-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে )
Result
--------------------------
All Bengali Stories
128
129
130
131
132
133
134
135
(136)
137
138
◕
নতিম খাঁন একজন মুক্তিযোদ্ধা!!
বাংলা গল্প
লেখক- মনিরুজ্জামান প্রমউখ, পিতা- মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন খাঁন, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর, বাংলাদেশ
## নতিম খাঁন একজন মুক্তিযোদ্ধা!!
লেখক- মনিরুজ্জামান প্রমউখ, পিতা- মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন খাঁন, হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর, বাংলাদেশ
নতিম খাঁন এক জন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা। সাধারণ এই অর্থে যে যুদ্ধ করতে গিয়ে তিনি বিশেষ আঙ্গিক মোকাবেলায় কোনো অঙ্গ বিসর্জন দেন নি; কিংবা কোনো উর্ধ্বতন পর্যায় হতে তিনি যুদ্ধে লিড দেন নি। অথবা তিনি প্রাণ হারান নি বা শহীদ হন নি। আবার প্রাণ না হারালেও বা শহীদ-এর মর্যাদায় আদরণীয় না হলেও যুদ্ধে স্বয়ংক্রিয়ায় তেমন বিশেষ ভুমিকায় নিজে কে পর্যবেসিত করতে পারেন নি। তাই তিনি সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিগণিত।
এই তার ভাগ্য। এই তার সর্বোস্ব। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে হতে হোক, নতুবা জীবন পরিচালনার সর্বাঙ্গীন হতে হোক, নতিম খাঁন যুদ্ধে যান নি; যুদ্ধই তারে পেয়েছিলো। মুক্তির যুদ্ধে যোদ্ধা হবার পূর্বেই তিনি জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সেই যুদ্ধের বারাবারিতে মুক্তিযুদ্ধের দামামা কিছুটা ম্লান হলেও তিনি পুরো দমেই যুদ্ধ করেছিলেন যোদ্ধা হিসেবে। যুদ্ধ শুরু হবার পূর্বেই তিনি ছিলেন পুলিশ সদস্য। তাই দেশ রক্ষার সদস্য আর মুক্তিযুদ্ধের সদস্য হিসেবে তেমন বিভাজনের পার্থক্য বিরাজমান ছিল না। একের ভেতর দুই, অথবা দুই-এর ভেতর এক ছিল সমান মাজেজা।
দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসরত নতিম খাঁন-এর পড়াশোনা সেই আমলে তেমন এগোয় নি। অনেক ভাই বোনের সংসারে সবার বড়ো হবার দায়ে লেখা পড়ার ট্রেন গিয়ে থামে মাত্র মেট্রিক পাশে। বাবা ছিলেন কৃষক। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো অবস্থায় নতিম খাঁন এই টুকুন পড়াশোনায় লজিং মাষ্টারির ভারও নিয়েছিলেন একাত্তর-পূর্ব দিনগুলোতে।
খাঁন সাহেব যদিও তার ঐ সামান্য পড়াশোনার সদ্ব্যবহার করতে পারেন নি। পাশ করার পর সোজা এই মোড়, ওই মোড়, এই কান্ত, ঐ কান্ত মোড়কে-মোড়কি না হয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন পুলিশ লাইনে। ছোটো ভাই বোনদের মুখে হাসি ফোটাবার দায়ে বাবার সাথে কান্দা মেলাতে জয়েন দিয়েছিলেন চাকুরীতে। কিন্তু সেই কাঙ্খিত হাসির ফোয়ারায় ভাসাতে পেরেছিলেন কী ভাই-বোনদের?
