Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

ডাকবাক্স

Bengali Novel

All Bengali Stories    82    83    84    85    86    87    88    (89)     90    91    92   

-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------



ডাকবাক্স ( পর্ব ১০ )

লেখক - রাজকুমার মাহাতো, মহেশতলা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, কলিকাতা

অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১    পর্ব ২    পর্ব ৩    পর্ব ৪    পর্ব ৫    পর্ব ৬    পর্ব ৭    পর্ব ৮    পর্ব ৯    পর্ব ১০   

◕ পর্ব ১০

পর্ব ১০

অরিন্দম সেই যে গেল আর ফিরে আসে নি। যেদিন তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল সেদিনও না। হয়ত অনুর বিশ্বাসে জোর ছিল না। নাকি অরিন্দমের ভালবাসায়। অনু অপেক্ষা করেছিল, না বউ সেজে অপেক্ষা করে নি। কারণ বিয়েটা যে হবে না আর অরিন্দম যে আসবে না সেটা অনু ছাড়া সবাই জানত। তবুও অনুর বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে অল্প কিছু আয়োজন করে রেখে ছিল দুই পরিবার।

বিয়ের দিন সকালে কেউ অনুকে হলুদ মাখায় নি। অনুর বিয়ের কেনা বেনারসিটা পাশে রেখে সারাদিন অপেক্ষা করল অনু। সন্ধের দিকে জগদীশবাবু এলেন অনুদের বাড়ি। দু'হাত জোড় করে ছেলের হয়ে ক্ষমা চাইলেন অনুর বাবা-মায়ের কাছে। পাহারের মত একটা সাহসী সম্মানীয় লোক যখন ক্ষমা চাইলেন তখন বংশীবাবু ওনার হাত দু'টো ধরে বললেন, "আপনি ক্ষমা চেয়ে আমাকে লজ্জা দেবেন না। আমার মেয়ের কপালটাই হয়তো খারাপ।"

অনু পাশে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে তখন। জগদীশবাবু বললেন, "আপনারা চাইলে অনু-মা'র বিয়ে আমি আজকেই দিতে পারি।"

চমকে উঠল অনু। বংশীবাবু বললেন, "মানে? কি বলছেন আপনি?"

জগদীশবাবু বললেন, "একটা ছেলে আমার মারা গেছে তাই আর একটা ছেলেকে আমি অনুর সিঁথিতে সিঁদুর দিতে দেখতে চাই। আপনারা চাইলে অনুকে আমি সুরিন্দমের সাথে বিয়ে দেব।"

বংশীবাবু অনুর দিকে তাকালেন। প্রমিলাদেবী অনুকে বললেন, "এবার রাজি হয়ে যা মা। আর জেদ করিস না। সে যদি সত্যিই তোকে ভালবাসতো তাহলে আজ আসতো।"

অনু জল ভরা চোখ নিয়ে একটু হেসে বলল, "একজনকে ভালবেসে আর একজনকে বিয়ে করব মা? সুখী দেখতে পারবে তো আমায়?"

মুখটা নিচের দিকে করে প্রমিলাদেবি বললেন, "নিজের মেয়েকে লগ্ন-ভ্রষ্টা শুনতে যতটা কষ্ট হবে। তার থেকে তুই ওই বাড়িতে সুখীই থাকবি হয়ত। তাছাড়া এখন কত আর সুখী দেখছি তোকে?"

বংশীবাবু অনুর পাশে এসে অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, "অনু, যেটা তোর মন চায় সেটা কর মা। সমাজ কি বলল সেটা ভেবে লাভ নেই।"

অনু বাবাকে জড়িয়ে ধরে হাঊ-হাউ করে কেঁদে উঠলো। "আমি পারব না বাবা। আমি অরিন্দমকে ছেড়ে আর কাউকে কোনদিন ভালবাসতে পারব না বাবা। আমাকে ক্ষমা করো তোমরা।"

বংশীবাবু জগদীশবাবুকে বললেন, "আপনি চিন্তা করবেন না জগদীশবাবু। আমার মেয়েকে আমরা এই ভাবেই নিয়ে থেকে যাব। আমার মেয়ে তো এত সহজে সব ভুলতে পারবে না। আপনি এখন আসুন।"

যাওয়ার সময় জগদীশবাবু অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, "তোর মত একটা মেয়েকে যে ও কি করে পেল জানি না মা। তবে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি যেন তুই তোর ভালবাসা পাস। আমার ঘরের দরজা সব সময় তোর জন্য খোলা থাকবে।"

বাবাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদল অনু। তার সংসার করার স্বপ্ন আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল অনু। রাগে ক্ষোভে অভিমানে তার আত্মহত্যা করার ইচ্ছে হল। চেঁচিয়ে বলতে ইচ্ছে হল, "কেন ভালবাসলে না আমায় অরিদা? কেন?"

