-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে )
Result
--------------------------
All Bengali Stories
135
136
137
138
139
140
141
142
(143)
144
145
146
147
◕
একদিনের প্রেম
স্বরচিত ছোট গল্প প্রতিযোগিতা, নভেম্বর, ২০২১-এর একটি নির্বাচিত গল্প
লেখক - অলোক অধিকারী, পিতা: নিতাই অধিকারী, মিড়ল রোড, সোনারপুর, কলকাতা
##
একদিনের প্রেম
লেখক - অলোক অধিকারী, পিতা: নিতাই অধিকারী, মিড়ল রোড, সোনারপুর, কলকাতা
"দ্যাখ, লোকটা কেমন ড্যাব-ড্যাব করে তাকিয়ে আছে তোর দিকে।"
"কই? কোথায়?" তনুর কথায় জিজ্ঞেস করে নাজিয়া।
"ওই তো, যা: মুখটা ঘুরিয়ে নিল। ওই যে স্কাই শার্ট আর ব্ল্যাক প্যান্ট পরে দেবুদার চায়ের দোকানে... দেখেছিস?"
"হ্যাঁ।"
ভরা শ্রাবণের তুমুল বৃষ্টিটা ধরেছে। এখন ঝিরঝির করে পড়ছে। লোকজন বাস-স্ট্যান্ডের শেডের নীচ থেকে রাস্তার দিকে এগোচ্ছে বাস ধরবে বলে।
এখান থেকে মিনিট দু'য়েক লাগে বাড়ি যেতে। প্রত্যেক দিন অফিস থেকে ফেরার পর মায়ের গালে একটা চুমু খেয়ে তবে ছাড়ে ফারহান। নাজিয়া যতই বলুক, "ওরে ছাড়-ছাড়, বাইরে থেকে এসেছি, কত যে রোগ-জীবাণু কাপড়-চোপড়ে আর গায়ে-মুখে লেগে আছে তার কী ঠিক আছে? আমি স্নানটা সেরে আসি তখন তুমি যত খুশি হামি খেও।" তাও শোনে না বছর চারেকের ফারহান। শেষমেশ কান্না জুড়ে দেওয়ার ভয়ে সেদিনও ছেলের আবদারের কাছে হার মানে নাজিয়া। চুমু খেয়ে ফারহান। বলে, "মাম্মা, তোমার গালের পানিটা নোনতা কেন গো?"
নাজিয়া বলে, "বৃষ্টির জল পড়েছে তো, সেই জন্য।"
"তাই মাম্মা, বৃষ্টির জল বুঝি নোনতা হয়!" নাজিয়া আর দেরি করেনি। বাথরুমে ঢুকে ভেজা চোখ দুটো ধুয়ে নিয়েছিল শাওয়ারের জলে, অনেক বেশি স্নান করেছিল।
#
সেদিনও হঠাৎই শেষ ফাগুনের এক সন্ধ্যায় শুরু হয়েছিল তুমুল অকাল-বৃষ্টি। ইংরেজি পড়তে গিয়েছিল নাজিয়া আর অনিন্দ্য। স্যর বলেছিলেন, "আকাশের অবস্থা ভাল নয়। তোরা বরং আজ বাড়ি চলে যা।"
দু'জনে একটু এগোতে-না এগোতেই ঝেঁপে এল বৃষ্টিটা। রাস্তা থেকে কিছুটা দূরে নতুন তৈরি হওয়া একটা বাড়ির বারান্দার নীচে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ওরা। জমাট বাঁধা ঘন কালো মেঘে ঘনিয়ে আসা সন্ধের অন্ধকারে ওরা পাশাপাশি দাঁড়িয়েছিল। হঠাৎ খুব জোরে কাছে পিঠে কোথাও একটা বাজ পড়তেই অনিন্দ্যর হাত দুটো চেপে ধরে ওর বুকে মুখ গুঁজেছিল নাজিয়া। অনিন্দ্যও নিজের বুকে ওকে থাকতে দিয়েছিল।
বাড়ি ফিরে এক ছুটে অনিন্দ্য চলে গিয়েছিল রাধিকার বাড়ি। খুশি-খুশি মনে সব কিছু বলেছিল তাকে। অনিন্দ্য-নাজিয়ার খুব ভাল বন্ধু রাধিকা জানত দু'জনের ইচ্ছার কথা। নাজিয়া তার মনের কথা বলত শুধু রাধিকাকেই। আর বলত, "আমরা যদি এক হতে চাই তুই থাকবি তো পাশে?"
পরের দিন অফিস থেকে ফিরে ইয়াকুব নাজিয়ার মাকে বললেন, "অফিস থেকে আমাকে ট্রান্সফার করেছে। আমরা পরশুই চলে যাব।"
"কোথায়?" জানতে চাওয়াতে স্ত্রীকে বলেছিলেন, "গেলেই জানতে পারবে।"
"হঠাৎ ট্রান্সফার কেন?"
"সরকারি চাকরি। সাহেবরা মনে করেছেন তাই..."
