Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

কালভৈরব ( ছোট গল্প )

Bengali Short Story

All Bengali Stories    68    69    70    71    72    73    74    75    (76)     77   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে ) Result
--------------------------



◕ কালভৈরব ( ছোট গল্প )
- ইপ্সিতা ভট্টাচার্য, শহীদ নগর, ঢাকুরিয়া, কলকাতা

"আত্মা নামানো দেখেছিস কখনও?" সিগারেটে টান দিয়ে প্রশ্ন করল অমুল্য।

এসে থেকে একের পর এক অনন্য অভিজ্ঞতা হচ্ছে শঙ্করের। কিন্তু এ যে একেবারে অপ্রত্যাশিত।

"না। গাঁজাখুরি দেখার ইচ্ছেও নেই। " হাতের ইশারায় সিগারেটটা চাইল শঙ্কর, "তার চেয়ে বরং সিনেমা দেখে আসি চ। "

"ধুর ধুর, কলকাতায় গিয়ে মেলা সিনেমা দেখতে পাবি। তবে এ এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা ভায়া। তাছাড়া আজ অমাবস্যা। কালভৈরবের আবির্ভাব হবে আজ।" অমুল্য বেশ উত্তেজিত হয়ে বলল।

অমুল্যের উদ্দেশ্যে একটি গালি ছুড়ে শঙ্কর বলল, " কলেজে যে এত মিছিল মিটিং এথিসিম' নিয়ে লেকচার দিতি, তা কি শুধুই মহিলাদের ইমপ্রেস করার জন্য।"

"জানি যে তুই খোটা মারবি, কিন্তু বিশ্বাস কর, নিজের চোখে না দেখলে এ জিনিস বিশ্বাস করার নয়। আরে বেশী দূর তো নয়। ১ মাইল পথ। ইস্কুলটার পিছনেই চল না।

"বেশ; তবে ফেরার সময় কিন্তু করিমদার দোকান থেকে কাটলেট," বলল শঙ্কর। সত্যি কথা বলতে বেশ বোর-ই হচ্ছিল সে। পাঁচ দিন আগে অমুল্যের গ্রামে এসেছে শঙ্কর। কুলতোর, বীরভূম জেলার শিউরির থেকে মাইল আটেক পথ। স্টেশনে নেমে বাসে করে আসতে হয়। কলেজের বন্ধু অমূল্য ও শঙ্কর। একসাথে এম এস সি পাস করে দুজনেই এখন ছাত্র পড়ায়। শঙ্কর কলেজে আর অমুল্য হাই স্কুলে। গরমের ছুটি পড়তেই এবার ঠিক করেছিল অমুল্যের গ্রামের বাড়ি যাবে। হয়েও গেল। গ্রামের খোলা বাতাস, সুসম খাওয়া, প্রচুর ঘোরাঘুরির মধ্যে দিব্যি কেটে গেল দিন পাঁচেক। কাল চলে যাওয়ার দিন বলেই আজ বিকেলে দূরে কোথাও যাওয়া স্থির করে নি শঙ্কর। তবে এই প্রস্তাব প্রায় সিনেমা দেখার মতই। দেখাই যাক।

সরু আলের রাস্তা দিয়ে বড় রাস্তায় পড়তে হয়। অমুল্যদের বাড়ি থেকে এই পথটুকুতে আলো নেই। বেশ গা ছমছমে পরিবেশ। অমুল্য কলেজ কালে বেশ বাম-মনস্ক ছিল। প্রেত, পিশাচ ইত্যাদির নাম শুনলেই খেপে উঠত...এহেন ছেলে কিনা... ভাবনায় ছেদ পড়ল শঙ্করের। চলে এসেছে ওরা। ইস্কুলের পিছনে একটি পরিত্যক্ত ঘর। বোধহয় স্টোররুম, সেটাকেই কায়দা করে একটি প্ল্যানচেট কক্ষ তৈরি করেছেন ভৈরব মহাশয়। একটি টিমটিমে বাল্বে দেখা যাচ্ছে দুটি বেঞ্চ এবং মাঝখানে একটি গোল টেবিল। এক দিকের বেঞ্চে দুজন ভদ্রলোক বসে রয়েছেন। দেখে মনে হয় বেশ সম্ভ্রান্ত। উলটোদিকের বেঞ্চি দখল করে শঙ্কর আর অমূল্য বসল। "উকিল সাহেব বুঝলি, কালভৈরবের সাহায্যে মৃত ব্যক্তিকে তলব করবেন মনে হয়।" শঙ্কর অমুল্যর দিকে তাকায়। কিন্তু কোন মন্তব্য করে না।

