Home   |   About   |   Terms   |   Contact    
RiyaButu
A platform for writers

মাণিক্য


বাংলা গোয়েন্দা গল্প


All Bengali Stories    22    23    24    25    26    27    28    29    (30)       

-হরপ্রসাদ সরকার, ধলেশ্বর - ১৩, আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম )




মাণিক্য
( বাংলা গোয়েন্দা গল্প )
- হরপ্রসাদ সরকার, আগরতলা, ত্রিপুরা
১০-১০-২০১৭



Previous Parts: 1st Part    2nd Part    3rd Part    4th Part   


◕ মাণিক্য
৫ম পর্ব
-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

পরের দিন বেলা প্রায় সাড়ে বারটায় রণধীর বাবুর বৈঠকখানা। দারোগা হরিবাবু, রাজবংশী, সাধু, রণধীরবাবু ও উনার স্ত্রী সবাই উপস্থিত। মুচকি হাসতে হাসতে নিজের পকেট থেকে একটি রেশম কাপড়ের পুটলি বের করলেন হরিবাবু। বললেন, "জামাইবাবু, এই নিন আপনার অমানত। আপনার রৌপ্যমুদ্রা। ব্যাটাদের টাইট করে একটু দাবড়ানি দিতেই সব গল-গল করে বলে দিল।"

ছোট কাঁচের টেবিলের উপরে একটি রেশম কাপড়ের পুটলি খুলে দিলেন হরিবাবু। রৌপ্যমুদ্রাগুলি নিজের আসল বাসস্থানে এসে যেন প্রাণ খুলে হাসি দিয়ে উঠেছে। তাদের দুশ্চিন্তার রাত কেটে গেছে। যেন সদ্য কালঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠেছে আবার আর খিলখিল করে হাসছে। রৌপ্যমুদ্রাগুলি দেখে রাজবংশী মনে পড়ে গেল ডঃ কালীপ্রসন্ন স্যারের কথা, উনি ঠিকই বলেছিলেন, এই রৌপ্যমুদ্রাগুলি দেখলে কী আর এই জগতে থাকা যায়! মনে হয় যেন পৌঁছে গেছি পরম প্রতাপী মহারাজ ধন্যমাণিক্যের জামানায়! মনে হয় যেন পৌঁছে গেছি ইতিহাসের এক স্বর্ণময় অধ্যায়ে, সেই ইতিহাস, সেই স্থানে। ইতিহাসের সেই সব দিনগুলি সবই যেন চোখে ভেসে ভেসে উঠছে। কিছুক্ষণ রৌপ্যমুদ্রাগুলির দিকে তাকিয়ে থেকে ধীরে পকেট থেকে মোবাইলটি বের করল রাজবংশী, ডঃ কালীপ্রসন্ন স্যারকে সুখবরটি দিতে ফোন করল।

রৌপ্যমুদ্রাগুলি দেখে অতি আবেগ প্রবণ হয়ে সজলা দেবী বললেন, "ভাই, তুমি আর রাজবংশী আমাকে এক মহা কলঙ্কের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিলে। আমি তোমাদের কাছে ঋণী হয়ে রইলাম।"

রণধীরবাবুও হরিবাবুর দুই হাত ধরে অতি কৃতজ্ঞতার সাথে বলল, "তোমরা আমাদের সত্যি খুব উপকার করলে। তুমি যদি রাজবংশীবাবুর খোঁজ না দিতে তবে কী যে হত ভেবেই পাচ্ছি না। তোমাদের এই উপকার কোন দিন ভুলার মত নয়। চিরদিন এই কথাটি আমার মনে থাকবে। তোমাদের অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।"

হাত নেড়ে জামাইবাবুকে থামিয়ে দিয়ে হরিবাবু বললেন, "আরে জামাইবাবু থামুন থামুন! যাকে ধন্যবাদ দেবার তাকে ধন্যবাদ দিন। সব কিছুই তো আসলে রাজবংশীই করল। আমি তো শুধু শেষ অঙ্কে এসে হাজির হলাম। পরিশ্রম করে মাথা খাটিয়ে চোরকে তো সে-ই ধরল, আমি তো শুধু মালটাকে বের করে আনলাম।"

স্বামী স্ত্রী দুজনেই এক সাথে বলতে শুরু করলেন, "ঠিক বলেছ, তুমি একদম ঠিক বলেছ।" রণধীরবাবু দ্রুত উঠে গেলেন। আলমারি খুলে চেক বুকটা নিয়ে এলেন। সবার সামনে টেবিলে চেক বুকটি রেখে কুড়ি হাজার টাকার একটি চেক সই করলেন আর তা তুলে দিলেন রাজবংশীর হাতে। অনেক পীড়াপীড়ি করেও রাজবংশী চেকটি এড়াতে পারল না। চেকটি নিতেই হল তাকে। তারপর শান্তিতে সোফায় নিজের গা এলিয়ে দিয়ে রণধীরবাবু বললেন, "শালারা কোথায় লুকিয়ে রেখেছিল এই রৌপ্যমুদ্রাগুলিকে? কোথা থেকে উদ্ধার করলে?"

