Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

নূপুর ( পর্ব ২ )

বাংলা গল্প

All Bengali Stories    112    113    114    115    116    117    118    119    120    (121)     122   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



নূপুর ( পর্ব ২)
বাংলা গল্প
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতার ( নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার , ২০২১) একটি নির্বাচিত গল্প
Writer- Susmita shil, C/O- sukamal shil, Kuthipara, Gobardanga, Habra, North 24 parganas


Previous Part

## নূপুর

পর্ব ২

দেখতে-দেখতে ছ'মাস কেটে যায়। এরপর অজয় আরো ভালো কাজের খোঁজে রবিনের সাথে সপ্তাহ খানেকের জন্য শহরে যায়। ইন্দুবালা সেদিন হাটে গিয়েছেন, বাড়িতে নূপুর একা। আর এক ঝড়ের রাত নামলো নূপুরের জীবনে। প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে এমন অবস্থায় একজন অপরিচিত লোক এসে উপস্থিত হয় তাদের বাড়িতে। সদ্য যৌবনে পা রাখা সহজ সরল মেয়েটির ওপর সুযোগের সদ ব্যবহার করতে দেরি হয়নি দেবীতুল্য নারীর অমানবিক স্বামীর। কিন্তু আজ আর সেদিনের মতো দুর্বল নয় নূপুর, অজয়ের সাহচর্য্যে এখন তার মেরুদণ্ড অনেক শক্ত। নূপুরকে পিছন থেকে নোংরা ভাবে জড়িয়ে ধরে লোকটি, সঙ্গে সঙ্গে নূপুর বটির আচারি দিয়ে বারি মারে লোকটাকে। লোকটি ছিটকে পরে মাটিতে। নূপুরের চোখের সামনে ভেসে আসে তার জীবনের কালো দিনটার কথা যার জন্য তার জীবনটা সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। সেদিনের প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে ওঠে তার মনে। বটির আচারি দিয়ে নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে লোকটিকে মারতে থাকে নূপুর। মারতে-মারতে লোকটির বুকের ওপর পা দিয়ে বটি উঁচু করে লোকটার গলায় কোপ দিতে যাবে এমন সময় ইন্দুবালা চিৎকার করে ওঠে। বাড়ি ফিরে এমন ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। ইন্দুবালাকে দেখে লোকটির ভোল বদলে যায়। লোকটি আর কেও নন ইন্দুবালার স্বামী, সুতরাং ইন্দুবালা যে তার কথাই আগে বিশ্বাস করবেন তা তিনি জানতেন। তাই ঘটনাটা সম্পূর্ণ নূপুরের ওপর চাপিয়ে দেয় সে। দুশ্চরিত্র অপবাদ নিয়ে সেই রাতেই নূপুর বাপের বাড়ি ফিরে আসে। দু-সপ্তাহ পরে অজয় ফিরে এলে তার কাছে ঘটনাটা এমন ভাবে তুলে ধরা হয় যার ফলস্বরূপ তাদের সংসার সারা জীবনের মতো ভেঙে যায়। সমস্ত দোষ নূপুরের, স্বচক্ষে দেখেছেন ইন্দুবালা, এমন কথাই তিনি বলেন অজয়ের। মাতৃতুল্যা পিসির কথা অবিশ্বাস করতে পারে না অজয়, রবিন এবং বাকিরা; ভুল বোঝে নূপুরকে। নূপুর বারবার তাকে সত্যিটা বোঝানোর চেষ্টা করতে চাইলেও সত্যিটা বুঝাতে চায় না অজয়। নূপুরের কোন কথাই বিশ্বাস করে না সে। এমনকি অজয় নূপুরকে বলে, "সব সময় এমন ঘটনা তোর সঙ্গেই কেন ঘটে? নিশ্চয়ই তোরও সায় ছিল!"

অজয়ের মুখে এই কথা শোনার পর আর তাকে বোঝাতে চায় না নূপুর, আবার বাপের বাড়ি ফিরে আসে। এর কিছুদিন পর সে জানতে পারে সে অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এ সন্তান তার পিতৃ পরিচয় পাবে না, সেকথা ভালো ভাবেই জানতো নূপুর আর তার পরিবারের সকলে।

"একে তো মেয়ের কেলেঙ্কারির শেষ নেই, তার ওপর আবার বাচ্চা হলে বাড়ির সবাইকে এবার গলায় দড়ি দিয়ে মরতে হবে। আমার কোনও মেয়েকে আর লোকে ঘরে তুলবে না," বলতে থাকে নূপুরের বাবা। লোক- লজ্জার ভয়ে অবশেষে নূপুরের মা তাকে পাঠিয়ে দেয় নিজের বাপের বাড়ি। সেখানে নূপুরের অগোচরে তার বাচ্চাটি মেরে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়। নূপুরের খাবারে বিষ মিশিয়ে দেয় নূপুরের মামি। নূপুর আবারও বেঁচে যায়, প্রাণ হারায় একটা নিষ্পাপ শিশু। নূপুর এখনো যৌবনবতী তাই গল্প ঢের বাকি, লড়াই এখানেই শেষ নয় নারীর।