মিনিট দশেক বসার পর একটি ছোকরা গোছের ছেলে এসে একটি মোমবাতি ও ধুনি রেখে গেল টেবিলের মধ্যিখানে। খ্যানখ্যানে গলায় বলল, " আপনারা সবাই হাত জোড় করুন। কালভৈরব এবার আত্মা তলব করবেন। শঙ্করের উপেক্ষা করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু অমুল্যর গুঁতো খেয়ে অগত্যা সেও হাত মেলল।

" জয় ভৈরব" শব্দে শান্ত কক্ষটা কেপে উঠল। একটি বছর ত্রিশের লোককে এবার দেখা গেল। পরনে আলখাল্লা গোছের একটি কাপড়। ঘাড় পর্যন্ত চুল। মুখে একরাশ দাড়ি। উচ্চতা বিশেষ নয়। নতুন দুই অতিথিকে দেখে বিন্দুমাত্র বিচলিত হলেন না। বেশ গম্ভীর গলায় বললেন, " উপস্থিত সকলকে প্রণাম জানিয়ে আমার আরাধনা শুরু করছি। যারা প্রথমবার আমার উপাসনার সাক্ষী হচ্ছেন তাঁদের আমার পদ্ধতিটা জানাই: আমি আত্মাকে স্মরণ করে ডাকি, তারপর আমার দেহের উপর উনি ভর করেন। তারপর আমার মুখ দিয়ে যা শুনবেন তা ওনার কথা। আমরা আজ কথা বলব, রামকিঙ্কর মজুমদারের সাথে। আসুন, সবাই উনার ছবির দিকে তাকাই। স্মরণ করি এই ত্রিকালজ্ঞ প্রাণটিকে।"

বিরক্ত লাগছিল শঙ্করের। গুমোট পরিবেশে, একটি অদ্ভুত ধূপের গন্ধ যেন আচ্ছন্ন করে রেখেছে। কালভৈরব নামের লোকটি বেশ নরম স্বরে ডেকে উঠলেন, "রামকিঙ্কর, শুনতে পাচ্ছ? তুমি শুনতে পাচ্ছ?" লোকটার স্বরে কোথাও যেন একটা 'মা' সুলভ মায়া...যেন সন্তানকে ডাকছে। প্রায় মিনিট খানেক আর্জি জানাবার পর হঠাৎ টেবিলের মধ্যে লুটিয়ে পড়লেন কালভৈরব। শঙ্কর ছাড়া কেউই স্তম্ভিত হল না। সম্ভবত এই আচরণ তাদের পূর্বপরিচিত। এরপর প্রায় মিনিট দু'য়েক সব চুপ। বাইরে কোথাও তক্ষক ডাকল যেন। ঠিক তার পর যা হল তা ভাবলে এখনও গায়ে কাঁটা দেয় শঙ্করের। ধুনির এই উন্মত্ত পরিবেশে মুখ তুললেন ভদ্রলোক। একটা গোঙ্গানির শব্দের সঙ্গে দেখা গেল লোকটি তার দু'দিকের দুটি কাঁধ পিছনে ঠেলে দিল। একি! এও কি সম্ভব !দুটি ঘাড়কে কাগজের মত মুড়ে দিলেন। তার গোটা শরীরটি যেন দড়ি পাকিয়ে রয়েছে। পাস থেকে অমূল্যের চাপা গলা শুনা গেল, "কালভৈরব!"

তারপর শুনা গেল একটি সম্পূর্ণ আলাদা কণ্ঠস্বর। একটি বাঁজখাই গলা বলে উঠল, "কে তোমরা, কি চাও?"