দারোগাবাবু মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে নিজেও সোফায় গা এলিয়ে দিলেন, বললেন, "আর বলবেন না, রাত দেড়টায় আবার ছুটে গিয়েছিলাম মোটরস্ট্যান্ডের সেই দোকানে। একটি নষ্ট টায়ারের ভীতরে একটি প্লাস্টিকের পুটলি করে এ গুলিকে ফেলে রেখেছিল। ভাবুন কী কাণ্ড!"

রণধীরবাবু খুব উৎসুকের সাথে বললেন, "হারুর ঐ বন্ধুটি কে?"

একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে হরিবাবু বললেন, " কী বলব মশায় - জানেন, পুঁটি মাছের জালে হাঙর এসে ধরা পড়ল যে। সর্ব মোট পনেরটা চুরির কেস ঝুলছে সেই বাবাজীর উপর। তিনটি ত্রিপুরায় আর বাকী গুলি দিল্লীতে। দীর্ঘদিন সে দিল্লীতেই ছিল। কয়েক মাস হল দিল্লী পুলিশের গুতুনি খেয়ে ত্রিপুরায় এসে উঠেছে। বেশ কয়েকবার কিছুদিনের জন্য জেল ও খেটেছে। বাবাজীর পরিচয় বলতে, নাম পল্টু। বাবা পুলিশে ছিল, কিন্তু ছেলেকে সামলাতে পারেনি। প্রদীপের নীচেই হয়ে রইল অন্ধকার। হারু আর পল্টুর বাড়ি পাশাপাশি। ওরা দুজন আবার ছেলেবেলেকার গলাগলি বন্ধু। অনেকদিন ধরেই মহাশয়কে দুই রাজ্যের পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছিল না। গত কালকে গিয়ে ধরা পড়ল বাবাজী।"

রণধীরবাবু চোখ বেশ বড় বড় করে বললেন, "ওরে বাবা! এত বড় কাণ্ড!"

হরিবাবু হেসে বললেন, "রাজবংশী অবশ্য সবটা আগেই জানত। আসলে আজ দুপরে সে বিলোনীয়াতে ফোন করে হারুর সকল বায়োডাটা বের করে ফেলে। বায়োডাটা শুনে ওর মনে হয়েছিল, হারু যতই হিরো ভাব দেখাক না কেন, ওর সেই হিরো ভাবের পিছনে একটা ভিলেন লুকানো আছে। কারণ হারুকে বিলোনীয়া ছাড়তে হয়েছিল মেয়ে পাচারকে কেন্দ্র করে। সেই কেসে প্রমাণের অভাবে পুলিশ তাকে ধরলেও গরদে পুরতে পারেনি। আইনের দাও-প্যাচে সে বেঁচে যায়, কিন্তু ওখানকার লোকাল লোকেরা ব্যাপারটা খুব ভালই জানে। এই খবর হয়তো আপনারা কেউ জানেন না। কিন্তু আজ দুপুরে রাজবংশী এই সব ঘটনা জানার পরই আমাকে ফোন করে সব ব্যাপারটা জানিয়ে রাখে আর বলে রাখে যে, সন্ধ্যায় দরকার পড়তে পারে, আমি যেন রেডি থাকি!"

রণধীরবাবু আগের চেয়েও বেশী অবাক হয়ে বললেন, "অ্যাঁ, রাজবংশী দুপুরেই থেকেই সব জানতো!"

