All Bengali Stories
72
73
74
75
76
77
78
79
80
(81)
82
83
-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে )
Result
--------------------------
◕
শুধুই ভালোবাসা
লেখিকা-কাশফিয়া নাহিয়ান, মনেশ্বর রোড, ধানমণ্ডি, ঢাকা, বাংলাদেশ
উফ্! এত পড়াশুনা সহ্য হয়? বলেই কাঁধের ব্যাগটা এক রকম ফেলেই দিলো টাপুর।
আহ্! এত চটছিস কেন? দেড় মাস পর ফাইনাল পরীক্ষা তাই পড়াশুনার চাপ একটু বেশী, টাপুরকে শান্ত করতে করতে বলল আরিফা।
পড়াশুনার চাপ যেন বেশী সহ্য করতে না হয় এজন্য মেডিকেলে চান্স পেয়েও পড়লাম না। আর এখন দেখ ইংরেজিতে পড়তে এসে আজ এই প্রেজেন্টেশন, কাল ওই লেকচার; অসহ্য!
রেগে বলল টাপুর।
এত রাগ করছিস কেন? পরীক্ষাটা শেষ হোক; দেখিস আমরা অনেক মজা করবো।
এই জনমে আর মজা হবে না! টাপুরের কণ্ঠে বিরক্তির সুর। আর তখনই তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ালো নাদিম। নাদিম ভার্সিটির বাজে একটা ছেলে। ক্লাস করে না, লেকচার এটেন্ড করে না।
কেউ তাকে কিছু বলেও না, কারণ সে ভার্সিটির ট্রাস্টির ছেলে।
কোথাও যাচ্ছ ডার্লিং? সিগারেট টানতে-টানতে বলে নাদিম।
সেই জবাব কি আপনাকে দিতে হবে? নিজের কাজ করুন।
উফ্! যখন তুমি রেগে যাও তোমাকে অপূর্ব লাগে টাপুর ডার্লিং...
চল্ তো এখান থেকে! বলেই টাপুর আরিফাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। নাদিমের কথা শুনলে, তাকে দেখলে মেজাজ বিগড়ে যায় তার।
আচ্ছা তুই যা। আজ আমার লাইব্রেরীতে অনেক দেরী হবে। নোট বানাতে হবে তো!
আমার জন্যও কিন্তু নোট তৈরি করিস টাপুর। না হলে আমার কি হবে?
সবসময় আমার নোট পড়েই তোকে পরীক্ষা দিতে হয়। তুই নিজে কেন নোট বানাস না?
যখন তুই আছিস আমার জন্য! এত কষ্ট কেন করবো?
ইস্! ঢং দেখো মেয়েটার...
◕
লাইব্রেরী থেকে বের হতে অনেকটাই দেরী হয়ে গেলো টাপুরের। কতক্ষণ থেকে রিক্সা সি-এন-জি খুঁজছে, কিন্তু কিছুই পাচ্ছে না। এদিকে আকাশে কালো মেঘ ভিড় করছে। এখনই ঝড় বৃষ্টি নামবে।
আর রাস্তাটাও ফাঁকা, জনমানবশূন্য। তাই অনেক ভয় লাগছে টাপুরের। হঠাৎ খেয়াল করলো নীল আলখাল্লা পরা কয়েকজন তার পিছু নিয়েছে।
লোকগুলোকে সুবিধার মনে হল না টাপুরের। সে ভয়ে দৌড়াতে লাগলো । সেই লোকগুলোও তার সাথে দৌড়াতে লাগলো। আর তখনই একটা হাত টাপুরকে প্রায় টেনে নিয়ে গেলো...
নিজেকে কোনমতে সামলে টাপুর দেখল একজন কালো জ্যাকেট পরা লম্বা সুদর্শন যুবক তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
আ..পনি..কে? আর আ...মি কোথা..য়!