নূপুর তার সন্তানকে হারিয়েছে, হারিয়েছে তার সংসার এবং ভালোবাসার মানুষকে। কেটে গেছে একটা বছর। নূপুর এখন তার মাসির বাড়িতে থাকে সবকিছু ভুলে আবার ধীরে-ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছে। মাসির ছেলে মেয়েরা তার নিজের ভাই বোনের মত তাকে দূরে সরিয়ে রাখে নি, তাই হয়তো নূপুর আস্তে-আস্তে তার সহজ জীবনে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এভাবেই তার জীবন চলছিল। একদিন মাসির ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে নূপুর দেখল, তার পিসেমশায় সঙ্গে দুজন লোক নিয়ে বাড়িতে এসেছে। কিছুক্ষণ পর নূপুরের মাসি এসে তাকে জানালো পাত্রপক্ষ তাকে দেখতে এসেছে। নূপুরের মাসি তাকে জামদানি শাড়ি আর গয়না দিয়ে সাজিয়ে দিল। নূপুর আপত্তি জানালে, তার মাসি বলল দেখতে এলেই তো আর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে না। পরদিন সকালে নূপুর ঘুম থেকে উঠে দেখল তার বাবা-মা এবং ভাই-বোনেরাও মাসির বাড়িতে এসেছে। আজ নাকি তার বিয়ে! নূপুরের কোনও মতামত নেওয়া হল না। তাকে বোঝানো হল, "ভালো পাত্র, গোয়ায় মাছের বড়ো ব্যবসা আছে। তাছাড়া পাত্র অবিবাহিত, তোর তো একবার বিয়ে হয়ে গেছে। আর বেশি কথা বলিস না, সারা জীবন কি আমাদের ঘাড়ের ওপর বসে খাবি?"

নূপুরের বিয়ে হয়ে গেলো প্রবাসী বাঙ্গালী ভূপেন হালদারের সাথে। বিয়ের কয়েকদিন পর নূপুরকে দেওয়া সমস্ত শাড়ি, গয়না আর তার সমস্ত টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়েছে ভূপেনের আগের পক্ষের স্ত্রী। অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে সংসার করতে আসা নূপুরের সমুদ্রের ঢেউ এর মতো ঝটকা লাগে। গোয়ার সমুদ্র পারে যেমন বারবার সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে, নূপুরের মনের মধ্যে আঘাত গুলো তেমনি আছড়ে পড়তে থাকে। নূপুর বুঝতে পারল, ভূপেন তাদের ঠকিয়েছে।

নূপুর সবকিছু মেনে নিয়ে সংসার করতে শুরু করেছে। আর পাঁচটা সাধারণ সংসারের মতো নূপুর তার সমস্ত কাজকর্ম করে। সকালে স্বামীর জন্য রান্না করা, তার কাজের জায়গায় টিফিন পাঠিয়ে দেওয়া, ঘর গোছানো, নতুন করে ঘর সাজানো, ঘরের জন্য নতুন আসবাবপত্র কেনা, অনেকখানি গুছিয়ে ফেলেছে সে। রাতগুলো স্বামীর সোহাগে কাটে তার। এমনি দিন চলছিল তাদের। দামী শাড়ি, কত গয়না, কত কসমেটিক্স, নানান রকম দামি-দামি খাবার পানীয় সমস্ত কিছু ভূপেন এনে দেয় তার জন্য। এক বছরের মাথায় নূপুর সন্তানসম্ভবা হয়। নূপুরকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় ভূপেন। সেখানে সে টাকাও পাঠায়। নূপুরের বাড়িতে জামাই বলতে সকলে অজ্ঞান। জামাইয়ের টাকাতেই নূপুরদের গোটা সংসার চলে যায়। যথাসময়ে নূপুর একটা ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। ভূপেন এসে তাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু এরপর থেকেই নূপুর নতুন রূপে আবিষ্কার করতে থাকে তার স্বামীকে। এতদিন যেটাকে সে ভালোবাসা মনে করেছিল সেটা আসলে লালসা। কোনও কিছুতে বাধা দিলেই নূপুরকে মারতে শুরু করে ভূপেন। রোজ রাতে ধর্ষণ হওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য নূপুর পালিয়ে আসে তার বাপের বাড়ি। কিন্তু এখানে তো জামাই সকলের চোখের মনি। জামাই টাকা পাঠায়, অনেক টাকা সেই টাকায় নূপুরদের অভাবের সংসার অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে চলে। নূপুর বারবার পালিয়ে আসে, আর তার বাড়ির লোক বারবার বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয় আবার সেই নরকে। আবার কোন-কোন বার ভূপেন ভালো মানুষের ভেক ধরে নানান দামী দামী উপহার নিয়ে এসে হাজির হয় নূপুরের বাপের বাড়ি, নূপুরের কাছে ক্ষমা চায়, কিন্তু সবকিছুই যে ভণ্ডামি এটা নূপুর গোয়ায় তার শ্বশুর বাড়ি ফিরতেই বুঝে যায়।

