Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

লুকানো চিঠির রহস্য


ত্রিপুরার বাংলা গোয়েন্দা গল্প


All Bengali Stories    31    32    33    34    35    (36)     37    38   

-হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর - ১৩, আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম )

লুকানো চিঠির রহস্য
পর্ব ১২
( ত্রিপুরার বাংলা গোয়েন্দা গল্প )
রাজবংশী সিরিজের চতুর্থ গোয়েন্দা গল্প
- হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর-১৩, আগরতলা
২৬-১২-২০১৮ ইং

সমগ্র পর্বগুলি: সমগ্র পর্বগুলি

◕ লুকানো চিঠির রহস্য
পর্ব ১২

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

ভদ্রবাবু বললেন, " কেন আমার কর্মচারীরা এত তাড়াতাড়ি আমার প্রতি মারমুখী হয়ে উঠল, সে কথা আর কী বলব স্যার! গত ক'দিন হল এখানে একটি ঘটনা ঘটেছে। আমাদের ক'জন কর্মচারীর কাছে ক'টি উড়ু চিঠি এসেছে। তাতে নাম-ধাম কিছু নেই, শুধু লেখা আছে, অনিমেষ ভদ্র কোম্পানির নকল মালিক। কোম্পানির আসল মালিক মৃত বাহাদুর প্রসাদ। বাহাদুরই যখন মারা গেছে তখন এই কোম্পানি অতি শীঘ্র বন্ধ হতে চলছে। তাই সবাই চটপট বেতন-পাত্তি নিয়ে কোম্পানি ছেড়ে পালাও। দেখুন তো কাণ্ড, আমার বিরুদ্ধে কেমন ষড়যন্ত্র?যাক, সেই চিঠি পেয়ে কর্মচারীরা তাদের সমস্ত টাকা-পয়সা চাইতে লাগল। আমি পড়লাম গর্তে, কর্মচারীদের তো আর আসল কথা বলতে পারছি না, তাহলে চাকরি যাবে চলে। আবার গর্ত থেকে বেরও হতে পারছি না, কারণ, রাখী ম্যাডামের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বাহাদুর থাকলে কিন্তু এতক্ষণে রাখী ম্যাডামের সাথে কথা বলে সব ঠিক-ঠাক করে নিত। হায়রে, এখন আমার কী হবে? ওরা তো টাকা না পেলে ঢিল মেরে আমাকে ড্রেনে ফেলে দিবে। হায় হায়, এখন কী করি?"

ভদ্রবাবুকে থামিয়ে রাজবংশী বলল, "আপনার কর্মচারীদের সাথে কথা বলা যাবে, যারা ঐ চিঠিগুলি পেয়েছিল?"

"নিশ্চয়ই। ডেকে আনবো?"

" হ্যাঁ, এখানেই ডেকে আনুন," এই বলে রাজবংশী ফিস-ফিস করে মিঠুনের কানে-কানে কী যেন বলল। মিঠুন সাথে-সাথে চেয়ার ছেড়ে উঠে বাইরে চলে যেতে লাগল। মিঠুনকে চলে যেতে দেখে ভদ্রবাবু খুব অস্থির হয়ে হাত জোর করে বললেন, "আপনি কী চলে যাচ্ছেন স্যার?"

ঘুরে দাঁড়িয়ে একটু অবাক হয়ে মিঠুন বলল, "না, কিন্তু কেন বলুন তো?"

মরুভূমিতে যেন প্রাণ ফিরে এল, একটু হাঁফ ছেড়ে ভদ্রবাবু বললেন, "না-মানে বলছিলাম, একটু আগে কোম্পানির কয়েকজন কর্মচারী আমার পিষ্ঠাঙ্গে দু'-তিনটি কিল প্রায় বসিয়েই দিয়েছিল। ঠিক তখনই আপনারা চলে আসায় আর বেশী খাইনি। তাই, আপনি চলে গেলে, আবার যদি মারে, না-মানে- ইয়ে-"

