Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

পিশাচতন্ত্র- পর্ব ৩

বাংলা গল্প

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



All Bengali Stories    158    159    160    161    (162)    

পিশাচতন্ত্র - পর্ব ৩
লেখক - অনিন্দ্য রক্ষিত, নোনাচন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর,উত্তর চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ
( জানুয়ারি, ২০২২-এর একটি নির্বাচিত গল্প)


## পিশাচতন্ত্র - পর্ব ৩

#
সেদিন বিকেলে কাচড়াপাড়া থেকে তারিণীচরণ ব্যানার্জী এলেন; সোমাদের পারিবারিক পুরোহিত; তন্ত্রসিদ্ধ। ঘরে ঢুকেই দু'বার নাক টেনে হাওয়া শুঁকে বললেন – হুম্... মরা পোড়ার গন্ধের সাথে পচা মাংসের গন্ধ পাচ্ছি ... তোমরা পাচ্ছ না? এ-বাড়িতে পিশাচ আছে। তাড়াতে হবে। ভয় পেয়ো না, আমি ব্যবস্থা করছি।

যজ্ঞের আয়োজন করলেন তারিণী-কাকা। তখন সন্ধ্যে হয়ে এসেছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা যজ্ঞ চলল, সঙ্গে মন্ত্রপাঠ। যজ্ঞের ধোঁয়ায় আমার শরীরটা কেমন আনচান করতে লাগল। ওখানে আর বসে থাকতে না পেরে বারান্দায় এসে বসলাম। যজ্ঞ শেষ করে তারিণী-কাকা বললেন – আর ভয় নেই। পিশাচ বিদায় হয়েছে। সোমা বলল – এরকম কেন হল কাকা? আমাদের ঘরে পিশাচ ঢুকল কেন?

তারিণী-কাকা বললেন – তোমরা বলছ সাধুটা পিশাচকে ভোগ দেওয়ার কথা বলেছিল। তার মানে, ও ছিল পিশাচ-তান্ত্রিক। তান্ত্রিকদের মধ্যে একমাত্র ওরাই পিশাচকে ভোগ চড়ায়। পিশাচতন্ত্রের নাম শুনেছ? তন্ত্রসাধনার বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে সবথেকে গুহ্য আর ভয়ঙ্কর সাধনা। আমার গুরুদেবের কাছে শুনেছি, পুরাকালে মণি আর মল্ল নামে দুই ভাই ছিল। তারা অশুভ শক্তির সাধনা করত। তারাই নাকি অঘোরী পন্থার প্রবর্তক। তাদেরই এক শিষ্য ডম্বরু, সর্বপ্রথম এই পিশাচতন্ত্রের সাধনা শুরু করেছিল। এই সাধনায় সিদ্ধিলাভ করতে হলে, পিশাচকে তুষ্ট করার জন্যে একান্নটা অমাবস্যায় একান্নটা নরবলি দিতে হয়। তোমরা নিশ্চই পিশাচসিদ্ধ তান্ত্রিকদের কথা জানো – তারণী-কাকা বলতে থাকলেন – যারা পিশাচকে বশ করে তাদের দিয়ে নানারকম কাজ করিয়ে নেয়। কিন্তু পিশাচতান্ত্রিকের ব্যাপারটা অন্যরকম। এই সাধনায় সিদ্ধ হলে সাধক নিজেই পিশাচ হয়ে যায়। সাধকের আরাধ্য পিশাচ, তার শরীরকে আশ্রয় করে। তখন পিশাচ-শক্তির বলে সাধক হয়ে ওঠে মারাত্মক শক্তিধর। অঘোরী তান্ত্রিকদের মধ্যে কেউ-কেউ পিশাচ-তান্ত্রিক হয়। এই শ্রেণীর তান্ত্রিকরা খুব ভয়ঙ্কর হয়। এরা যেকোনো প্রাণীর কাঁচা মাংস খায়। আমার গুরুদেবের মুখে শুনেছি, পিশাচ-তান্ত্রিক কারোর ওপরে বিরূপ হলে, তার শরীরে অন্য পিশাচকে প্রবেশ করিয়ে দেয়। সেই পিশাচগ্রস্ত মানুষটা তখন আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই সংসারে থাকে কিন্তু সবার চোখের আড়ালে ভয়ঙ্কর সব কাজ করে বেড়ায়। সে তখন যে কোনও প্রাণীকে, এমনকি, মানুষকেও মেরে তার কাঁচা মাংস খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আমার গুরুদেবের মুখে এ কথাও শুনেছি, এই পিশাচরা যখন যাকে তাদের শিকার হিসেবে বেছে নেয়, তখন শুধু সেই মানুষ বা প্রাণীটাই তাকে দেখতে পায়, আর কেউ পায় না। মোহিত বাবাজি, তুমি ঐ তান্ত্রিককে লাথি মেরে আর ওর ওপরে কুকুর লেলিয়ে দিয়ে মোটেই ভালো কাজ কর নি – এবারে আমার দিকে চেয়ে বললেন তারিণী-কাকা – কিছু মনে কোরো না বাবাজি, আমি তোমার বয়োঃজ্যেষ্ঠ হিসেবে বলছি, এমন চণ্ডাল রাগ কিন্তু ভালো নয়। ভেবে দেখ, শুধু ঐ তান্ত্রিককে কেন, কোনও মানুষকেই লাথি মারা বা তার ওপরে কুকুর লেলিয়ে দেওয়াটা কি উচিৎ কাজ?

