Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

পার্থেনোজেনেসিস্ - ১

Online bangla Story

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



List of all Bengali Stories

পার্থেনোজেনেসিস্ - ১

লেখক: দিগন্তপাল, মা – অনামিকা পাল, বাবা – অচিন্ত্য কুমার পাল, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ

( নির্বাচিত গল্প, 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৩' )

##
ইম্পেরিয়াল মেডিকেল কলেজ অফ লন্ডন। শ্রেণীকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের বিবর্তনের কারণ বোঝাচ্ছেন ডঃ এডওয়ার্ড ডি বস্কো। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম সারির কোণে বসে রয়েছে এক আগ্রহী ছাত্র। প্রোফেসরের মুখের প্রতিটি শব্দ যেন সে গোগ্রাসে গিলছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো একটা নোটবুকে লিখে ফেলছে। নাম দিগন্ত।

বিবর্তন প্রধানত তিনটি কারণে ঘটে–
— 'মিউটেশন' বা 'পরিব্যক্তি'
— 'সেক্সুয়াল রিপ্রডাকশন' বা 'যৌন প্রজনন'
— 'ন্যাচারাল সিলেক্শন' বা 'প্রাকৃতিক নির্বাচন'।


'পরিব্যক্তি' হলো পরিবেশ ও অন্যান্য জীবের প্রভাবে কোনও জীবের জিনে নিউক্লীয়টাইড ক্রমের এক স্থায়ী পরিবর্তন যা জীবের মধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের জন্ম দেয়। প্রোফেসর আরও বলে চললেন — যৌন প্রজননের মাধ্যমে সব সময়ে নতুন-নতুন বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হয়। সন্তানের মধ্যে কিছু মায়ের, কিছু বাবার, আর কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য দেখা দেয় যাদের একসঙ্গে 'ইনহেরিটেন্স' বলে। এরপরেই আসে 'প্রাকৃতিক নির্বাচন'-র কথা যা এইভাবে সৃষ্টি হওয়া নতুন নতুন বৈশিষ্ট্যের জীবেদের মধ্যে কোন্ জীবগুলি বা জীবের কোন্ বৈশিষ্ট্যগুলি প্রকৃতিতে টিকে থাকবে আর কারা বিলুপ্ত হবে তা ঠিক করে দেয়। প্রোফেসর এডওয়ার্ড-এর এই বক্তব্য শেষ হলে ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বিতীয় সারি থেকে এক প্রশ্নসূচক মিষ্টি গলার স্বর উঠে এল – "মে আই বি এক্সকিউস্ড?" প্রোফেসর উত্তর দিলেন – "ইয়েস্ সুনীতি।" সুনীতি জিজ্ঞাসা করল – "স্যার, হাও ক্যান উই ডিফাইন ইন্ডিভিডিয়াম...?"

