-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে )
Result
--------------------------
List of all Bengali Stories
◕
অভেদ্য ( কল্প-বিজ্ঞানের গল্প )
লেখক - দিগন্ত পাল, বাবা- অচিন্ত্য কুমার পাল, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ
স্বরচিত ছোট গল্প প্রতিযোগিতা, নভেম্বর- ২০২২ একটি নির্বাচিত গল্প
##
একটি ঘরে বিছানায় শায়িত এক বৃদ্ধের সেবা-শুশ্রূষা করছে একটি পঁচিশ বছর বয়সী মেয়ে। বৃদ্ধ তাঁর বন্ধ চোখ ধীরে-ধীরে খুললেন। আবছা দৃশ্যপট ধীরে-ধীরে পরিষ্কার হলে তিনি দেখতে পেলেন মেয়েটির স্নিগ্ধ মুখটি। মেয়েটি অত্যন্ত কোমল স্বরে জিজ্ঞাসা করলো, "ডক্টর আত্রেয়, এখন কেমন বোধ করছেন?"
বৃদ্ধ ঠোঁটে এক কৃতজ্ঞতার হাসি নিয়ে বললেন, "এই সহায়-সম্বলহীন একাকী বৃদ্ধ এই যাত্রায় তোমার জন্য বেঁচে গেল।" তারপর ধীরে-ধীরে উঠে বসে বললেন, "পৃথা, আমার ব্যক্তিগত ধারণা ছিল যে অত্যধিক ধনী ঘরের সন্তানদের মধ্যে সংস্কারের যথেষ্ট অভাব থাকে, কিন্তু তুমি এত বড় বিজনেস টাইকুনের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও এত সংস্কারী! এছাড়াও তোমার বাবা একটা কথা যথার্থই বলেছিলেন, প্রকৃতি নিজেকে উজাড় করে তোমার মধ্যে মাতৃসুলভ সকল বৈশিষ্ট্য দান করেছে। তোমার সেবায় আমি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি, তাই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তোমায় কিছু দিতে চাই। তুমি আমার সাথে আমার প্রাইভেট ল্যাবরেটরিতে চলো।"
ল্যাবরেটরিতে প্রবেশ করার পর ডক্টর আত্রেয় গম্ভীর স্বরে পৃথাকে বললেন, "তুমি বোধহয় জানো যে আমি একজন ভীষণ সমালোচিত বায়োকেমিস্ট। পৃথিবী আমার সমালোচনা করে কারণ আজ পর্যন্ত আমার অধিকাংশ আবিষ্কারই মানবসভ্যতার জন্য অভিশাপ হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমি সত্যিই চাই যে আমার কোন উদ্ভাবন তোমার জীবনে উপহার বলে বিবেচিত হোক।" ডক্টর আত্রেয় এরপর একটি ফ্রিজার থেকে কয়েকটা মুখ আটকানো ছোট কাচের শিশি বার করে কাছেই একটি টেবিলে রাখলেন। সকল কাচের শিশির গায়ে বেশ বড়-বড় লেবেল থাকায় শিশির ভিতরে কি আছে তা বোঝা যাচ্ছিল না। ডক্টর আত্রেয় উদ্যমের সাথে পৃথাকে বললেন, "এই শিশিগুলোর এক একটায় এক এক রকম পেপটাইড আছে। তুমি যদি এই পেপটাইডগুলো নির্দিষ্ট সময় অন্তর একটা নির্দিষ্ট ক্রমে নিজের শরীরে ইনজেক্ট করো, তোমার পরিণত ডিম্বাণুতে একটা প্রোটিন কমপ্লেক্স সংশ্লেষিত হবে। এই প্রোটিন কমপ্লেক্সে উপস্থিত ফাংশানাল প্রোটিনগুলোর প্রভাবে তোমার পরিণত ডিম্বাণুটার নিউক্লিয়াস দুটো প্রোনিউক্লিয়াসে বিভাজিত হবে। একটি প্রোনিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোমে মেইল স্পেসিফিক জিনগুলো উপস্থিত থাকবে আর অপর প্রোনিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোমে থাকবে ফিমেইল স্পেসিফিক জিনগুলো। এই দুটো প্রোনিউক্লিয়াস একে অপরের সাথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তোমার পরিণত ডিম্বাণু জাইগোটের রূপ নেবে। সেই জাইগোট থেকে তুমি এমন সন্তান প্রসব করবে যার মধ্যে অতিমানবিক বৈশিষ্ট্য বর্তমান থাকবে কারণ তোমার ডিম্বাণুতে যে প্রোটিন কমপ্লেক্স সংশ্লেষিত হবে তার মধ্যস্থ প্রোটিনগুলো প্রাথমিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকবে কিন্তু তুমি যদি কোন তীব্র প্রাকৃতিক শক্তির যেমন সূর্যের ভীষণ তাপশক্তি বা ঝঞ্ঝার প্রবল বায়ুশক্তি কিংবা বজ্রের তড়িৎশক্তির সংস্পর্শে আসো, তখনই প্রোটিনগুলো সক্রিয় হয়ে নিজেদের কাজ শুরু করে দেবে। তোমার সন্তানের মধ্যে থাকবে সেই প্রাকৃতিক শক্তির দুর্জয় বৈশিষ্ট্য!"
