Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

সপ্তপদী

বাংলা গল্প

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে ) Result
--------------------------



All Bengali Stories    128    129    130    131    132    133    (134)     135    136   

সপ্তপদী
বাংলা গল্প
লেখক - দীপ্তেশ মাজী, বাবা- শ্রী শশধর মাজী, চেতলা রোড, আলিপুর, কলকাতা


## সপ্তপদী
লেখক - দীপ্তেশ মাজী, বাবা- শ্রী শশধর মাজী, চেতলা রোড, আলিপুর, কলকাতা
কেষ্টসাঁধের ভিটে পশ্চিমে। ওর বউ 'সজলা' নিত্য দিন মাথায় প্রদীপ নিয়ে মনসা-থানে যায়। সেবার পশ্চিমাকাশ লাল হয়ে এসছে। মন্দিরে ঢোকার মুখেই দেখল, দরজার সামনে কি যেন বসে আছে; নিকষ অন্ধকারে কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না।

"ভোর-সন্ধ্যেতে মন্দিরে আবার কার আগমন ঘটল!" ভাবে সজলা। এর আগে পাঁচ-বার ভর হয়েছে। নাক খত দিতে হয়েছে আট-বার। সজলার সাহস হল না। শুকনো গলায় বলল, "ভেতরে কে গা!"

হঠাৎ মনে হল ছায়াটা নড়ে উঠল। প্রদীপের আভায় স্পষ্ট দেখল সাদা শাড়ি, লাল পাড়। পদ্ম-শোভিত মুখে ঘোমটা টেনে সজলা আবার হাঁকল, "মা, আপনি কে?"

ছায়ামূর্তি পেছন ঘুরল। চোখে গাঢ় কাজল, সরু সোনালী টানা নাকের নথ— সজলা হুড়মুড়িয়ে মেঝেতে নেতিয়ে পড়ল।

#
খুকুকে মকর মায়ের কথা ননীবালা একাধিক বার বলেছেন। এবারেও বললেন, "সে-সব আর মনে থাকে রে মা... পোড়া কপালে খালি মরণটুকুই বাকি।"

যাইহোক কথায়-কথায় আবার শুরু করেন।

সজলা চেয়ে দেখে মাথার কাছে বসে আছে মেয়েটা। কেষ্টসাঁধ তামাক টানতে-টানতে বলল, "কি গো বুড়ির মা, শেতলকে দেখে তুমি ভিমড়ি খেলে যে!"

সজলা উঠে বসে বলে, "আগে তো দেখি নি একে। এ মেয়ে, তোর নাম শেতল? তা তখন ওখেনেতে কি করছিলু?" তারপর শেতলের ঠোঁটে হাত ঠেকিয়ে বলে, "হায়, তুই ননী খেয়েছু? ওযে মায়ের অন্নভোগ!" এরপর শেতলকে গোটা দশেক চুমু খেয়ে সজলা নিজের কোলের মধ্যে ওকে জড়িয়ে ধরে বলে, "ভালো করেছু... তুই আজ থেকে আমার ননী-মা।"

শেতল গেলে পর সজলা বলে, "আমি তো দেখেই বলি, 'মাগো, এ কে গা!' তোমার হলে দেখতে বাপু... তা শেতলের বয়েস কত গা? বাপটা কি বেয়ে দেবে না!"

কেষ্টসাঁধ বলেন, "দেখি... কালই যাব পঞ্চুর কাছে বিয়ের সম্বন্ধ করতে।"

সকালে পঞ্চু মোড়ল কোথা হতে এক কাঁদি কলা এনে হাজির করেছে। দেখলেন, ভিটেতে হাজির হয়েছে কেষ্টসাঁধ, "শেতলের কি ন'বৎসর হয়েছে কত্তা? বিয়া দেবে না নাকি?"

পঞ্চু বললেন, "মেয়ে ল"বৎসরে পড়েছে কেষ্টা। দশ হলেই বাপের তো আবার জেল হবে। তা সু-পুত্তুরের খোঁজ কি দিতে পারো?"