রাজবংশী একটু হেসে মাথা নেড়ে বলল, "হ্যাঁ, আসলে দুপুরে নয় আমার প্রথম সন্দেহ হয় গতকাল সকাল বেলাতেই, যখন আপনার ড্রাইভারকে প্রথম দেখি। আপনি ওকে ফিটফাট রাখতে ভাল পোশাক আসাক দিলেও, আপনি হয়তো ওর জুতা গুলির দিকে কখনো লক্ষ্য করেননি। ও যেই জুতা পড়ে সকাল বেলা গাড়ি চালিয়ে আমাদের বাড়িতে এসেছিল সেই জুতা কোন বিশাল কোম্পানির মালিককেই মানায়, এক ড্রাইভারকে নয়। সেই জুতার দাম বর্তমান বাজারে প্রায় আট থেকে নয় হাজার টাকা। হারু বেতন পায় কত? তবে সে এমন জুতা পেল কোথায়? আর সেই জুতা সাধারণ কালি দিয়েও পলিস করা যায় না। সেই কালিও আনতে হয় বাইরে থেকে। এত টাকা হারুর কাছে আসে কোথা থেকে? তখনই আমার মনে প্রথম সন্দেহ জাগে। তারপর আপনাদের বাড়ীতে এলাম, ঘুরে ফিরে সব দেখলাম। তখন আমার মনে হল, এই ঘর থেকে জিনিসগুলি চুরি যাওয়া খুব কঠিন। নিশ্চয়ই অন্য কোন ব্যাপার আছে? চুরি দুই খান থেকেই হতে পারে, হয় ঘর থেকে - নয় বাইরে থেকে। তাই আমি ঘরে এবং বাইরে দু জায়গাতেই সমান ভাবে জাল বিছালাম। কিন্তু শেষে ঘরের জাল দ্রুত গুটিয়ে নিলাম, কারণ আমার বিশ্বাস হয়ে গিয়েছিল ঘরে কিছুই হয়নি। যা কিছু হয়েছে সব বাইরে। কিন্তু কীভাবে? ক্লু পেতে আমি সম্ভব্য সকল ক্ষেত্রেই ঢু মারতে লাগলাম। গতকালকে সুযোগ পেয়ে কায়দা করে হারুর এক প্রশ্নের উত্তরে ইচ্ছা করে বলে দিয়েছিলাম যে, আমারা পুলিশের সহযোগী বন্ধু, পুলিসের সাথি। আমি অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়লেও তা যে সঠিক নিশানায় গিয়ে লেগেছে তা সাথে সাথেই বুঝতে পারি। আপনারা হয়তো কেউ লক্ষ্য করেননি, কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি আমার ঐ কথা পর হারু নিডর হবার ভান করলেও বারে বারে ঢুক গিলছিল। অর্থাৎ তার গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল, এটা ভয় পাওয়ার লক্ষণ। হারু নির্ঘাত আমার কথায় ভয় পেয়ে গিয়েছিল। সে বুঝতে পেরেছিল এই ঘটনাটাকে বেশী দিন আর ধামা চাপা দিয়ে রাখা যাবে না। পুলিশের লোক এসে গেছে। তাই সে তাড়াতাড়ি কাজ সারতে চাইছিল। কিন্তু কোন কাজ সারতে চাইছিল হারু?"

নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে একটু থেমে আবার বলতে শুরু করল রাজবংশী, "হারু রৌপ্যমুদ্রা দুটি চুরি করে নিয়ে গেলেও, কোথায় বিক্রি করবে তা ঠিক করে উঠতে পারছিল না। সোনার দোকানে বিক্রি করতে গেলে ধরা পড়ে যাবার সম্ভাবনা প্রবল, আবার দামও পাওয়া যাবেনা। যেমন কোন স্বর্ণকারের দোকানে গিয়ে দুটি রৌপ্যমুদ্রাকে গলিয়ে নিলে, আজকের বাজার দরে সর্ব মোট মাত্র চার-পাঁচ হাজার টাকাই পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কোটি টাকার জিনিসের দাম মাত্র চার-পাঁচ হাজার টাকা। ওরা এত লোকসান করতে যাবে কেন? কোন বোকাই তা করবে। তাই ওরা কোনও চোরাকারবারির সাথে সম্পর্ক করার মতলবে ছিল। কিন্তু ওদের দুজনেরই অক্ষর জ্ঞান না থাকায় এত দ্রুত সব কিছু গুছিয়ে আনতে পারছিল না। আর একটু সময় পেলে হয়তো সব সামলে নিত। কাজের মেয়ে বিন্দুকে বিকেল বেলাতে আসতে বলার পিছে কারণ ছিল একটাই,আমি যেন হারুর উপর শেষ বেলাতে নজর রাখতে পারি। কিন্তু আমার সকাল বেলার কথাগুলি এমন ভাবে কাজ করবে তা আমি ভাবিনি। হারু আমারই সামনে রণধীরবাবুর কাছে দুদিনের ছুটি চেয়ে বসল। তখনই আমি জানতাম কেন ও ছুটি চাইছে? কিন্তু একটি হিসাব আমি মিলাতে পারছিলাম না। বারে বারে খটকা লাগছিল, তাই সঠিক জায়গাটি বের করতে পারছিলাম না। যাক, হারু ছুটি নিয়ে চলে যাবার পর রণধীরবাবুর কাছ থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি তথ্য পাই। এই তথ্যগুলি প্রথমেই পেয়ে গেলে কাজটি আরও দ্রুত হয়ে যেত। প্রথমটি হল, রণধীরবাবু বললেন যে, ঐ দিন ডঃ কালীপ্রসন্ন স্যারকে রৌপ্যমুদ্রাগুলি দেখিয়ে ফিরে আসার সময় উনারা মোটরস্ট্যান্ড গিয়েছিলেন গাড়ির স্টেপনিটি রিপেয়রিং করার জন্য। আর দ্বিতীয় তথ্যটি হল, রণধীরবাবু যখন বললেন যে স্টেপনিটা নিয়ে হারু মিথ্যা কথা বলেছে, আসলে সেদিন সে মোটরস্ট্যান্ডে স্টেপনিটা রিপেয়রিং করতেই দেয়নি, কিন্তু বলেছিল যে, সে ওটা রিপেয়রিং করতে দিয়েছে। এই দুটি তথ্য যখন আমি জানলাম তখনই সব কিছু আমার কাছে জলের মত পরিষ্কার হয়ে গেল। সেই দিন কিভাবে হারু রৌপ্যমুদ্রাগুলি চুরি করেছিল তাও আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। সাথে সাথেই হরিবাবুকে ফোন করি।"

অপলক চেয়ে থেকে রণধীরবাবু বললেন, "আমি তো গাড়িতেই ছিলাম। তবে হারু কীভাবে মুদ্রাগুলি চুরি করল? আমার চোখে তো সব কিছু ধরা পড়ার কথা ছিল।"

সশব্দে একটা শ্বাস ছেড়ে রাজবংশী বলল, "হ্যাঁ, এই প্রশ্নটাই আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল যে, আপনি গাড়িতে থাকতে সে আপনার সামনেই সেই রৌপ্যমুদ্রাগুলি কীভাবে চুরি করতে পারে? এই কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎই একটি ঘটনা আমার মনে পড়ে গেল, গতকালকে সকাল বেলায় যখন আমরা রামনগর যাচ্ছিলাম তখন বেশ কয়েকবার হারু স্টিয়ারিং ছেড়ে গাড়ি চালিয়েছিল। একবার মোবাইল ফোনটা পেন্টের পকেট থেকে বের করেছিল। পরে আরেকবার মোবাইল ফোনটা পেন্টের পকেটে ঢুকিয়েছিল। সত্যি একদম পাকা ড্রাইভার সে। তাই সেদিন যখন আপনি আপনার ব্যাগটা মনের ভুলে সামনের সিটেই রেখে দিলেন তখন সে অতি সন্তর্পণে স্টিয়ারিং থেকে দুই হাত ছেড়ে, ব্যাগ থেকে রৌপ্যমুদ্রাগুলি সরিয়ে নেয়। আপনিও হয়তো অন্য কোন চিন্তাতে ছিলেন অথবা ওর উপর বিশ্বাস রেখে মনের আনন্দে অন্যমনস্ক ছিলেন। এত সূক্ষ্মতা আপনার চোখে ধরা পড়েনি। আর এই সুযোগটাই হারু কাজে লাগাল।"

মাথা নেড়ে নেড়ে রণধীরবাবু বললেন, "ওরে বাবা! সে তো অতি ভীষণ ব্যাপার।" পাশ থেকে সজলা দেবী বললেন, "আচ্ছা, সে না হয় মুদ্রাগুলি ওভাবে চুরি করল, কিন্তু পল্টুর কাছে পাচার করল কোন সময়?"