উকিল বাবুই কথোপকথন শুরু করলেন, "আপনি এসেছেন কিঙ্করবাবু? কি সৌভাগ্য..." শঙ্করের অবস্থা তখন বলে বোঝানর মত নয়। কালভৈরবকে দেখাচ্ছে ইংরাজির "ইউ" এর মত। চোখ বুঝে অন্য কণ্ঠে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। কথাবার্তা চলল প্রায় মিনিট দশেক। বিশদে শঙ্কর কিছু বুঝতে পারেনি। মাথা কাজ করছিল না। উকিল বাবুর " অনেক ধন্যবাদ" বলায় তার চেতনা ভাঙল। । তারপর আবার সেই গোঙ্গানির শব্দ করে কালভৈরব নিজের দুটি কাঁধ সামনে আনলেন আবারও " ইউ আকারে। খানিক বাদে ফের লুটিয়ে পড়লেন টেবিলে। আলো জ্বলে উঠল। উকিলবাবু নিজের হিসেব মিটিয়ে নিলেন কক্ষের ওই ছোকরাটির সাথে। শঙ্কররাও বেরল। চিন্তিত শঙ্কর তখন ভাবছে যে, এ কি হতে পারে? লোকটা কি ভোজবাজি বা হিপ্নটিজম জানে? নাকি যোগবলে নিজের শরীরকে এরকম তৈরি করেছে? এই রকম নানা প্রশ্ন নিয়ে সেই রাতটা কাটল। কাটলেট বা কাতলা মাছ, কিছুই রুচল না। পরদিন ফেরার পথে বাস স্ট্যান্ডে দেখা হল কালভৈরবের সঙ্গে। একগুচ্ছ বিনয় নিয়ে অমূল্য নমস্কার করল। শঙ্কর সৌজন্যের খাতিরে জিজ্ঞেস করল, " আপনি ঠিক আছেন তো?"

শঙ্করের দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে অল্প হেসে বললেন, "এতগুলো মানুষের মধ্যে স্বয়ং কালভৈরব আমায় নির্বাচন করেছেন। ওইটুকু সহ্য হয়ে যায়, বুঝলেন!"

কিছু বলতে যাচ্ছিল অমুল্য, তার আগেই প্রতিনমস্কার "চলি" বলে এগিয়ে গেলেন কালভৈরব। বাস এসে গেল আরও মিনিট খানেক এর মধ্যে। কালভৈরবের মিলিয়ে যাওয়া মূর্তির দিকে তাকাতে-তাকাতে বাসে উঠে পড়ল শঙ্কর।

এই ঘটনার প্রায় মাস তিনেক পর একদিন বইপাড়ায় যেতে হয় শঙ্করকে। কালভৈরবের শকটা বেশীদিন টেকে নি। কলকাতার পরিবেশ, কাজের চাপ হয়ত এর জন্যে খানিকটা দায়ী। এইদিকটা এলে পুটিরামের দোকানে শঙ্করের যাওয়া চাই-ই চাই। মেডিকেল কলেজের গেটের উলটোদিকের দোকান থেকে কটা ওষুধ কিনে রাজভোগের উদ্দেশ্যে রওনা দিল সে। ঠিক সেই সময় উল্টো দিকের ফুটপাথের দিকে চোখ পড়ল তার। বছর ত্রিশের একটা বেঁটে লোক এ দিকেই আসছে। সেই এক চেহারা, শুধু চুলটা ছোট করে কাটা। নাহ, কালভৈরবকে চিনতে ভুল হয়নি শঙ্করের। শুধু সেই দাপট টা যেন খানিক মীয়মান। মেডিকেল এর গেট দিয়ে বেরিয়ে বোধহয় এদিকেই আসছেন। শঙ্কর হাত তুলে হাঁক পারল, " ভৈরব বাবু", কিন্তু তখনই একটা পেল্লায় বাস এসে পড়ল সামনে। যাহ্, আর দেখা যাচ্ছে না। এমনকি বাস চলে যেতেও তাকে দেখা গেল না। তবে কি ভুল দেখল শঙ্কর! এক মুহূর্ত ভাবল সে, "নাহ কালভৈরব ই বটে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি গেল কোথায় লোকটা?" সে হলফ করে বলতে পারে তার ডাক শুনতে পেয়েছে লোকটা। লোকটা কি তবে শঙ্করের সম্মুখীন হতে চাইলেন না, না চিনতে পারলেন না। কালভৈরব কি অসুস্থ? অবশ্য কালভৈরবরা কি অসুস্থ হন! হাসপাতাল থেকে বেরোলেন বলেই তো মনে হল। বন্ধু সমীরণের কথা মনে পড়ল আচমকা। সে না মেডিকেল কলেজের ডাক্তার? তাকে একবার জিজ্ঞেস করা যায় কি? আজ বিকেলে তার চেম্বারে একবার টু মারতে হচ্ছে; যদি সে কোন খবর দিতে পারে। রাত ন'টায় শেষ হয় সমীরণের চেম্বার। ন'টার পরেই ঢুকল শঙ্কর। বন্ধুর সাথে বেশ কিছুদিন পর দেখা হল তার।