#
বৈশাখী পূর্ণিমার দিন ননীবালার বিয়ে হল গৌড়হাটির বিষ্ণুপদের সাথে। বিষ্ণুপদ তখন তেরোতে। নিজের ধুতি সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তো নতুন বউকে কখন দেখবেন। সজলা এসে কানে-কানে বলল, "ভালো থাকু মা। সুখে শান্তিতে ঘর করবি। মনে থাকবে?"

শেতল সজলাকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

"গৌড়হাটির বিষ্ণুর বিয়া হইয়াছে যে"— তাতেই পাশের দু-চারটে গ্রাম দিয়ে লোক ছুটে আসল। নগ্ন পায়ে, কেউ-কেউ খালি গায়ে, দন্ত বিকশিত করে ভিড় জমিয়েছে। গ্রীষ্মের প্রখর তেজে মাটির পঞ্চত্ব প্রাপ্তি হয়েছে। তার মধ্য দিয়েই বিষ্ণুপদ তার নব-স্ত্রীকে ভিটেতে আনলেন। শওউর ঘরে একখানি নিয়ম আছে। বিয়ে হলে মনসা-থানে এসে সাত-পাক ঘুরতে হয়। মনসার আশীর্বাদের সাথে বন্ধনও নাকি গাঢ় হয়। বিষ্ণুর মা নতুন বউকে বললেন, "যাও মা, ওর সাথে তুলসী মঞ্চ, বড়ঠাকুরের দুয়ারে পেন্নাম সেরে এসো..."

ননীবালা পিছু-পিছু, বিষ্ণুপদ আগে-আগে চলে। আকাশও ঘনিয়ে এসছে। বৃষ্টিও নামল আকাশ বেয়ে। হাজারো ধারার মাঝে নববধূর একজোড়া অশ্রু মাটিতে পড়েই মিশে গেল।

#
খুকু তার ঠাম্মাকে থামিয়ে বলে, "আজ আর গল্প নয়। রাত হয়েছে। রুটি-ঘুগ্নি আনছি; খেয়ে শুয়ে পড়ো।"

"লিয়ে আয়। কিছুই খেতে ইচ্ছে নেই। খালি পরাণটা কাঁদে জানু। সবাই চলে যাচ্ছে।"

সকাল-সকাল তুলসী মঞ্চ কিংবা মনসা-থানে বা বড়ঠাকুরের দুয়ারে যাওয়া হয় না। টাঙ্গিপাড়ার সীমানা পেরোলে বড়ঠাকুরের মন্দির। খুবই নাকি জাগ্রত। প্রত্যহ ঘুম থেকে উঠে ননীবালা পুবদিকে চেয়ে মাথায় হাত-জোড়া ঠেকিয়ে প্রণাম সারেন। খুকুর সকালে পড়া থাকে। এখান থেকে আরামবাগ যেতে দেড় থেকে দু"ঘণ্টা সময় লাগে। মাঝে কিছুটা পথ সাইকেলে যেতে হয়। খুকুর কলেজ আছে। সে না থাকলে ননীবালার আরও অসহায় লাগে। সিঁড়িতে হেলান দিয়েই পড়ে যান। ঘুমে ঠোঁটের কিনারা বেয়ে লালা বেরিয়ে আসে। ছোটো বউমা দেখলেই রেগে যায়। ছোটো বেটার মুদির ব্যবসা। বাড়িতে প্রায় সারাদিনই খিটখিটানি লেগে আছে। কিছুতে হাত দেওয়ার জো আছে!! খুকু অবশ্যি থাকলে কথা শুনতে হয় না। তা বলে মেয়েটা কি সারাদিন পড়া কামাই করে শিশু-সুলভ ঠাম্মার কাছে সময় কাটাবে! খুকু আসলে ঠাম্মার দুপুরের খাওয়া হয়। ছেলে আর বউমার খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় নেই। কখনও তিনটে, কখনও সাড়ে চারটে তো কখনও আবার পাঁচটা। বুড়ি বয়সে ভীম রতি একেই বলে, ঘড়িতে একটা বাজলেই চোঁ-চোঁ করে খিদে পায়। খুকু এসে ভাত বাড়ে। খেয়ে দেয়ে ঠাম্মা আর নাতনিতে আবার গল্প শুরু হয়। খুকুর চুলে বিলি কাটতে-কাটতে ঠাম্মা বলে, "তোর বয়স কত?"

