Home   |   About   |   Terms   |   Library   |   Contact    
A platform for writers

স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা, মে -২০২৩

নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার -২০২৩

■ আগের বছরের ফলফলগুলিঃ     ২০২৩ এর ফলাফল     ২০২২ এর ফলাফল     ২০২১ এর ফলাফল     ২০২০ এর ফলাফল     ২০১৯ এর ফলাফল    

নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার, মে- ২০২৩
ফলাফল


প্রিয় লেখক / লেখিকা, যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন তাদের সবাইকে অনেক-অনেক ধন্যবাদ। আমরা দেশ, বিদেশ থেকে অনেক গল্প পেয়েছি। সবাইকে অনেক-অনেক অভিনন্দন, অনেক-অনেক ধন্যবাদ। এই বছরের 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার -২০২৩' এর ফলাফল নীচে দেওয়া হল। বিজয়ী গল্পটি ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আরও কিছু নির্বাচিত গল্পের তালিকা, লেখক / লেখিকার নাম ও প্রকাশের তারিখ সহ নিচে দেওয়া হল। বিজয়ী গল্পটি আপনারা সম্পূর্ণ নীচে পড়তে পারবেন।
এই বছরের বিজয়ী গল্পটি হল

স্বপনবাবুর শেষদিন
লেখক: অগ্ৰদীপ দত্ত, বাবা - বিপ্লব দত্ত, হেইদার পারা, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ

story-competition-2023

স্বপনবাবুর শেষদিন

( বিজয়ী গল্প, 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার - মে, ২০২৩' )

লেখক - অগ্ৰদীপ দত্ত, বাবা - বিপ্লব দত্ত, হেইদার পারা, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, পশ্চিমবঙ্গ

##
আবার ভুল করে ফেললেন স্বপনবাবু। মাথাটা এবারও পুরো ব্ল্যাংক হয়ে গেল। দু'তিন বার কিছু একটা বলার চেষ্টা করে থেমে গেলেন। কী বলবেন ভেবে পেলেন না। প্রচণ্ড বিরক্তিতে হোয়াইট-বোর্ডের উপর 'বিবর্তনের ইতিহাস' লেখাটা হাতের তালু দিয়ে ঘষে সাফ করে দিলেন। অন্য একটা চ্যাপ্টারের নাম লেখার জন্য মার্কার তুলে নিলেন টেবিলের উপর থেকে। 'এরপর থেকে প্রত্যেকটা দিনই রবিবার', ভাবনাটা জোঁকের মতো সেঁটে বসে আছে মনের ভেতর। যতবারই তাড়ানোর চেষ্টা করছেন চাপা একটা উত্তেজনা, ভয়, যন্ত্রণা মিলেমিশে এক বিশ্ৰী অনুভূতি। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রাণীবিদ্যার একটা চ্যাপ্টার পড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন স্বপনবাবু। কিন্তু শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই আটকে যাচ্ছেন বারবার। মাথা পুরো ব্ল্যাংক। তিনি ক্লাসে বই ছুঁয়ে দেখেন না কোনোদিন। আজও দেখছেন না। বোর্ডের উপর 'কোশতত্ত্ব' হেডলাইনটা লেখার পর স্বপনবাবুর আচমকাই সেই রাতের কথা মনে পরে গেল। পঁয়ত্রিশ বছর আগে, স্কুল-জয়েনিং এর ঠিক আগের রাত। পরের দিন জীবনে প্রথমবার ক্লাস নিতে যাওয়ার উত্তেজনা, আনন্দ মেশানো রাত। বাবা, দাদা, মায়ের 'ঘাবড়ে যাচ্ছিস কেন?' বলা ধমক দেওয়া রাত। সেই রাতেও তিনি নিজের ফাঁকা ঘরে কাল্পনিক ছাত্রদের পড়ানোর রিহার্সাল করতে গিয়ে বারবার হোঁচট খাচ্ছিলেন। ঠিক আজ যেমনটা খাচ্ছেন। কালকে জীবনের শেষবার ক্লাস নিতে যাবেন স্বপনকুমার।

