Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

লুকানো চিঠির রহস্য


ত্রিপুরার বাংলা গোয়েন্দা গল্প


All Bengali Stories    31    32    33    34    35    (36)     37    38    39   

-হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর - ১৩, আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম )

লুকানো চিঠির রহস্য
পর্ব ১৪
( ত্রিপুরার বাংলা গোয়েন্দা গল্প )
রাজবংশী সিরিজের চতুর্থ গোয়েন্দা গল্প
- হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর-১৩, আগরতলা
১৬-০১-২০১৯ ইং

সমগ্র পর্বগুলি: সমগ্র পর্বগুলি

◕ লুকানো চিঠির রহস্য
পর্ব ১৪

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

বাইরে ততক্ষণে অনেক পুলিশ জমা হয়ে গেছে। তা দেখে কোম্পানির স্টাফদের মধ্যে একটা চাপা গুঞ্জন শুরু হল। দরজা ঠেলে রাজবংশী স্টাফ রুমে ঢুকতেই সেই গুঞ্জন থেমে গেল। রাজবংশী গলা ঝাড়া দিয়ে বেশ স্পষ্ট ভাষায় সজোরে সবার উদ্দেশ্যে বলল, "ফ্রেন্ডস, আমি আপনাদের কিছু বলতে চাই। আশা করি সবাই খুব মনোযোগ সহকারে শুনবেন। তবে সবার আগে আমি আমাদের পরিচয় দিয়ে দেই। যদিও মনে করি আমাদের নাম অনেকেই শুনে থাকবেন। শুধু সাক্ষাত হয়নি আর-কি। ইনি হলেন এই এলাকার পুলিশ অফিসার, DSP কিশোর । আর ইনি হলেন আমার সহকারী মিস্টার সদানন্দ বসাক। আমি অনুব্রত রাজবংশী, ত্রিপুরার একজন ক্ষুদ্র গোয়েন্দা। আমরা এখানে কেন এসেছি, তা হয়তো আপনারা আন্দাজ করতে পেরেছেন। না, সকাল বেলার মারামারির খবর পেয়ে আমরা এখানে আসি নি। আমরা এসেছি বাহাদুর প্রসাদের খুনের তহকিকাত করতে। সেই কাজে এখানে এসে, অনেক ঘটনার কথাই শুনলাম, জানলাম। আপনাদের দুশ্চিন্তা মুক্ত করতে আমি একটি কথা জানাতে চাই। তা হল, আগামী কালকের মধ্যেই আপনারা বেতন পেয়ে যাবেন এবং নিশ্চয়ই পেয়ে যাবেন। 'মুনমে মাইক্রো-ফাইনাইন্স কোম্পানি' কোনও ভাবেই আপনাদের ঠকাবে না, এ গ্যারান্টি আমি দিচ্ছি। আমি আরও একটি কথা জানাতে চাই, এই কোম্পানির মালিক এখনো জীবিত আছেন। আপনারা ঠিকই শুনেছেন যে, এই কোম্পানির মালিক মিস্টার অনিমেষ ভদ্র নন। কিন্তু এটা আপনাদের কাছে ভুল বলা হয়েছে যে, বাহাদুর এই কোম্পানির মালিক। না, বাহাদুর এই কোম্পানির মালিক নন। এই কোম্পানির মালিক হলেন বাহাদুরের বৌ, চন্দ্রবালা দেবী।"

রাজবংশীর কথা শুনে সবাই আকাশ থেকে পড়ল, যেন সবার সামনে কড়-কড়ে একটি বিজলী ফেলে দিল রাজবংশী। সবাই এ-ওর মুখের দিকে তাকাতে লাগল। রাজবংশীর সব কথাই সবাই শুনতে পারছে, বুঝতে পারছে, তবুও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। কর্মচারীরা ভাবছে, "তবে কী সেই চিঠিই সত্যি ছিল? অনিমেষ ভদ্র তাহলে কোনও দিনই কোম্পানির মালিক ছিল না?

অনিমেষ ভদ্র ভাবছেন, "বাহাদুরের বউ এই কোম্পানির মালিক! তার মানে, বাহাদুরই আসল মালিক ছিল?"