রাজবংশী একটু হেসে বলল, "যখন স্টেপনি ঠিক করতে উনারা মোটরস্ট্যান্ড গিয়েছিল তখুনি সে মুদ্রাগুলি পল্টুর কাছে পাচার করে। স্টেপনি ঠিক করা তো ছিল একটা বাহানা। আসল কথা ছিল মুদ্রাগুলি পল্টুর কাছে দিয়ে দেওয়া। ঘটনাটি এমন ঘটেছিল, হারু পল্টুর দোকানের সামনে গাড়িটি দাড় করাল। তারপর পল্টুকে ইশারাতে ডাক দিল। স্টেপনিটা পল্টুকে দেবার জন্য যখন সে পিছনের বনেট খুলল তখনি সে পকেট থেকে মুদ্রা দুটি বের করে পল্টুর হাতে গুজে দিল। বনেটের জন্য রণধীরবাবু আর তা দেখতে পেলেন না। রণধীরবাবুর মনে হল হারু বনেট খুলে ঠিকই স্টেপনিটি দিয়ে দিয়েছে। আর এই খানেই সবচেয়ে বড় ভুলটি করে বসল হারু। সে এতই উত্তেজিত হয়েছিল যে, আসল কাজটি সারার পর স্টেপনিটিকে পল্টুর হাতে তুলে দিতেই ভুলে গিয়েছিল। অন্যদিকে পল্টু তো স্টেপনির প্রসঙ্গ জানতই না। যদি জানত, তবে কেসটি আরও জটিল হয়ে যেত। পল্টু ভাবল হারু ওকে ঐ মুদ্রাগুলি দিতেই এসেছে। ওদের এই মিস-কমিউনিকেশনে খারাপ স্টেপনিটা পেছনের ডিক্কিতে তেমনিই খারাপ হয়েই পড়ে রইল, কিন্তু সে হারুর সকল পরিকল্পনাকে খারাপ করে দিল।"

সাধু হেসে বলল, "বাব্বাঃ এত ঘটনা লুকিয়েছিল এক স্টেপনির পেটে। সব হজম করতে না পেরেই সে বিগড়ে গিয়েছিল বুঝি?"

সাধুর এই কথা শুনে সকলেই হা-হা করে হেসে উঠল। দারোগাবাবু বললেন, "তাহলে আমি আসি জামাইবাবু। তবে একটা কথা না বলে পারছি না। এবার থেকে এগুলিকে আরও সাবধানে রাখবেন। এত মূল্যবান জিনিস! এ যাত্রায় সঠিক হাতে পড়ল না বলে রক্ষা, পড়লে আর পাওয়াই যেত না।"

রণধীরবাবু বললেন, "ঠিক বলেছ ভাই, আমিও তাই ভাবছিলাম। বয়েস হয়েছে, কখন কী হয়? এখন আর এই মুদ্রার দারোয়ানগিরি করে লাভ নেই। ভাবছি বংশের মুরব্বিদের ডেকে তাদের হাতেই এই গুলি তুলে দিয়ে মুক্তি পাই।"

-"হ্যাঁ, সেটাও করতে পারেন। আচ্ছা ঠিক আছে। আজ তাহলে আমি উঠি।"এই বলে হরিবাবু উঠে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঠিক তখনই রাজবংশী দারোগাবাবুকে বলল, "আপনার কাজ কিন্তু এখনো শেষ হয়নি হরিবাবু! বলতে পারেন, আপনার কাজ সবে মাত্র শুরু হয়েছে।"

রাজবংশীর এ কথা শুনে সবাই বেশ অবাক হয়ে গেল। সবাই রাজবংশীর দিকে তাকাতে লাগল। দারোগাবাবু অতি বিস্ময়ে বললেন, "মানে!"

-" মানে! সেই প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসের পাচারকারী! এক চোরাকারবারির সহযোগী কিন্তু বরাবর এই রৌপ্যমুদ্রাগুলির উপর নজর রেখে চলছে। আর সে আমাদের কাছাকাছিই আছে, তাকে আমারা চিনি। ওকে কী ধরবেন না?" অতি বিশ্বয়ে দারোগাবাবু বললেন, "বলেন কী মশায়!"

- "হ্যাঁ, তাকেও ধরতে হবে। এভাবে তাকে মোটেই ছেড়ে দিতে পারিনা আমরা। আমি সব রকমের সাহায্য করলেও তাকে ধরাটা হবে একান্তই আপনার কাজ। আমি জাল পেতে দিচ্ছি, আপনি মাছটি ধরুন।"

উঠতে গিয়েও আবার শক্ত পোক্ত হয়ে বসে পড়লেন দারোগাবাবু। বললেন, "একটু খুলে বলুন তো ব্যাপারটা কী?"

Click here for Last Part


Previous Parts: 1st Part    2nd Part    3rd Part    4th Part   

All Bengali Stories    22    23    24    25    26    27    28    29    (30)    


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717