"মেয়েটার পড়াশোনার কী হবে? কয়েক দিন পরেই তো উচ্চমাধ্যমিক।"
"তাতে কী হয়েছে! টেস্ট পরীক্ষা তো হয়ে গিয়েছে। স্কুলে যাওয়ার ব্যাপার নেই। এখানে এসে পরীক্ষাটা দিয়ে দেবে। ভাইজান, ভাবী, রুনা তো রয়েছে। পাস করার পর আমার অফিসের কাছাকাছি কোনও কলেজে ভর্তি করে দেব।"
চলে যাওয়ার আগের দিন মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে বেরিয়ে "সাবিনার বাড়িতে খাতাটা দিয়ে আসছি," বলে অনিন্দ্যর সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য কোনও রকমে দেখা করেছিল নাজিয়া। ওর সন্দেহের কথা জানিয়ে অনিন্দ্যকে বলেছিল, "মনে হয় আব্বা জানতে পেরেছে। নয়তো তিনদিনের মধ্যে হঠাৎ ট্রান্সফার!"
ওই ঘটনার পর খুব কষ্ট পেয়েছিল অনিন্দ্য। সে সময় পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত্বনা দিয়েছিল শুধু রাধিকা। পরীক্ষায় এর কোনও প্রভাব যেন না-পড়ে, সে-কথাও মনে করিয়ে দিত। উচ্চমাধ্যমিকের পর এক কলেজেই ভর্তি হয়েছিল রাধিকা আর অনিন্দ্য। অনিন্দ্যকে ছেড়ে নাজিয়া চলে যাওয়ার কয়েক মাস পর পাড়ার একটি বিয়ে বাড়িতে নাজিয়ার কাকার মেয়ে রুনা অনিন্দ্যকে বলেছিল, "জানিস অনি, নাজিয়াকে নিয়ে চাচা কেন সাত-তাড়াতাড়ি চলে গেল? তোদের সেদিনের কথা তুই রাধিকাকে বলার পর, ও সব কথা চাচাকে বলে দিয়েছিল। কারণ, রাধিকা চাইত না তুই নাজিয়ার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখ। ও তোকে ভালবাসে, বিয়ে করতে চায়। আমাদের বাড়িতে থেকেই পরীক্ষা দিয়েছে নাজিয়া, কিন্তু পরীক্ষার কথা ভেবে আমি কিছু বলিনি ওকে। ভেবেছিলাম বলব, কিন্তু শেষ দিন চাচা গাড়ি নিয়ে এসে পরীক্ষা শেষ হতেই ওকে নিয়ে চলে গেল।"
পরের দিন কলেজ থেকে বেরোতেই রাধিকা বলে, "অনি, গতকাল এসবিপি যে নোটস-টা দিয়েছেন, সেটা দিস তো।"
"তুই কোনও দিনও আমার সঙ্গে আর একটা কথাও বলবি না," বলে সাইকেলটা জোরে চালিয়ে চলে এসেছিল অনিন্দ্য।
#
বাঁকুড়ায় ওর বাবার অফিসের কাছে একটি কলেজ থেকে নাজিয়া গ্র্যাজুয়েশন করে সরকারি চাকরি পাওয়ার মাস তিনেক পর অফিসের এক সহকর্মীর ছেলের সঙ্গে নাজিয়ার বিয়ে দিয়ে দেন ইয়াকুব। বছর ঘুরতেই চলে আসে ফারহান। অনিন্দ্যও গ্র্যাজুয়েশন করার পর কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বিমা কোম্পানিতে চাকরি পায়। চার বছর বর্ধমানে থাকার পর বাঁকুড়ায় পোস্টিং হয় তার। ছুটিতে বাড়িতে এলে বিয়ের কথা বলে বাবা-মা।
"মা, আগে আমাকে এই অফিস থেকে অন্য কোথাও যেতে হবে। ওখানে আমার ভাল লাগছে না। আমি দরখাস্ত দিয়েছি। তারপর যা ভাবার ভাবব।"
মেয়ের বিয়ের একমাস পর চাকরি জীবনের শেষে ইয়াকুব ফিরে এসেছিলেন নিজের বাড়িতেই। তার কিছু দিন পর এক পথ-দুর্ঘটনায় নাজিয়ার মাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সে সময় তাকে রক্ত দেওয়ার দরকার হয়েছিল। হন্যে হয়ে খুঁজেও ইয়াকুব যখন দুষ্প্রাপ্য গ্রুপের ওই রক্ত পাচ্ছেন না, তখন ত্রাতা হয়ে ওঠেন অনিন্দ্যরই নিজের কাকা রামগোপাল চট্টোপাধ্যায়। বাঁকুড়া থেকে মাকে দেখতে এসে নাজিয়া ওর বাবার কাছে শুধু এটুকুই জানতে চেয়েছিল, "আম্মাকে যিনি রক্ত দিয়ে বাঁচালেন তার নামটা জান?" প্রশ্নটা শুনে কোনও উত্তর না দিয়ে কিছুক্ষণ শুধু মেয়ের পায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলেন ইয়াকুব।
( সমাপ্ত)
Next Bangla Story
All Bengali Stories
135
136
137
138
139
140
141
142
(143)
144
145
146
147
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717