Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

মাথা গোঁজার ছাদ

( 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার'- ২০২২-এর বিজয়ী গল্প)

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৪' স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ( প্রতি বছর মে মাসে ) Result
--------------------------



All Bengali Stories    165    166    167    (168)     169   

মাথা গোঁজার ছাদ
Writer - রাজকুমার মাহাতো, সম্পামির্জানগর, মহেশতলা, কলকাতা
( 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার'- ২০২২-এর বিজয়ী গল্প)


## মাথা গোঁজার ছাদ
Writer - রাজকুমার মাহাতো, সম্পামির্জানগর, মহেশতলা, কলকাতা

#1
কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমার দিন শুরু হত অপর্ণার মুখ দেখে, কারণ আমি ঘুম থেকে উঠে গেলেও মহারানী তখনও গভীর নিদ্রায় মগ্ন থাকত। আসলে জানালার কাঁচ ভেদ করে যখন সকালের নরম রোদ ওর মুখের উপর পড়তো, ওর ওই উজ্জ্বল মুখটা দেখতে বড্ড ভালোলাগত আমার। তারপর নতুন একটা দিনের শুরু হতো ওর সামনে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ রেখে। ও উঠে আড়মোড়া ভেঙে অগোছালো চুলগুলো গোছাতে-গোছাতে প্রথম প্রশ্ন করত, "আজ কোথায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে?"

হাসিমুখে ওর দিকে তাকিয়ে কখনও বলতাম 'কলেজ-স্ট্রিট', আবার কখনও 'বনগাঁ'। একূল থেকে ওকূল ঘুরে-ঘুরে লেখকদের জোগাড় করাই মূল লক্ষ্য আমার প্রকাশনা হাউসের। কলেজ-স্ট্রিটে সাত বছর মাটি কামড়ে পরে থেকে আপাতত দুই বছর হল একটা প্রকাশনী খুলে বসেছি, নাম-ডাকও বেশ হয়েছে এই দুই বছরে। উঠতিদের কলম খুঁজে নিতে আমার বেশ ভালো লাগে, তবে পুরানোদেরও ভুলে যাই নি। পুরানোদের মনে রেখেই নতুনদের স্বাগত জানানোটাই আমার প্রকাশনীর মূল মন্ত্র। আর এই কাজে আমাকে সবথেকে বেশি সাহায্য করেছে এবং সাপোর্ট করেছে আমার বউ অপর্ণা। আসলে ওকে ছাড়া আমি কিছুই নই; অপর্ণাকে ছাড়া এই যিশু'র কোন অস্তিত্ব নেই।

যাই হোক, যে কথা বলতে গিয়ে কর্ড লাইনে চলে গেছিলাম; গত একমাস হল আমার দিন অপর্ণার মুখ দেখে শুরু হয় না। তার সেই রৌদ্রজ্জ্বল মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছি, কারণটা হল 'আকাশ'। আমার সেই ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ, অপর্ণার ঘুমঘুম চোখে তাকানো আর তার সেই মৃদু স্বরে বলা 'আজ কোথায় যাওয়ার ইচ্ছে?' সব থেকেই বহিষ্কৃত করেছে আমাকে; অপর্ণা।

এখন ভোর পাঁচটা থেকে সাতটা 'আকাশ' ওর ছায়া হয়ে থাকে। সকালে এসেই তার প্রথম ফরমায়েশ, "দাও তো একটু দুধ!" দুধে কর্নফ্লেক্স দিয়ে অপর্ণা ওর সামনে এনে দেয়। বাবু তখন সোফায় হেলান দিয়ে বসে এদিক-ওদিক তাকায়। দুধটা নিয়ে ওর পাশে বসে অপর্ণা। আকাশের তখন দ্বিতীয় প্রশ্ন, "কোন গরুর দুধ এটা? রমার মায়ের, না কি ওই বিষ্ণু গোয়ালার?"

অপর্ণা হেসে উত্তর দেয়, "রমার মায়ের..."

চামচে করে দুধে ডোবানো কর্নফ্লেক্স খেতে-খেতে বাবুর তৃতীয় প্রশ্ন, "আচ্ছা, একটা কথা বলতো। আমার নাম আকাশ কেন?"

