All Bengali Stories
75
76
77
78
79
80
81
82
83
(84)
85
-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------
◕
বিকালে ভোরের শিউলি
লেখক - খগেন্দ্রনাথ অধিকারী
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, সাউথ সিটি কলেজ, কলিকাতা
পর্ব ৩
Part 1
Part 2
সাহানার মনে পড়ে গেল, ও তখন ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়ে গেছে। আমিরুল তখনো বেকার। একদিন বিকেলে পার্কে দু'জনে গল্প করার সময় আমিরুল
ওকে বলেছিল, "দেখো, যেন আমার দীপ্তি বন্ধুর মত রেবেকা হয়ে যেয়ো না।"
দীপেনের ছাত্রছাত্রী মহলে প্রায় সবাই জানত দীপ্তির সাথে তার ঘর
বাঁধার স্বপ্নের কথা। ওর গায়ের রংটা ছিল শ্যামবর্ণ। চোখের দু'টি পাতায় মানুষের জন্য গভীর মমতার ছাপ। খুব ভাল গল্প ও কবিতা লিখতেন উনি।
তাই দীপেনের বন্ধু-বান্ধব ও ছাত্র-ছাত্রীরা উনাকে মাইকেল বলে পিছনে ডাকতো। অন্যদিকে দীপ্তি ছিল অনন্য সুন্দরী, বিশাল ধনীর মেয়ে। কিন্তু
আচার, আচরণে আর কথাবার্তায় ছিল চাঁদের স্নিগ্ধতা। তাই পিছনে ওকে সবাই রেবেকা বলতো। এই রেবেকা নামটা ছড়িয়ে গেল যখন দীপ্তি ডাঃ সুভাষ নাগকে
বিয়ে করে আগরতলায় চলে গেল। সবাই বলতে লাগল দীপ্তি রেবেকাই বটে। একটা বিশ্বাসঘাতিনী মেয়ে। দীপেনের সাথে প্রেমের অভিনয় করে ওকে দিয়ে
তিলে-তিলে নিজের কেরিয়ারটা গড়ে ঠিক সময়ে চলে গেল। দীপ্তিদের বাড়িতে উনি মাইনে পেতেন ৬০ টাকা।
সাহানার মনে পড়ে, তার স্বামী আমিরুলের মত স্যার দীপেনও খুব গরীব ছিলেন। এই কারণে ছাত্র আমিরুল, কিছুদিনের মধ্যেই স্যারের বন্ধু
হয়ে উঠে। আমিরুল স্যারের বাড়িতে যেত পড়তে। শহর থেকে দশ কিলোমিটার দূরে অজ-গাঁয়ে স্যারের বাড়ি।
কাঁচা রাস্তা, দুর্গম পথ। মাটির ঘর, খড়ের ছাউনি। জল নেই, বিদ্যুৎ নেই। এরকম গ্রাম থেকে শনি-রবিবারে স্যার দীপ্তিদের বিশাল
রাজপ্রাসাদের মত বাড়িতে যেতেন ওদের পড়াতে। আর আমিরুল আসতো ঐ দু'দিন সকালে স্যারের বাড়িতে পড়তে। আমিরুলের মুখেই
সাহানা শুনেছে, স্যার আমিরুলের মত আরো তিন-চারজনকে বিনা পয়সায় পড়াতেন। স্যারের এত কষ্টের সংসার, অথচ মাসীমার মুখে
হাসি লেগেই থাকত। কখনো একটি বেলা হলে, ঘরে যা থাকত তাই-ই দিয়ে পেটভরে খাইয়ে তবে ছাড়তেন।
বাড়িতে গোপাল বিগ্রহের নিত্যপূজা হতো, কিন্তু তবু মাসীমা ও মেশামশাইয়ের কাছে জাতি-ধর্মের কোনও বিভেদ ছিল না। সবাইকে
অম্লান বদনে ঘরে তুলতেন।
সাহানা আমিরুল থেকে এটাও জেনেছিল যে, মেশামশাই ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। ১৯৪২ এর 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনে
ইংরেজ পুলিশ উনাকে লাঠিপেটা করে জেলবন্দি করেছিল। তাই এলাকায় তার যথেষ্ট সম্মান। গরীব হলে কী হবে, 'মাস্টারমশাই' বলতে
হিন্দু-মুসলমান সবাই অজ্ঞান। পড়তে গিয়ে আমিরুল দেখতো যে, কত গরীব মানুষ, কত গরীব চাষি মেশামশাই ও দীপেনস্যারের কাছে আসতো
জোতদার- জমিদারদের বিরুদ্ধে জমির লড়াইয়ে তাদের সাহায্য-পরামর্শ নিতে। এই সবের কারণে জোতদার এবং জমিদারেরা বহুবার
মেশামশাই ও স্যারকে খুনের চেষ্টা করেছে, মিথ্যা মামলায় ওদেরকে জড়িয়েছে।
দীপ্তির ম্লান মুখটার দিকে তাকিয়ে সাহানার আজ বড় কষ্ট হচ্ছিল। সে হেসে দীপ্তিকে বলল, "তুই এভাবে কেন বলছিস ভাই? তুই রেবেকা কেন হবি?"