এই জায়গা আর এই লোকগুলো কোনোটাই ভালো না। আপনি এখান থেকে চলে যান।
সেই সময়ে কোথা থেকে একটা সি-এন-জি চলে এলো। যুবকটি একপ্রকার জোর করেই টাপুরকে সি-এন-জিতে বসিয়ে দিলো। টাপুর তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য যেই না পিছনে ঘুরলো দেখল যুবকটি কোথাও নেই।
আশ্চর্য! এত দ্রুত কেউ কোথাও কিভাবে চলে যায়? কিছুই বুঝতে পারলো না টাপুর।
এর পরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে নিজের ক্লাসরুমে সেই যুবককে দেখে অবাক হয়ে গেলো টাপুর।
এসেছিস তুই? আজ আসতে এত দেরী করলি কেন? জিজ্ঞাসা করলো আরিফা।
হ্যাঁ...ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরী হয়ে গেছে।
ওই দেখ নতুন ভর্তি...
কয়েকদিন পর পরীক্ষা। আর এখন নতুন ভর্তি! অবাক হয়ে বলল টাপুর।
আরে..ওই সব ছাড়! ছেলেটি কিন্তু বেশ হ্যান্ডসাম। চল না আলাপ করি..
কি আশ্চর্য! চিনি না, জানি না..এভাবে কিভাবে আলাপ করবো?
তুই চল তো আমার সাথে, এক রকম তাকে টেনে নিয়ে গেলো আরিফা।
হাই..নিউ এ্যাডমিশন তাই না! আপ..না..র না..ম?
আসিফ। আসিফ রহমান।
ও..আচ্ছা! আমি আরিফা, আর ও হচ্ছে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড টাপুর..
হ্যালো..
হ্যা..লো..অবাক হয়ে গেলো টাপুর। কালকেই তার সাথে দেখা হয়েছে অথচ সে বুঝতেই দিলো না।
তা..হঠাৎ..ভার্সিটি চেঞ্জ করলেন কেন?
ভালো লাগছিলো না তাই..দায় সারা ভাবে জবাব দিলো আসিফ।
আচ্ছা..কোনও প্রয়োজন হলে আমাদের বলবেন। আমরা তো নতুনদের সাহায্য করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকি। কি বলিস টাপুর...
হ্যাঁ..সবসময়ই তৈরি।
তারপর থেকে আসিফের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে টাপুর। খুবই অদ্ভুত একটা ছেলে। কারও সাথে মেলামেশা করে না। সবসময় বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকে।
রিজওয়ান নামের এক ছেলের পাশে বসে ক্লাস করে। তার সাথেই শুধু কথাবার্তা বলে। ঘণ্টার-পর ঘণ্টা লাইব্রেরীতে কাটায়।
এত পড়াশুনা করলে হবে..ঘুমাবি না? রাত তো অনেক হল। কথাগুলো বলল টাপুরের মা তাহমিনা বেগম।
এই তো? আর একটু..তারপরই ঘুমিয়ে পড়ছি।
কিছুক্ষণ পর মায়ের দেয়া গরম দুধটুকু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে টাপুর। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে তার মনে হয় কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। কেন যেন মনে হয় আসিফই দাঁড়িয়ে আছে?
অথচ বিছানা ছেড়ে উঠতেই কাউকে দেখতে পায় না টাপুর। এসব কি ভাবছে সে? আসিফ এখানে কি করে আসবে? এ সবই তার মনের ভুল। কেন জানি এরপর থেকে মাঝরাতে তার ঘুম ভেঙে গেলেই মনে হয় আসিফ তার পাশেই আছে!
◕
আজ টাপুরের মন একদম ভালো নেই। প্রেজেন্টেশনটা ভালো হয়নি। তাই মনমরা হয়ে বসে আছে টাপুর।
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর..পায়ে দিয়ে সোনার নূপুর..আঁকাবাঁকা মেঠো পথে...গান গাইতে-গাইতে টাপুরের সামনে উপস্থিত হয় নাদিম।
সুইট হার্ট..এখানে মন খারাপ করে কেন বসে আছো? চলো না..ক্যাফেতে যাই গল্প করি..আজ না হয় হয়ে যাক এক কাপ চা...
আমি চা পছন্দ করি না। রেগে বলল টাপুর।
ঠিক আছে..আমরা কফি খাবো। একদম গরমাগরম ব্ল্যাক কফি...বলেই টাপুরের হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে নাদিম।
কি ব্যাপার..হাত ছাড়ুন বলছি..চিৎকার করতে থাকে টাপুর।
না..আজ আর তোমাকে ছাড়ছি না সুইট হার্ট...