রাজবংশী আবার বলতে শুরু করল, "আমি আরও একটি ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দিতে চাই; কেউ আছে, যারা আপনাদের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে এই কোম্পানিতে একটি অরাজকতার সৃষ্টি করতে চাইছে। এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও বদ উদ্দেশ্য কাজ করছে। তবে এটা একশ শতাংশ ঠিক যে, যারা ঐ চিঠি লিখে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করেছে তারা কিন্তু মারাত্মক অপরাধী। বলতে বাধা নেই, আগরতলার বর্তমান সিরিজ খুনে তাদের হাত থাকার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশী। তাই নিজেদের সুরক্ষার জন্য, নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য, কোনও ভাবেই গুজবে কান দেবেন না, ফাঁদে পা দেবেন না। এতে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবেন। এই কোম্পানির ব্যাপারে আপনাদের যদি কোনও প্রশ্ন থাকে, তবে সরাসরি আমাকে জিজ্ঞাসা করুন! আমি আপনাদের সাহায্য করব, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। এই তো আমি আমার ফোন নম্বর দিয়ে রাখলাম। পাশাপাশি এটাও বলে রাখি, কোনও এক বিশেষ কারণে মিস্টার অনিমেষ ভদ্র এখনো পর্যন্ত এ কোম্পানিতে মালিকের দায়িত্ব সামলে যাচ্ছিলেন। আশাকরি কাল থেকে এই কোম্পানির আসল মালিক উনার নিজের দায়িত্ব সামলাবেন। এটাও একটা খবর যে, কিছুক্ষণের মধ্যেই আসল মালকিন এখানে চলে আসছেন।" নাটকের চরিত্রের মত যেন খুব দ্রুত একের-পর এক পালা বদল হলতে লাগল 'মুনমে মাইক্রো-ফাইনাইন্স' কোম্পানিতে।

ঠিক এমন সময় রাজবংশীর মোবাইল ফোনটি বেজে উঠল। রাজবংশী এক গাল হেসে বলল, "আপনারা একটু অপেক্ষা করুন, আপনাদের মালকিন চলে এসেছেন। দেখুন কী কাণ্ড, নিজের কোম্পানিতেই তিনি অপরিচিত লোকের মত বাইরেই দাঁড়িয়ে আছেন। আমি উনাকে নিয়ে আসছি।"

রাজবংশী দ্রুত পায়ে ছুটে গেল রিসিপসনের দিকে। রাজবংশীর পিছন-পিছন ছুটে গেলেন ভদ্রবাবু। ওরা দেখল চন্দ্রবালা দেবী বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, রিসেপসনিস্ট উনাকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। ভদ্রবাবুকে এগিয়ে আসতে দেখে রিসেপসনিস্ট চুপ করে গেল। রাজবংশী এগিয়ে এসে বলল, "আসুন ম্যাডাম, আসুন। আপনি হয়তো এর আগে কোনোদিন এই কোম্পানিতে আসেন নি, এই প্রথম। তবে এই কোম্পানিতেই আপনার স্বামী কাজ করতেন। আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই, ইনি হচ্ছেন এই কোম্পানির ম্যানেজার, মিস্টার অনিমেষ ভদ্র।"

অতি ব্যস্ত হয়ে ভদ্রবাবু হাত তুলে নমস্কার জানালেন। চন্দ্রবালা দেবীও প্রতি নমস্কার জানালেন। ভদ্রবাবু পথ দেখিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলেন,"আসুন ম্যাডাম, আসুন। এ দিকে, এই দিকে-"

রাজবংশীর পিছন-পিছন এগিয়ে যেতে লাগলেন চন্দ্রবালা দেবী। কয়েকটি কাঁচের রুমের পরে একটি বিশাল হল ঘরে ঢুকল সবাই। চন্দ্রবালা দেখলেন অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছে। চন্দ্রবালাকে দেখে সবাই অতি বিনম্র ভাবে হাত জোর করে উনাকে সম্মান জানাতে লাগল। হঠাৎ কেন এত সম্মান, পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা করলেন চন্দ্রবালা, কিন্তুই কিছুই বুঝতে পারলেন না। তিনি বেশ অবাক চোখে রাজবংশীর দিকে তাকালেন। চাপা একটা গুঞ্জন বয়ে যাচ্ছে সারা ঘরে।

