লাবণ্য ( পর্ব ৪ ),Bengali Story, বাংলা বড় গল্প, দক্ষিণ তারাপুকুর, আগরপাড়া, কলিকাতা- ১০৯

All Bengali Stories 84 85 86 87 88 89 90 (91) 92 93

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------

◕ লাবণ্য ( পর্ব ৪)

লেখিকা - রিয়া পণ্ডিত, দক্ষিণ তারাপুকুর, আগরপাড়া, কলিকাতা- ১০৯

অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১ পর্ব ২ পর্ব ৪ পর্ব ৪

◕ পর্ব ৪

সন্ধ্যে 6 টায় একটা ক্যাফেতে মিট করবে বলে ঠিক করে দু'জনে। সৌন্দর্য অনেক আগে গিয়েই অপেক্ষা করছিল; ডাক্তার বলে কথা, সহজে লেট করে না। এমনিও ছোটবেলা থেকেই ওর অভ্যাস, যে কোনও কাজে সময়ের আগেই পৌঁছে যাওয়া। লাবণ্যও 6.10 এর মধ্যে পৌঁছে গেল ক্যাফেতে। লাবণ্যকে ঢুকতে দেখে এক দৃষ্টে তাকিয়ে রইল সৌদার্য। মনে-মনে বলতে লাগলো -- ফোটোর থেকেও বেশি সুন্দরী। দেখছি।

লাবণ্যর বাবা মেয়ের অতীতের ব্যাপারে সৌদার্যকে সবটাই জানিয়েছিল। প্রথম বার ফোটোতে দেখে, তারপর ওর ব্যাপারে সব সত্যি জেনে লাবণ্যকে পছন্দ হয়ে যায় সৌদার্যর।

লাবণ্য হালকা হাসি দিয়ে বলল -- সরি একটু লেট হয়ে গেল।

লাবণ্যর কথায় সৌদার্যের জ্ঞান ফিরল - না-না ইটস ওকে, বসুন! আসতে কোনও অসুবিধা হয়নি তো?

লাবণ্য -- না-না।

লাবণ্য এতক্ষণে সৌদার্যকে খেয়াল করলো, 6 ফুটের মতো হাইট, চওড়া বডি, গায়ের রঙ খুব ফর্সাও না খুব কালোও না। তবে লুক টা বেশ অ্যাট্রাকটিভ।

সৌদার্য -- কী খাবেন বলুন?

লাবণ্য -- কোল্ড কফি।

সৌদার্য -- ওয়েটার!

ওয়েটার -- ইয়েস স্যার।

সৌদার্য -- দুটো কোল্ড কফি।

ওয়েটার চলে গেল।

সৌদার্য -- আচ্ছা লাবণ্য আপনি এই বিয়েতে রাজি তো? মানে, আজ কালকার দিনে সবাই লাভ ম্যারেজ করতে চায়। কিন্তু আপনি অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ করছেন! মানে, বাড়ি থেকে কোনও জোর করার ব্যাপার নেই তো?

লাবণ্য -- না-না। আমি বিয়েতে রাজি। আসলে আমিও নতুন করে শুরু করতে চাই। তবে আপনাকে কিছু জানানোর আছে, আমি আপনার থেকে কিছু লুকোতে চাই না।

সৌদার্য -- বলুন, মন খুলে বলতে পারেন।

সবটা জানা সত্ত্বেও লাবণ্যর মুখে আবার সব শুনতে চাইলো সৌদার্য। মনে-মনে লাবণ্য কতটা সৎ, তা দেখে খুব খুশি হল সৌদাৰ্য।

লাবণ্য সব কিছু বলল সৌদার্যকে। বলতে-বলতে পুরোনো স্মৃতিতে ডুবে গিয়েছিল সে।

সৌদার্য লাবণ্যর দিকে তাকিয়ে বলল -- আমি যথা সাধ্য চেষ্টা করবো আমার ভালোবাসা দিয়ে আপনার অতীতকে সম্পূর্ণ ভুলিয়ে দেওয়ার। আপনি চিন্তা করবেন না, যেদিন আপনার মনে আমার জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি হবে সেদিন না হয় নতুন করে সব শুরু করবো। কথা দিচ্ছি তার আগে কোনও জোর খাটাবো না।

লাবণ্য নিষ্পলক ভাবে সৌদার্যর দিকে তাকিয়ে রইল। মনে-মনে বলল -- মানুষটার কথা শুনে তো খুব ভালো মনে হচ্ছে, আজকের দিনে ক'জনই-বা এই কথাটা বলতে পারে? তারপর সে সৌদার্যকে বলল - আপনার কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন।

সৌদার্য মাথা নিচু করে বলল -- ছিল কেউ, অনেক বছর আগের কথা।

লাবণ্য কৌতূহলের দৃষ্টিতে -- কি এমন হয়েছিল?

সৌদার্য ইতস্তত করে বলল -- আসলে একটা সময়ের পর দু'জনেই বুঝতে পারি হয়তো আমরা দু'জনে দু'জনের জন্য পারফেক্ট নই। মনের মতো মানুষ পেলে তো সহস্র যুগ কাটিয়ে দেওয়া যায় তার সাথে, হয়তো দু'জনেই একে অপরের মনের মতো মানুষ হয়ে উঠতে পারিনি।

লাবণ্য মন দিয়ে কথা গুলো শুনছিল। একে অপরের ব্যাপারে আরও কিছু কথা বলে, কফি শেষ করে বেরিয়ে গেল। সৌদার্য নিজে লাবণ্যকে বাড়িতে পৌঁছে দিল।

সৌদার্য কে দেখে, ওর কথা শুনে লাবণ্যর ভালোই মনে হয়েছে। কিন্তু পুরোনো স্মৃতিগুলো যখন মাথায় চেপে বসে, তখন আবার বিশ্বাস ভাঙার ভয়টা আবার আঁকড়ে ধরে ওকে।

সেদিনের পর থেকে রোজই প্রায় সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা হতে লাগলো দু'জনের। দু'জন-দু'জনকে ভালোভাবে জানতে শুরু করেছে, 'আপনি' থেকে 'তুমি'- টা কবে চলে আসলো নিজেরাই বুঝতে পারলো না। তবু লাবণ্যর মনের মধ্যে একটা কিন্তু ভাব রয়েই গেছে, সেটা থেকে বেরোতে পারেনি এখনও।

রাতে ডিনার সেরে রুমে এসে দেখে সৌদার্য কল দিচ্ছে, কলটা রিসিভ করলো লাবণ্য।
অন্তিম পর্ব

অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১ পর্ব ২ পর্ব ৪ পর্ব ৪

Next Bengali Love Story