আমি চুপ করে থেকে তারিণী-কাকার দিকে চেয়ে রইলাম। সোমা তারিণী-কাকাকে বলল – ওকে একটু বোঝান তো কাকা; মাথা গরম করে কী যে সব কাজ করে বসে...

দিশা কিন্তু আমার হয়ে মুখ খুলল। বলল – দাদু, এ-কথা ঠিক যে আমার বাবা একটু রগচটা স্বভাবের মানুষ। কিন্তু বাবা এসব কিছুই করত না যদি লোকটা বাবাকে বিশ্রী গালাগাল না দিত। আর তাছাড়া, বাবাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতে চাইছিল ও। এটা তো এক ধরণের লুঠপাট।

তারিণী-কাকা হেসে উঠে বললেন – দিদিভাই, লুঠপাট তো রোজই হচ্ছে। কতজন কতরকমভাবে রোজ আমাদের লুটেপুটে নিচ্ছে। কেউ ফকির সেজে লুঠছে, তো, কেউ ব্যাপারী সেজে। ক'জনের ওপরে কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা আছে তোর বাবার? ক'জনকেই বা লাথি কষাতে পারছে? আসলে, আমরা সকলেই এগুলোকে চুপচাপ মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি, তাই না? যাগ্গে, এ সব কথা বলতে গেলে আবার অন্য প্রসঙ্গ চলে আসবে। বাদ দে ও সব... তারপর কাকা আমাকে বললেন – বাবাজি, শুনলাম তান্ত্রিকটা নাকি তোমাকে শাসিয়ে গেছিল। সেক্ষেত্রে, তোমাকে এখন খুব সাবধানে থাকতে হবে। যাই হোক, আমি সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এবার বাড়ির চারপাশে মন্ত্র-বন্ধন করে দিচ্ছি। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

সব ক্রিয়াকর্ম সেরে, চা-মিষ্টি খেয়ে তারিণী-কাকা যখন উঠলেন তখন রাত ন'টা বেজে গেছে। আমি একটা রিকশা ডেকে আনলাম। বললাম – চলুন, আপনাকে স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে আসি।

তারিণী-কাকা বললেন – তার কোনও দরকার নেই বাবাজি। তুমি আবার এত রাতে কষ্ট করে এত দূরে যাওয়া-আসা করবে কেন? আমি একাই চলে যাব, কোনও অসুবিধে হবে না।

সোমা বলল – না কাকা, ও আপনার সঙ্গে যাক, ট্রেনে তুলে দিয়ে আসুক। আপনার বয়স হয়েছে। সঙ্গে এত জিনিসপত্র আছে। একজন সঙ্গে যাওয়া ভালো। ওর কোনও কষ্ট হবে না।

তারিণী-কাকা আর আপত্তি করলেন না। তারিণী-কাকাকে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরলাম। সোমা দরজা খুলে বাগানের গেটের দিকে চেয়ে ভয়ে শিউরে উঠল। ওর কাঁপতে থাকা হাতটা তুলে বাগানের দিকে দেখাল। সেদিকে চেয়ে দেখি গেটের পাশের টগরফুলের গাছটাতে একটাও পাতা বা ফুল নেই! সোমা কোনোরকমে বলে উঠল – তোমরা যাওয়ার সময়ও তো গাছটা ফুলে ভরা ছিল দেখেছি!