ঘরের কোণায় এতদিনের অযত্নে পড়ে থাকা ধুলো-ঝুল মাখা হোয়াইট-বোর্ডটা ঝেড়ে দেওয়ালে টাঙিয়েছেন। ল্যাম্প, বই, পেন-টেনগুলো উপর থেকে সরিয়ে বোর্ডের সামনে টেবিল এনে কাঠের চেয়ারটা টেনে পাশে রাখার পরই রিহার্সাল শুরু। হতাশ হয়ে বিছানায় এসে বসলেন স্বপনবাবু। দলা পাঁকিয়ে যাচ্ছে সব। লাস্ট ক্লাস, ফেয়ারওয়েল, বিদায়ী বক্তৃতা, চোখের জল... এসব বিক্ষিপ্ত ভাবনাগুলো বিষ পিঁপড়ের মতো কামড়ে যাচ্ছে বারবার। কাল যখন ছাত্ররা পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে আসবে সকলের চোখে ধুলো দিয়ে নিজের চোখের জল আড়াল করতে পারবেন তো? ভাবামাত্রই ছ্যাঁত করে উঠল বুকটা। দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে দেখলেন মালা ঝোলানো ফটো-ফ্রেমের ভেতর মিতালী হাসছে।

#
হাঁফাতে -হাঁফাতে বাসে উঠে নির্ধারিত সিট 'সিনিয়র সিটিজেন'-এ এসে বসলেন স্বপনকুমার। জানালার কাঁচ ঠেলে সরালেন পুরোটা। স্কুল পঁয়তাল্লিশ কিলোমিটার দূরে। এ বয়সে আর ডেইলি প্যাসেঞ্জারির ধকল সয় না। চাইলেই ট্রান্সফার নিয়ে কাছে-পিঠে কোনও একটা স্কুলে চলে আসতে পারতেন। নেন নি।

#
মিতালী মারা গেছে প্রায় তিন বছর। এই তিনটা বছরে স্কুলটা যেন তার জীবনের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে একেবারে। মনেপ্রাণে চাইতেন রবিবারেও ছুটে আসতে স্কুলে। ও বাড়িতে সারাদিন থাকার কথা ভাবলেই আঁতকে ওঠেন তিনি। নিজেদের পছন্দ মতো দেখে-শুনেই ছেলের বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কপাল পোড়া থাকলে হাজার দেখে-শুনে বিয়ে দিয়েও কোনও লাভ থাকে না। বিয়ের দু'বছরের মধ্যেই ফ্লোর ভাগ হল। ছেলের বৌ আলাদা ফ্ল্যাটে চলে যাওয়ার দাবী তুললেও সেটা হয় নি। তাই উপরের তলায় স্বপনবাবু আর তার স্ত্রী মিতালী। ছেলে, ছেলের-বৌ নিজেদের সংসার গুছিয়ে নিল নীচ তলায়। উপর-নীচ দুটো তলার দূরত্ব যেন কোটি-কোটি মাইল। একে অপরের গায়ে নিঃশ্বাস ফেলে এভাবেই চলছিল। তারপর হঠাৎ একদিন দুম করে মিতালী চলে গিয়ে ফটোফ্রেমে ঢুকে পড়ল।

#
"জায়গা আছে?"

জানালা থেকে চোখ সরিয়ে স্বপনবাবু দেখলেন এক বয়স্ক ভদ্রমহিলা তার দিকে তাকিয়ে। কাঁধ-ব্যাগটা পাশের সিট থেকে কোলে তুলে নিলেন স্বপনবাবু। ভদ্রমহিলা সিটে বসে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিলেন। বাচ্চাটাকে দেখেই বুকটা টনটন করে উঠল। বাড়িতে এরকমই একটা ফুটফুটে নাতি থাকা সত্ত্বেও তাকে স্পর্শ করতে পারেন না তিনি। ওর মা আসতে দেয় না উপরে। তাও মাঝে-মাঝে লুকিয়ে উপরে চলে আসে খেলতে। ঐটুকুই।

দুরন্ত গতিতে ছুটছে বাস। খোলা জানালা দিয়ে সাঁইসাঁই করে ঠাণ্ডা হাওয়া ঢুকছে। বাইরের দিকে তাকিয়ে স্বপনবাবুর মনে হল এত তাড়া কিসের? আস্তে চালালেই বরং ভালো। আর একটাই তো ক্লাস নেওয়া বাকি!