আর তখনিই সেখানে এসে হাজির হয় আসিফ।
মেয়েটা যখন যেতে চাইছে না তখন হাত ছেড়ে দেওয়াই উচিত।
তুমি কে আমাদের মাঝে কথা বলার, রেগে গিয়ে বলে নাদিম।
কেউ না..শুধু একজন শুভাকাঙ্ক্ষী। বলছি, হাত টা ছেড়ে দে, না হলে এর পরিণতি ভালো হবে না।
এমন ভাবে কথাগুলো বলল আসিফ আর এমন ভাবে চোখ রাঙালো যে, নাদিম সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হল।
ধন্যবাদ..আমাকে সাহায্য করার জন্য।
না না..এ আর তেমন কি! আসলে কতকজনকে কড়া ভাষায় কথা না বললে চলে না।
এদিকে হাঁটতে গিয়ে চেয়ারের কোণে ধাক্কা লেগে পায়ের কিছুটা অংশ কেটে যায় টাপুরের। একটু রক্তও বের হয়। রক্ত দেখে উসখুস করতে থাকে আসিফ।
আপনার পা দিয়ে তো রক্ত বের হচ্ছে, ব্যান্ডেজ করুন। আ...মি রক্ত দেখ..তে পারি না। আমা..র অ..স্থি..র লা..গে। কথাগুলো বলে সেখান থেকে চলে যায় আসিফ।
অবাক হয়ে যায় টাপুর। এত লম্বা চওড়া যুবক! আর রক্ত দেখেই কাহিল..
তারপর থেকে টাপুর আর আসিফের দেখা সাক্ষাত বাড়তে থাকে। এখন তারা বেশ ভালো বন্ধু। কিন্তু টাপুর আসিফকে ভালো বেসে ফেলেছে। কেমন যেন মায়াময় মুখ আসিফের!
যত দিন যায় ততই তার দিকে আকৃষ্ট হতে থাকে টাপুর। কেন জানি এক অজানা ভালো লাগা কাজ করে! টাপুর আসিফকে তার ভালোবাসার কথা বলতে চায়। কিন্তু সাহস পায় না।
অবশেষে সে ঠিক করে পরীক্ষার শেষ দিনে তাকে তার মনের না বলা কথাগুলো বলবে। আসিফ নিশ্চয়ই তাকে প্রত্যাখ্যান করবে না, এতটুকু বিশ্বাস তার আছে।
এক একটি পরীক্ষার দিন পার হয়। আর টাপুর প্রতীক্ষার প্রহর গুণতে থাকে। একদিন আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ! পরীক্ষা শেষ করেই আসিফের জন্য অপেক্ষা করতে টাপুর। কিন্তু আসিফের দেখা পায় না।
এই রিজওয়ান...আসিফ কোথায়?
আমি জানি না তো টাপুর। ও তো এক্সাম শেষ করার আধঘণ্টা আগেই বের হয়ে গেছে।
টাপুর ভাবতেই পারছে না আসিফ তার সাথে দেখা না করে, কথা না বলে চলে গেছে। নির্জন রাস্তায় আনমনে হাঁটছে সে। কোথাও কেউ নেই। হঠাৎ সে খেয়াল করলো সেই নীল আলখাল্লা পরা লোকগুলো আবারও তার পিছু নিয়েছে।
জোরে দৌড়াতে লাগলো টাপুর। এবার সেই লোকগুলো তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেললো। সেই সময়ে কোথা থেকে কিভাবে যেন চলে আসে আসিফ!
আসিফ আর সেই কিম্ভূতকিমাকার লোকদের মাঝে অনেক কথা কাটাকাটি, বাকবিতণ্ডা হয়। তাদের ভাষা বুঝতে পারে না টাপুর। একসময়ে কথা কাটাকাটি মারামারির পর্যায়ে চলে যায়।
সবাইকে ঘায়েল করে ফেলে আসিফ। এক সময় সেই লোকগুলোও পালিয়ে যায়। আসিফও চলে যেতে থাকে কিন্তু তার হাত ধরে ফেলে টাপুর।
কোথায় যাচ্ছ তুমি? আজ আমার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তুমি কোথাও যাবে না।
কি প্রশ্ন?