অবিশ্বাস থেকে প্রসূত কৌতুক মেশানো এক চিলতে হাসি ঠোঁটের কোণে সাজিয়ে পৃথা জিজ্ঞাসা করলো, "মানুষ আর প্রকৃতির হাইব্রিড?" আত্রেয় পৃথার হাসি দেখলেন কিন্তু সেই হাসির নেপথ্যে থাকা অবিশ্বাস তাঁর বোধগম্য হলো না। তিনি একই উদ্যমের সাথে উত্তর দিলেন, "একদম ঠিক! তবে কোন্ পেপটাইডটা কোন্ পেপটাইডের পর ইনজেক্ট করতে হবে ও কত ঘণ্টা পর ইনজেক্ট করতে হবে তা সহজে মনে রাখতে একটা ছড়া আমি বানিয়েছি। এই ছড়াকে বলতে পারো আমার এই আবিষ্কার ফলপ্রদ হওয়ার মন্ত্র! দেওয়ালেরও কান আছে পৃথা! আমার এই আবিষ্কারের কথা এখনও কেউ জানে না এবং আমি চাই একমাত্র তুমিই এর সুফল ভোগ করো।" এই বলে ডক্টর আত্রেয় পৃথার কানের কাছে তাঁর ঠোঁট নিয়ে গিয়ে ছড়াটি বলতে শুরু করলেন।
#
এক বছর পর..
একদিন সকালে ডক্টর আত্রেয় তাঁর বাগানে পদব্রজে ভ্রমণ করছিলেন। হঠাৎ দেখলেন পৃথা কোলে একটি শিশু নিয়ে উপস্থিত। শিশুটির সুহাস মুখমণ্ডল দেখে আত্রেয়র ঠোঁটেও হাসি খেলে গেল, কিন্তু পৃথার ক্লান্ত মুখমণ্ডলে ছলছল দুই চোখ আত্রেয়কে বিচলিত করলো। পৃথা কাঁপা-কাঁপা স্বরে বলল, "মা হয়ে এই সন্তানকে আমি আমার গর্ভে নষ্ট করতে পারিনি, কিন্তু এই সন্তানের দায়িত্ব আমার পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। আমি এখনও অবিবাহিত। কেউ বিশ্বাস করবে না যে এই সন্তানের পিতা সূর্য, সকলে আমার চরিত্র নিয়েই প্রশ্ন করবে।"
এই কথা শুনে ডক্টর আত্রেয়র কণ্ঠস্বরে ক্রোধ প্রতিফলিত হলো, "তুমি যদি সন্তানের দায়িত্বই না নেবে তাহলে কেন এই সন্তানকে জন্ম দেওয়ার সকল বিধি পালন করেছিলে?" পৃথা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলল, "আপনার বক্তব্যের সত্যতা যাচাই করার ঔৎসুক্য আমি দমন করতে পারিনি!" পৃথা এরপর চোখের জল মুছতে মুছতে বলল, "আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আজ গভীর রাতে সকলের অগোচরে একে আমি গঙ্গায় ভাসিয়ে দেবো।" ডক্টর আত্রেয় কিছুক্ষণ কি যেন ভাবলেন, তারপর শান্ত ও গম্ভীর স্বরে বললেন, "মাতা যদি দায়িত্ব নেওয়ায় অপারগ হন, পিতার মুখ ফিরিয়ে থাকা চলে না। তুমি একটু অপেক্ষা করো পৃথা, আমি আমার ল্যাবরেটরি থেকে আসছি।"
ল্যাবরেটরি থেকে কিছুটা তরল পূর্ণ একটি সিরিঞ্জ নিয়ে এসে ডক্টর আত্রেয় শিশুটির শরীরে সেই তরল ইনজেক্ট করলেন। শিশুটি সঙ্গে -সঙ্গে কাঁদতে শুরু করল। পৃথা বেশ বিচলিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো, "এটা কি ইনজেক্ট করলেন?"