"কার আমার! আমার এখন ২১..."

ঠাম্মা বলেন, "উনিশ বৎসরে প্রথম সন্তান। তোর ঐ বড় জেঠু, জলধর। সাত-সাতটাকে পেটে ধরেছি। তারপর, "হা..আ..আ..আয়..." দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, সব যে যার ভাবে আছে।"

খুকু বলে, "আগে তো তোমাদের একটাই বাড়ি ছিল। তাই তো!"

ননীবালা ফোকলা মুখে হাই তোলেন। খুকুর দিকে পাশ ফিরে বলেন, "কেষ্টসাঁধ তো ঘটকালি করলে। তোর দাদু তখন ছোটো যে। চাষের জিনিস খেতুম। দাদুর বাপ মানে আমার শওউর বললেন, 'আগে ভিটের মাটি শক্ত করবি। তারপর বাকি সব।'"

প্রথম বছর হানাদারে সব কিছু ধূলিসাৎ হয়ে গেল। ননীবালা বলেন, "হানা পড়ছিল যে, বানের জলে সব গেল। তিন কুলের ভিটে-বাড়ি শ্রাবণ ধারায় মাটির ডেলা হয়ে গেল।" কোনও রকমে বিষ্ণুপদ আগে নিজে দাঁড়ায় তারপর ভোরবেলাতে তিন ছেলেকে নিয়ে প্রত্যহ কয়েক কিমি হেঁটে বাজারে গিয়ে সবজি বেচে সংসারের চাকাকে আবার পথে নিয়ে আসেন।

দেখতে-দেখতে সাত ছেলের মা হলেন। ধীরে-ধীরে সবাই বড় হয়ে ওঠে। এখন সংসারের হাল অনেকটাই গিন্নির হাতে সঁপে দেন বিষ্ণুপদ। এই সময় ননীবালা বাড়ির সামনে সাধের কাগজি-লেবু, বাতাবি-লেবু আর দখিন দিকে তেঁতুলগাছ বসান। বছর যেতে-না যেতেই পল্লীগ্রাম আবার বন্যার কবলে পড়ল। পূর্বের ক্ষতের নিরাময় তো হলই না বরং বন্যার সাথে দুর্ভিক্ষের কালো অভিশাপ নেমে এল। বিষ্ণুপদ এবারে আর দাঁড়াতে পারলেন না। দোতলা ভিটে-বাড়ি মড়-মড় শব্দ করে চলে গেল। একটা শুকনো জায়গা দেখে সেখানে ১০৮ টি রুদ্রাক্ষের মালা নিয়ে জপতে বসলেন। ননীবালা বুঝতে পারলেন; দশ বছর আগে পাড়া- গাঁয়ের হীরেন পণ্ডিত বলেছিলেন, "বয়স কালে সংসারে মন না বসলে তুমি এই মালা ধারণ করো।" এটা ভেবেই ননীবালা আঁচলে মুখ লোকালেন। নিজেই ছেলেদের কাজ বুঝিয়ে দিলেন। অবশ্য ততদিনে বড় আর মেজো ছেলে বিয়ে করে আলাদা হয়েছেন। বাপ-মায়ের দিকে তারা ঘুরেও তাকান না। বাকিদের একাংশ চাষের কাজে এবং আরও একাংশকে একটি মুদিখানার দোকান করে দেওয়া হল।

একদিন মোড়ল ফিকে জানা এসে বললেন, "আপনি তো এ গাঁয়ের বড়-মা। একটু কাঙাল ভোজন যদি করাতেন...মানে মানুষগুলো কিছু খেতে পেত।"

বিনা বাক্য ব্যয়ে তাদের খাওয়ালেন ননীবালা। গোল ঘরের কাছে বড় উনান গড়া হয়। চাষের বর্ধিত অংশ ছিলই। ছেলেরা ও গ্রামবাসীরা কাঁধে- কাঁধ মিলিয়ে কাঙাল ভোজন করালেন। অচিরেই তিনি হয়ে উঠলেন 'বড়মা।'

