Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

প্রেমের জয়

Online bangla Story

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



List of all Bengali Stories

প্রেমের জয়

লেখিকা: ডঃ ভার্গবী চট্টোপাধ্যায় ভট্টাচার্য্য, বাবা: প্রয়াত সুনীল কুমার চট্টোপাধ্যায়, বালিগঞ্জ, কলকাতা
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা ( ৬০০ শব্দের) নভেম্বর-২০২৩ এর একটি নির্বাচিত গল্প

##
প্রেমের জয়

লেখিকা: ডঃ ভার্গবী চট্টোপাধ্যায় ভট্টাচার্য্য, বাবা: প্রয়াত সুনীল কুমার চট্টোপাধ্যায়, বালিগঞ্জ, কলকাতা

#
দুপুরবেলা। স্কুলঘরে বিরাজ করছে শান্তি। মেয়েরা মন দিয়ে খাতায় লিখছে। কিন্তু রিয়া জানলার ধারে বসে একবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছে আর একবার মাঠের দিকে তাকাচ্ছে।

"রিয়া, পড়ায় মন দাও," বললেন শিক্ষিকা।

রিয়া চেষ্টা করল, কিন্তু...

"দিদি, দিদি, দেখুন। একটা ষাঁড় ঢুকে পড়েছে।"

"যাও তুমি নেমে গিয়ে তার সঙ্গে খেলা করো, " রাগত স্বরে বললেন শিক্ষিকা, "ক্লাসে গোলমাল না করে মন দিয়ে কাজ করো।"

রিয়ার পাশেই বসেছিল মিতা। সে ঝুঁকে দেখে চিৎকার করে উঠলো, "ষাঁড়!! ষাঁড়!!"

সব মেয়েরাই লাফিয়ে উঠে জানালার দিকে দৌড়ালো। হ্যাঁ, সত্যিই একটা ষাঁড়। হুলস্থূল পড়ে গেল স্কুলে। মেয়েরা ত্রস্ত, দারোয়ানরা বিভ্রান্ত।

কলকাতা শহরের অভিজাত মেয়েদের স্কুল। কলকাতার উচ্চপদস্থ কর্মচারী, বড় ব্যবসাদার, সবাই তাদের মেয়েদের এই স্কুলে পাঠান। যদিও তিনটে গেট আছে স্কুলে, কিন্তু তেমনই প্রত্যেক গেটে আছে সতর্ক পাহারা। দস্তুরমতো পরিচয়পত্র দেখিয়ে তবে বাবা-মায়েরা তাদের মেয়েদের নিয়ে বাড়ি যেতে পারেন।

সব দারোয়ানরা মাঠে এসে জড়ো হয়েছে। কি করে ঢুকলো ষাঁড়? কোন গেট দিয়ে ঢুকেছে? সেই গেটে কে পাহারা দিচ্ছিল? একটা ষাঁড় ঢুকে পড়লো, অথচ সে খেয়াল করলো না!!

রঙ্গমঞ্চে নামলেন হেডমিস্ট্রেস। দারোয়ানদের বললেন,"এসব কথা পরে ভাবা যাবে। আপাতত যে-করেই হোক স্কুল থেকে ষাঁড়টাকে বের করতে হবে।"

বলা যত সহজ, করা ততই কঠিন। তার-ওপর নানা মুনির নানা মত। এমনিতে ষাঁড়টা নিরীহ, সে নিজের মনে চরে বেড়াচ্ছে। একজন তাকে লাঠি নিয়ে তাড়া করাতে সে শিং উঁচিয়ে তেড়ে এলো। লোকটা আছাড় খেয়ে পড়ে চোট পেল পায়ে। আরেকজন ভাবল দড়ির ফাঁস দিয়ে ষাঁড়টাকে ধরবে। সবার পছন্দ হলো এটা। সবাই সিনেমায় দেখেছে কাউবয়রা বুনো ঘোড়া, গরু, এমনকি বল্গাহরিণ অবধি এইভাবে ধরে ফেলে। কিন্তু সিনেমা আর বাস্তবে মেলে না। সিনেমায় অনায়াসে যেগুলো করে ফেলেন নায়করা, বাস্তবে তা করতে গেলে অনেক কসরত করতে হয়। শুধু দড়ি ছুঁড়লাম আর ধরে ফেললাম ,এত সহজ নয় ব্যাপারটা।