বাগানের দিকের আলোগুলো জ্বেলে ভালো করে দেখলাম, পুরো গাছটা পুড়ে কালো হয়ে গেছে। ঠিক যেন গাছটার নিচে চিতা জ্বালানো হয়েছিল। সরু ডালগুলো আগুনের তাপে কুঁকড়ে গেছে। গাছটার নিচে ঘাসের ওপরে একগাদা পোড়া ফুল আর পাতা পড়ে আছে, কিন্তু ঘাসগুলো সবুজই আছে। আগুন জ্বালানোর কোন চিহ্নই সেখানে নেই। সোমার চোখ-মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যেতে লাগল। আমার ভয় হল, ও আবার অজ্ঞান না হয়ে যায়। তাড়াতাড়ি বারান্দায় গিয়ে ওকে ধরলাম।

রাত বারোটা নাগাদ সোমার ফোনটা বেজে উঠল। ও ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাচ্ছিল। আমি ফোনটা ধরলাম। তারিণী-কাকার বাড়ি থেকে ওনার বড় ছেলে বলল – বাবা বিকেলে আপনাদের বাড়িতে গেছিলেন, কিন্তু এখনও ফেরেন নি। আমরা খুবই চিন্তায় পড়ে গেছি।

আমি বললাম – কিন্তু আমি নিজে ন'টা তেতাল্লিশের আপ রানাঘাট লোক্যালে কাকাকে তুলে দিয়ে এসেছি। টিকেটও কেটে দিয়েছিলাম। তোমরা বরং স্টেশনে খোঁজ-খবর নাও।

#
হরি ঘরে ঢুকল। হাতে ডিনারের ট্রে। রুটির থালা, চিকেন কষার বাটি আর স্যালাডের প্লেট টেবিলের ওপরে রাখল। সায়ন মোহিতবাবুকে বলল – আপনি ডিনার নেবেন না?

মোহিতবাবু বললেন – না, আমার খাবার রাখা আছে, সেটাই খাব।

হরি অবাক চোখে একবার সায়নের দিকে আর একবার ওর সামনে রাখা খালি চেয়ারটার দিকে চাইল। তারপর সায়নের সামনে রাখা মদের সরঞ্জামের দিকে দেখল। কতরকমের মাতাল আর পাগল যে আসে এখানে!! সায়নকে বলল – খাবারগুলো গোরোম থাকতে থাকতে খেয়ে নিন স্যার। আমি চোলে যাচ্ছি। বাসোনপত্র কাল সোকালে এসে নিয়ে যাব। এই বাড়ির পিছের কাটেজে আমরা থাকি। রাতে দোরকার হলে ডাকবেন।

সায়ন মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল। হরি চলে যাবার পর আবার বলতে শুরু করলেন মোহিতবাবু – পরের দিন সকালে বারান্দায় বসেছি, খবরের কাগজ দিতে এসে বিমল আমাকে বলল – কাকু, সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার! রেললাইনের ধারে একটা বডি পড়ে আছে! গলার নলি-টা ছেঁড়া! দেখে মনে হচ্ছে বডির অনেকটা কোনও বুনো জানোয়ার খেয়ে নিয়েছে! কিন্তু বুনো জানোয়ার এখানে কোত্থেকে আসবে? লোকটাকে দেখে পুরোহিত বলে মনে হল। বডিটার পাশে নামাবলী আর পুজোর জিনিসপত্র ছড়িয়ে রয়েছে। জি আর পি এসেছে। বডিটা কার, এখনও জানা যায় নি। তবে এই এলাকার লোক নয়।

#
– আমার খুব খিদে পেয়ে গেছে। আমি খেয়ে নিচ্ছি – বিছানা ছেড়ে টেবিলে রাখা ডিনারে মন দিল সায়ন। নিস্তব্ধ রাত। ঝিঁঝিঁর ডানার আওয়াজও বন্ধ হয়ে গেছে। মাঝে-মাঝে, রাতচরা কোনও পাখির ডাক ভেসে আসছে। রুটি ছিঁড়ে, চিকেন-কষার গ্রেভি মাখিয়ে মুখে পুরল। স্যালাডের শসা মুখে দিল।