নূপুর অনেকবার তাকে বিশ্বাস করে ফিরে এসেছে তার কাছে, কিন্তু প্রতিবারই নূপুর প্রতারিত হয়েছে। ফিরে এলে প্রতিবারই ভূপেনর একই রূপ সে দেখতে পায়। নূপুরের মনে হয় তার বাপের বাড়ি টাকা পাঠিয়ে একপ্রকার নূপুরের শরীরকে কিনে নিয়েছে ভূপেন। স্বামীর হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতিত এবং ধর্ষিত নূপুর বারবার তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরে এসেছে। তার ছোট মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে এসেছে বাপের বাড়িতে। কিন্তু লাভ হয়নি কোনও। স্বামীর বাড়িতে খাওয়া-পরা ও থাকার কোনও অভাব নেই, কিন্তু তাও কেন স্বামীর ঘর থেকে বার-বার বাপের বাড়ি ফিরে আসছে, একথা সে জানাতে পারে না কাউকে। একমাত্র নিজের মাকে বলেছিল সে, কিন্তু তার মা তাকে মানিয়ে নিতে বলেছিল। নূপুরের মা তাকে বলেছিল, "এটা খুব সাধারণ ব্যাপার, প্রত্যেক ঘরেই হয়। মেয়েদের একটু মানিয়ে নিতে হয়, স্বামীকে খুশি করাই স্ত্রীর কর্তব্য।"

কিন্তু নূপুর সেই নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে পারছিল না। কারো কাছ থেকেই যখন সে কোন সাহায্য পেলো না তখন তার মনে পড়ল অজয়ের কথা। অজয় এখন আর গ্রামে থাকে না কলকাতাতেই থাকে। তার খোঁজ করে ছোট্ট মেয়েটাকে নিয়ে নূপুর গেল অজয়ের কাছে। অজয়ের সঙ্গে তার দেখা হল। কিন্তু অজয় তাকে জানালো, পরের সপ্তাহে তার বিয়ে। এতদিন সে নূপুরের জন্য অপেক্ষা করেছিল। কিন্তু এখন আর কিছুই করা সম্ভব নয়। তবে নূপুরের যদি কোনোদিন কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয় অজয়কে সে তার পাশে পাবে।

নূপুর আর বাপের বাড়ি ফিরল না সেখান থেকে রওনা দিলো তার স্বামীর কাছে এবার আর কাউকে বোঝাতে হল না স্বামীর বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য। বুকের মধ্যে একটা ব্যথা অনুভব করছে নূপুর। নিজের বুকের মাঝে জীবনের থেকে আঘাত পেয়ে মানুষজন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, নূপুরও তেমনি তার নারকীয় জীবনে পুনরায় ঝাঁপ দিল। শুরু হল আবারও একই জীবন। নূপুর ভাবল এটাই হয়তো তার ভবিতব্য।

এখন আর নূপুর কোনও কিছুতে প্রতিরোধ করে না। এভাবেই দিন চলছিল। এর মধ্যেই হঠাৎ একদিন কেউ একজন একটা বাচ্চা ফেলে যায় তাদের বাড়িতে। ভূপেন তখন মাছের ভেড়িতে। আশেপাশের পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলে নূপুর জানতে পারে বাচ্চাটি ভূপেনর আরেক পক্ষের স্ত্রীর সন্তান, সে-ই ফেলে গেছে। যখন-যখন নূপুর এখানে থাকে না, তখন আরেকটি মেয়ে এখানে এসে থাকে, এটা তারই সন্তান। এর আগে সেও পালিয়ে গিয়েছিল। ভূপেন মাঝে মধ্যে তাকে আবার কোথা থেকে ধরে নিয়ে আসে। বাড়ি ফেরার আগেই এই খবর পৌঁছে যায় ভূপেনর কাছে। সেদিন ভূপেন নূপুরের জন্য নতুন শাড়ি গয়না কসমেটিক্স তার পছন্দের খাবার কিনে নিয়ে আসে। নূপুর বুঝতে পারে আবার সেই টোপ, নূপুর আর সেই টোপে পা দেয় না। সে মনে-মনে ঠিক করে নিয়েছে, সে কি করবে; মুখে সে কিছুই প্রকাশ করল না।

