All Bengali Stories
82
83
84
85
86
87
88
(89)
90
91
92
-------- বিজ্ঞপ্তি ----------
■ আমাদের এই ওয়েবসাইট ( RiyaButu.com )-এ প্রকাশিত গল্পগুলির মধ্যে থেকে কিছু গল্প নিয়ে এবছরই প্রকাশিত হবে আমাদের 'রিয়াবুটু'র গল্প'।
--------------------------
◕
ডাকবাক্স ( পর্ব ১১ )
লেখক - রাজকুমার মাহাতো, মহেশতলা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, কলিকাতা
অন্য পর্বগুলিঃ
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
পর্ব ৪
পর্ব ৫
পর্ব ৬
পর্ব ৭
পর্ব ৮
পর্ব ৯
পর্ব ১০
পর্ব ১১
◕
পর্ব ১১
পর্ব ১১
তারপর প্রায় আরও একবছর কেটে গেছে। মাঝে-মাঝে অরিন্দমের এক-একটা চিঠি আসে অনুর কাছে। ডাকবাক্স আর চিঠির মাধ্যমেই তাদের প্রেমটা আজ জীবিত।
তাছাড়া এই এক বছরে স্বপ্নে ছাড়া অরিন্দমকে দেখেনি অনু। কিরকম দেখতে হয়েছে তার অরিদা, জানে না সে। হয়তো অরিন্দমেরও একই ভাবনা, সেও তো গত এক বছর অনুকে দেখেনি।
অনুর চোখে যে একটা মোটা ফ্রেমের চশমা লেগেছে সেটাও জানেনা তার অরিদা।
নিস্তব্ধ একটা ভালবাসা দু'জনেই বয়ে বেড়াচ্ছে সেই কবে থেকে। যে ভালবাসাতে কোনও চাওয়া-পাওয়া নেই। নেই একে-অপরকে ছুঁয়ে দেখার সেই ইচ্ছেটা। শুধু আছে একরাশ অপেক্ষা,
যে অপেক্ষার শেষ কোথায় তা তারা দু'জনের কেউই জানে না। এর মধ্যে প্রমিলা দেবী দ- তিনটে সম্পর্ক এনেছিলেন অনুর বিয়ের জন্য। কিন্তু অনু রাজি হয়নি।
আবেগ দিয়ে, রাগ দেখিয়ে, কোনভাবেই অনুকে তার নিজের জায়গা থেকে নড়াতে পারেন নি তিনি। তাই তিনিও চেষ্টা করা ছেড়ে দিয়েছেন।
হঠাৎ জোড়ে একটা গানের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল অনুর। চোখটা কচলে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে অনু। সাড়ে ছটা বেজে গেছে অলরেডি,
আর আজ সাতটার সময় তাদের নন্দনে একটু আড্ডা দেওয়ার কথা। নন্দনের বয়স তখন চার পাঁচ বছর হবে। সে বাবা-মাকে বলে রেখেছিল সেটা।
তাই বংশী বাবু রেডিওটা অনুর ঘরের সামনে এনে একবার ফুল সাউন্ড দিয়ে মেয়েকে জাগানোর দায়িত্বটা পালন করলেন।
বুকের ওপর রাখা সাদা-কালো ছবিটা আবার তার আগের জায়গায় রেখে দিল অনু। আর একবার তার পুরানো দিনগুলো বেঁচে নিল সে।
বাবাকে মনে-মনে ধন্যবাদ দিয়ে শাড়িটা বদলে ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে গেল অনু। মাকে বলে গেল, "মা আসছি। আসতে একটু দেরি হতে পারে।" যেহেতু আগে থেকেই বলা ছিল তাই প্রমিলা দেবীও আর কিছু বলল না।
অনু যখন নন্দনে পৌঁছল তখন সাড়ে সাতটা বেজে গেছে অলরেডি। অদিতি, অর্ণব, রমা বড়-বড় করে চোখ বের করে তার দিকে তাকিয়ে।
"সরি-সরি, দেরি হয়ে গেছে। একটু ঘুমিয়ে পরেছিলাম।"
"হ্যাঁ তুমি তো মহারানী কিনা, তোমার জন্য আমরা সবাই প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ওয়েট করছি," অদিতি কৌতুকের সুরে বলল।
রমা বলল, "এবার চলুন ওই ফাঁকা জায়গাটায় গিয়ে বসি।"
চারজনে গিয়ে পাশের একটা ফাঁকা জায়গায় বসল। পাশের হারান-দার দোকান থেকে মাটির ভাঁড়ে চার কাপ চা নিয়ে এল অর্ণব। অর্ণব চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলল, "অনু, অরিদার কোন খবর পেলি?"
অনুও চায়ের চুমুকটা শেষ করে বলল, "হ্যাঁ আজকেই একটা টেলিগ্রাম এসেছে।"
"কোথায় আছেরে মালটা?"
"বিহারের বাসদেরা নামে একটা গ্রাম থেকে লিখেছে চিঠিটা।"
অদিতি বলল, "কি লিখেছে?"