মোহিতবাবু বললেন – হ্যাঁ, হ্যাঁ; আপনি খেতে শুরু করুন। আমারও খাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। আপনাকে আর বেশিক্ষণ বিরক্ত করব না। তারপর, এক-এক করে আমার জীবন থেকে সবাই চলে যেতে লাগল ... মিলি, সোমা, দিশা, তাতাই ... সবাই ... কেবল আমি আজও অভিশপ্ত জীবন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি ... খিদে... প্রচণ্ড খিদে আমার, জানেন?... এত খেলাম, তবু খিদে যায় না...

এই নির্জন বাড়ি আর অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে লোকটা কি ওকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে নাকি? মনে-মনে হাসল সায়ন। এক টুকরো চিকেন মুখে দিয়ে চিবাতে -চিবাতে বলল – উম্... দারুণ ভালো রেঁধেছে!

সায়নকে খাওয়ায় মনোযোগী হয়ে উঠতে দেখে মোহিতবাবু বললেন – এতক্ষণ আমি যা বললাম, আপনার বোধ হয় বিশ্বাস হল না, তাই না?

সায়ন ওনার প্রশ্নের কোনও জবাব দিল না। একমনে খাবার চিবাতে লাগল। আসলে একটানা বাজে গপ্পো শুনত- শুনতে ও বোর হয়ে গেছিল। হুইস্কির নেশাটাও জমে উঠেছিল। ও এখন একা থাকতে চাইছিল। কিছুক্ষণ গান শুনতে চাইছিল। কিন্তু চক্ষুলজ্জার খাতিরে ভদ্রলোককে চলে যেতেও বলতে পারছিল না। মোহিতবাবু যেন সায়নের মনোভাব বুঝতে পেরেই আবার বললেন – আমার কথাগুলো আপনার বিশ্বাস হল না, তাই না?

সায়ন মোহিত-বাবুর দিকে না তাকিয়ে রুটি ছিঁড়তে-ছিঁড়তে এবারে একটু কড়া সুরেই বলল – না!! আমি এসব বোগাস গপ্পে বিশ্বাস করি না। রাত হয়েছে। আমার মনে হয় আপনার এবার নিজের ঘরে যাওয়া উচিৎ। আমিও খেয়ে ঘুমোতে যাব।

– এ-বা-রে-এ – দে-এ-খু-উ-ন – তো-ও ... বি-শ্বা-আ-স – হ-য় – কি – না-আ... – রেকর্ড করা ভয়েস-এর নর্মাল স্পিড কমিয়ে দিলে শুনতে যেমন লাগে, তেমনই বিকৃত আওয়াজে মোহিত-বাবুর কথাগুলো ভেসে এল। সায়ন চমকে উঠে খাওয়া থামিয়ে মোহিত-বাবুর দিকে চাইল। লণ্ঠনের আলোতে দেখল, কালো পশমের চাদর জড়ানো ধূসর রঙের ঘন ধোঁয়ায় তৈরি একটা মূর্তি ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখের কোটর-দুটোতে যেন আদ্যিকালের অন্ধকার জমাট বেঁধে আছে। কিন্তু সেই অন্ধকারের ভেতর থেকেই সে সায়নকে দেখছে ... মুখের হাঁ-টা অস্বাভাবিক রকমের বড় আর, সেই হাঁ-এর ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে সুচের মতো অসংখ্য দাঁত...

– আ-মা-র – খা-ও-য়া-র – স-ম-য় – হ-য়ে-ছে-এ... – কথা ভেসে এল সেই ধোঁয়া-মূর্তিটার মুখ থেকে।

সকালের চা নিয়ে এসে হরি দেখল সায়নের ঘরের দরজা খোলা। ঘরে ঢুকে দেখল টেবিলে পড়ে থাকা আধ-খাওয়া ডিনার আর মাটিতে পড়ে থাকা, গলার নলি ছেঁড়া সায়নের আধ-খাওয়া দেহ।
( সমাপ্ত )


All Bengali Stories    158    159    160    161    (162)    


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717