সুনীতি খুব সুন্দরী। দুধে আলতা গায়ের রং, ঘন কালো কোঁকড়ানো চুল, টানা-টানা বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, টিকালো নাক, নম্র গোলাপী ঠোঁট, আর দৃঢ় চিবুক নিয়ে সে যেন ভারতীয় নারীর দার্শনিক আকর্ষণীয়তার বিরল এক নিদর্শন। তার মনের মাটিতে জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধি, বিবেচনা, আর ঔদার্য্য বর্ষণেও প্রকৃতি কোনও কার্পণ্য করেনি। দিগন্ত ও সুনীতি খুব ভালো বন্ধু। উভয়ের এই ভীষণ বন্ধুত্বের কারণ যে শুধু তারা উভয়ই বাঙালী তা নয়, আর একটা বড় কারণ হল যে তাদের ভাবনার তরঙ্গদৈর্ঘ্য খুব মেলে। দিগন্তের মধ্যে থাকা যে-বিষয়টা সুনীতিকে সবচেয়ে বেশী আকর্ষণ করে তা হল সারল্য। আকর্ষণীয়তা বাহ্যিক হোক কিংবা আভ্যন্তরীণ, আকর্ষণীয়ের সংসর্গে কোনও মনের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। প্রকাশ না করলেও সুনীতির মনে দিগন্তের সম্পর্কে ভাবনাগুলো বার বার যেন বন্ধুত্বের গন্ডি পেরোতে চায়। প্রতিদিন কলেজ শেষে দু'জনে একই সাথে বাড়ি ফেরে। এছাড়াও মাঝে-মাঝে দু'জনে লং-ওয়াকে বেরোয়। মনের ও আবেগের অনেক কথাই হয়। একদিন সুনীতি দিগন্তকে অদ্ভুত এক প্রশ্ন করলো – "দিগন্ত, তুই জীবনে এমন কোনও স্পর্শ পেয়েছিস যা কোনোদিন ভুলতে পারবি না?" দিগন্ত উত্তর দিলো – "দু'রকম স্পর্শ আমার জীবনের চালক বল।" সুনীতি জিজ্ঞাসা করল – "কি কি?" দিগন্ত বেশ আবেগ প্রবণ হয়ে পড়ল, বলল – "এক রকম স্পর্শে রয়েছে উত্তেজনা; যা আমি পাই বিভিন্ন প্রাকৃতিক ঘটনা থেকে। তারা যেন আমায় ছুটিয়ে চলে আর বলে যে অন্বেষণ করে চলো, সত্য এখনও অজানা! দ্বিতীয় রকম স্পর্শটা মায়ের, যাতে রয়েছে পরিতৃপ্তি! সে যেন আমায় আস্বস্ত করে বলে যে, সে-ই সত্য, আমার উৎসই আমার গন্তব্য!" দিগন্ত ভীষণ নরম মনের আর আবেগপ্রবণ। এই দূর দেশে মায়ের কথা উঠতেই তার দুচোখ ভরে উঠল। সুনীতি দিগন্তের মনকে একটু বিক্ষিপ্ত করার জন্য সরাসরি বিজ্ঞানের আলোচনা শুরু করে দিল। সুনীতি জিজ্ঞাসা করল – "বল্, 'থিয়োরি অফ ইভোলিউশন' কেমন লাগছে?"

আর্দ্র চোখ মুছতে-মুছতে দিগন্ত বলল – "ভালোই। কিন্তু..."

সুনীতি বলল – "কিন্তু কী?" দিগন্ত বলল – "না, আসলে প্রোফেসর এডওয়ার্ড যখন সবার সামনে বলছিলেন যে বিবর্তনের একটা কারণ নাকি সেক্সুয়াল রিপ্রোডাক্শন, আমার না ভীষণ লজ্জা করছিল!" এই শুনে সুনীতি হেসে গড়িয়ে পড়ল। তারপর বলল – "ধ্যাত্, এতে লজ্জার কি আছে?এই তো তুই আমাকে বলছিস, কই লজ্জা পাচ্ছিস না তো!" দিগন্ত বলল – "আরে তোকে সব বলা যায়।" সুনীতি মুচকি হেসে বেশ সুর টেনে বলল – "আ...আ...আচ্ছা বুঝলাম। আমাকে স..অ..ব.. বলা যায়।" দিগন্ত গম্ভীর হয়ে বলল – "তুই আবার বাজে ইয়ার্কি করছিস! এইজন্যই তোকে কিছু মনের কথা বলতে নেই।" সুনীতি দিগন্তের দুই গাল টিপে বলল – "আচ্ছা বাবা সরি। তা বলে আবার রাগ করে বসে থাকিস না।" সুনীতি এবার একটু উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল–"বাই দ্য ওয়ে, 'সেক্সুয়াল রিপ্রোডাক্শন' বলতে মনে পড়ল, সেদিন একটা রিসার্চ আর্টিকল্ পড়ছিলাম জানিস, রিসেন্টলি জানা গেছে যে শুধু মাইক্রোব্স নয়, এমন মেরুদন্ডী প্রাণীও আছে যারা সেমি-সেক্সুয়াল রিপ্রোডাক্শান-এর মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে!" দিগন্ত একটু চিন্তান্বিত হয়ে ভুরু কুঁচকিয়ে জিজ্ঞাসা করল –"সেমি-সেক্সুয়াল রিপ্রোডাক্শান!!' যেমন...'বাইনারী ফিশন্'?"