মিঠুন কিছু বলার আগেই রাজবংশী অবাক হয়ে বলল, "আরে তাই নাকি? এত দুর পর্যন্ত ব্যাপার গড়িয়ে গেছে! যাক, যা হবার তা হয়ে গেছে। ভদ্রবাবু, আপনি ও নিয়ে আর কিছু ভাববেন না। তেমন কোনও কিছুই আর ঘটতে দেওয়া হবে না। আপনার সমস্যা সমাধান না করে আমারা এখান থেকে নড়ছি না। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। ঠিক আছে মিঠুন, তুই যা। যা বললাম তাই কর।"

ভদ্রবাবু হাত জোর করে বললেন, "দয়া করে একটু দেখবেন স্যার, প্লীজ! গরীবের সন্তান, যেন আর কিল খেতে না হয়। পিষ্ঠাঙ্গ যেন আর না ভাঙ্গে।"

"আরে ধুর মশাই। যান, কর্মচারীদের ভিতরে ডাকুন।"

ভদ্রবাবু তড়বড় কলিং বেল টিপলেন। একজন পিওন দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকল। ভদ্রবাবু সেই পিওনের হাতে একটি কাগজের চিট দিয়ে বললেন, " যাও, এদের ভিতরে ডেকে নিয়ে আসো।"

কিছুক্ষণের মধ্যেই সাত আটজন কর্মচারী খুব ভিতু চেহারায় কামরার প্রবেশ করল। সবাই টেবিলের এক পাশে এসে দাঁড়াল। রাজবংশী সবাইকে এক নজর দেখে বেশ বন্ধুত্বে সুরে বলল, "বসুন, সবাই বসুন। ঘাবড়াবার কিছু নেই। আপনাদের কাছে আমার কিছু জানার আছে। ব্যাস, ওটুকুই। বসুন, সবাই রিলাক্সড হয়ে বসুন।"

ঠিক এমন সময় দরজা ঠেলে মিঠুন আবার ভিতরে ঢুকল। একটু চড়া স্বরে সবাইকে শুনিয়ে বলল, "কাজ হয়ে গেছে রাজুদা। কিছুক্ষণের মধ্যেই তুমি যা চেয়েছিলে তা এখানে চলে আসবে, সাথে কিছু পুলিশ ফোর্সও আসছে। সুতরাং ভদ্রবাবু আপনার ভয়ের কিছু কারণ নেই।" এই বলে সে বেশ গেজে-গুজে নিজ চেয়ারে বসল।

কর্মচারীদের উদ্দেশ্য রাজবংশী বলল, "দেখুন, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কথা বলার সময় এখন আর নেই, তাই সরাসরি কাজের কথাটি বলছি। শুনেছি আপনারা একটি বিশেষ চিঠি পেয়েছেন, তাতে লেখা, এই কোম্পানির মালিক বাহাদুর ইত্যাদি-ইত্যাদি। কথাটি কী ঠিক?"

সম্মতিসূচক মাথা নাড়ল সবাই।

"কারোর কাছে কী সেই চিঠিটি আছে? আমাকে দেখাতে পারবেন?"

সকলকেই একে অপরে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগল, কিন্তু একজন হাত তুলে চেয়ার ছেড়ে উঠি দাঁড়াল। তারপর নিজের পকেট থেকে একটি কাগজের ছোট টুকরো বের করে রাজবংশীর হাতে দিল। কাগজের টুকরাটি হাতে নিয়েই চমকে উঠল রাজবংশী। ঠিক সেই রকম টুকরো, যেমনটা চন্দ্রবালা দেবী তাকে দেখিয়ে ছিলেন, যেমনটা মিঠুন তাকে চন্দ্রবালার ফুলবাগানে দেখিয়েছিল। লেখাগুলি কম্পিউটারে প্রিন্ট করা আর কাঁচি দিয়ে সুন্দর করে সাইজ করে কাটা।

রাজবংশী বেশ কিছুক্ষণ সেই লেখাটির দিকে তাকিয়ে থেকে দুই হাতে সেটি তুলে ধরল। বলল, "বাকীরাও কী এমন চিঠিই পেয়েছিলেন? ভাল করে চিঠির সাইজটি দেখুন। চিঠির সাইজটি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাইজটি ভাল করে লক্ষ্য করুন। চিঠির লেখাগুলি কম্পিউটারে প্রিন্ট করা। তাতে লেখা, 'কোম্পানির আসল মালিক, বাহাদুর খুন হয়েছে। নকল মালিক অনিমেষ ভদ্র এখন আর কী করবে? তাড়াতাড়ি নিজেদের টাকা-পয়সা নিয়ে পালাও।' আপনারাও কি এমনই চিঠি পেয়েছিলেন?"

