মায়াবিনী রিসোর্ট, online bangla story, bangla story competition, স্বরচিত ছোট গল্প

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

List of all Bengali Stories

◕ মায়াবিনী রিসোর্ট

লেখিকা: কাশফিয়া নাহিয়ান, ধানমন্ডি, ঢাকা, বাংলাদেশ

##
মায়াবিনী রিসোর্ট

লেখিকা: কাশফিয়া নাহিয়ান, ধানমন্ডি, ঢাকা, বাংলাদেশ

সমুদ্র উপভোগ করতে এসে যে এমন বড় বিপদে পড়বো তা ভাবতেই পারিনি। আজকে কার মুখ দেখে যে সকালে উঠেছিলাম!!
কথাগুলো নিজের সাথে বলতে বলতে রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছিল রেহান। হাতে একটা বড় ব্যাগ।

রেহান মাহমুদ, এ সময়ের জনপ্রিয় লেখক। যদিও এ মুহূর্তে লেখালেখিতে একদম মনোনিবেশ করতে পারছে না, তাই সমুদ্রের কাছে আসা; একটু নিজেকে খুঁজে পাওয়া। কে জানে হয়তো লেখালেখির কোনো কিছু পেলেও পেতে পারে। কিন্তু সবই নিয়তি? হোটেলে শর্টসার্কিট হয়েছে, তাই হোটেলে থাকা নিরাপদ নয়। এখন কি হবে? আশেপাশে তো থাকার মত কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না রেহান। হঠাৎ দেখলো কিছু একটা দেখা যাচ্ছে... সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলো লেখা "মায়াবিনী রিসোর্ট"। চারিদিকে নীলাভ আলো ছড়িয়ে পড়েছে, কি সুন্দর লাগছে চারপাশটা!! মুগ্ধ হয়ে গেলো রেহান। এখানে যে এরকম একটা রিসোর্ট আছে সে তো জানতোই না।

— হ্যালো হাউ কেন আই হেল্প ইউ?

— জী... এখানে কি কয়েকদিন স্টে করা যাবে?

— জী, অবশ্যই।

রেহান খেয়াল করলো রিসেপশনিস্ট হেসে হেসে কথা বলছে ঠিকই, কিন্তু কেমন যেন প্রাণহীন। মনে হচ্ছে চোখটা জীবন্ত না। রিসোর্টের ভেতরটা ভয়াবহ সুন্দর, আশেপাশে মানুষও আছে, কিন্তু কেমন যেন যান্ত্রিক। হতে পারে তার মনের ভুল ...

রুমে ঢুকেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো রেহান। অনেক ক্লান্ত সে। একটু পরেই কে যেন দরজায় টোকা দিলো -

— কে?

— রুম সার্ভিস...

দরজা খুলে দেখলো একটা হালকা পাতলা যুবক দাঁড়িয়ে আছে।

— স্যার এই যে আপনার খাবার।

— আমি তো কিছু অর্ডার করিনি!!

— এটা আমাদের রিসোর্টের তরফ থেকে কাষ্টমার ফাস্ট কমপ্লিমেনটারি ট্রিট।

— ও আচ্ছা! এই নাও তোমার টিপস ...

— স্যার লাগবে না।

— কেন?আমি তো খুশী হয়ে দিচ্ছি।

— লাগবে না স্যার, আমার যা দরকার এমনিই পেয়ে যাই।

ওয়েটারের এমন রহস্যময়তা বুঝতে পারলো না রেহান। খাবার খেয়ে সে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে টেরও পায়নি। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো তার। কি ব্যাপার এত অন্ধকার কেন? আর সে নিঃশ্বাস কেন নিতে পারছে না? মনে হচ্ছে কিছু একটাতে আটকে আছে সে, কিন্তু কি?

অনেকক্ষণ নড়াচড়া করার পর কিছু একটা খুলে গেলো। রেহান বের হয়ে পড়লো। আবছা আলোয় দেখলো একটা কফিন। তার মানে এতক্ষণ কফিনের মধ্যে ছিলো রেহান!! চারপাশে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো সে। কোথায় রিসোর্ট? কোথায় তার রুম? এ তো শ্মশান!! ভয়ে জমে গেলো রেহানের পা। সে দেখলো শত শত কফিন সারি সারি ভাবে সাজানো।

— আমাদের জগতে আপনাকে স্বাগতম...

রেহান দেখলো রিসেপশনিস্টের মুখটা পোড়া, কি বীভৎস দেখতে ...

— আ..মি কো..থা..য়? আপনারা কারা? এখানে তো রি..সোর্ট ছি..লো?

— আপনি ঠিক জায়গায় আছেন। আজ থেকে আপনিও আমাদের দলে যোগ দিলেন।

রেহান চিৎকার করতে লাগলো।

— ছেড়ে দাও আমাকে...ছেড়ে দাও...

— এখান থেকে যাওয়ার কোনো পথ নেই।

ওয়েটারের পৈশাচিক হাসি দেখে গা গুলিয়ে গেলো রেহানের।

— আমাকে যেতে দাও... প্লিজ ...

রেহান মাহমুদের আর কোনো লেখা পাঠকের কাছে পৌঁছায়নি। যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে সে। কেউ জানে না রেহান মাহমুদের কোনো খবর। এখনও পূর্ণিমা রাতে এবং অমাবস্যায় জেগে ওঠে মায়াবিনী রিসোর্ট। খুঁজতে থাকে তার নতুন শিকার ...
( সমাপ্ত )

মায়াবিনী রিসোর্ট

Online bangla Story