মৃদু ধমকের সুরে সুনীতি দিগন্তকে বলল –"আরে 'বাইনারী ফিশন্' তো 'আসেক্সুয়াল রিপ্রোডাক্শান', যে পদ্ধতিতে সাধারণত ব্যাক্টেরিয়া বংশবৃদ্ধি করে! 'সেমি-সেক্সুয়াল রিপ্রোডাক্শান'-র মধ্যে পড়ে'গাইনোজেনেসিস্', 'হাইব্রিডোজেনেসিস্', আর 'পার্থেনোজেনেসিস্'...।"

তার পরের দিন সুনীতি কলেজে এল না। খুব অসুবিধা না থাকলে সুনীতি কলেজ মিস্ করার মেয়ে নয়। দিগন্ত সারাদিনে অনেকবার কল্ করল, কিন্তু কোনও সাড়া মিলল না। কোনও মেসেজেরও উত্তর এল না। পরের দিনও একই ব্যাপার, উপরন্তু সুনীতির মোবাইল-ফোন সুইচড অফ ইন্ডিকেট্ করছিল। তৃতীয় দিনে সুনীতির রুম-মেট জেনিথ বেনিংটনকে কলেজে উপস্থিত দেখে দিগন্ত তাকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারে যে, সুনীতি কোনও বিশেষ কারণে হঠাৎ দেশে ফিরে গেছে। জেনিথ জানাল যে, কী কারণ তা সুনীতি তাকে না বললেও সুনীতির হাব-ভাব তার মোটেও স্বভাবিক মনে হয়নি। দিগন্ত খুব টেন্স্ হয়ে পড়ল। আরও তিন-চার দিন কেটে গেল। সুনীতির কোনও খবর নেই। একটা অজানা আশঙ্কা ক্রমাগত দিগন্তের মনকে ঘিরে ধরছিল। এই ক'দিনে সুনীতির থেকে দূরে থেকে দিগন্ত যেন নিজেকে নতুন করে আবিষ্কারও করেছে। সে নতুন করে অনুভব করেছে তার সাথে সুনীতির সম্পর্কটাকে। বার বারই সুনীতির মুখটা তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সুনীতির কোনও বিপদ হয়নি তো - এই দুশ্চিন্তাই দিগন্তকে বার বার চেপে ধরছিল। এতদিন ধরে সচেতন মনে দিগন্ত যাকে শুধু বন্ধু ভেবে এসেছে, অচেতন মনে তার জন্য যেন লুকানো ছিল অন্য এক অনুভূতি! দিগন্ত আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। মুম্বাই-এ সুনীতির বাড়ির ঠিকানা তার জানাই ছিল। লন্ডন থেকে সে মুম্বাই-এ এসে সরাসরি গেল সুনীতির বাড়ি। কলিং বেল কয়েক বার বাজাতে সুনীতিই দরজা খুলল। সুনীতির চোখ-মুখ বেশ শুকনো ঠেকল। সেই হাসি-খুশি ভাব বিবাগী হয়েছে। তবে দিগন্তকে দেখে সুনীতি যেন মনে একটু বল পেল। দিগন্ত ভুরু কুঁচকে ভীষণ বিচলিত হয়ে জিজ্ঞাসা করল – "কি রে? কি হয়েছে? তোর কোনও খবর নেই! সব ঠিক আছে তো?"

সুনীতি থমথমে স্বরে বলল – "কিচ্ছু ঠিক নেই! ভেতরে আয়, সব বলছি।" সুনীতির ঘরে দু'জনে নিরিবিলি বসে দিগন্ত সব শুনল। সুনীতির দিদি সুচেতনার শরীরটা খারাপ হওয়ায় ও পরপর কয়েকদিন বমি হওয়ায় বাড়িতে ডাক্তার ডাকার কথা ভাবা হয়েছিল, কিন্তু সুচেতনা বারবার জানিয়েছিল যে ডাক্তার ডাকার কোনও প্রয়োজন নেই। সুচেতনার শরীর-স্বাস্থ্যের ক্রমে অবনতি হওয়ায় পরিশেষে ডাক্তার ডাকা হয়। ডাক্তার সুচেতনাকে পরীক্ষা করে সন্দেহ করেছিলেন যে সে সন্তান সম্ভবা! পরে সব পরীক্ষার রিপোর্ট সেই কথাইবলেছে। কিন্তু সুনীতির অবিবাহিত দিদি সুচেতনা বার বারই জানিয়েছে যে সে কখনই কোনও পুরুষের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়নি। 'কুমারী মাতা!!' এর থেকে ভালো মশলা মুড়ি বোধ হয় পাড়ার লোকেদের কাছে আর কিছু হয় না। একজন মানুষের ব্যক্তিগত বিষয় চারপাশের বাড়িতে বাড়িতে ছড়িয়ে পড়তেই তা বহু মানুষের মুখরোচক টেবিল টক্-রূপ নিয়েছে এবং তাঁরা বিস্কুটে কামড় আর চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে তা উপভোগ করছে। নির্লজ্জ প্রশ্ন আর বেআব্রু কটাক্ষে সুচেতনা একদম ভেঙ্গে পড়েছে। এরই মধ্যে সে একবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে!" এই বলতে বলতেই সুনীতি কেঁদে দিগন্তকে জড়িয়ে ধরল। সুনীতি বেশ কিছুক্ষণ দিগন্তের জামা আঁকড়ে কাঁদল। দিগন্ত বেশ অপ্রস্তুত অনুভব করছিল। সে আড়ষ্ট হয়ে রইল। এরপর হঠাৎ সুনীতি সম্বিত ফিরে পেলে চোখের জল মুছতে মুছতে সংকোচে দূরে সরে গেল। কিছুক্ষণের নিস্তব্ধতার শেষে নিজের অপ্রস্তুত অবস্থা কাটিয়ে সুনীতিকে স্বাভাবিক অনুভব করানোর জন্য দিগন্ত বলে উঠল – "ক-কষ্ট পাস না সুনীতি। সব ঠিক হয়ে যাবে। আচ্ছা ডাক্তারের কোনও ভুল হচ্ছে না তো?"