অবশ্য ততদিনে বিষ্ণুপদ গত হয়েছেন। একদিন দুধ দুইতে যাওয়ার সময় দেখলেন, গোল ঘরের ভাঙা বাঁশটায় কে যেন হেলান দিয়ে বসে আছে। কাছে যেতেই দু"চোখ বেয়ে জল বেরিয়ে এল। অমনি হাঁক দিলেন, "গোপাল, শশ, হলে—শিগগির হেতা আয়। দেখ কে এচে!"

বৃদ্ধা এক ঘটি জল গলধঃকরন করে তৃপ্তির নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তারপর দেওয়ালে বিষ্ণুপদের ছবিতে মালা দেখে বলেন, "ননী, বিষ্ণুও আর নেই?"

ননীবালা, সজলা কে ধরে কাঁদেন। সজলা চোখের জল মুছে বলেন, "ননী তুমি তো আমার বড়-মা। ননীবালাও তাঁর মকর-মা'কে সাদরে গ্রহণ করলেন। তারপর মনসা-থানে তর্জনী দেখিয়ে বলেন, "বড়মা, ওটা ঐ সপ্তপদী স্থান নয়! তাই তো তোমার সাত বেটা।"

#
ঘুরে দেখেন খুকু ঘুমিয়ে পড়েছে। নিজেই এতক্ষণ বকবক করছিলেন ননীবালা। তারপর আপন মনেই বললেন, "কত কি ছিল আমার। সব গেল। এসছি একা, যাবো একা।"

সাত ছেলের পরেও মৃত কন্যা-সন্তানের জন্ম দেন ননীবালা। আঠার মত সেই যন্ত্রণা আজও লেগে আছে। খুকু, কিছুটা হলেও সেই ব্যথার উপশম। শৈশবের এত বছর পর পরস্পরকে পেয়েছেন। সমুদ্র বক্ষে অজানা পথিকের ন্যায় দুজন-দুজনকে হাতড়ে বেড়ান। অন্য দিকে বৃদ্ধা সজলাকেও ননীবালা মা সম্বোধন করেন। গ্রামের লোক আকাশ থেকে পড়ার মত উভয়ের দিকে চেয়ে থাকেন। পরস্পর-পরস্পরকেই 'মা' সম্বোধন করছেন। তবে সেই"মা"ডাকের মধ্যেও এক আশ্চর্য তৃপ্তি লুকিয়ে ছিল যা হয়তো অন্যের বোধগম্য হওয়া সহজ নয়।

#
সংসার এখন সপ্ত খাতে বইছে। শহর আর গ্রামের যোগাযোগ হয় না বললেই চলে। মাঝে কয়েক বছর শহরে ছিলেন অবশ্য। ঘর তো নয় যেন পায়রার খোপ। আলো নেই, বাতাস নেই। বৃহৎ অট্টালিকার ঘেঁষাঘেঁষিতে পুব-পশ্চিম বোঝা দুষ্কর। মাঝে, স্বাধীনতা দিবসের দিন ননীবালা আবার গ্রামে ফেরেন। আসার সময় একটা জায়গা দেখে গাড়ি দাঁড়ায়। ছেলে, বউ, নাতির সাথে ননীবালাও পা-ছাড়াতে নামেন। দেখেন ব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে চলেছে মুন্ডেশ্বরীর সবুজ নীলাভ স্রোত। তার পাশেই কয়েকজন মেয়ে- মানুষ উলুধ্বনি দিচ্ছে। হলদে শারি, লাল পাড়ে একজন নব-বধূ। সাথে আছে সাজানো বরণ ডালা। ননীবালার নিজের কথা মনে পরে। দীঘির পাড়ে একদিন তাকেও যেতে হয়েছিল। এরপরই গ্রামে গাড়ি ঢুকলে ননীবালা স্বাধীন বাতাসের গন্ধে প্রাণ ফিরে পান। প্রাণ ফিরে পায় শহুরে ছেলে বউ।