আরেকজন বলল ওর নিশ্চয়ই খিদে পেয়েছে। খাবার সন্ধানে ঢুকে পড়েছে। এক আঁটি ঘাস তার মুখের সামনে ধরা হলো। ষাঁড়টা ফিরেও তাকালো না। এদিকে তখন পারদ চলছে। মেয়েরা ভয় পেয়ে স্কুলময় দৌড়ে বেড়াচ্ছে। শিক্ষিকাদের অবস্থাও তথৈবচ। মেয়েরা মোবাইলে যোগাযোগ করেছে তাদের মা-বাবাদের সাথে। তারাও হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসেছেন অকুস্থলে। কাজেই স্কুল গেটের বাইরেও যথেষ্ট উত্তেজনা। উপায়ান্তর না দেখে খবর দেওয়া হলো পুলিশে। ষাঁড় পুলিশকে ডরায় না। কাজেই ইউনিফর্ম দেখে তার কোনও বিকার হলো না। পুলিশরাও বিশেষ কিছু করতে পারল না।

বন-দপ্তরে খবর দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ইতিহাস শিক্ষিকার মাথায় এক অভিনব বুদ্ধি এল। তিনি বললেন, "প্রেম হলো একমাত্র পন্থা। ষাঁড়টা ভয় পেয়েছে। সবাই তাকে হয় লাঠি দিয়ে মারছে, নয় দড়ি ছুঁড়ে ধরার চেষ্টা করছে। আবার ঘাস খেতে দিচ্ছে। ভালোবাসা দিলেই ও বুঝতে পারবে।"

ভূগোল শিক্ষিকা বললেন, "গিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারো ষাঁড়টাকে। ইতিহাসের পাতায় তাহলে তোমার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।"

এত সহজে দমবার পাত্রী নন ইতিহাস শিক্ষিকা। তিনি সন্তর্পণে পা ফেলে স্কুলের মাঠে ষাঁড়ের দিকে চললেন। ষাঁড়টা রক্তচক্ষু মেলে তাঁর দিকে তাকালো। উনি আর এগোতে সাহস পেলেন না। দৌড়ে ঢুকে পড়লেন স্কুলবাড়িতে। এমন সময় যে মেয়েটি স্কুলের ঝাড়-পৌঁছ করে, সে বলল, "ও দিদিমনিরা, এসব করে কিচ্ছুটি হবে না... ও ষাঁড়কে বশ করবার একমাত্র উপায় গরু। আর কারো কথা শোনার সে লোক নয়।"

সবাই খুব একচোট হাসলো এই কথা শুনে। অঙ্ক শিক্ষিকা বললেন, "এক ষাঁড়ে রক্ষা নেই আবার দোসর গরু। গরুর আবার অভিসার। দুজনে মিলে এখানে সংসার পাতলে আর দেখতে হবে না, স্কুলটা গোয়ালঘর হয়ে যাবে।"

কিন্তু সত্যিই তো আর কোনও উপায় পাওয়া যাচ্ছে না। কাজেই খোঁজ খোঁজ খোঁজ। সকলে গরুখোঁজা করে গরু খুঁজতে বেরোলো। কলকাতার বুকে গরু জোগাড় করা কি চাট্টিখানি কথা? শেষ-মেষ একটা গরু জোগাড় হল। ট্রাকে করে নিয়ে আসা হলো তাকে। গরুকে ছাড়া হল স্কুলের ময়দানে। সে প্রথমটা ঘাবড়ে গেলেও তারপর সামনে দেখতে পেল প্রেমাস্পদকে। লাস্যভরে গরুটা এগিয়ে গেল ষাঁড়টার দিকে। চার চোখের মিলন হলো। আর দেখে কে! হাতে হাত (থুড়ি, ক্ষুরে ক্ষুর) মিলিয়ে তারা দুজনে স্কুল থেকে বেরিয়ে গেল। স্কুলের সবাই হাঁপ ছেড়ে বাঁচল।
( সমাপ্ত )


Next Bangla Story

List of all Bengali Stories


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717