Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

লাবণ্য

Bengali Story

All Bengali Stories    81    82    83    84    85    86    87    88    89    90    (91)     92   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে ) Result
--------------------------



লাবণ্য ( পর্ব ১)

লেখিকা - রিয়া পণ্ডিত, দক্ষিণ তারাপুকুর, আগরপাড়া, কলিকাতা- ১০৯

◕ পর্ব ১

অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১    পর্ব ২    পর্ব ৩    পর্ব ৪   

লাবণ্য
লেখিকা - রিয়া পণ্ডিত, দক্ষিণ তারাপুকুর, আগরপাড়া, কলিকাতা- ১০৯
পর্ব ১

স্কুলের সব থেকে হ্যান্ডসাম অ্যান্ড ফেমাস বয় অনিরুদ্ধ সেন। বেশ লম্বা, ফর্সা, ঘন কালো চুল, হাসলে গালে টোল পড়ে। স্কুলের সমস্ত মেয়েরাই অনিরুদ্ধ বলতে অজ্ঞান; লাবণ্যও বাদ যায়নি। লাবণ্য অনেক আগে থেকেই অনিরুদ্ধকে পছন্দ করতো। এখন বলতে গেলে প্রেমে হাবুডুবু খায় তবে মুখ ফুটে বলে উঠতে পারেনি। মেয়েরা সব সময়ই চায় প্রেম-প্রস্তাবটা প্রথমে ছেলের দিক থেকেই আসুক; সেই আশায় আর বলে ওঠা হয়নি মনের কথা।

লাবণ্যর এই আশাটা বাস্তব রূপ পেলো সেদিন, যেটা সবার ক্ষেত্রে হয় না, যেদিন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক কয়েকমাস আগে ক্লাসে সবার সামনে হাঁটু গেরে বসে হিরোদের মতো গোলাপ ফুল দিয়ে লাবণ্যকে প্রেমের প্রস্তাব দিল অনিরুদ্ধ। লাবণ্য সাথে-সাথেই 'হ্যাঁ' বলে দিল। কারণ, যেটা পাওয়ার জন্য মানুষ বছরে-পর বছর অপেক্ষা করে থাকে, সেটা পেয়েও ফিরিয়ে দেওয়াটা উচিত নয়।

রূপের দিক থেকে লাবণ্যও কিছু কম যায় না, গায়ের রং দুধে আলতা, কোমর অব্ধি লম্বা চুল, ঠোঁট দুটো হালকা গোলাপি রঙের আর ঠোঁটের একটু ওপরে ছোট একটা তিল। খুব সহজেই যে কোনও ছেলের ঘুম কেড়ে নিতে পারে লাবণ্যর এই রূপ; অনিরুদ্ধও ব্যতিক্রম রইলো না। সব মেয়েরা অনিরুদ্ধর জন্য পাগল হলেও অনিরুদ্ধর চোখটা লাবণ্যর দিকেই ছিল সেই প্রথম থেকে।

প্রেম সেতো এক স্বর্গীয় সুখ, প্রেম নামক এই সুখটাকে ভীষণ মাত্রায় উপভোগ করছে দু'জনেই তবে সদ্য প্রেমের প্রভাব লেখাপড়ার ওপর পরতে দেয়নি। রূপের দিক থেকে যেমন তুলনা হয়না, গুনেরও কিন্তু খামতি নেই। দু'জনেই খুব ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট, খুব ভালো ভাবেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করলো। পরীক্ষার পর কয়েকমাস ছুটি পড়ে গেল, দু'জনের দেখা সাক্ষাৎ হয়ে উঠছে না। অনিরুদ্ধর বাড়ি লাবণ্যর বাড়ি থেকে অনেকটাই দূরে। একে অপরকে ভীষণ মিস করছে দু'জনেই। সামনে তো সরস্বতী পূজো, হঠাৎ অনিরুদ্ধর মনে পড়তেই লাবণ্যকে কল দিল --

অনিরুদ্ধ -- হ্যালো।

লাবণ্য -- হ্যাঁ অনি বল।

অনিরুদ্ধ -- তা সামনে তো সরস্বতী পূজো আসছে, তুই কি বেরোতে পারবি?