রাজবংশী কিছু বলতে শুরু করতেই সবাই চুপ করে গেল, "ফ্রেন্ডস আমি বুঝতে পারছি, আপনারা সবাই খুব বিস্মিত। কিন্তু অবাক হবার পালা এখানেই শেষ নয়, আরও অবাক হবার ঘটনা একটা বাকী আছে। আপনাদের কাছে এটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনাটি সত্যি যে, যিনি এই কোম্পানির মালিক, তিনি নিজেই কিন্তু এখনো জানেন না যে, তিনি এই কোম্পানির মালিক। হ্যাঁ চন্দ্রবালা দেবী, এটা আপনারই কোম্পানি। আপনার স্বামী আপনার নামের আড়ালে অতি গোপনে তিলে-তিলে এই কোম্পানিটি গড়ে তুলেছেন। তবে নিশ্চয়ই কোনও বিশেষ কারণে তিনি এই কোম্পানিতে সামান্য এক কেরানী সেজে, গোপনে এই কোম্পানি চালিয়ে গেছেন। কী সেই কারণ, তা আমি এখনই বলতে পারছি না, তবে এতটুকু বুঝতে পারছি যে, সেই কারণটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং, খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন, এই মুহূর্তে, সবার আগে এই কোম্পানিটিকে সামলানোর প্রয়োজন। তা আপনাকেই করতে হবে চন্দ্রবালা দেবী।"

রাজবংশীর কথা শুনে চন্দ্রবালা আকাশ থেকে পড়লেন,"মিস্টার রাজবংশী, এ আপনি কী কথা বলছেন? এ কেমন কথা? আমি এই কোম্পানির মালিক?"

"হ্যাঁ, চন্দ্রবালা দেবী, এটি হল আপনার স্বামীর কঠোর পরিশ্রমের ফসল, 'মুনমে মাইক্রো-ফাইনাইন্স'। উনি আপনাকে এত ভালবাসতেন যে, আপনাকে বিয়ের করার আগেই আপনার নামে এই কোম্পানিটি শুরু করেন। এ কথা তিনি সবার কাছেই গোপন রেখেছেন, এমনকি আপনার কাছেও। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, এতদিন আপনি যা ভাবতেন, আপনার স্বামী সামান্য এক কেরানীর চাকরি করে, তা মোটেই ঠিক নয়। উনি সামান্য চাকরী করতেন না, উনি ছিলেন সেই কোম্পানির মালিক। সকলকে তিনি এই ধাঁধার মধ্যে রাখলেও, কয়েকজন কোনও-না কোনও ভাবে সেই কথা জেনে ফেলে। আর তাদের মধ্যেই আছে বাহাদুরের খুনি। খুব দ্রুত আমরাও সেই অপরাধীর পিছুও ধাওয়া করতে যাচ্ছি। তবে তার আগে, নিন, আপনার কোম্পানি এবার আপনার হাতে, তাকে সামলান। মনে রাখবেন, এটা আপনার স্বামীর ভালবাসার আর পরিশ্রমের উপহার; আপনাকে।"

ছল-ছল চোখে, নির্বাক চন্দ্রবালা তাকিয়ে রইলেন রাজবংশীর দিকে। এ কী সত্য, মিথ্যা, না-কি সত্য-মিথ্যার স্বপ্ন? কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। মিন-মিন স্বরে তিনি বললেন,"ও কোথায় বসত?"

ভদ্রবাবু ব্যতিব্যস্ত হয়ে এগিয়ে এলেন, "ওদিকে। ঐ টেবিলে।"

চাপরাসি রামু হন্ত-দন্ত হয়ে দৌড়ে গিয়ে ঘরের কোনের একটি টেবিল-চেয়ার মুছে দিল। অতি সমাদরে ভদ্রবাবু পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে লাগলেন ম্যাডামকে। টেবিলের সামনে পৌঁছে চন্দ্রবালা দেবী খুব ভাবুক হয়ে গেলেন,"এত বড় কোম্পানির মালিক কিনা এমন সাধারণ চেয়ার-টেবিলে বসে এক কেরানীর কাজ করত?"

