Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

বিদায় বেলায়

Bengali Story

All Bengali Stories    87    88    89    90    91    92    93    94    95    (96)     97   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



বিদায় বেলায়

লেখিকা – সংঘমিত্রা রায়, Karimganj bazer, Assam


বিদায় বেলায়

লেখিকা – সংঘমিত্রা রায়, Karimganj bazer, Assam

পর্ব ২

Part 1    Part 2

প্রকাশবাবু খেতে বসে ঠিকমতো খেতে পারলেন না, শুধু অন্যদের মন রাখতে একটু খেলেন। খাওয়ার পর তিনি নিজের ঘরে চলে যান। বাচ্চারা বাইরে হইচই করছে। বাইরে তখন গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল। বিছানায় শুয়ে প্রকাশবাবুর মনে পরে যায় অনেকদিন আগের কথা।

প্রায় ছাব্বিশ বছর আগে বাঁকুড়া জেলার পলাশপুর গ্রামের ছেলে প্রকাশচন্দ্র জলদাস উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কলকাতার কলেজে পড়তে গিয়েছিল। প্রকাশের পরিবারের অবস্থা ভালো, সে একান্নবর্তী পরিবারে থাকত। তাদের প্রচুর জমিজমা, ব্যবসা আছে, গ্রামের রাজনীতিও তাদের দখলে। তবে তাদের বংশে কেউ তেমন লেখাপড়া করেনি, কিন্তু তারা মানুষ হিসেবে খুব ভালো। কয়েক পুরুষ থেকেই তারা গ্রামের মানুষের বিপদে,আপদে পাশে থেকেছেন। উনাদের জমি আর ব্যবসায় কাজ করে গ্রামের কিছু মানুষ বেচে আছে।

প্রকাশরা দুই ভাই। বড় ভাই, কোনও মতে পাঠশালার পর স্কুল অবধি পড়াশোনার পরই, পড়া ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু প্রকাশবাবু্র পড়াশোনায় উৎসাহ থাকায় তার বাবা বিকুলচন্দ্র জলদাস তাকে বি,এ পড়তে কলকাতায় পাঠান। অনিমেষ গাঙ্গুলী বসন্তপুরের মানুষ, বিকুলবাবুর ছোটবেলার বন্ধু। কলকাতায় তার ব্যবসা ও বাড়ী আছে। বিকুলবাবু ছেলেকে ভর্তি করিয়ে উনার বাড়ি গিয়েছিলেন। কথা ছিল প্রকাশ মেসে থাকবে, কিন্তু অনিমেষ বাবু বললেন,"আমার এত বড় বাড়ী থাকতে তোর ছেলে মেসে থাকবে কেন বিকুল?"

"তোরা ব্রাহ্মণ আমার ছেলে থাকলে তোদের অসুবিধা হবে না তো?"

"কিসের অসুবিধা! আমাদের কাজের লোকেরা ওর খাবারের থালা বাসন ধুয়ে দেবে।"

"না না কাকাবাবু, আমি আপনাদের বিরক্ত করতে চাই না। আমি মেসে থাকব, ওখানে আমার বন্ধুরা রয়েছে। ওদের ছেড়ে এখানে থাকতে আমার ভালো লাগবে না।"

"তুমি আমার বাড়ীতে থাকলে ভালো লাগত আমার মেয়েটাও তোমার কলেজে পড়ে। এবার সেও বি,এ ক্লাসে ভর্তি হয়েছে।"

"ঠিক আছে কাকাবাবু আমি মাঝে-মাঝে এসে আপনাদের সঙ্গে দেখা করে যাব।"

অনিমেষ বাবুর কথাতেও প্রকাশ তাদের বাড়ীতে থাকতে রাজী হল না। বিকুলবাবুও ছেলেকে খুব একটা জোর করলেন। প্রকাশ কলেজের পাশে একটা মেসে উঠল। অনিমেষ বাবুর এক মেয়ে ছিল, তার নাম পারমিতা। দেখতে অসাধারণ সুন্দরী, কাঁচা হলুদের মতো গায়ের রং,ঘন লম্বা চুল। চোখ, নাক, মুখ দেখলে মনে হয় বিধাতা খুব যত্ন করে তাকে তৈরি করেছেন। তার ঠোঁটের নীচে একটা তিল আছে। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই কত ছেলে তার পিছনে ছুটছে, সেও অনেককে নিয়ে খেলত। লেখাপড়ায় মন নেই, রূপের কারণে তার খুব অহংকার ছিল সে ভাবত, রূপেই সে সবকিছু জিতে যাবে। খুব চঞ্চল আর আবেগপ্রবণ ছিল সে। ওর মন যা চাইত তাই করত, কারো কথা খুব একটা শুনত না। পারমিতা প্রকাশের প্রায় সমবয়সী, একই সঙ্গে পড়ে। প্রকাশ ইংলিশ অনার্স নিয়ে ভর্তি হয় পারমিতা পাস কোর্সেই পড়ছে।