তুমি ওই লোকগুলোকে আগে থেকেই জানো। আর তুমিই প্রতিদিন আমার ঘরে দাঁড়িয়ে থাকো, তাই না?
মাথা নিচু করে থাকে আসিফ।
বলো...উত্তর দিচ্ছো না কেন?
আমি তো তোমার সুরক্ষার জন্য প্রতি রাতে তোমার ঘরে দাঁড়িয়ে থাকি, যেন ওরা তোমার কাছে ঘেষতে না পারে।
কিন্তু ওরা কারা?
ওরা খারাপ। প্রতি নব্বই বছর পর-পর পূর্ণিমার রাতে এক নিষ্পাপ মেয়েকে বলি দেয় নিজেদের শক্তি বাড়ানোর জন্য। চিন্তা করো না, আর ওরা আসবে না।
আমার কথা এত ভাবো, তাহলে আসল কথাটা বলো না কেন যে, তুমি আমায় ভালোবাসো। আমি তোমাকে অনেক-অনেক ভালোবাসি। আমার নিজের থেকেও বেশী।
ভালোবাসা! না তা হয় না!
কেন হয় না? অন্য কাউকে ভালোবাসো? অভিমান করে বলল টাপুর।
আমি কাউকে ভালবাসতে পারি না...
কেন আসিফ?
কারণ আমি মানুষ না..আমি ভ্যাম্পায়ার।
মানে!!!
মানে আমি রক্তচোষা প্রাণী। রক্ত পান করে বেঁচে থাকি। এজন্যই সেদিন তোমার পায়ে রক্ত দেখে ছটফট করছিলাম। দেখতে চাও আমার ভেতরের আমিকে! তো দেখো..
হঠাৎ আসিফের চোখগুলো লাল হয়ে যায়। কান লম্বা হতে থাকে। আর ঠোঁটের দু'পাশ দিয়ে বেরিয়ে আসে দুটো দাঁত। চিৎকার করে ওঠে টাপুর...
আ....
মাত্র কয়েক সেকেন্ডও আমাকে সহ্য করতে পারলে না তো! পারবেও না...অন্ধকারের সম্রাট আমি। অন্ধকারে বসবাস করি। এই আঁধারেই রাজত্ব করি।
টাপুর কোনোমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, এক মুহূর্তের জন্য আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। এখন আমিই বলছি, তুমি ড্রাগন হও ড্রাকুলা হও আর ভ্যাম্পায়ারই হও আমি তোমাকেই ভালোবাসি।
এটা অসম্ভব। ভ্যাম্পায়ার আর মানুষের মধ্যে প্রেম কিভাবে হতে পারে? আমি তো অনেক আগেই এই দুনিয়া থেকে হারিয়ে গেছি। আর এখন এই অভিশপ্ত জীবনের বোঝা টানছি।
তুমি তো ফুলের মত কোমল একটি মেয়ে। তোমার জীবন তো মাত্র শুরু হয়েছে। তোমাকে আমি কিছুতেই নিজের সাথে জড়াতে পারি না।
সত্যিকারের ভালোবাসা যেকোনো মুশকিলের সমাধান করতে পারে। তুমি শুধু সাথে থেকো!
বুঝতে চেষ্টা করো টাপুর। আমি জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড, জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে তুমি। আমাকে ভুলে যাও....দেখো! তোমার জীবনেও কেউ আসবে, যে তোমাকে আপন করে নেবে।
আমার কাছে তোমাকে দেওয়ার মত কিছু নেই। শুধু আছে এক আকাশ শূন্যতা।
আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে কল্পনা করতে পারি না। কেঁদে বলল টাপুর।
প্লিজ..তুমি এভাবে কেঁদো না..
আমি তোমাকে আমার কাছ থেকে কোথাও যেতে দেবো না..আসিফের হাত শক্ত করে ধরে বলে টাপুর।
তুমি জানো ভ্যাম্পায়াররা তার ম্যাজিকের সাহায্যে যে কারও স্মৃতি মুছে ফেলতে পারে..