ডক্টর আত্রেয় পৃথার চোখে-চোখ রেখে গম্ভীর স্বরে উত্তর দিলেন, "সুরক্ষা..."
পৃথা বেশ আশ্চর্য হয়ে প্রত্যুত্তর দিল, "বুঝলাম না ডক্টর!!"
ডক্টর আত্রেয় এরপর শিশুটির সিক্ত দুই চোখে-চোখ রেখে বললেন, "তোমার সন্তানের শরীরে একটা মেটালোপ্রোটিন দ্রবণ ইনজেক্ট করলাম। এই মেটালোপ্রোটিন সূর্যের আলোর প্রভাবে এক স্থায়ী কবচে রূপান্তরিত হয়ে তোমার সন্তানের সমগ্র দেহকে সকল বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করবে।" হঠাৎ কাকতালীয় ভাবে আকাশে মেঘের চাদর সরে গিয়ে সূর্য আরও বেশী উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ডক্টর আত্রেয়র চোখ-মুখ থেকে এক উদ্দীপনা বিচ্ছুরিত হতে লাগল, তিনি আকাশে সূর্যের দিকে তাকিয়ে উচ্চৈঃস্বরে বললেন, "সূর্য তার বক্ষে প্রচণ্ড উত্তাপ ধারণ করে সমগ্র জগতে তার তেজ ছড়িয়ে দেয়!" তারপর পৃথার মুখের দিকে তাকিয়ে একইভাবে আত্রেয় বলে উঠলেন, "সূর্যের মত তেজস্বী হবে তোমার এই পুত্র-সন্তান, সূর্যেরই মত হবে ওর সহ্যশক্তি, জন্মেই মাতৃ লালন বঞ্চিত এই মনুষ্য জীবনের বিষ বারে-বারে পান করেও কর্তব্যে অবিচল থাকবে! ব্রহ্মাণ্ডের কোন পদার্থ বা শক্তি ওর দেহের কবচ ভেদ করতে পারবে না! তোমার আর সূর্যের এই সন্তান হবে অভেদ্য!"
#
ত্রিশ বছর পর...
সময়টা সন্ধ্যে। একটি বিশাল পরিত্যক্ত বনেদী বাড়ির সিংহদ্বারে সশস্ত্র আর্মি অফিসারেরা যে যার জায়গা নিয়ে বাড়িটির দিকে বন্দুক তাক করে রেখেছেন। সিংহদ্বারের সামনেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বেশ কয়েকজন আর্মি অফিসারের নিষ্প্রাণ দেহ। বাড়িটির সিংহদ্বার থেকে বেশ কিছুটা দূরে দণ্ডায়মান দুজন আর্মি অফিসার থমথমে মুখে কিছু আলোচনা করছেন। হঠাৎ এঁদের মধ্যে একজন তাঁর মোবাইল ফোনে একটি কল্ পেলেন। অফিসারটি কলটা রিসিভ্ করেই ঊর্ধ্বশ্বাসে বললেন, "সকাল থেকে অনেকগুলো রাউন্ড গুলি চলেছে স্যার! আমাদের সাতজন অফিসার মারা গেছেন! সন্ধ্যে হয়ে গেল কিন্তু এক চুলও আমরা এগোতে পারিনি! ওরা ওদের মাস্টার মাইন্ডকে প্রোটেক্ট করছে স্যার! ঐ মাস্টার মাইন্ডকে জীবিত না পেলে রাজ্যের কোন্-কোন্ শহরে কোথায় কোথায় টাইম বম্ব প্লান্ট করা হয়েছে তার কিচ্ছু জানা যাবে না!"