অপর্ণা হেসে উত্তর দেয়, "তোমার নীচে সবাই ঠাঁই পাবো... দাদু, মা-বাবা সবাইকে এক ছাদের নিচে রাখতে হবে তোমায়। তুমি যে তাদের মাথা গোঁজার ছাদ আকাশ।"

আকাশ চুপ করে শোনে আর তারপর পঞ্চম, ষষ্ট, সপ্তম প্রশ্নের দিকে এগিয়ে যায়। এইভাবেই সপ্তাহের অন্তত: চারটে দিন চলে আমাদের। আমি ঘুম থেকে উঠে ডাইনিং এর কোনের দেওয়ালে হেলান দিয়ে সব দেখি। অপর্ণা তখন একবার করে আমার দিকে দেখে আর হাসে। দু'একবার আকাশের কথায় ওর চোখ ছলছল করে উঠতেও দেখেছি।

#২
সাত বছর বিয়ে হয়েছে আমাদের কিন্তু ভগবান আমাদের এখনও নিঃসন্তান করেই রেখেছেন। তার জন্য অপর্ণাকে অনেক গঞ্জনাও সহ্য করতে হয়েছে একসময়। তাই আমতলার বাড়ি ছেড়ে গত দু-মাস হল কলকাতায় বালিগঞ্জে একটা ফ্লাট নিয়েছি। যদিও গত কয়েক বছর এই বইপাড়াতে আসার সুবাদে আমার এখানে আসা-যাওয়া লেগেই থাকত। আর এখানেই গত একমাস আগে নীচের ফ্লাটের আকাশ বাবুর সাথে আমাদের পরিচয়। হঠাৎ করেই একদিন দুপুরে দেখি আমাদের সোফায় একজন পাঁচ-ছয় বছরের বাচ্চা বসে আছে আর এদিক-ওদিক দেখছে। অপর্ণা আর আমি ওকে আগেই দেখেছিলাম নীচের ফ্লাটে। তাই চিনতে অসুবিধা হয়নি। অপর্ণা সোফার কাছে গিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আকাশ বাবুর উত্তর এলো, "মা-বাবা ঝগড়া করছে। মা বলছে, বাবা তার জীবন নষ্ট করেছে; আর বাবা বলছে, মা তার জীবন নষ্ট করেছে। ওরা হয়ত ডিসাইড করতে পারছে না, আমি হেল্প করতে গেলাম, আমাকে তাড়িয়ে দিল। তাই আমি তোমাদের কাছে চলে এলাম। এবার একটু কার্টুন দেখাও তো..."

ওকে টিভিতে কাটুন চালিয়ে দিয়ে আমি আর অপর্ণা সিঁড়ি দিয়ে উঁকি মেরে দেখলাম বাইরে অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে আছে ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ। আর ভেতরে তুমুল ঝগড়া চলছে। অপর্ণা আমাকে খুব ধীরে বলল, "ওঁকে ডেকে নাও। আমাদের ঘরে না হয় বসুক।"

আমি মিনিট দুই ভেবে বললাম, "তা কি ঠিক হবে? ওঁদের নিজেদের ঘরের ব্যাপার..."

অপর্ণা আর আমাকে কিছু বলেনি। আমরা আবার উপরে চলে এসেছিলাম। সেই থেকে প্রায় প্রতিদিন ভোরে উঠে চলে আসত আকাশ আমাদের ফ্লাটে। সকাল আটটায় আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে ওঠা মেয়েটা এখন ভোর পৌনে পাঁচটা থেকে দরজা খুলে অপেক্ষা করত আকাশের। বুঝেছিলাম, আকাশের ওই পাকা-পাকা কথার মাঝের ছোট্ট নিষ্পাপ মনটাকে ভালোবেসে ফেলেছে অপর্ণা আর শুধু ওই কেন, আমিও। একসময় কেবল সকালের প্রথম রোদ অপর্ণার মুখে পড়ত, আর এখন পুরো আকাশটাই অপর্ণার ঝুলিতে দিয়ে দিয়েছেন ঈশ্বর।

প্রায় রাতে শুয়ে অপর্ণা ভেজা চোখে আমাকে প্রশ্ন করত, "আচ্ছা যিশু, আকাশ যদি আমাদের ছেলে হত?"