কাঁপা হাতে ধীরে-ধীরে টেবিলটা, চেয়ারটা স্পর্শ করলেন চন্দ্রবালা। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে অশ্রু সিক্ত চোখে চেয়ারটিতে বসতেই নিজের বুকের কান্নাকে আর চেপে রাখতে পারলেন না। হাউ-মাউ করে চীৎকার করে কেঁদে উঠলেন তিনি। নিজের স্বামীর গোপন ভালবাসা যেন নতুন করে আজ আবার ধরা দিল। স্বামীর টেবিলটা জড়িয়ে খুব কাঁদলেন চন্দ্রবালা। কাঁদতে-কাঁদতে এক সময় তিনি জোরে টেবিল চাপরে রাজবংশীর দিকে বজ্র কণ্ঠে চেঁচিয়ে উঠলেন, "মিস্টার রাজবংশী, বাহাদুরের খুনিকে আমার চাই-ই চাই। আমার ফাঁসি হবে, কি জেল হবে, আমি ভাবি না। আমি আমার, এই দুটি হাত দিয়ে, আমার স্বামীর খুনিকে গুলি করে মারতে চাই! গুলি করে মারতে চাই! গুলি করে মারব!"

"নিশ্চয় ম্যাডাম, নিশ্চয়। বাহাদুরের খুনিকে আমরা কোনও ভাবেই ছেড়ে দিতে পারি না। যে করেই হোক তাকে আমাদের ধরতেই হবে। কিন্তু আপনি শান্ত হওন, মাথা গরম করে কিছু কাজ হবে না। আপনার সাহায্য ছাড়া আমরা কিছুই যে করতে পারব না। আপনি শান্ত হওন, একটু ধৈর্য ধরুন। চলুন, ও ঘরে চলুন, আপনার সাথে আরও অনেক কথা আছে।"

চোখ মুছতে-মুছতে ধীরে উঠে দাঁড়ালেন চন্দ্রবালা, "চলুন।"

পূর্বের কেবিনটির দিকে যেতে-যেতে হঠাৎ রাজবংশী ঘুরে দাঁড়াল। কর্মচারীদের উদ্দেশ্য বলল, "ফ্রেন্ডস, আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে। আপনারা কী আপনাদের হোয়ার্টসআপ, ফেসবুকে আর টুইটারে, এখুনি একটি কথা পোষ্ট করতে পারবেন?"

সকলেই এক যোগে বলে উঠল, "নিশ্চয়ই পারব স্যার। খুব পারব। বলুন, কী লিখতে হবে?"

"আপনারা লিখবেন, 'আমাদের কোম্পানির আসল মালিক এখনো মারা যায়নি। তিনি জীবিতই আছেন।তিনি হলেন, বাহাদুরের স্ত্রী, চন্দ্রবালা দেবী। আজ তিনি নিজ হাতে কোম্পানির দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। ফলে আজ কোম্পানির সকল সমস্যা নিজ থেকেই মিটে গেল। দায়িত্ব গ্রহণের পর-পরেই কোম্পানির মালিক, গোয়েন্দা রাজবংশীকে ডেকে এনে বাহাদুরের খুনিদের পিছনে লেলিয়ে দিয়েছেন। রাজবংশীও খুনির গন্ধ পেয়ে গেছে। এবার শুধু খুনিদের মরণ-দিন গোনার পালা। পাতক্ষীরের চাদরে বাদর ধরা পড়বেই।"

কথা শেষ হতেই প্রচুর মোবাইল ফোন থেকে টুট-টুট করে টাইপ করার শব্দ আসতে লাগল। খুশির হাসি হেসে রাজবংশী কেবিনের দিকে পা বাড়াল। কিন্তু চোখে তার বিজলীর আগুন, যেন করালীর অগ্নি জিহ্বা।

Next Part

সমগ্র পর্বগুলি: সমগ্র পর্বগুলি

রাজবংশী সিরিজের অন্য গোয়েন্দা গল্প:
মাণিক্য   
সর্দার বাড়ির গুপ্তধন রহস্য   
প্রেমিকার অন্তর্ধান রহস্য   
গোয়েন্দা গল্পের সম্পূর্ণ তালিকা

All Bengali Stories    31    32    33    34    35    (36)     37    38    39   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717