দীপ্তি বলল, "এটাই তো আমার সঠিক বিশেষণ রে।"
"দীপ্তি, তুই যদি স্যারকে এতই ভালবেসে থাকিস তাহলে বিয়েটা হল না কেন তোদের?"
দীপ্তি কিছুক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে সাহানার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, "উনি যেদিন পড়াতে এসেছিলেন, সেই প্রথম দিনেই আমি ওনাকে
মনের গভীরে ভালবেসে ফেলেছিলাম। তোকে বলতে আমার লজ্জা নেই, আমি নানাভাবে ওনাকে বোঝাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওনি নিরুত্তাপ ছিলেন,
সাদাই না বোঝার ভান করতেন। কিন্তু আমি শেষ পর্যন্ত উনাকে হার মানিয়েছিলাম। আমাকে উনি সাবধান করে বলেছিলেন, 'আবেগে আজ
যেটা করছো, সেটা ধরে রাখতে পারবে তো? আমার তো সার্টিফিকেটটা ছাড়া আর কোনও সম্পদই নেই। তোমরা এত বড় লোক, তাছাড়া তুমি
এত মেধাবী, এত অসামান্য সুন্দরী, তোমার বাড়ির লোকেরা কিন্তু এ সম্পর্ক মানবেন না। '
বলেছিলাম, সুন্দরী না হাতি আমি! সে-সব আপনাকে ভাবতে হবে না। এর পর থেকে উনি উনার সকল সত্তা দিয়ে আমাকে তিলে-তিলে গড়ে
তুলেছেন। উনি অধ্যাপিকা মীরা গাঙ্গুলীর কথা প্রায়ই বলতেন, বলতেন, তোমাকেও মীরাদির মত নামী অধ্যাপিকা হতে হবে। আমাকে অধ্যাপিকা
হবার স্বপ্নে বিভোর করেছিলেন তিনি। জানিস সাহি, বি.এ ( অনার্স ) ফার্স্ট ইয়ার থেকে পার্ট-টু পর্যন্ত বেশ চলছিল। কিন্তু আমাদের বাড়ির
সর্বময় কর্তা আমার দাদা আর তার বন্ধু কমলদা কোত্থেকে জানতে পারল আমাদের সম্পর্কের কথা। স্যার তো একজন কৃতি ছাত্র, National Scholar,
আমার সাথে বয়সের ফারাক সাড়ে তিন বছর, স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবার তাছাড়া উভয়ই ব্রাহ্মণ পরিবার; এমন একজনের সাথে আমার
সম্পর্কের কথায় বাড়ির সবারই তো খুব খুশী হবার কথা, কিন্তু ফল হল উল্টা। আমাদের পরিবারের এমন কিছু গোপন রহস্য ছিল বা আছে যা আমি
আজও এই পৌনে ষাট বছর বয়সেও জানতে পারিনি। কিন্তু কমলদা জানতেন। তাই সেই সুবাদে তিনি আমাদের সুপার-গার্ডিয়ান হয়ে ওঠেন।
উনি একদিন স্যারকে চরম অপমান করলেন। স্যার আমাদের বাড়ি আসা বন্ধ করলেন। আমার জন্য নতুন টিউটার ঠিক হল।"
"আমি তা জানি। তুই নতুন মাষ্টারের কাছে পড়িস নি। বাড়িতে বলেছিলি যে, তোর কোনও মাষ্টার লাগবে না। অথচ স্যার চুরি করে রাত জেগে
নোট তৈরি করে তোর কাছে পাঠাতেন। সেই নোট পড়ে তুই পার্ট-টু দিয়েছিস। এম.এ-টাও ওই ভাবেই দিয়েছিস?"
অবাক হয়ে দীপ্তি বলল, "তুই এ সব জানলি কী করে সাহি?"
Next Part
All Bengali Stories
75
76
77
78
79
80
81
82
83
(84)
85
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717