#
"রোল নম্বর টুয়েলভ...ঋত্বিক বিশ্বাস..."

স্বপনবাবু শুধু রোল নম্বর ডাকেন না, রোলের সাথে নামটাও ডাকেন। এতে প্রত্যেকটা স্টুডেন্টের নামের সঙ্গে মুখটাও মনে থেকে যায়।

"ইয়েস স্যার..."

"থার্টিন...দেবাঞ্জন রায়..."

রোল কলের সময় স্বপনবাবুর একটা অদ্ভুত অভ্যাস হল ছাত্রটিকে খুঁটিয়ে দেখা। কে-কীভাবে রোল কলের সাড়া দেয় সেটা দেখতে ভীষণ আকর্ষণ বোধ করেন তিনি।

"থার্টিন...দেবাঞ্জন..."

"ইয়ে... ইয়েস স্যার..."

আশপাশ থেকে হাসির গুঞ্জন শোনা গেল।

এই ছেলেটা সত্যিই অদ্ভুত! রোল কল মিস করা ওর নিত্য দিনের অভ্যাস। স্বপনবাবু কড়া গলায় বললেন "কী ব্যাপার আজকেও?"

"হ্যাঁ... মানে... না স্যার, ভুলে গিয়েছিলাম..."

ওর মুখের সরলতা দেখে হাসি পেল স্বপনবাবুর।

"রোল ফরটিন...সৌরভ সিনহা..."

চোখ পড়ল টেবিলের এক কোণায় রাখা রঙচটা অকেজো কাঠের বেতটার দিকে। বেতের ব্যবহার অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছেন। এক সময় কম বেত ভাঙেন নি ছাত্রদের পিঠে। পরে যখন সেই ছাত্রগুলোই ভালো নম্বরে-ভর্তি মার্কশিট নিয়ে প্রণাম করতে এসেছে বেতের বদলে হাত দিয়েই চাপড়ে দিয়েছেন পিঠ।

"প্রেজেন্ট স্যার..."

অন্যান্য দিনের চাইতে আজ অত্যধিক মন্থর গতিতে রোল কল করছেন স্বপনবাবু। প্রতিটা ক্লাসেরই আলাদা-আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। নানা ধরণের ছাত্র। কে বসেই অ্যাটেন্ডেন্স দেওয়ার চেষ্টা করে, কে সোজা স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে, কে হাফ দাঁড়িয়ে, আর কে বদমাশি করে অন্যের রোল অ্যাটেন্ড করে, সব পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মুখস্থ থাকা সত্ত্বেও আজ শেষবারের মতো খুঁটিয়ে দেখে নিতে মন চাইছে। রোল কল শেষ করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন স্বপনকুমার। রেজিস্টারের খাতায় লেখা নামগুলোর উপর হাত বোলালেন কয়েক মুহূর্ত। এই কাঠের চেয়ারে কাল থেকে অন্য কেউ... টেবিলের উপর থেকে চকের টুকরো তুলে ব্ল্যাক-বোর্ডের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় স্বপনবাবুর মনে হল কিছু অভ্যাস চাইলেই ছেড়ে ফেলা যায় না। 'ঢং' করে ঘণ্টার আওয়াজ স্কুলের প্রতিটা ইট কাঁপিয়ে দিল। কিন্তু হাতুড়ির ঘা-টা ঘণ্টায় নয় সোজা এসে লাগল স্বপনবাবুর বুকের বা'দিকে। ক্লাস নিতে গিয়ে খেয়ালই করেননি সময় কখন ফুরিয়ে গেল। জীবনের শেষ ক্লাসগুলোর সময়সীমা বড্ড কমই হয় বোধহয় । তাই বলে এত তাড়াতাড়ি!! কথাটা যেন বিশ্বাস হতে চাইল না। কয়েক মুহূর্ত ক্লাসের প্রতিটা ছাত্রের দিকে স্থিরভাবে তাকিয়ে রইলেন। কথা, হাসির মৃদু গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। কেউ-কেউ উঠে দাঁড়িয়েছে। নিজেকে আর সামলে রাখতে না পেরে এতদিনের পরিচিত ক্লাসরুমের দরজা দিয়ে শেষবারের বেরিয়ে আসলেন স্বপনকুমার।