আমার কাছে কোনও উত্তর থাকত না। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠত অপর্ণা, বুকে টেনে জড়িয়ে ধরতাম তাকে। আসলে আমাদের দুজনের দুঃখ একই। তাই আমরা বুঝি, আমাদের দুজন-দুজনকে ছাড়া কোনও গতি নেই।

সেদিন আকাশের মা এসেছিল আমাদের ফ্লাটে। অনেকক্ষণ অপর্ণার সাথে গল্প করে গেছে। কথায়-কথায় অপর্ণা জিজ্ঞেস করেছিল তাদের স্বামী-স্ত্রীর এত ঝগড়ার কারণ। চোখে জল নিয়ে তিনি বলেছেন, মিঃ সামন্তের নাকি অন্য কোথাও অ্যাফেয়ার আছে। তিনি শুধু আকাশ আর ওই বুড়োটার মুখ দেখে এই বাড়িতে পরে আছেন। একেবারে সহ্য হয় না তার নিজের স্বামীকে ইত্যাদি ইত্যাদি। অপর্ণা বুঝিয়েছিল সন্তানের সামনে তাদের এই ঝগড়া আকাশের মাথায় খুব খারাপ এফেক্ট করতে পারে। ঐ মহিলা কতটা বুঝেছিলেন ঠিক জানি না, তবে ঝগড়ার আওয়াজ খুব কম আসত তারপর থেকে। ভেজা চোখে কথাগুলো বলেছিল অপর্ণা আমাকে। তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম আমি, তার সেই ভেজা চোখে অনেক জিজ্ঞাসা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম। হাতদুটো ধরে বললাম, "চিন্তা করো না অপর্ণা। তোমাকে ছাড়া কোনদিন কোনও অপর মহিলাকে ভাবতেও পারি না আমি..."

অপর্ণা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। ওর চোখের কোন বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। বিশ্বাসটা স্পষ্ট দেখছিলাম আটকে আছে ওর চোখে, পাশ থেকে অবিশ্বাসগুলো ঝড়ে পরছে।

#৩
দিনটা ছিল বুধবার। সাধারণত বুধবার সকালে আকাশ আসে না। সেদিনটা সকাল সাতটায় ওর স্কুল থাকে। পিটি ক্লাসের দিন একটু তাড়াতাড়ি শুরু হয় স্কুল। তাই অপর্ণার সেই রৌদ্রজ্জ্বল মুখটা দেখার সুযোগ হল আমার। এই গরমের সময় সূর্য্যি মামা একটু তাড়াতাড়িই আমাদের দর্শন দিয়ে দেন। ঘড়িতে দেখলাম পৌনে ছটা। এখন অবশ্য আর আটটা বাজে না অপর্ণার ঘুম ভাঙতে। প্রতিদিন ছ'টা নাগাদ উঠে যায় সে। তাই আমাকে আরও তাড়াতাড়ি উঠতে হয়। ফ্লাটের ব্যলকনি দিয়ে আকাশকে স্কুলে যেতে দেখতেই তার এই সকালে ওঠা। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে ডাক দিলাম, "অপর্ণা, ওঠো..."

আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে এলোমেলো চুলগুলো এক জায়গায় গুছিয়ে নিয়ে সে প্রশ্ন করল, "আজ কোথায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে?" সবে উত্তরটা দিতে যাবে দরজায় জোড়ে-জোড়ে করাঘাত শুনতে পেলাম। একপ্রকার বিরক্তই হলাম। অপর্ণার দিকে তাকিয়ে বললাম, "এত সকালে কে? কলিং বেল থাকতে দরজায় ধাক্কা মারছে কেন?"

জানিনা কি হল, অপর্ণা কেমন একটা জিজ্ঞাস্য মুখে আমার দিকে একবার তাকিয়ে হন্তদন্ত হয়ে খাট থেকে নেমে একপ্রকার দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলল। আমিও গেলাম পেছনে। সামনে দাঁড়িয়ে আকাশ, মুখটা একেবারে ফ্যাকাসে। আকাশকে দেখে একটু অবাক হলাম। অপর্ণার পাশ কাটিয়ে দ্রুত সোফায় এসে বসল সে। অপর্ণা তার পাশে এসে জিজ্ঞেস করল, "আজ স্কুলে যাওনি?"