সুনীতি চোখের জল মুছতে মুছতেই বলল – "একাধিক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। একাধিকবার টেস্ট করানো হয়েছে। বার বার একই রেসাল্ট। কিন্তু আমি আমার দিদিকে অবিশ্বাস করতে পারব না। আমার দিদি সেরকম মেয়েই নয়। মা-বাবাকে সমাজের নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে সেরকম কাজ ও কক্ষনও করতে পারে না।" সুনীতির চোখ-মুখ ভীষণ বিষণ্ণ দেখাচ্ছিল। এমন অবস্থায় শান্তনা দেওয়া ছাড়া দিগন্তের আর কিছুই করার ছিল না। সুনীতি দিগন্তের বিষণ্ণতা কাটানোর জন্য সব সময়ই বিজ্ঞান প্রসঙ্গ টেনে আনত। দিগন্ত তার সহজ-সরল বুদ্ধিতে আর কিছু না ভাবতে পেরে সেই চেষ্টাই করল। সে বলল – "তুই সেদিন আমায় 'গাইনোজেনেসিস্', 'হাইব্রিডোজেনেসিস্', আর 'পার্থেনোজেনেসিস্'-এর কথা বলে ছিলিস না। বিষয়গুলো নিয়ে তারপর আর আমার তেমন পড়াশোনা করা হয়নি তবে..." সুনীতি প্রচণ্ড রেগে গেল, দিগন্তের কথা শেষ হওয়ার আগেই বলে উঠল – "তোর স্বাভাবিক বুদ্ধি কবে হবে দিগন্ত! এখন ঐসব আলোচনা করার সম..." একথা বলতে বলতেই সুনীতি হঠাৎ থেমে গেল আর ভুরু কুঁচকে দিগন্তের দিকে তাকিয়ে বলল – "তুই কি বললি?"

দিগন্ত বেশ ঘাবড়ে গিয়ে একবার ঢোক গিলে বলল – "ক...ক...কি আবার বললাম, বলছিলাম তুই সেদিন আমায়..."

দিগন্তের কথা শেষ হতে না হতেই সুনীতি দিগন্তের থেকে মুখ ফিরিয়ে চোখ বড় বড় করে বলল – "এও কি সম্ভব!" সুনীতির মস্তিষ্কে যে কোন্ ভাবনার উদয় হয়েছিল তা দিগন্ত কিছুই বুঝল না। সুনীতি সঙ্গে সঙ্গে লন্ডনে ডঃ এডওয়ার্ডকে কল্ করল ও স্কাইপে আসার জন্য অনুরোধ করল। স্কাইপে সুনীতি ডঃ এডওয়ার্ডকে প্রথমেই যে প্রশ্ন করল তা হলো যে, ঠিক কোন্ মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে পার্থেনোজেনেসিস্ দেখা গেছে। উত্তরে প্রোফেসর-এর বক্তব্য 'ইউনিসেক্স ভার্টিব্রেট্স' অর্থাৎ উভয়লিঙ্গ মেরুদন্ডী। উভয়লিঙ্গ মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে তিন ধরনেরই সেমি-সেক্সুয়াল বা ক্লোনাল রিপ্রোডাক্শন দেখা গেছে। এদের মধ্যে পার্থেনোজেনেসিস্ একটি। ডঃ আরও জানালেন যে এখনও অবধি শুধু স্তন্যপায়ী বাদ দিয়ে বিশেষ বিশেষ মাছ, উভচর, সরীসৃপ, ও পাখি – এই সকল মেরুদন্ডীর মধ্যেই পার্থেনোজেনেসিস্ আবিষ্কৃত হয়েছে। এরপর সুনীতি তার দিদির ঘটনা সব বলল ও এও জানালো যে, সে সন্দেহ করছে যে তার দিদির এই অবস্থার জন্য পার্থেনোজেনেসিস্-ই দায়ী। এ কথা শুনে হতভম্ব হয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় প্রোফেসর বললেন – "সুনীতি, ডু ইউ নো হোয়াট ইউ আর সেইং! পার্থেনোজেনেসিস্ ইস নট্ পসিবল্ ইন্ হোমোসেপিয়েন্স সেপিয়েন্স!" সুনীতি একটু উত্তেজিত হয়ে বলল– "হোয়াই নট্ স্যার্?হিউম্যান বিইং ইস্ ইভল্ভিং এভ্রি সিঙ্গল্ সেকেন্ড।"