#
"যোগাযোগটা নষ্ট করবেন না। যখন ইচ্ছে হবে চলে আসবেন স্বপনদা..." কথাটা বলে অতনু একটু থামলো। পাশ থেকে অভিজিৎ গুহ বলে উঠলেন, "আরে স্বপনদা যা মানুষ, দেখা গেল কালকেই আবার সেভেন বি-তে ঢুকে রোল কল করা শুরু করে দিয়েছেন..." কথাটা শুনে হেসে উঠল সবাই। স্বপনবাবুও হাসার চেষ্টা করলেন। হাসি এল কি-না ঠিক বুঝতে পারলেন না। তার চোখ বারবার পিছলে চলে যাচ্ছে টিচার্স রুমের দক্ষিণ দিকের দাঁড় করানো সার-সার লকারগুলোর দিকে। ভেতর-ভেতর একটা উত্তেজনা হচ্ছে। তাই অন্য কারোর কথা সেভাবে কানে ঢুকছে না। আজই কাজটা করে ফেলতে হবে। এরপর আর সুযোগ পাওয়া যাবে না। ঠিক তখনই হেডমাস্টার সুজন সোমরায় এসে ঢুকলেন, "এই তোমরা সবাই হল ঘরে চলে যাও। কুইক। সব রেডি। আমি উদ্যালককে বলে দিয়েছি; ও স্টুডেন্টসদের নিয়ে যাচ্ছে।" স্বপনবাবুর দিকে তাকিয়ে বললেন "স্যার চলুন উপরে।"

এই মুহূর্তে নীচে বিশেষ কেউ নেই। হল ঘর গিজগিজ করছে। স্টুডেন্ট-টিচার, নন-টিচিং স্টাফে। আর কয়েক মিনিটের মধ্যেই শুরু হবে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এই মোক্ষম মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন তিনি। সুজন সোমরায়কে "একটু আসছি" বলে নীচে নেমে এলেন স্বপনবাবু। লম্বা বারান্দা। একের পর এক পাল্লা ভেজানো ক্লাসরুম পেরিয়ে এসে পৌঁছালেন অমলের চায়ের দোকানে। টিফিনে কলিগরা মিলে অমলের চায়ের দোকানেই আড্ডা জমাতে আসতেন। সুখ-দুঃখ, রাগ-বিরাগ, বিজ্ঞান-রাজনীতির প্রসঙ্গে কখন যেন তৈরি হয়ে যেত চা। কিন্তু আড্ডা থামতো না। আজ থামল। বকেয়া পঁচিশ টাকা মিটিয়ে রাস্তা পার হয়ে স্কুলের মেন-গেটের সামনে এসে দাঁড়ালেন স্বপনকুমার। এখান থেকে একশো বছরের পুরানো লাল বিল্ডিংটার সমস্ত অংশ চোখে পড়ে। এই স্কুলের প্রতিটা ইট, মাঠের প্রতিটা ঘাস তার চেনা। স্বপনবাবু হাঁটা শুরু করলেন। ক্লাসরুমের ঘ্রাণ নিতে-নিতে পৌঁছে গেলেন স্কুলের পেছন দিকটায়। এদিকে টয়লেট। পরীক্ষার সময় টুকলি করতে আসা কত ছেলেকে হাতে-নাতে ধরেছেন তিনি। বেতের বাড়িতে ঠেঙিয়ে স্বভাব বদলেছেন। আজ চোখের সামনে সেসব দৃশ্য জ্যান্ত হয়ে ধরা দিচ্ছে বারবার। সেদিক দিয়ে ঘুরে টিচার্স রুমের পেছনের দরজায় যখন এসে দাঁড়ালেন দেখলেন কৌশিক তালুকদার কী যেন একটা কাজ করছেন। দরজার আড়ালে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলেন স্বপনকুমার। নিজের হৃৎস্পন্দন ছাড়া আর কিছুই কানে আসছে না। খানিকক্ষণ পর কৌশিকবাবু বেরিয়ে যাওয়াতে স্টাফরুম পুরো ফাঁকা। এদিক-ওদিক চোখ বুলিয়ে স্বপনকুমার ঢুকে পড়লেন ভেতরে।