কিন্তু তার মনে পড়ল কথা দিয়েছিল সে অরিন্দমকে যে, তার কোন কাজে কোনও বাধা দেবে না কোনদিন। বুক ফুলিয়ে বলেছিল তাকে যে, সে ভালবাসে বলে অরিন্দমকেও ভালবাসতে হবে এমন কোনও কথা নেই। একটু মুচকি হেসে আবার একবার সে নতুন করে ভালবাসতে শুরু করল অরিন্দমকে। ভালবাসা হয়ত এমনিই হয়।

কিছুদিন পর ডাকঘর থেকে কাল পিওন একটা চিঠি নিয়ে এল। অনু চিঠিটা খাম ছিঁড়ে বের করে পড়া শুরু করল,
"প্রিয় অনু,
জানি বড় অপরাধ করেছি আমি তোর সাথে। কোনও অজুহাত দেব না। তবে এটুকু বলব, যাই নি বলে ভাবিস না ভালবাসি না। আমি যেতে পারি নি এদের ছেড়ে। এক-একজন এক-এক খামে আমায় বন্দি করে রেখেছে। কি করে যাই বল তো? জানি তোর অপরাধী আমি। আমাকে শাস্তি দিস,আমাকে ভুলে যাস অনু। বিয়ে করে নতুন সংসার গড়িস। তোর সংসার করার স্বপ্নটা পূরণ হবে, হোক না মানুষটা আলাদা। বাড়িতে ফোন করতে পারি নি, এখানে কোথাও ফোনের প্রচলন নেই। ওদের একবার করে দেখে আসিস। আমি এখানে আরও সাতদিন আছি। তারপর আবার অন্য জায়গায় ডেরা বাঁধব। আবার সমস্যায় জর্জরিত মানুষ খুঁজব। পারলে একটা এই চিঠির উত্তর কাগজে খুঁড়ে ডাকবাক্সে ফেলে দিস। অনু বিয়ে করিস। আমার মত একটা ভবঘুরেকে ভালবেসে কোনদিন সুখী হতে পারবি না। ভালো থাকার জন্য যা দরকার, যতটুকু দরকার সব করিস। ভালো থাকিস অনু।
ইতি
অরিন্দম
কাঙ্কের,ছত্তিসগড় ১৯৯৭

অনু চিঠিটা বন্ধ করে খানিকক্ষণ বসে থাকল চুপ করে তারপর একটা সাদা কাগজে লিখল,
প্রিয় অরিদা, কথা দিয়েছিলাম যেখানে যেমন ভাবে রাখবে সেই ভাবেই তোমায় ভালবাসবো। কিভাবে কথার খেলাপ করব বলতো? শুধু তোমাকেই ভালবাসি আর আজীবন ভালবেসে যাব হয়ত এই ভাবেই এই ঘরেই একা আমার একাকীত্ব নিয়ে বন্ধ থেকে। এখনও মনের কোনও কোনে আশা আছে একদিন তুমি এসে বলবে, " অনু চল সংসার গড়ি।" সেদিনের অপেক্ষা করব অরিদা। ভাল থেকো। আমার ভাল থাকার উপায় আমি বেছে নিয়েছি তোমায় ভালবেসে।
-ইতি
তোমার
অনু
কলকাতা

ডাকবাক্সে ফেলে এল অনু এই চিঠিটা। তারপর অনেকবার অরিন্দমের চিঠি এসেছে অনুর কাছে। প্রতিবার আলাদা-আলাদা জায়গা থেকে। তাই অনু শুধুই অরিন্দমের চিঠি পড়ত, তার আর উত্তর দেওয়া হত না। কারণ যতক্ষণে চিঠি সেই ঠিকানায় পৌঁছাবে ততক্ষণে অরিন্দম অন্য জায়গায় ডেরা বেধে ফেলেছে হয়ত। অনু বুঝে গেল তার এই ভালবাসার লড়াইটা তাকে একাই লড়তে হবে। অরিন্দম নিজের জংগল আর সেখানে থাকা মানুষগুলোকে নিয়ে খুশি থাকল, আর অনু অরিন্দমের ভাগ হয়ে যাওয়া ভালবাসা নিয়ে।
Next Part

অন্য পর্বগুলিঃ পর্ব ১    পর্ব ২    পর্ব ৩    পর্ব ৪    পর্ব ৫    পর্ব ৬    পর্ব ৭    পর্ব ৮    পর্ব ৯    পর্ব ১০   


All Bengali Stories    82    83    84    85    86    87    88    (89)     90    91    92   


## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717