প্রোফেসর বললেন – "লুক্ সুনীতি, আই হ্যাভ্ অলওয়েস্ প্রেইসড্ ইয়োর ইন্টেলেক্চুয়ালিটি অ্যান্ড আউট অফ বক্স থিংকিং। বাট্ দিস্ টাইম হোয়াট ইউ আর সেইং ইস্ টোটালি ক্রেজি! হাওএভার; হোয়েন ইউ হ্যাভ্ সাজেস্টেড্; কাম টু লন্ডন শার্প উইথ ব্লাড, ইউরিন, জেনেটিক স্যাম্পেল্স অ্যান্ড অল দ্য মেডিক্যাল টেস্ট রিপোর্ট্স অফ ইয়োর এল্ডার সিস্টার।"

সুনীতি দিদিকে মা-বাবার দায়িত্বে রেখে দিগন্তের সাথে লন্ডন ফিরে গেল। প্রোফেসর পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর বিষয়টি বিশ্লেষণ করার জন্য কয়েকদিন সময় নিলেন। নির্দিষ্ট দিনে প্রোফেসরের মতামত জানতে সুনীতি ও দিগন্ত প্রোফেসরের বাড়ি গেল। ডঃ এডওয়ার্ডকে বেশ চিন্তিত দেখালো। তিনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন – "সুনীতি, আই রিয়েলি কুড্নট শিউর হোয়েদার ইউ আর রাইট্, বাট্ আই এম ড্যাম শিউর দ্যাট্ ইউর্ এল্ডার সিস্টার ইস নট্ টেলিং আ লাই।" বিভিন্ন বিজ্ঞান পত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে যে পুরুষ হোমোসেপিয়েন্স সেপিয়েন্স-এর বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ফলে মানুষের প্রজননে সমস্যা ও জটিলতা তৈরি হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান এই সমস্যার কিছু সমাধান বের করেছে ঠিকই কিন্তু প্রোফেসরের বক্তব্য অনুসারে, যদি সুনীতির আন্দাজ সত্য হয়, পার্থেনোজেনেসিস্-কে বলা যেতে পারে প্রকৃতির দেওয়া এক সমাধান; কোনও পুরুষের দেওয়া স্পার্ম বা শুক্রাণুর সাহায্য ছাড়াই নারীর শরীরে উপস্থিত ওভাম বা ডিম্বাণু বিকশিত হবে ও সন্তানের জন্ম দেবে। সুনীতি বিচলিত হয়ে তার দিদির জীবনের আশংকা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে প্রোফেসর জানান যে তার দিদির কোনও জীবনের আশংকা না থাকলেও সন্তান কেমন হবে তা নিয়ে তিনি কিছুই বলতে পারছেন না। তবে ডঃ এডওয়ার্ড একশো শতাংশ নিশ্চয়তার সাথে জানান যে এই ক্ষেত্রে অনেক দেরীতে গর্ভপাত করার চেষ্টা করলেও মায়ের জীবনের কোনও আশংকা নেই।