#
খুব বেশি রাত না। স্বপনবাবু বিছানায় শুয়ে আছেন আলো নিভিয়ে। মাথার ভেতর অসহ্য যন্ত্রণা। চোখের পাতা জুড়ে হাল্কা-হাল্কা তন্দ্রা ভাব। সারাটা দিন স্বপ্নের মতো কাটল। কাল থেকে আর স্কুল নেই কথাটা ভাবলে এখনও শিউড়ে উঠছে গা। বাকি জীবনটা এই পরিত্যক্ত শ্মশান বাড়িতে বন্দি হয়ে কাটাতে হবে! বুকের মধ্যে জোরে-জোরে কয়েকটা কিল বসিয়ে কাঁদতে চাইলেন। নিঃশব্দে চিৎকার করে বুঝতে পারলেন চোখে আর জল নেই। ফুরিয়ে গেছে সব। বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষের কয়েকটা মুহূর্ত ভেসে উঠল চোখের সামনে। সারাটা দিন নিজেকে সামলে রাখলেও স্টুডেন্টরা যখন প্রণাম করতে এসে তাকে জড়িয়ে ধরল, আর সামলাতে পারলেন না। তাদের বুকে টেনে জড়িয়ে ফেটে পড়লেন কান্নায়। শেষবার মিতালীর ডেড-বডিটা জড়িয়ে এরকম কেঁদেছিলেন। ছাত্রদের সবার চোখে জল। তাদের অত্যন্ত প্রিয় একজন শিক্ষক আজ....

"দাদাই..."

ডাকটা শুনে হুড়মুড় করে উঠে বসলেন স্বপনবাবু। তাকিয়ে দেখলেন তার বছর পাঁচেকের নাতি দরজার কোণা থেকে উঁকি দিচ্ছে। অসহ্য মাথা যন্ত্রণা নিয়ে শরীরের অবশিষ্ট শক্তিটুকু প্রয়োগ করে প্রায় এক লাফে বিছানা ছেড়ে উঠে সুইচ টিপে লাইট জ্বালালেন, "দাদুভাই তুই!! আয় আয় ভেতরে আয়। আয় আমার কাছে..." নাতিকে কোলে তুলে বিছানায় বসালেন স্বপনকুমার, "মা বকবে না? তুই এলি যে?"

"মা তো টিভি দেখছে। টেরই পায়নি। আমি চুপচুপ করে এসেছি।"

স্বপনবাবু জড়িয়ে রইলেন নাতিকে। আচমকা চোখ পড়ল টেবিলের উপর রাখা সাইড ব্যাগটার দিকে। কয়েক মুহূর্ত কিছু একটা ভাবলেন। তারপর উঠে গিয়ে ব্যাগের চেন খুলে রেজিস্টারের খাতাটা বের করলেন। কাউকে না বলে লকারের ভেতর থেকে ক্লাস সেভেন বি এর অ্যাটেন্ডেন্সের এই খাতাটাই স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। রেজিস্টারের খাতায় লেখা নামগুলোর উপর পরম যত্নে হাত বোলালেন। তারপর একটু অদ্ভুত হেসে নাতির দিকে তাকিয়ে বললেন "দাদুভাই একটা খেলা খেলবি?"

"কী খেলা খেলব?" নাতির কৌতূহলী প্রশ্ন।

"কিছুই না, সোজা একটা খেলা..."

স্বপনবাবু তৎক্ষণাৎ কাঠের চেয়ারটায় গিয়ে বসলেন। পেছনে টাঙানো হোয়াইট-বোর্ড। সামনের বিছানায় তার নাতি বসে।

"আমি রোল কল করবো। আর তুই শুধু 'ইয়েস স্যার' বা 'প্রেজেন্ট স্যার' বলবি। প্রত্যেকটা নামের শেষে। ঠিক আছে?"