তুমি.. কি..তাহলে আ..মা..র...
কথা শেষ করার আগেই টাপুরের মাথায় হাত রাখে আসিফ। বিড়বিড় করে কিছু বলতে লাগল আর টাপুর পুতুলের মত দাঁড়িয়ে থাকল। না..কিছু বলতে পারছে না.. নড়তে পারছে। শুধু তার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
আস্তে আস্ত আসিফের কোলে ঢলে পড়লো টাপুর..
আমায় ক্ষমা করো । এছাড়া আমার কোনও উপায় ছিল না। তোমার ভালোর জন্য নিজের নামটা তোমার স্মৃতির পাতা থেকে মুছে দিতে হল। আজ থেকে তুমি আসিফ নামের কাউকে চিনবে না।
এই সময়ের সাক্ষী শুধু আমরা দুজন। এই মুহূর্তটা আমাদের মাঝেই বন্দী থাকবে। না কেউ জানবে, না কেউ বুঝবে আমাদের এই অসম্ভব কাহিনী..একটি আংটি পকেট থেকে বের করে টাপুরকে পরিয়ে দিল আসিফ।
এটা সবসময় পরে থেকো। এটা তোমাকে সমস্ত অপশক্তি থেকে দূরে রাখবে। আলোয় ভরে যাক তোমার ভুবন। তুমি অনেক ভালো থেকো। আর আমি কালের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবো।
অঝোর ধারায় কাঁদছে আসিফ...রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ। কারণ সে তো ভ্যাম্পায়ার। আর ভ্যাম্পায়ার কাঁদলে অশ্রু না... ঝরে রক্ত। কেন কাঁদছে সে? তার তো হ্নদয় নেই। তবে কেন এত খারাপ লাগছে তার!
ভেতরটা কেন এমন ফাঁকা-ফাঁকা লাগছে....টাপুরকে আস্তে করে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হাঁটতে থাকে সে।
টাপুরের যখন জ্ঞান ফিরল তখন দেখল হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে সে। মাথাটাও বেশ যন্ত্রণা করছে। তার মা আর আরিফা পাশে বসে আছে।
তুই ঠিক আছিস তো? তিনদিন পর তোর জ্ঞান ফিরল। কাঁদতে-কাঁদতে বলল তার মা তাহমিনা বেগম।
তুই কিভাবে অ্যাকসিডেন্ট করলি? জানতে চাইলো আরিফা।
আমি তো রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম...তারপর! আর কিছু মনে করতে পারলো না সে..মাথাটা খুব ব্যথা করছে...
থাক্! থাক্! আর কিছু মনে করতে হবে না...তুই ঠিক আছিস এটাই যথেষ্ট, চোখ মুছতে-মুছতে বলল তার মা।
এরপর থেকে যখনই টাপুর অ্যাকসিডেন্টের কথা মনে করতে চেষ্টা করে তখনই তার মাথায় যন্ত্রণা হয়। কিছু মনে করতে পারে না। কারও মায়াময় চেহারা তার চোখের সামনে ভাসে..তাও আবার আবছা।
টাপুর বুঝতে পারে না এটি কার চেহারা? আর এই আংটি..টাপুর জানে না এই আংটি তার কাছে কিভাবে এসেছে? কেন যেন এই আংটি খুলতে ইচ্ছা করে না তার!
মনে হয় অনেক কাছের কেউ তাকে এটা দিয়েছে..যাকে সে ভুলে গেছে কিন্তু যাকে তার মনে রাখা উচিত ছিল..
সকালের মিষ্টি রোদ যখন টাপুরের গালে এসে পড়ে তখন মনে হয় কেউ তাকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। ঝিরি ঝিরি বাতাসে কারও উপস্থিতি টের পায় সে। আর বৃষ্টির ফোঁটাগুলো যেন তার কানের কাছে তারই নাম ডাকতে থাকে..
টা..পু..র..
এই গলার স্বরটি অনেক পরিচিত কারও! কিন্তু কার? তা মনে করতে পারে না টাপুর।
( সমাপ্ত )
Next Bengali Story
All Bengali Stories
72
73
74
75
76
77
78
79
80
(81)
82
83
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717