পরের দিন কলেজ থেকে ফেরার পথে দিগন্ত ও সুনীতি অনেক্ষণ কথা বলল। সুনীতির কথাবার্তায় কেবলই হতাশা প্রকাশ পেলো – "দিদি স্বপ্ন দেখেছিল স্বামী, সংসার, সন্তান। এই একটা সন্তান নিয়ে কেউ আমার দিদিকে বিয়ে করবে? তার উপর এমন এক সন্তান যার জন্মানোয় এত অ্যাব-নরমালিটিস্। যেকোনো পুরুষ এই হিস্ট্রি শুনলে দিদির সাথে সম্পর্কে আসতে চাইবে না। গতকাল অনেক রাতে মা আমায় কল্ করেছিল। মুম্বাই-এর একটা খুব বড় মেডিকেল টিম দিদিকে পিরিয়ডিক চেক-আপ আর অবসারভেশনে রেখেছে।" এবার সুনীতির কন্ঠস্বরে রাগ প্রকাশ পেল – "মানব সভ্যতায় এমন প্রেগনেনসি প্রথম, তাই আমার দিদি এখন একটা এক্সপেরিমেন্ট করার সাবজেক্ট!" দিগন্ত বলল – "ডঃ এডওয়ার্ড তো বললেন অ্যাবোরশানে কোনও সমস্যা হবে না, অ্যাবোরশান করালেই তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।" সুনীতি প্রত্যুত্তরে বলল – "আমার দিদিই তাতে রাজি নয়। মনে হচ্ছে, যে ডাক্তারেরা দিদিকে অবসারভেশন-র নামে গিনিপিগ্ হিসাবে ব্যবহার করছেন, তাঁরাই দিদির ব্রেইন্ ওয়াশ্ করেছেন।"

এরপর বেশ কয়েকমাস কেটে গেল। দিগন্ত ও সুনীতির ডাক্তারি পড়াশোনার শেষ বছর চলছিল। ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হতে কয়েকটা মাস বাকি। এইসময় খবর এল যে সুনীতির দিদি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশী সময় ধরে গর্ভবতী থাকার পর সেই গর্ভাবস্থায় হঠাৎ জটিলতা দেখা দিয়েছে! জরায়ুতে ভ্রূণ মাঝপথে আর বিকশিত হতে পারছে না কারণ ভ্রূণের কোষ বিভাজন বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধান ভারপ্রাপ্ত ডাক্তার জানিয়েছেন যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই অর্ধ-বিকশিত ভ্রূণ অন্য কোনও যুবতীর জরায়ুতে স্থাপন না করতে পারলে ভ্রূণের মৃত্যু হবে! এই কথা শুনে সুনীতির দিদি সুচেতনা কান্না-কাটি শুরু করে দিয়েছে, কারণ এতমাস গর্ভে ধারণ করার পর এই অজাত সন্তানের উপর তার একটা মায়া পড়ে গেছে। বড় মেয়ের মনের অবস্থা দেখে মা-বাবাও বেশ ভেঙ্গে পড়েছেন। এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ডাক্তারদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। সুনীতি দিদির এই খবর পেয়ে রাতারাতি লন্ডন থেকে মুম্বাই-এর উদ্দেশ্যে রওনা হলো। ইতিমধ্যে ভারতীয় বায়োলজিস্ট মহলে সাড়া পড়ে গেছে যে সুচেতনার জরায়ুতে থাকা ভ্রূণের সাথে কোনও আমবিলেকাল কর্ড অথবা প্লাসেন্টা তৈরি হয়নি, তার বদলে ভ্রূণকে নাকি ঘিরে রেখেছে এক বেশ পুরু ও শক্ত প্রোটিন-র তৈরি ডিম্বাকার মোড়ক যা সেই ভ্রূণকে আঘাত থেকে রক্ষা করছে, ভ্রূণকে পৌষ্টিক খাদ্যোপাদান সরবরাহ করছে, এবং ভ্রূণের সকল বর্জ্য পদার্থ শোষণ করে চলেছে। এ এক নতুন প্রোটিন যার পলিপেপটাইড শৃঙ্খলের অ্যামাইনো অ্যাসিড ক্রম কোনও বিজ্ঞানীরই চেনা ঠেকছে না। এই প্রোটিন মোড়ক থাকার জন্যই নাকি মেডিকেল টিম সুচেতনার জরায়ু থেকে অন্য কোনও যুবতীর জরায়ুতে ভ্রূণ প্রতিস্থাপনে আশাবাদী।

যাই হোক, সুনীতি তার ডাক্তারি পড়াশোনার কথা না ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সে এই নতুন জীবনকে তার নিজের শরীরে স্থান দেবে, কারণ, প্রথমত এই ক্রিটিকাল কেসে কোনও মহিলাই সাবজেক্ট হওয়ার রিস্ক নিতে চাইছেন না আর দ্বিতীয়ত সুনীতি তার দিদিকে আর চোখের জল ফেলতে দেখতে পারবে না। তাই এই ভ্রূণকে বাঁচাতে সে যেকোনো ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। দিগন্ত আর বাড়ির সকলের নিষেধ অমান্য করে সুনীতি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকল। শল্য চিকিৎসার ইতিহাসে প্রথমবার এমব্রেয়ো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বা ভ্রূণ প্রতিস্থাপন ঘটল এবং তা সফলও হলো!