নাতিকে ঘাড় কাত করতে দেখে নিজের পুরানো কায়দায় রোল কল শুরু করলেন।

#
স্বপনবাবু ঘড়ির দিকে তাকালেন। তারপর আবার পায়চারি শুরু করলেন। রাতের এই সময়টুকুর জন্যই এখন সারাটাদিন অধীর হয়ে অপেক্ষা করে থাকেন। নাতি আসবে। বেশ কিছুদিন থেকে ঠিক এই সময়টাতেই আসছে। ওর মা এ সময় টিভিতে ডুবে থাকায় কোনোরকমে পালিয়ে চলে আসে কিছুক্ষণের জন্য, খেলাটা খেলতে। প্রত্যেকদিন রোল কল করার সময় একটা ঘোরের মধ্যে চলে যান স্বপনকুমার। তার পাঁচ বছরের অবুঝ নাতি খেলাচ্ছলে রোল কলে সাড়া দিয়ে যায় আর অবাক হয়ে দেখে প্রতিটা রোল কলের পর তার দাদু অদ্ভুত ভাবে তার দিকে তাকিয়ে কী যেন দেখে। কখনও কড়া গলায় ধমকে দেয়, কখনও মুচকি-মুচকি হাসে।

রেজিস্টারের খাতা খুলে অস্থির হয়ে পায়চারি করতে থাকেন স্বপনবাবু। নাতি আসলেই হাজার-হাজার হাসি, গুঞ্জন, চিৎকারে ভরে ওঠে ঘর। রোজ রাতে সবার অজান্তেই দোতলার এই টুকরো ঘর হয়ে যায় একশো বছর পুরানো একটি স্কুলের সেভেন-বি ক্লাসরুম।
(সমাপ্ত)

■ বিজয়ী গল্পটি ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আরও কিছু নির্বাচিত গল্পের তালিকা ,লেখক / লেখিকার নাম ও প্রকাশের তারিখ সহ নিচে দেওয়া হল-

■ নামে কি আসে যায়
লেখিকা: দেবিকা বসু, বাবা - দেবকুমার বসু, ইন্দিরাপুরম, গাজিয়াবাদ, উত্তরপ্রদেশ
Full Story

■ আমরা মানুষ
লেখিকা: জলি বসু ঘোষ, বাবা - মাখন লাল ঘোষ, বটতলা, বহরমপুর, কোলকাতা
Full Story

■ উৎসর্গ
লেখিকা: কাজী তৃণা লায়লা ( রুমকি ), বাবা - কাজী গোলাম রব্বানী, ঢাকা, বাংলাদেশ
Full Story

■ ওরা থেকে যায়
লেখক - রাজকুমার মাহাতো, সম্পামির্জানগর, মহেশতলা, কলকাতা
Full Story

■ কর্তাবাবুর জন্মদিন
লেখিকা: সুলেখা রায়, বাবা - ৺লক্ষ্মীকান্ত চৌধুরী, দমদম, কোলকাতা
Full Story

■ জীবন যুদ্ধ
লেখক: অভিজিৎ পাল, বাবা- মানিক চন্দ্র পাল, উদয়পুর, গোমতী, ত্রিপুরা
Full Story

■ ভাঙ্গনের পরে...
লেখিকা : সঙ্ঘমিত্রা রায়, বাবা- বাবুল রায়, করিমগঞ্জ বাজার, করিমগঞ্জ, আসাম
Full Story

■ মন যখন টানে
লেখিকা: পলা ভৌমিক (রত্না দেব বিশ্বাস ভৌমিক), বাবা- জিতেন্দ্র চন্দ্র দেব বিশ্বাস, কালীতলা, রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ
Full Story

■ কল্পবিজ্ঞান ভিত্তিক গল্প - পার্থেনোজেনেসিস্
লেখক: দিগন্তপাল, মা – অনামিকা পাল, বাবা – অচিন্ত্য কুমার পাল, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ
Full Story

■ বিপন্ন শৈশব
লেখক: রঞ্জিত দে, পিতা- প্রয়াত রমেশ দে, কাঁকুড়গাছি, কলকাতা
Full Story

