This article is regarding the History of Tripura.
Last updated on: 26th November 2018.
◕ ত্রিপুরার ইতিহাসের এক কঠিন সময়
ত্রিপুরার ইতিহাস
( পর্ব ৯)
◕ Bengali Story writing competition. More..
১২৫৯ ত্রিপুরাব্দের ২ রা বৈশাখ ( ১৮৪৯ খ্রীঃ) ত্রিপুরার ইতিহাসের এক বিশেষ দিন। কাল বৈশাখীর বজ্রাঘাতে মারা যান রাজা কৃষ্ণকিশোর মাণিক্য। মহারাজ তার মৃত্যুকালে ৯টি পুত্র ও ১৫টি কন্যা ছাড়াও প্রচুর পত্নী ও উপপত্নী
দিয়ে রাজ অন্তঃপুর ভরে রেখেছিলেন। উনার পত্নী আর উপ-পত্নীর কোনও অভাব ছিল না।
ঐ সময় ত্রিপুরার আর্থিক অবস্থা ছিল খুব সঙ্গিন। কমপক্ষে তৎকালীন প্রায় ১১ লক্ষ্য টাকার ঋণের সাগরে ডুবে ছিল ত্রিপুরা। অন্য ভাবে বলতে গেলে, মহারাজ কৃষ্ণকিশোর মাণিক্য
১১ লক্ষ্য টাকার অধিক ঋণের বোঝা রাজ্যের মাথায় রেখে মৃত্যু মুখে পড়েছিলেন। এই ঋণের টাকার অধিকাংশই ইংরেজ গভর্মেণ্টের কাছ থেকে ধার নেওয়া। মহারাজ কেন এত টাকা নিয়েছিলেন?
ত্রিপুরার ঐতিহাসিক কৈলাসচন্দ্র সিং হ, মহারাজ সম্পর্কে উনার গ্রন্থে লিখেছেন যে, বিদ্বান ও গুণবান হলেও মহারাজ কৃষ্ণকিশোর মাণিক্যের চরিত্র ছিল অত্যন্ত দূষিত।
তৎকালীন ত্রিপুরার রাজাদের মধ্যে এই রাজার মত এত ইন্দ্রিয়পরায়ণ,
কামলিপ্ত রাজা আর দেখা যায়নি। ইন্দ্রিয়-সাধনের ও ইন্দ্রিয়-তৃপ্তির জন্য উনি বহু কু-কাজে লিপ্ত ছিলেন। ইন্দ্রিয়-সাধনের জন্য উনি রাজকোষ খালি করে দিলেও রাজ্যের আয়ের দিকে বিন্দুমাত্র নজর দিতেন না,
আয়-ব্যয়ের কোনও হিসাবই তিনি রাখতেন না। আমোদ-প্রমোদের জন্য তিনি দিনে-দিনে প্রচুর টাকা ঋণ করতে লাগলেন। সমগ্র শীতকালটা মৃগয়াতেই কাটিয়ে দিতেন, আর বর্ষাকালটা কাটিয়ে দিতেন পাখি শিকার খেলায়।
মহারাজ কী রকমের আয়েশি ছিলেন তা অনুমান করা যায় এই ঘটনা থেকে যে, ঐ সময় ত্রিপুরার রাজধানীর আসে পাশে পাখী শিকারের নানান অসুবিধা হওয়ায় তিনি ঋণ করে লক্ষ্য টাকা ব্যয় করে পাখি শিকারের জন্য পাশের জলাভূমিতে
একটি প্রসাদ নির্মাণ করে ফেলেন, যা 'নতুন হাবেলি' নামে পরিচিত ছিল। সৌভাগ্যক্রমে সেখানে বর্তমানের উজ্জ্বয়ন্ত প্রাসাদ গড়ে তোলা হয়।
এই যখন রাজ্যের অবস্থা তখন মহারাজ উনার প্রথম পুত্র ঈশানচন্দ্রকে যুবরাজ আর দ্বিতীয় পুত্র উপেন্দ্রচন্দ্রকে 'বড়-ঠাকুর' পদে নিযুক্ত করেন। ঈশানচন্দ্র শৈশব থেকেই ধীর-স্থির এবং ধর্মপ্রাণ থাকলেও 'বড়-ঠাকুর' উপেন্দ্রচন্দ্র ছিলেন
প্রচণ্ড অত্যাচারী ও নেশা আসক্ত। তিনি প্রজাদের নানা ভাবে খুব কষ্ট দিতেন, নেশার ঘোরে তাদের উপর অকথ্য অত্যাচার করতেন। তিনি দিন-রাত অপরিমিত মদ পান করতেন, সেই মদের কোন মাত্রা থাকত না। আর সেই নেশার ঘোরে
উনার কু-কাজেরও কোন অন্ত ছিল না। মহারাজের কাছেও বিচার চেয়ে লাভ হত না, কারণ তিনি নিজেই থাকতেন আমোদ-প্রমোদে মত্ত। কৈলাসচন্দ্র সিংহ তার বইতে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, এমন পরিস্থিতিতে
ত্রিপুরাকে জ্বালিয়ে-পুরিয়ে ১৮৫১ খ্রীঃ অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে 'বড়-ঠাকুর' উপেন্দ্রচন্দ্র অকালে মারা পড়েন।
বজ্রপাতে বাবার মৃত্যুর প্রায় দুই বছর বাদে উপেন্দ্রচন্দ্র অকালে মারা গিয়েছিলেন।
◕ Bengali Story writing competition. More..
Next Part
ত্রিপুরার ইতিহাস সম্পর্কে জানুন প্রতি সোমবার ও শুক্রবার।
ত্রিপুরা সম্পর্কিত আরও কিছু তথ্য:
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
পর্ব ৪
পর্ব ৫
পর্ব ৬
পর্ব ৭
পর্ব ৮
◕ This page has been viewed 73 times.
Top of the page