প্রকাশের গায়ের রং শ্যামলা, হাল্কা-পাতলা শরীর। তবে খুব ভালমানুষ আর পরোপকারী, মনটা তার বরাবরই নরম। গ্রামের লাজুক ছেলে শহরের মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতেই লজ্জা পেত। কলেজে যাওয়ার পর শুধু পড়াশোনা নিয়ে থাকত, মেয়েদের থেকে দূরেই থাকত। পারমিতা একদিন নিজেই যেচে এল তার সঙ্গে কথা বলল, "প্রকাশদা তুমি আমার সঙ্গে কথা বলো না কেন? তুমি কি আমাকে চেন না?

প্রকাশ যেদিন ওদের বাড়ি এসেছিল ওকে দেখেছে। প্রকাশ চিনতে পেরেছে কিন্তু তবুও বলল," ঠিক চিনতে পারিনি!"

"চিনবে কি করে মুখচোরা ছেলে! কখনও কোনও মেয়ের দিকে তাকাতে দেখিনি। আমি তোমার অনিমেষ কাকার মেয়ে।"

"ও বুঝেছি। কাকাবাবু বলেছিলেন উনার এক মেয়ে আছে এই কলেজেই পড়ে, সেই মেয়ে তুমি আজ জানতে পারলাম।"

" হু, আমিই সেই মেয়ে। আমাকে চিনলে, নাম জানতে চাইলে না! মাথা নিচু করে কথা বলছ কেন?"

"এমনিই, লজ্জা লাগে। আচ্ছা বল তোমার নাম কি?"

"আমার নাম পারমিতা। ছেলে মানুষের এতো লজ্জা প্রথম দেখলাম। চল আজ আমার সঙ্গে আমাদের বাড়ি।"

"অন্য দিন যাব, আজ জরুরী ক্লাস আছে।"

"একেবারে বিদ্যাসাগর! এতো পণ্ডিত হয়ে কি করবে? আজ যেতেই হবে আমাদের বাড়ি। বাবা সবসময় বলেন, ছেলেটা যে গেল আর এল না," বলে টানতে-টানতে নিয়ে গেছিল। সেদিন থেকে প্রকাশের লজ্জা কিছুটা ভেঙ্গেছিল।

অনিমেষ বাবু বললেন, "সেই যে গেলি রে বাবা, আর এলি না।"

"আসলে কাকাবাবু পড়াশোনার খুব চাপ তাই আসতে পারি না।"

"দেখ মিতা, ছেলেটা তোর সঙ্গেই পড়ে। কি মন দিয়ে পড়ছে, আর তুই লেখাপড়া বাদ দিয়ে সারাদিন বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরছিস।"

"বেশী পড়াশোনা করলে মাথা খারাপ হয়ে যাবে, আমি এমনিই ঠিক আছি।"

"দেখ প্রকাশ এই মেয়েকে নিয়ে আর পারি না। তোরা তো একসঙ্গেই পড়িস ওকে একটু দেখে রাখিস বাবা।"

পাশ থেকে পারমিতার মা পরমা দেবী বললেন," সত্যি প্রকাশ ওকে একটু দেখে রেখ। বড় চঞ্চল মেয়েটা, কারো কথা শুনে না. ওকে নিয়ে আর পারি না।"

"ঠিক আছে কাকিমা আমি দেখব ওকে।"

যাবার সময় পারমিতা বলল, " বাবা-মা কি বলেছেন আমাকে দেখে রাখতে! এখন আমাকে দেখে আর মুখ লুকাতে যেও না যেন।"
Next Part

Part 1    Part 2



All Bengali Stories    87    88    89    90    91    92    93    94    95    (96)     97   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717