লাবণ্য মনে-মনে খুব খুশি হয়ে বলল -- হ্যাঁ নিশ্চয়ই যাবো।

অনিরুদ্ধ উদাস ভাবে বলল -- ওকে, আমি টাইম বলে দেবো সময় মতো চলে আসিস, খুব মিস করছি রে তোকে।

লাবণ্য -- মিস ইউ সো মাচ অনি, ফাইনালি দেখা হবে কতদিন পর।

অনিরুদ্ধ -- হ্যাঁ হবে তো, ওকে এখন ঘুমিয়ে পড়, গুড নাইট লাভ ইউ।

লাবণ্য -- লাভ ইউ টু অনি, বাই।

লাবণ্য আর অনিরুদ্ধ দু'জনেই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে চলেছে।

দু'জন মনের মানুষের এই অপেক্ষা যেন শেষই হতে চাইছে না, দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতম হয়ে চলেছে প্রতিটা সেকেন্ড। অবশেষে দীর্ঘ সময়ের অবসান ঘটলো।

আজ সরস্বতী পূজো। অনিরুদ্ধ লাবণ্যর বাড়ি থেকে একটু দূরে একটা গলিতে অপেক্ষা করছিল, আগে থেকেই ঠিক ছিল ওরা ওখানে দেখা করবে। অনিরুদ্ধ ওখানে দাঁড়িয়ে পুরোনো সব কথা ভাবছিল, ওই জায়গাটা দু'জনেরই খুব প্রিয়। আগে যখন সে লাবণ্যকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে আসতো তখন বিদায় বেলায় একে অপরকে মন ভরে খানিকটা দেখে নিতো এই জায়গায়, তারপর লাবণ্যর চলে যাওয়ার পানে চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতো এক দৃষ্টে অনিরুদ্ধ এই জায়গাতেই। এতগুলো মাস এই সুন্দর অনুভূতিগুলোকে খুব মিস করছিল সে। পুরোনো সেই স্মৃতিগুলো মনে করে আপন মনেই হাসছিল।

হঠাৎ লাবণ্যকে আসতে দেখে অনিরুদ্ধর ভাবনায় ছেদ পড়লো, ভাষা হাড়িয়ে ফেলল অনিরুদ্ধ। একটা হলুদ আর নীল পাড়ের শাড়ি, চোখে টানা-টানা কাজল, চুলগুলো কোমর অব্ধি বিছানো, ঠোঁটে হালকা লাল লিপস্টিকে অপূর্ব লাগছিল লাবণ্যকে। অনিরুদ্ধ এই প্রথম ওর লাবণ্যকে শাড়িতে দেখে মন্ত্রমুগ্ধ ভাবে তাকিয়ে রয়েছে ওর দিকে।

লাবণ্য কাছে এসে তুরি মেরে বলল -- কীরে এভাবে কী দেখছিস?

অনিরুদ্ধ -- তোকে, খুব সুন্দর লাগছে। যদিও বা রোজি লাগে তবে আজ একটু বেশি সুন্দর লাগছে।

লাবণ্য মুচকি হাসি দিয়ে বলল -- থ্যাংকস, তোকেও খুব হ্যাঁন্ডসাম লাগছে।

সত্যি অনিরুদ্ধকেও খুব ভালো লাগছে আজ, ব্লু জিন্সের ওপর হলুদ রঙের একটা পাঞ্জাবি পড়েছে আর চুলগুলো স্পাইক করা। রাস্তা দিয়ে আসতে-আসতে অনেক মেয়েই এতক্ষণে ওর ওপর ক্রাশ খাওয়া হয়ে গেছে।

অনিরুদ্ধ নিজের প্রশংসা শুনে সামান্য লজ্জা পেয়ে বলল -- আচ্ছা অনেক হয়েছে চল এবার, দেরি হয়ে যাচ্ছে।

লাবণ্য সামান্য কৌতুকের সুরে জিজ্ঞেস করলো -- আমরা কোথায় যাচ্ছি?

অনিরুদ্ধ -- যেখানে নিয়ে যাচ্ছি চুপচাপ চল, গেলেই দেখতে পাবি।

কিছু সময়ের পর দু'জনে পৌঁছে গেল একটা ছোট বাগানের মতো জায়গায়। নানা রঙের ফুলের ছোট গাছ দিয়ে সাজানো পুরো বাগান, অনেক বড়ো গাছও আছে, নানা রঙের প্রজাপতির সমাহার চারিপাশে, মানুষ জন খুব একটা আসে না।

অনিরুদ্ধ -- জানিস লাবণ্য আমি ছোটো থেকেই এখানে আসি। মা ছোট বেলায় আমাকে এখানে নিয়ে আসতো। এটা আমার খুব প্রিয় জায়গা তাই তোকে এখানে নিয়ে আসলাম, জায়গাটার সৌন্দর্য মন ভালো করতে বাধ্য।

অনিরুদ্ধর মা কয়েকবছর হল মারা গেছেন, এখন আপনজন বলতে ওর বাবা আর এক দিদি।

লাবণ্য অনিরুদ্ধর কথায় কোনও উওর দিল না। শুধু অনিরুদ্ধর দিকে তাকিয়ে কেবল মনে-মনে বলল -- অনেক চাপা কষ্ট লুকিয়ে থাকে অনেক হাসি মুখের পেছনে।