কাঁপা-কাঁপা পায়ে মাটিতে দাঁড়ালেন। সরু মেঠো পথ। গোল ঘরের কাছে এসে দেখেন মশা-মাছি ভনভন করছে। গরুগুলো শীর্ণ কায়। কেউ-কেউ ছুটে এসে জিজ্ঞেস করছে, "বড়-মা যে...", কেউ বলছে, "বড়-মা কেমন আছো?" —ননীবালা সবাইকেই ইতিবাচক উত্তর দেন। যখন ছেলে, বউ কেউই পাশে নেই তখন বলছেন, "নামরেই বেঁচে আছি..." শেষের কথাটি কারোর কানে গেলে যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হবে, তা উনি জানেন।

#
খুকুর ডাকে ঘুম ভাঙে ঠাম্মার। পাঁচটা বেজে গিয়েছে। দূরে শঙ্খের একটানা স্বর ভেসে আসছে। উঠানে তাকিয়ে দেখেন, সেটা কেমন যেন শ্মশানে পরিণত হয়েছে। কাগজি-লেবু, বাতাবি-লেবুর গাছ নেই। হনুমানের তাণ্ডবে তেঁতুলগাছের জীর্ণ দশা। আগে হলে লাঠি হাতে দৌড়াতেন। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে হনুমানই ওনাকে তুলে না নিয়ে যায়!

এই সময় দুধ আনতে পাশের গাঁয়ের পুলু-বউ আসে। ননীবালা খানিক গল্প করেন তার সাথে। আলো-আঁধারি পরিবেশ। দূরের কিছুই পরিষ্কার নয়। ননীবালা চারদিক দেখে আবার শুরু করেছেন, "ছোটো বউমা'র কাছে যাচ্ছ তাই..." কথা শেষ হল না। খুকু বলল, "ঠাম্মা, পুলু চলে গেছে। এটা আমি।"

#
সাংসারিক গল্পের পাশাপাশি ভৌতিক গপ্পের ঢিপিও আছে। চোখ বড় করে বলেন, "তারপর কে যেন বলল, 'পরাণ, মাঁছ দিঁবি নাঁ?'—এরপরই কি ঝড়। ও যে মোকলা বাক্স। মোসলমান ভূত!"

'পরাণ' ছিলেন ননীবালার দাদু। তারপর পোয়াতি স্ত্রী- ভূতের গপ্প হয়। খুকু মাঝে-মাঝে ঠাম্মাকে দোষারোপ করে। আশ্চর্য ক্ষমতা বৃদ্ধার। এত বছর পরেও এনার্জি তুঙ্গে। বলেন, "বাসু মাইতিদের বউ পোয়াতি হয়ে মরেছে। বেড়াল হয়ে সাদা শারির থানে পুকুর ঘাটে যায়। তখন যে ভূতেদের হাট বসত... গয়ায় কে যাবে পিণ্ড দিতে!" দুর্ভাগ্যবশত, খুকু ওখানে সংস্কৃত পড়তে যায়।

৯৫ হলেও কাজের জন্য ছটফট করেন ননীবালা । নীল পাড়, সাদা শারিতে স্নানের পর আজও মনসা-থানে বসেন। মনে পড়ে যায় ফেলে আসা দিনের কথা। সপ্তপদী স্থানটা বড্ড অপয়া। পুরনো স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে।

তারপর কালের নিয়মে খুকুর বিয়ে ঠিক হয়। চল্লিশের ছেলে, সরকারি চাকুরীজীবী। দিন-রাত ঠাম্মা-নাতনিতে অশ্রু বিসর্জন হয়। কিন্তু ঠাম্মার শ্বাসকষ্ট হলে পাকা কথায় বাঁধা পড়ে। ছেলে বলেন, "থাক তবে..."

ঘরে এসে খুকু ঠাম্মাকে জড়িয়ে ধরে। বলে, "আর কোনও দিন মরার কথা বলবে না কিন্তু!!"
( সমাপ্ত )


Next Bangla Story   

All Bengali Stories    128    129    130    131    132    133    (134)     135    136   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717