পরদিন থেকে সে ভূপেন এবং সেই বাচ্চাটির মায়ের সম্বন্ধে খোঁজ-খবর জোগাড় করতে লাগলো। বাচ্চাটার মা নাকি এবার অন্য আরেক জনের সঙ্গে পালিয়েছে। দিন শেষে সে আরো যা জানতে পারল তাতে তার হাড় হিম হয়ে গেল, তার স্বামী মাছের নয় ড্রাগের ব্যবসা করে। মাছের ব্যবসার আড়ালে চলে বেআইনি সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ। অনেক ভেবে নূপুর ঠিক করলো এই নরক থেকে মুক্তির একমাত্র পথ পালিয়ে যাওয়া। কিন্তু বাপের বাড়ি আর নয়, কোনও আত্মীয়ের বাড়ি আর সে যাবে না, গেলে এই শয়তানটা তাকে ধরে নিয়ে আসবে; না-হলে তার বাড়ির লোকেরাই আবার তাকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে এই সংসারে ফেরত পাঠায়ে দেবে।

পরের দিন সকালে ভূপেন কাজে বেরিয়ে যাবার পর নূপুর আর তার মেয়ে যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, তখন সেই ছোট বাচ্চা ছেলেটি নূপুরের আঁচল টেনে ধরে। নূপুর ভাবে এই বাচ্চা ছেলেটিকে এখানে ফেলে গিলে ভূপেন হয়তো তাকে তারই মত নারী-মাংস লোলুপ নরপিশাচে পরিণত করবে। নূপুর ছেলেটাকে তার কোলে তুলে নেয়। দুই সন্তানকে নিয়ে অজানার পথে পারি দিল সে। কিন্তু কোথায় যাবে সে? তখন অজয়ের বলা শেষ কথাগুলো নূপুরের কানে বাজতে থাকে। কোনদিন যদি কোনও প্রয়োজন হয় তবে সে যেন অজয়ের কথা মনে করে। অজয়ের কথা ভেবেই নূপুর কলকাতায় ফিরে এলো। নিজের বাড়িতে গেল না, এমনকি বাড়িতে কোন খবরও সে দিল না।

অজয় সঙ্গে দেখা করে নূপুর তাকে সব কথা খুলে বলে। অজয় সাহায্যে নূপুরের একটি কাজ জোগাড় হয়ে যায়। একটা আয়া সেন্টারের যোগাযোগ করিয়ে দেয় অজয়। সেখানে কাজ করতে শুরু করে নূপুর। তারপর নিজেই একটা ভাড়াবাড়ির ব্যবস্থা করে। নূপুর এখন আয়ার কাজ করে। তার দুই সন্তান নিয়ে সে ভালো আছে। ছেলে-মেয়ে দুজনকেই স্কুলে ভর্তি করেছে। ওর সন্তানদের জীবন যেন ওর মত না হয় সেটাই নূপুরের চেষ্টা। ভূপেন ওকে আর খুঁজে পায়নি। নিজের বাড়িতে আর আত্মীয় স্বজনদেরও কোন খবর দেয় নি নূপুর।

অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। আজ নূপুরের মেয়ে আলোর মাধ্যমিকের রেজাল্ট। নূপুর আলোর থেকে বেশি নার্ভাস হয়ে আছে। মনে হচ্ছে আজ আলোর নয় নূপুরের রেজাল্ট বেরোবে।

"মা মা," চিৎকার করতে-করতে দৌড়ে আসছে প্রদীপ। তার চিৎকারে নূপুর ভয়ে ঘরের বাইরে বেড়িয়ে আসতেই প্রদীপ তার গলা ঝাপটে ধরল, "মা দিদি 1st হয়েছে। স্কুলে সবার থেকে বেশি নাম্বার পেয়েছে। এর আগে আমাদের স্কুলে কেউ মাধ্যমিকে এত নম্বর পায়নি। স্কুলের সবাই দিদিকে নিয়ে আসছে আমাদের বাড়িতে।"

নূপুরের মনে হল আজ সে মাধ্যমিক পরীক্ষা আর জীবনের পরীক্ষা দুটোতেই পাশ করে গেছে। অশ্রুজলে ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যাওয়া দুচোখ দিয়ে নূপুর দেখতে পেলে দূর থেকে আলোর বিজয় রথ আসছে, আলোর মুখে জয়ের হাসি। ঝাপসা চোখে আলোর মা যেন বিশ বছর আগের নূপুরকে দেখতে পাচ্ছে, যে মেয়েটি পড়তে চেয়েছিল, এমন এক বিজয় রথে যাত্রা করতে চেয়েছিল। এ বিজয় মিছিল সত্যিই কি আলোর নাকি নূপুরে? কার এই বিজয় মিছিল?
( সমাপ্ত )


Next Bangla Story

All Bengali Stories    112    113    114    115    116    117    118    119    120    (121)     122   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717