"ওই লিখেছে, ওর চিন্তা না করতে। ও ভালোই আছে। আর আমি যেন বিয়ে করে নেই। প্রতিটা চিঠিতে যেরকম লেখে আর কি।"
"অনু, তুই কি বিয়ে করবি না?"
অনু হেসে বলল, "অবশ্যই করব। অরিদা আসুক।"
অদিতি খানিকটা চটে গিয়েই বলল, "তুইও জানিস অনু, অরিদার দ্বারা এসব সংসার ধর্ম পালন করা সম্ভব নয়।"
"আর সংসার করার স্বপ্ন দেখিনা রে। এখন ভাবি, ও এলে ওর সাথে জঙ্গলে-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াব। ওর ভালবাসার মানুষগুলোর সাথে নিজেকে মিশিয়ে দেব। তখন দেখবি, আর আমাদের মধ্যে দূরত্ব থাকবে না।"
অদিতির রাগটা আরও বেড়ে গেল। একপ্রকার চেঁচিয়েই বলল সে, "পাগল নাকি তুই?"
অণু হেসে বলল, "হ্যাঁরে ঠিক বলেছিস।"
অদিতি এবার একটু নরম হয়ে বলল, "পাগলামি করিস না অনু। এভাবে জীবন চলে না।"
"তোরা কি আমায় এসব আলোচনার জন্য এখানে ডেকেছিস? আমার বাড়িতে সারাদিন এই আলোচনাটাই চলতে থাকে বিশ্বাস কর। তোদের কাছে এসেও যদি এসব নিয়ে আলোচনা করতে হয়, আমি তাহলে আসলাম।"
"সবাই তোর ভাল চায় অনু। কোনও বাবা-মায়ের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তুই নিজেকে তাদের জায়গায় রেখে দেখ।"
"ওনারাও বা তোরাও নিজেকে আমার জায়গায় রেখে দেখ। পারবি? পারবি না। যে যার জায়গাটা একমাত্র সে ছাড়া আর কেউ বোঝে না অদিতি। তাই যে যার জায়গায় অনড় থাকি।
আর যেভাবে চলছে জীবনটা চলতে দিই।"
অদিতি এবার অনুর হাতটা ধরে বলল, "বিশ্বাস কর তোদের ভালবাসাটা বুঝি না রে। একে-ওপরের থেকে এত দূরে আছিস, তাও তোদের ভালোবাসায় কোন কমতি আসে না। কোথা থেকে আনিস এত পজিটিভ এনার্জি?"
অনু মুচকি হেসে বলল, "সত্যি কাউকে কোনদিন ভালবেসেছিস অদিতি? যদি বাসতিস এই প্রশ্নটা আজ করতিস না আমাকে।"
কিছুক্ষণ সবাই চুপ থাকল। তারপর অর্ণব বলল, "আড্ডা মারতে এসেছিস নাকি শোক মানাতে?"
এবার চারজনে নানারকম অন্য কথার মধ্যে দিয়ে আড্ডা দেওয়া চালু করল। অনেকদিন পর বেশ কিছুটা মন খুলে হাসল অনু। ঠিক যেন কড়া রোদের পর এক পশলা বৃষ্টি।
বাড়িতে ফিরতে সাড়ে ন'টা বেজে গেল অনুর। মা একটু বকাঝকা করলেও বাবা নিজের রেডিও নিয়ে ব্যস্ত। রাতের খাবার খেয়ে অনু নিজের ঘরে চলে গেল।
বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আবার ডাইরিটা খুলল অনু। না, তার ডাইরির ভেতর থেকে পড়ল না কোন শুকনো গোলাপ অথবা কোন পুরানো কার্ড। তার ডাইরির ভেতর খালি কতগুলো চিঠি।
প্রতিটা চিঠির ঠিকানা আলাদা কিন্তু নামটা একটাই; অরিন্দম।
এই সাদাকালো ছবিটা আর এই কয়েকটা চিঠিই অনুর কাছে তার ভালবাসার প্রেরণা। তার বাঁচার তাগিদ। আর কিছুই নেই তার কাছে অরিন্দমের নামের।
কিছু রাখতেও চায় না সে। কারণ তার অরিদা তার মনে আছে। সে প্রতিদিন অরিন্দমের সেই প্রথম ছোঁয়াটাকে অনুভব করে। অরিন্দমের গায়ের গন্ধ তার প্রতিটা চিঠিতে পায় অনু।
তার কাছে ভালবাসাটা এরকমই। সত্যিই হয়ত একবার যাকে ভালবাসা যায়। তাকে জীবনে কোনদিন ভোলা যায় না।
Last Part
অন্য পর্বগুলিঃ
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
পর্ব ৪
পর্ব ৫
পর্ব ৬
পর্ব ৭
পর্ব ৮
পর্ব ৯
পর্ব ১০
পর্ব ১১
All Bengali Stories
82
83
84
85
86
87
88
(89)
90
91
92
## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers.
The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation.
Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##
◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717