তোর খবর কি? পাত্তাই তো নেই!", "কি খাবি বল" ইত্যাদি সৌজন্য বিনিময়ের পর আসল প্রসঙ্গে এল শঙ্কর; সমস্ত ঘটনা বিস্তারিত ভাবে জানাল তাকে। বিশেষ বিবরণ দিল কালভৈরবের সেই ভয়ঙ্কর অবস্থার। ভেবেছিল সমীরণ বোধহয় ঘটনাটা হেসে উড়িয়ে দেবে। কিন্তু তা হল না। উল্টে গভীর খাঁজ পড়ল তার কপালে। মিনিট খানেক চিন্তা করে সে বলল, " একদিন সময় দে, ব্যাপারটায় বোধহয় হেল্প করতে পারি আমি।"

সমীরণ ব্যাপারটাকে এতটা গুরুত্ব দেবে তা ভাবতে পারেনি শঙ্কর। দিন তিনেক পর সে নিজেই দেখা করতে এল শঙ্করের বাড়িতে। ঢুকতেই বলল, " যদিও অত্যন্ত গর্হিত কাজ, তবু বল দেখি ইনিই তোর কালভৈরব কিনা?" সোফায় গা এলিয়ে একটি ফাইল বাড়িয়ে দিল সমীরণ। একটা কেস ফাইল। ছবিতে কালভৈরব, কিন্তু নামটা কালিদাস গুপ্ত, বর্ধমান জেলা, বয়স ৩২ ।

"তোকে এই পেশেন্ট ফাইল দেখিয়ে হয়ত ঠিক করি নি, কিন্তু ঠগ চিহ্নিতকরণের প্রয়োজন ছিল," বলে রবির আনা জলের গ্লাসটা একটানে শেষ করল সমীরণ। "ক্লিডওক্রেনিয়াল ডিপ্লাসিয়া'র নাম শুনেছিস?" জিজ্ঞেস করল সে। মাথা নাড়িয়ে 'না' জানাল শঙ্কর।

"হম, অত্যন্ত রেয়ার অসুখ বা কন্ডিশন বলতে পারিস। মূলত হাড় এবং দাঁতের বৃদ্ধি রোধ হয়ে থাকে এক্ষেত্রে। আমাদের 'কলারবোন' বা ঘাড় এর কাছের যে হাড়টা থাকে সেইটা সম্পূর্ণ তৈরি হয় না, অনেক সময় একেবারেই থাকে না," নিজের ঘাড়ের কাছের হাড়টির দিকে নির্দেশ করল সমীরণ। "এর ফলে ভুক্তভোগী মানুষটি নিজের দুটি ঘাড় ইচ্ছে মত সামনে পিছনে করতে পারে, স্প্রিং-এর মত। আরও অনেক উপসর্গ ই থাকে কিন্তু সে সব থাক। এইটা বুঝতে পারছিস তো, যে, ঐ লোকটা নিজের এই বিশেষ অবস্থাকে কিভাবে কাজে লাগিয়েছে?" বলল সমীরণ।