উপস্থিত কর্মচারীরা এক যোগে মাথা নাড়ল।

"আমার পরের প্রশ্ন, আপনারা কোথায় এ চিঠি পেলেন? কবে পেলেন? কেমন করে পেলেন?"

একজন বলল, "আমাদের সবাই যার-যার বাড়িতেই এই চিঠি পেয়েছিলাম।"

"আপনারা কী একি দিনে চিঠিগুলি পেয়েছিলেন?"

"না, আমরা একি দিনে এই চিঠি গুলি পাইনি। তবে দু-তিন দিনের মধ্যে সবাই এই চিঠি পেয়েছিলাম।"

"সকালের দিকে, না কি বিকেলের দিকে?"

"সন্ধ্যায় বাড়ির লোকের কাছে এই চিঠি পাই। খামের উপর নাম লেখে গেটের ভিতরে ফেলে রেখে গেছে।"

"আপনারা কী সিউর সে আপনারা সন্ধ্যার পরে বাড়িতে গিয়ে, বাড়ির লোকের কাছে এই চিঠি পেয়েছিলেন?"

মোটামোটি প্রায় সবাই একই কণ্ঠে এ কথা বলল যে, তারা সন্ধ্যার পরে বাড়িতে গিয়ে এই চিঠি পেয়েছে। শুধু একজন বয়স্ক মতন লোক, যার নাম সুবল সেন, বলল, "না, স্যার। আমি কিন্তু সন্ধ্যার পরে এই চিঠি পাইনি। আমি এই চিঠি পেয়েছিলাম সকালে। আমার বাড়ির লেটার বক্সে কেউ এই চিঠি রেখে গিয়েছিল। সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাড়িতে গিয়ে, রাত প্রায় আটটায় আমি প্রতিদিনের মত আমার লেটার বক্স খুলি, তখনো কিন্তু চিঠিটি ওখানে ছিল না।"

চমকে উঠল রাজবংশী, "হোয়াট, আপনি সকালে এই চিঠি পেয়েছিলেন?"

"হ্যাঁ, স্যার আমি সকালেই এই চিঠি পাই, তারপর থেকেই মনটা খুব খারাপ যাচ্ছে।"

"মন খারাপ যাচ্ছে, কেন? এই চিঠির কথাগুলি আসল না নকল, তা নিয়ে দু'টানায় আছেন বুঝি?"

"না, স্যার। আমি জানি, এই চিঠির লেখা সত্য।"

প্রায় লাফিয়ে উঠল রাজবংশী, "মানে? বলেন কী মশাই? আপনি নিশ্চিত, এই চিঠির লেখা সত্য? তার মানে বাহাদুর এই কোম্পানির মালিক?"

"হ্যাঁ, স্যার। আমি এক-প্রকার নিশ্চিত। এর কারণও আছে। বাহাদুর খুন হবার ঠিক দু'দিন আগে ঐ রকমই আরেকটি চিঠি আমি পেয়েছিলাম, একই ভাবে, সকালবেলা, আমার লেটার বক্সে। ওটাতে একটা ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছিল। লেখা ছিল,' বাহাদুর খুব জলদি খুন হবে।' আর দেখুন, তাই-ই-ত হল। এ কারণেই আমি বিশ্বাস করছি এই চিঠিটিও নিশ্চয়ই সত্য কথা বলছে। এ কারণেই আমার মনটা বেশ খারাপ।"

"সর্বনাশ, বলেন কী মশাই! বাহাদুরের খুনের খবর আপনার কাছে আগেই পাঠানো হয়েছিল?"

Next Part

সমগ্র পর্বগুলি: সমগ্র পর্বগুলি

রাজবংশী সিরিজের অন্য গোয়েন্দা গল্প:
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
গোয়েন্দা গল্পের সম্পূর্ণ তালিকা

All Bengali Stories    31    32    33    34    35    (36)     37    38    39   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717