■ গতানুগতিক
লেখক: সৌরভ নাথ, বাবা - সুরঞ্জন নাথ, হাটগাছা, বানীপুর, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ
Full Story

■ অতীনের ভুত
লেখক: মুকুট রায়, বাবা- স্বর্গীয় শ্রী কান্তি নাথ রায়, আসানসোল, পশ্চিমবঙ্গ
Full Story

■ এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য:
আমাদের উদ্দেশ্য বিশ্বময় লেখক ও পাঠকদের একটি সাহিত্যের মঞ্চ প্রদান করা। দূর-দূরান্তে অনেক ভাল লেখক / লেখিকা আছেন, যারা খুব ভাল গল্প লিখছেন, কিন্তু কোথাও প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। তেমনি দূর-দূরান্তে অনেক মনোযোগী পাঠক আছেন যারা নতুন লেখা পড়তে খুব ভালবাসেন কিন্তু পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। RiyaButu.com তাদের সকলের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সকলকে এক মঞ্চে নিয়ে আসতে চাইছে। বিশ্বময় মূল্যবান পাঠক / পাঠিকাদের কাছে বিশ্বময় লেখক / লেখিকাদের গল্প পৌঁছে যাক, এই আমাদের লক্ষ্য। পাশে আছি, পাসে পাব এই আশা রাখি।

◕ নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার, মে- ২০২৩; নিয়মাবলী যা ছিল:
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা

প্রতিবছরই 'মে' মাসে RiyaButu.com এর পক্ষ থেকে এই 'স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা' অনুষ্ঠিত হয়। যেকোনো লেখক / লেখিকা তাদের স্বরচিত গল্প এই প্রতিযোগিতায় পাঠাতে পারেন। নিয়মাবলী নীচে দেওয়া হল:

১. এই প্রতিযোগিতা সবার জন্য উন্মুক্ত; যেকেউ আমাদের কাছে গল্প পাঠাতে পারেন। No entry Fee.

২. ভাষা: বাংলা

৩. এই বছর ( ২০২৩ ইং ) এই প্রতিযোগিতা ১ লা 'মে' থেকে ৩১ শে 'মে' ( 1st May 2023 to 31 st May 2023 ) পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিযোগিতার ফল প্রকাশিত হবে ১০ ই জুন, ২০২৩
লেখক / লেখিকারা এই Webpage-এ ফলাফল দেখতে পারবেন।

৪. এই প্রতিযোগিতার বিজয়ীকে পুরস্কার স্বরূপ দেওয়া হবে নগদ ৫০০০/ - ( পাঁচ হাজার টাকা)। এই টাকা শুধুই Net-Banking এর মাধ্যমেই বিজয়ীর কাছে ফলাফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যে পাঠানো হবে। প্রসঙ্গত: এই প্রতিযোগিতায় শুধু একটিই পুরস্কার থাকবে।

৫. গল্পটি অবশ্যই স্বরচিত হতে হবে। শুধু PDF / MS Word-এ টাইপ করে E-mail-এ আমাদের কাছে গল্প পাঠাতে হবে। Hardcopy কিংবা Whatsapp-এ নয়।
আমাদের E-mail ID:
riyabutu.com@gmail.com
riyabutu5@gmail.com

৬. গল্পের সাথে লেখকের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর অবশ্যই পাঠাতে হবে। অন্যের লেখা নিজের নামে পাঠানোর দায় একমাত্র E-mail প্রেরকের উপর থাকবে; RiyaButu.com এই ব্যাপারে কোনও ভাবেই দায়ী থাকবে না। প্রতিটি গল্প পাঠাবার সময় গল্পের নীচে লেখক / লেখিকাকে অবশ্যই লিখে দিতে হবে যে,
"এই গল্পটি আমার স্বরচিত। গল্পটি এর আগে আর কোথাও প্রকাশিত হয়নি।"

৭. শব্দ সংখ্যা: কোনও শব্দ-সীমা নেই। এই প্রতিযোগিতায় এক ব্যক্তি দুইটির বেশী গল্পে পাঠাতে পারবেন না।