প্রায় আরও পাঁচ মাস পর সন্তান প্রসব সফল হলো। সকল ডাক্তারের চোখে বিস্ময় আর মুখে হাসি। সুনীতির ক্লান্ত চোখে-মুখেও ফুটে উঠেছে এক গভীর প্রশান্তি। কিন্তু প্রসবের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এক দুর্ঘটনা ঘটে গেল! সেই আশ্চর্য প্রোটিন মোড়ক সুনীতির জরায়ু থেকে সিজার করে বের করার আগেই হঠাৎ বিস্ফোরিত হলো! এই ঘটনা সম্পূর্ণ আকস্মিক ও ডাক্তারদের ভাবনার বাইরে ছিল। শুরু হলো প্রচণ্ড রক্ত-ক্ষরণ! অপরেশন থিয়েটারে উপস্থিত সকল ডাক্তার সদ্যোজাত শিশুটিকে নিরাপদে সরিয়ে দিয়ে সুনীতিকে বাঁচানোর জন্য একসঙ্গে যুদ্ধ শুরু করলেন। যে অপারেশন্ কিছুক্ষণ আগেও সফল বলে মনে হয়েছিল তা এক ভয়ংকর মোড় নিল! ডাক্তার দলের প্রধান রোনাল্ড টড্, যার সম্বন্ধে কথিত আছে "আইদার গড্ অর টড্", তাঁরও কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখা গেল। তাঁর মুখে সঙ্গী ডাক্তারদের উদ্দ্যেশ্যে অত্যন্ত টেন্স্ স্বরে শোনা গেল–"ফাস্ট, ফাস্ট!" ডাক্তারদের পাল্স রেট ক্রমে বেড়ে চলল। কিন্তু সুনীতির পাল্স রেট ক্রমাগত কমছে। ইলেক্ট্রো কার্ডিওগ্রাম-র ডিসপ্লে অপরেশন থিয়েটারে উপস্থিত প্রত্যেক ডাক্তারের কাছে যেন মূর্তীমান বিভীষিকা! জীবনের রঙ্গ-মঞ্চে মৃত্যুর তান্ডব নৃত্য! হঠাৎ সুনীতির শ্বাস-কষ্ট শুরু হলো! সেই সঙ্গেই সুনীতি যেন কিছু বলার চেষ্টা করছিল। ডঃ টড্ সুনীতির অক্সিজেন মাস্কটা আলতো করে খুলে দিলেন। ডাক্তারদলের এক বাঙালী ডাক্তার আশ্চর্য হয়ে বলে উঠলেন– "ডঃ টড্, শি নিডস্ অক্সিজেন!" ডঃ টড্ ক্লান্ত স্বরে বললেন – "শি নিডস্ সামবডি টু হিয়ার হার লাস্ট লেটার্স।" এই বলেই ডঃ টড্ তাঁর হাতের দস্তানা খুলতে শুরু করলেন। সেই বাঙালী ডাক্তার সুনীতির ঠোঁটের কাছে তার কান নিয়ে গিয়ে শুনতে চেষ্টা করলেন। সুনীতি সর্বশক্তি দিয়ে শুধু উচ্চারণ করতে পেরেছিল – "দি..." তারপরেই সব শেষ।

সুনীতির পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এল। সুদূর লন্ডনে একটা ছেলে চোখের জল মুছতে মুছতে ডাক্তারির ফাইনাল পরীক্ষাটা দিল। সেই শ্রেণী কক্ষ, সেই জানলা-দরজা, সেই ব্ল্যাকবোর্ড - সবকিছু একই রইল, শুধু তার পাশের ডেস্কটা খালি। পরীক্ষা চলাকালীন তার চোখ বারবার পাশের ডেস্কের দিকে চলে যাচ্ছে। সে যেন দেখতে পাচ্ছে যে সুনীতি মন দিয়ে লিখে চলেছে আর মাঝে মাঝে মুখ তুলে তার দিকে মুচ্কি হেসে আবার লেখায় মন দিচ্ছে। পরীক্ষা কোনও রকমে শেষ হলো। কিন্তু আজ বাড়ি ফেরার পথে সে একা। তাকে রাগানোর কেউ নেই। বিজ্ঞান নিয়ে গল্প করারও কেউ নেই। আর কেউ তার নাক টানবে না, গাল টিপবে না।