আকাশ অপর্ণার মুখের দিকে তাকাল, ওর চোখদুটো কেমন যেন আতঙ্কে আছে। ছোট্ট-ছোট্ট গোল চোখদুটোতে কে বা কারা যেন একরাশ হতাশা এনে ঢেলে দিয়েছে। অপর্ণা ওকে কাছে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, "কি হয়েছে আকাশ?"

আমি এগিয়ে গেলাম ওদের কাছে। অপর্ণাকে দু'হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল আকাশ। তারপর মৃদু স্বরে বলল, " মা ঝুলছে। বাবা কাঁদছে।"

বুকটা কেঁপে উঠল আমার। অপর্ণা আমার দিকে তাকাল। হঠাৎ করেই ঘরের বাতাসটা কেমন ভারি হয়ে এল। একগুচ্ছ আতঙ্ক এসে ঘিরে ধরল আমাদের। আকাশকে আরও কষে জড়িয়ে ধরল অপর্ণা। একদৌড়ে নিচে গেলাম। ওদের ফ্লাটের দরজা খেলাই ছিল। ডাইনিং এ বসে আছেন বৃদ্ধা। ভিজে চোখে আমার দিকে একবার তাকালেন। তারপর মাথাটা নিচু করে বললেন, "কাল রাতে ওদের দুজনের খুব ঝামেলা শুরু হয়। তাই আমি আকাশকে আমার ঘরে নিয়ে আসি। আর আজ সকালে..."

আর কিছু বলতে পারলেন না তিনি। আমি দৌড়ে গেলাম ভিতরের ঘরে। ঘরের দরজা খোলা ছিল। ভেতরে ঢুকে যা দেখলাম তাতে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো। মেঝেতে মাথায় হাত দিয়ে বসে মিঃ সামন্ত আর সিলিং ফ্যানের থেকে একটা শাড়ির সাহায্যে ঝুলছে মিসেস সামন্ত।

#
কিছুক্ষণ আগে পুলিশ এসে মিসেস সামন্তের দেহটা নামিয়ে নিয়ে গেছে পোস্টমর্টেম এর জন্য। মিঃ সামন্তকে এরেস্ট করা হয়েছে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অপরাধে। তিনি স্বীকার করেছেন নিজের পরকীয়ার কথা।

আকাশ অপর্ণার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে। একটু আগে ভাত আর ডাল-সেদ্ধ খাইয়ে দিয়েছে অপর্ণা ওকে। আজ আর কোনও প্রশ্ন করেনি আকাশ। তার মনে আজ উথাল-পাথাল। কিছুক্ষণ পরে অথবা আগামীকাল ওকে যেতে হবে শ্মশানে। মায়ের মুখাগ্নি করবে পাঁচ বছরের ছেলেটা। মা বাবার এই ভুলের খেসারত ওকে দিতে হবে সারাজীবন। অপর্ণার মুখের দিকে তাকাল আকাশ। অপর্ণা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। চোখ থেকে অনবরত জল পড়ছে অপর্ণার। আমি পাশে দাঁড়িয়ে সব দেখছি। একরাশ চাপা কষ্ট আজ আকাশের বুকে। ছোট্ট ওই বুকটা আসলেই জানে না সে কি হারাল। অপর্ণাকে প্রশ্ন করল আকাশ, " তুমি বলেছিলে আমি সবাইকে ধরে রাখব...ওরা বাবা-মাকে নিয়ে চলে গেল কেন?"

ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল অপর্ণা। আমার গলায় কান্নাটা দলা পাকিয়ে উঠল, ঢোঁক গিলে তাকে বেরোনোর অনুমতি দিলাম না। এগিয়ে গিয়ে অপর্ণার একটা হাত ধরলাম, আকাশ আমার দিকে তাকাল। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম, "তোমাকে এখন অন্যের আকাশ হতে হবে বাবু। তুমি তো কোনও একজনের নও, তুমি সবার। সবার আকাশ তুমি..."

অপর্ণা আমার মুখের দিকে তাকাল, আমি ওর চোখের দিকে। আজ থেকে এই আকাশ আমাদের, আমার আর অপর্ণার মাথা গোঁজার ছাদ।
( সমাপ্ত )


Next Bangla Story

All Bengali Stories    165    166    167     (168)     169   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717