"আর কণ্ঠস্বর?" অবাক গলায় বলল শঙ্কর।

"সে আর এমন কি ব্যাপার! মানুষের এমনিতেই দুটো 'ভোকাল কর্ড' বা স্বরতন্ত্রী থাকে। তাছাড়া লোকটা ভাল 'মিমিক' বা "হরবোলা" হতে পারে। হতে পারে কোনও নাটক বা যাত্রা দলের সঙ্গে যুক্ত। আমি খবর নিয়ে নেব। তুই কিন্তু অবশ্যই তোর বন্ধুকে খবরটা জানাবি। বলিস, পুলিশকে জানিয়ে দিতে। তোর কথা শুনে মনে হচ্ছে লোকটার প্রতিপত্তি আছে, পুলিশ প্রয়োজন হবে।"

আরও বেশ খানিকক্ষণ কথা বলে চলে গেল সমীরণ। শুতে যাওয়ার আগে অমূল্যকে ফোনে ধরার চেষ্টা করেও পেল না শঙ্কর। । সে রাতে ঘুম এল অনেক দেরিতে। রাতে বিশ্রী স্বপ্ন দেখল সে। সেই বিকট রূপ; সেই ধুনি জ্বালা কক্ষ; ঘুম ভাঙল রবির ডাকে। শঙ্করের নামে চিঠি এসেছে দুটো। কিন্তু সে সব পরে ; আগে অমূল্যকে ফোন করবে সে; একবারেই লেগে গেল। " অমুল্য শোন, তুই কি গ্রামেই আছিস? থাকলে এই মুহূর্তে পুলিশের কাছে যা। গিয়ে বল কালভৈরবের কক্ষে রেইড করতে। লোকটা একটা ঠগ..."

" কি বলছিস শঙ্কর?" তাকে বাধা দিয়ে উত্তর দিল অমুল্য, " তা ছাড়া, উনি তো গত পরশু তুঙ্গানাথ এর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। উনি নাকি কোন জায়গায় বেশীদিন থাকেন না।" ফোন কাটল শঙ্কর; আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই, বিশেষত যখন পাখি উড়ে গেছে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চিঠির দিকে মন দিল শঙ্কর। একটি বিদ্যুৎ-এর বিল। অন্যটি একটি চিঠি, তাতে কোন নাম এর উল্লেখ নেই। চিঠি খুলে পড়তে থাকল শঙ্কর। তাতে লেখা,
শঙ্করবাবু অসংখ্য নমস্কার নেবেন। আমার পরিচয় এতদিনে জেনেছেন কিনা জানি না। আমার নাম কালিদাস গুপ্ত, নাকি কালভৈরব বললে চিনবেন। একটি বিশেষ শারীরিক ক্ষমতাবলে আমি কালিদাস থেকে কালভৈরব হয়ে যাই। কণ্ঠস্বর বদল অবশ্য আমার সার্কাসের অনুশীলনের ফল। আপনাকে এ তথ্য দেওয়ার উদ্দেশ্য এই যে, আমি বিশ্বাস করি আপনি যে কোনও ভাবে এই রহস্যের কিনারা করতেন-ই। আপনি অনুসন্ধিৎসু, সেটা দেখেই বুঝেছিলাম। সেই দিন আপনাকে চিনেছিলাম তাই দেরি না করে কুলতোরের পাততাড়ি গুটিয়েছি। আপনি হয়ত আমায় ঠগ বলবেন কিন্তু এই অল্প সময়ে আমার জন্যে অনেকে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন। অনেকের ক্ষতিও হয়েছে, তবে যারা কাজ হাসিল করতে আত্মা নামান তাদের কি সত্যি-ই ঠকালাম? ভেবে দেখবেন ও ভাল থাকবেন।
- ইতি
কালভৈরব

চিঠি পড়ে খানিকক্ষণ চিন্তা করল শঙ্কর। কি অসম্ভব ক্ষুরধার লোকটা! ন্যায়-অন্যায় বিচার করার সে কেউ-ই নয় তবু কেন জানি লোকটার জন্য একটু খারাপ লাগল শঙ্করের। সে লোকটির বলা একটি কথা মনে এল তার, " এতগুলো মানুষের মধ্যে স্বয়ং কালভৈরব আমায় নির্বাচন করেছেন।"
( সমাপ্ত )
Next Story   


All Bengali Stories    68    69    70    71    72    73    74    75    (76)     77   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717