অফিসারটি এবার একটু দম নিয়ে বললেন, "আই এম অ্যাফ্রেইড উই আর রানিং আউট অফ টাইম স্যার।"
ফোনের ঐপাশ থেকে একটি গম্ভীর কণ্ঠস্বর বলল, "উই হ্যাভ্ স্টারটেড্ টু লুস্ দ্য ব্যাটল্ মেজর। এক্ষুনি একটা ব্লাস্টের খবর পেলাম। কয়েকশো সাধারণ মানুষ মারা গেছেন। আমাদের হাতে এখন একটাই অপশন্, 'অভেদ্য।"
কল্ শেষে অপর অফিসারটি জিজ্ঞাসা করলেন, "কি বললেন স্যার?"
মেজর একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে উত্তর দিলেন, "অভেদ্য আসছে।"
অফিসারটি অত্যন্ত জিজ্ঞাসু স্বরে বললেন, "অভেদ্য, সে কে?"
মেজর উত্তর দিলেন, "অভেদ্য হলো আর্মির আনঅফিসিয়াল রিসোর্স। কোন অপারেশন খুব ক্রিটিকাল হলে বা কোনও অপারেশনে খুব ক্রিটিকাল সিচোয়েশন তৈরি হলে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল স্যার কখনও বা স্বয়ং কর্ণেল স্যার অভেদ্যকে ডাকেন। বস্তির ছেলে। ওর বাবা কর্ণেল স্যারের প্রাইভেট কার ড্রাইভার। হি ইস্ ওয়ান ম্যান আর্মি। ব্ল্যাক বেল্ট ইন থ্রি টাইপ্স অফ্ মার্শাল আর্টস। বক্সিং-এও দুর্ধর্ষ। সকল অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে নিপুণ। ও ট্রিগার পুল করেছে কিন্তু টার্গেট মিস্ হয়েছে এমন ঘটনা আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি। চোখ বন্ধ করে শুধু পদক্ষেপ শুনে যেকোনো দিক থেকে আসা শত্রুর কপালে শ্যুট করতে পারে। অভেদ্য বলে, ভিন্ন-ভিন্ন উচ্চতার মানুষের পদক্ষেপের শব্দও নাকি ভিন্ন-ভিন্ন হয়!"
মেজরের কথা শেষ হতেই তাঁদের থেকে কিছু দূরে একটা পুরনো রঙ ওঠা বাইক এসে দাঁড়ালো। প্রায় ছয় ফুট লম্বা সুঠামদেহী শ্যাম বর্ণের একটি ছেলে সেই বাইক থেকে নেমে দ্রুত পদক্ষেপে পরিত্যক্ত বাড়িটিতে ঢুকতে গেল। মেজর একটু উঁচু স্বরে বললেন, "অভেদ্য, গান!"
দৃঢ় কণ্ঠস্বরে উত্তর এল, "লাগবে না স্যার, ওদের বুলেটেই ওদের নাম লেখা আছে।" অভেদ্য সিংহদ্বার পেরিয়ে বাড়িটিতে প্রবেশ করার সাথে সাথেই শুরু হলো তার সমগ্র দেহে গুলিবর্ষণ ও একই সাথে ধাতব শব্দের ঐকতান । মেজরের সাথে দণ্ডায়মান অফিসারটি এত ধাতব শব্দ শুনে আশ্চর্য হলে মেজর বললেন, "ডক্টর মাথুর অভেদ্যকে এক্সামিন করে আমায় অভেদ্যর এই সুপার-হিউম্যান কোয়ালিটি এক্সপ্লেইন করেছিলেন। ওর স্কিনের সবচেয়ে বাইরের স্তর স্ট্র্যাটাম করনিয়ামের ইন্টার সেলিউলার অ্যাঢেসিভ স্ট্রাকচারে রয়েছে এক বিশেষ প্রকার স্ট্রাকচারাল মেটালোপ্রোটিন। যে কোন বস্তু ওর দেহের উদ্দেশ্যে নিক্ষেপ করলেই ওর স্ট্র্যাটাম করনিয়ামকে ঘিরে থাকা বায়ুস্তরে যে অতিরিক্ত আলোড়ন হয় তার প্রভাবে ঐ স্ট্রাকচারাল মেটালোপ্রোটিন অণুগুলোর মধ্যে থাকা ধাতু পরমাণুগুলো একে অপরের সাপেক্ষে নির্দিষ্ট সজ্জায় সজ্জিত হয়ে মুহূর্তের মধ্যে একটা অভেদ্য ধাতব কবচ তৈরি করে।
( সমাপ্ত )
Next Story
List of all Bengali Stories
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717