বেশ কিছুদিন পর পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলো। যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও দিগন্তের কোনও রকমে পাশ হয়েছে। তা নিয়ে দিগন্তের মনে কোনও দুঃখও নেই। এরপর প্রায় তেইশ বছর কেটে গেছে। ইংল্যান্ড ও আয়ার্ল্যান্ডের বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনার পর দিগন্ত এখন ইম্পেরিয়াল মেডিকেল কলেজ অফ লন্ডন-এর প্রোফেসর। দিগন্তের বয়স হয়েছে প্রায় তিপ্পান্ন। চুলে পাক ধরেছে। চোখে চশমা উঠেছে। মুখের ও গায়ের চামড়ায় ভাঁজও পড়েছে। দিগন্ত আজও অবিবাহিত। বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য অনেক চাপ দেওয়া সত্ত্বেও সে বিয়ে করেনি। দিগন্ত আজও একান্তে সুনীতির জন্য চোখের জল ফেলে। কোনোদিন মুখ ফুটে সুনীতিকে বলতে না পারলেও সে সুনীতিকে মনে যে স্থান দিয়েছে তারপর অন্য কোনও নারীকে জীবন-সঙ্গিনী হিসাবে মেনে নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়।

সেদিন দিগন্ত কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম ক্লাস নিচ্ছিল। পরিচয় পর্ব শেষ করে দিগন্ত 'রিপ্রোডাক্শান ইন এনিম্যাল্স' পড়াতে শুরু করল। এরপর এল সেই 'পার্থেনোজেনেসিস্' প্রসঙ্গ। দিগন্ত সকল ছাত্রের উদ্দ্যেশ্যে প্রশ্ন করল – "হোয়াট ইস্ পার্থেনোজেনেসিস্? এনি আইডিয়া?" প্রশ্নটা করে দিগন্ত পিছন ঘুরে বোর্ডে 'পার্থেনোজেনেসিস্' শব্দটা লিখতে শুরু করল। শব্দের প্রত্যেকটা অক্ষর তাকে ফেলে আসা দিনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সেই অতীত জুড়ে শুধু একজনেরই মুখ দিগন্তের চোখের সামনে ভেসে উঠছে। দিগন্তের বুক ভার হয়ে উঠল। চোখ যেন ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। তার হাত কাঁপতে লাগল। শব্দটা যেন ক্রমশ দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। সে যেন শত চেষ্টা করেও শব্দটার শেষ অক্ষরে পৌঁছতে পারছে না। এইসময়ে হঠাৎ একটা নারী কন্ঠস্বর শোনা গেল – "মে আই ট্রাই স্যার?"এই গলার স্বর দিগন্তের ভীষণ চেনা! পরের মুহূর্তেই বিদ্যুৎ-ঝলকের মত তার মনে পড়ে গেল – "এই গলার স্বর সুনীতির দিদি সুচেতনার না!" এক ঝটকায় দিগন্ত বোর্ড থেকে মুখ ফেরালো আর ঘুরে দাঁড়িয়ে যা দেখল তাতে তার সমস্ত শরীর হিম হয়ে গেল! ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বিতীয় সারি থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে একটি মেয়ে। সেই বুদ্ধিদীপ্ত চোখ, সেই দুধে-আলতা গায়ের রঙ, সেই ভীষণ চেনা দৃঢ় চিবুক! দিগন্তের সামনে দাঁড়িয়ে সেই তেইশ বছর বয়সী সুনীতি! আবেগে ও বিস্ময়ে দিগন্তের ঠোঁট কাঁপতে শুরু করল। কাঁপা কাঁপা স্বরে দিগন্ত জিজ্ঞাসা করল – "হোয়া...হোয়াট্স ইয়োর নেইম্ লেডি?"

মেয়েটি হেসে উত্তর দিল – "অনামিকা।"

(এর পর পার্থেনোজেনেসিস্ - ২)


Next Bangla Story

List of all Bengali Stories


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717