না, পারেন নি; পারার কথাও নয়। সনদ পত্রের কমতি, উদ্যোগের ঘাটতি তার স্বপ্ন পূরণের চিরন্তনীয় বাধা ছিল পিঞ্জর। জীবন উপাখ্যান কারো মতি ধরে এগোয় না। বিধিয় সব পালনের না হলেও মাননীয় যে জীবন বৈরাগ্যে এক জায়গায় নিয়তি ঠুকে বসেছিলেন নতিম খাঁন, নড়েনও নি, কারো উপর চড়েনও নি। সময়ের পিড়ি ধরে সংসার পাতলেন। সংসার বড়ো করলেন। মেয়েদের বাদে তিনি দুই ছেলের জনক হলেন। প্রকৃতির বিবাদে ছোটো ছেলেটাও পৃথিবী হারালো। বাকি এক ছেলের উপর পেতে বসলেন শেষে সব আশার মেমোরেন্ডাম। ভাবেন, সুখের জোয়ার আসে টাকার খনি হতে। যেহেতু টাকার অভাবই ছিল তার জীবন প্রতিপাদ্য।
একান্ন বছর বয়সে চাকুরী ছেড়ে এসে চার মেয়ের বিয়ের কার্য সম্পন্ন করতে আর ঘরের টিনের বেড়া দেয়ালে রূপান্তর করতেই মাসিক পেনশন ব্যতীত এক কালীন যা পেয়েছেন তার সব টুকুন খুঁইয়েছিলেন। ভাবছিলেন এবার জীবন গাড়ি চলবে কিভাবে? তেল, পেট্রোল, ডিজেল কিছুরই তো নবো আগমন নেই। তখন তিনি এক মাত্র উপায়ান্তর খুঁজছিলেন এক মাত্র বেঁচে থাকা ছেলেকে কেন্দ্র করে। কিন্তু তার সে মনোভাবেও গুড়েবালি।
নতিম খাঁন একান্নতেই কাহিল হয়ে পড়েছিলেন জীবন যুদ্ধে। আর নতুন ভাবে কিছু করার প্রবণতা হতে নিজেকে মুক্তি দিতেই সাচ্ছন্দ মতি ভাবছিলেন। যদিও চাকুরী ত্যাগের পর রাজধানীতে গিয়ে কোন এক কনস্ট্রাকশন ফিল্ডে কয়েক দিন কাজ করে বালু-টালু খেয়ে, 'আর সহ্য হয় না' জ্ঞানে বাড়ি ফেরত আসলেন। সেই হতে জীবনে আর কিছু করার নামে ইস্তফা শব্দটি ঠুকে দিলেন চিরোতরে ! সেই গণ্ডি হতে আর মুখ ফেরালেন না আয়-রোজগারের দিকে। জানেন না, জীবনে আয়-রোজগারের কোনো বয়স হয় না, থাকে না। সারা জীবনই যে তার আয়ত্ব সীমা, তা বুঝতেই চাইতেন না ; মেনে নিলেন না মানুষটা।
ছেলেকে কেন্দ্র করে খাঁন সাহেব জীবনের পট পরিবর্ধনের আশায় মত্ত ছিলেন, আছেন। কিন্তু সেখানেও গোলমাল বাঁধিয়ে দিলেন, হতে পারে জ্ঞানের স্বল্প তা মানুষের কল্প কথায় মন দিল ভাসিয়ে, অজ্ঞাত চিন্তায় এমন গোলক ধাঁধার জন্ম দিয়েছিলেন যে, সে ক্ষেত্রে ছেলের চাকুরী জীবনে নেমে আসে অমানিশা। চাকুরী বাদ দিলে আর যা থাকে তা হলো ব্যবসা। তাতেও তিনি অপারগ। ব্যবসার মূলধন যোগান দেয়া তার অক্ষমতা। উপায়ান্তর এর দুয়ারে টোকা দেয়াও তার অমনোযোগীতা। তাই ছেলের রোজগার হতে সুখ টান এ জীবনে আর হলো না , বা হবে না নতিম খাঁনের।
চাকুরীর ইতি টেনে এসে একমাত্র পেনশন-এর টাকায় সংসার চালাতে নতিম খাঁন বেশ বড়ো রকমের হিমশিমে ভুগছিলেন। চাকুরী ছাড়ার দুই তিন বছরের মাথায় মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুফল হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতে শুরু করলেন অল্প পরিমাণে। তারপর হতে সরকারের মনো বৃদ্ধি আর দেশের প্রবৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে নতিম খাঁন -এর ভাগ্য বদলাতে থাকলো বলা চলে। এখন মোটামুটি জীবন যাত্রার নিয়ামকে তার ব্যাপ্তির অনুপাতে হাহাকার শব্দটি ঘুচে গেছে। যদিও চাহিদার কোনো ব্যাপ্তি নেই। সীমাহীন তার দৌরাত্ম ভুবনে। তবুও নতিম খাঁন এখন স্বস্তির দুয়ারে দাঁড়ানো এক শান্ত পথিক। শান্ত তার পদক্ষেপ আত্ম খননে।
মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আর পেনশনের আগমন এবং গতো কয়েক বছর ধরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা অফিস হতে পাওয়া নতুন মুক্তিযোদ্ধা অন্তর্ভুক্তিও সে সম্পর্কিত কর্মের পারিতোষিক নিয়ে নতিম খাঁন -এর জীবন বর্তমানে সচ্ছ্বল না হলেও অনটনের আরবান হতে যে মুক্তি মিলেছে তা আয়েসে বলা যায়। ভাগ্যিস; মুক্তিযুদ্ধটা নতিম খাঁন-এর উপর বর্তিয়েছিলো... আহা, না হলে যে কতো বিবর্তনীয় ধারার আঁচড়ে আঁচড়িয়ে যেতেন নতিম খাঁন...
( সমাপ্ত )
Next Bangla Story
All Bengali Stories
128
129
130
131
132
133
134
135
(136)
137
138
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717