলিয়ান্ট!"

নুর বলল, "কিন্তু বাকি দুটো লাইন '১০০০ বানের নৃপ যে দেবকে প্রণমে, ঈশানকোণে ত্রিশত পদযোগে সে স্থানে গমি!'"

জয়ী বলল, "পরের দুটো লাইন আমাকেও ভাবিয়েছে। কিন্তু যিনি লিখেছেন তিনি আরও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। '১০০০ বান' শুনে প্রথমে যুদ্ধের কথা ভাবছিলাম, কিন্তু না...অসমের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ এবং রাজত্বের বিষয়ে পড়াশুনো করতে গিয়ে ১৭ শতাব্দীর আহম রাজবংশের একটি বই লাইব্রেরীতে পাই। সেখানেই এক মন্দিরের ছবি ও তার নাম দেখে চোখ আটকে যায়। মহাভৈরবের মন্দির; কথিত আছে রাজা বাণাসুরের তৈরি এই প্রস্তরের মন্দির, ১৭ শতাব্দীর আহম রাজারা সংস্কার করেন। রাজা বাণাসুর ছিলেন মহাদেবের ভক্ত। তাই কথাটার অর্থ, বাণাসুর যেখানে মহাদেবের পূজা করেন অর্থাৎ তেজপুরের সেই মন্দির, সেইখান থেকে ঈশানকোণ' অর্থাৎ উত্তর পূর্ব দিকে ৩০০ পথ পেরিয়ে কোনও স্থানে তারা গিয়েছিলেন। আমরাও সেইখানেই যাচ্ছি।"

নুর ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উত্তর দিল, "দিক নির্দেশটা একটু অরবিট নয় কি"

জয়ীতা বলল, "আমরা ডঃ দুর্গামোহন মুখার্জীর আর এক ব্রিলিয়ান্স-এর পরিচয় পাই। রজতবাবুকে উনি চিঠিতে একটা লাইন লিখছিলেন অন্য কালিতে। বিষয়টিকে উপদেশ বলে মনে হলেও কথাটি ধরেই আমি এগোই। বিশ্বের এই গুপ্ততম স্থান খুঁজে পেতে হলে তোমায় বিশ্বের গোঁড়ায় যেতে হবে।"

নুরের মুখ হাঁ হয়ে গেল। সে বলল, "আপনিও তো কম ব্রিলিয়ান্ট নন, কিন্তু নাগরী লিপিতে লেখা, তার সভাবর্গের লোক কি এই লিপি পড়তে পারতেন?"

জয়ী বলল, "পূর্ব নাগরী লিপি প্রবর্তিত হয়েই আমাদের আসামী ও বাংলা লিপির জন্ম দেয়। সুতরাং আশা করা যায়, সকলে না হলেও, কেউ-কেউ অবশ্যই সেই লিপি জানতেন।"

"কিন্তু ঐ শৈব দলের যিনি পাণ্ডা তাঁর কাছে এটা কিভাবে এল? তাঁর কোনও ভিক্টিমের থেকে কি নেওয়া?"বলল নুর।

জারকিনটা গলা অবধি টেনে জয়ী বলল, "এটা আমারও মনে হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কোনও এক আত্মীয়ের কাছেও নাকি দুর্গাবাবু প্রাচীন একটি জিনিস দেখেছিলেন। এটা ধরে নেওয়া যেতে পারে যে, তাদের কোনও পূর্বপুরুষ হয় এই জিনিসগুলি সংগ্রহ করেছিলেন ,নয় উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিলেন।"

নুর বলল, "আপনার কি ধারণা, এখনও কিছু পাবেন?"

জয়ী বলল, "জানি না, তবে কিছু একটা বিষয় আছে, নয়তো এই এক টুকরো ইতিহাসের জন্য একটা মানুষকে খুন হতে হল!! আর একজনকে হতে হল আক্রান্ত!!"

নুর বলল, "মানে!! আমি কিন্তু অ্যাডভেঞ্চারের একটা বিশেষ গন্ধ পাচ্ছি। আপনি পাচ্ছেন না?"

জয়ী কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু পারল না। তাদের পাশ দিয়ে শাঁ-শা করে একটা ইনোভা বেরিয়ে গেল। কিন্তু না জানি কেন জয়ীর মনে হল এই গাড়িটাকে আগেও সে দেখেছে। কিন্তু কোথায়??
Next Part


All Bengali Stories    116    117    118    119    120    121    122    123    (124)     125    126   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717