অনিরুদ্ধ লাবণ্যর হাতটা ধরে ওকে নিয়ে গেল একটা কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে। লাবণ্যর কোমরে হাত দিয়ে ওকে কাছে টেনে আলতো করে প্রেমের পরশ এঁকে দিল লাবণ্যর ওই নরম ঠোঁটে। লাবণ্য সামান্য শিহরিত হল, শিহরন জেগে উঠলো ওর সমস্ত শিরা-উপশিরায়। দু'জনেই গাছের নিচে বসলো, লাবণ্য অনিরুদ্ধর কাঁধে মাথা রেখে জিজ্ঞেস করলো -- আচ্ছা অনি আমাদের ভালোবাসাটা এরকমই থাকবে তো পরে? আমার বিশ্বাস ভাঙবি নাতো কোনও দিনও?

অনিরুদ্ধ -- নারে পাগলি, আমরা এরকমই থাকবো।

লাবণ্য -- এভাবেই তোর কাঁধে মাথা রেখে সারাটা জীবন কাটাতে চাই আমি।

অনিরুদ্ধ লাবণ্যর হাতটা নিজের বুকে চেপে ধরে হালকা হাসি দিলো। কিছুক্ষণ একসাথে সময় কাটানোর পর ওরা একটা রেস্টুরেন্ট গিয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ি ফিরে গেল।

কয়েকমাস পর রেজাল্ট বেরোল, দু'জনেই লেটার মার্কস পেয়ে পাশ করেছে। এবার কলেজে ভর্তির পালা। লাবণ্য আগেই বলেছিল ও ইংলিশ অনার্স নিয়ে ভর্তি হবে, লাবণ্যর কথা শোনার পর অনিরুদ্ধও বাবাকে ম্যানেজ করে নিল। দু'জনে একই কলেজে ভর্তি হল ইংলিশ অনার্স নিয়ে, যাতে একে অপরের সাথে সময় কাটাতে পারে।

আজ কলেজের প্রথমদিন ওরা এক সাথেই কলেজ গেল। যেহেতু একই ডিপার্টমেন্ট তাই কোনও অসুবিধা হল না ক্লাস খুঁজে পেতে। প্রথম দিনই ওদের অনেক ফ্রেন্ডস হয়ে গেল; ঈশানী, রাজ, স্নেহা, পিউ আর রনি। কলেজের অনেকেই অল্প সময়ের মধ্যেই অনি আর লাবণ্যর ওপর ক্রাশ খেয়েছে। লাবণ্য আর অনিরুদ্ধর বন্ধু ঈশানীও মনে-মনে অনিরুদ্ধকে পছন্দ করে কিন্তু অনি আর লাবণ্য রিলেশনশিপে থাকায় সেটা প্রকাশ করে না। কিছুদিন কেটে গেল, বেশ কাটছে কলেজ জীবন, কিন্তু যার জন্য একসাথে একই কলেজে ভর্তি হওয়া, সেটাই হয়ে উঠছে না। সারাদিন একসাথে থাকলেও এত বন্ধুদের আনাগোনায় নিজেরাই আলাদা করে সময় কাটতে ভুলে গেছে। বলতে গেলে লাবণ্য চাইলেও অনিরুদ্ধ কোনও-না কোনও কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ব্যাপারটা অনেকদিন থেকেই লাবণ্য লক্ষ্য করছে। ভেতর-ভেতর অনির এই অবহেলা ওকে খুব বেদনা দিচ্ছে, কিন্তু মুখ ফুটে কিছুই বলে উঠতে পারছে না। একদিন লাবণ্য বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হতে নিজের রুমে চলে গেল।

লাঞ্চ টেবিলে লাবণ্যর বাবা -- কীরে মা তোর কলেজ কেমন যাচ্ছে? কোনও অসুবিধা হচ্ছে নাতো?

লাবণ্য এক গাল হাসি দিয়ে বলল -- না বাবা কোন অসুবিধা হচ্ছে না।

লাবণ্যর বাবা -- আচ্ছা।

লাবণ্যর মা মিচকি হাসি দিয়ে বলল -- আচ্ছা লাবণ্য তোর ওই বন্ধুটা আছে না, কি যেন নাম?

লাবণ্য -- কে, অনি?

লাবণ্যর মা লাবণ্যর বাবা দিকে চোখ টিপে হালকা হাসি দিয়ে বললেন-- " হ্যাঁ, হ্যাঁ ওই, ওকে একদিন বাড়িতে নিয়ে আয় না।

লাবণ্য ব্যাপারটা খেয়াল করে লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে বলল -- দেখছি।
Next Part

অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১    পর্ব ২    পর্ব ৩    পর্ব ৪   

Next Bengali Love Story


All Bengali Stories    81    82    83    84    85    86    87    88    89    90    (91)     92   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717