৮. বিজয়ী গল্পটি লেখকের নাম-ধাম সহ ১০ ই জুন, ২০২৩, RiyaButu.com-এ প্রকাশিত হবে। তাছাড়াও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আরও ১৫টি নির্বাচিত গল্প লেখকের নাম ধাম সহ RiyaButu.com-এ প্রকাশিত হবে।

৯. গল্প প্রকাশিত হবার পর RiyaButu.com থেকে গল্প Delete করার, কিংবা বাদ দেওয়ার অধিকার শুধু RiyaButu.com-এর থাকবে।

১০. এই প্রতিযোগিতার যেকোনো বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মেনে নিতে হবে।

এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে যেকোনো প্রশ্ন থাকলে বিনা দ্বিধায় আমাদের এখুনি ফোন করুন।
নম্বর: +91 8974870845
Whatsapp: +91 6009890717
E-mail ID:
riyabutu.com@gmail.com
riyabutu5@gmail.com

আমাদের ঠিকানা:
ধলেশ্বর - ১৩
আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম ), ভারত
৭৯৯০০৭

নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার, মে- ২০২২
ফলাফল


প্রিয় লেখক / লেখিকা, যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন তাদের সবাইকে অনেক-অনেক ধন্যবাদ। আমরা দেশ, বিদেশ থেকে অনেক গল্প পেয়েছি। সবাইকে অনেক-অনেক অভিনন্দন। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা এত বড় সাড়া পাবে তা আমরা সত্যি কখনো ভাবিনি। তাই সবাইকে অনেক-অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই বছরের 'নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার -২০২২' এর ফলাফল নীচে দেওয়া হল। বিজয়ী গল্পটি ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আরও কিছু নির্বাচিত গল্পের তালিকা ,লেখক / লেখিকার নাম ও প্রকাশের তারিখ সহ নিচে দেওয়া হল। বিজয়ী গল্পটি আপনারা সম্পূর্ণ নীচে পড়তে পারবেন।
এই বছরের বিজয়ী গল্পটি হল
মাথা গোঁজার ছাদ
লেখক - রাজকুমার মাহাতো, সম্পামির্জানগর, মহেশতলা, কলকাতা

story-competition-2022

মাথা গোঁজার ছাদ

#1
কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমার দিন শুরু হত অপর্ণার মুখ দেখে, কারণ আমি ঘুম থেকে উঠে গেলেও মহারানী তখনও গভীর নিদ্রায় মগ্ন থাকত। আসলে জানালার কাঁচ ভেদ করে যখন সকালের নরম রোদ ওর মুখের উপর পড়তো, ওর ওই উজ্জ্বল মুখটা দেখতে বড্ড ভালোলাগত আমার। তারপর নতুন একটা দিনের শুরু হতো ওর সামনে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ রেখে। ও উঠে আড়মোড়া ভেঙে অগোছালো চুলগুলো গোছাতে-গোছাতে প্রথম প্রশ্ন করত, "আজ কোথায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে?"

হাসিমুখে ওর দিকে তাকিয়ে কখনও বলতাম 'কলেজ-স্ট্রিট', আবার কখনও 'বনগাঁ'। একূল থেকে ওকূল ঘুরে-ঘুরে লেখকদের জোগাড় করাই মূল লক্ষ্য আমার প্রকাশনা হাউসের। কলেজ-স্ট্রিটে সাত বছর মাটি কামড়ে পরে থেকে আপাতত দুই বছর হল একটা প্রকাশনী খুলে বসেছি, নাম-ডাকও বেশ হয়েছে এই দুই বছরে। উঠতিদের কলম খুঁজে নিতে আমার বেশ ভালো লাগে, তবে পুরানোদেরও ভুলে যাই নি। পুরানোদের মনে রেখেই নতুনদের স্বাগত জানানোটাই আমার প্রকাশনীর মূল মন্ত্র। আর এই কাজে আমাকে সবথেকে বেশি সাহায্য করেছে এবং সাপোর্ট করেছে আমার বউ অপর্ণা। আসলে ওকে ছাড়া আমি কিছুই নই; অপর্ণাকে ছাড়া এই যিশু'র কোন অস্তিত্ব নেই।

যাই হোক, যে কথা বলতে গিয়ে কর্ড লাইনে চলে গেছিলাম; গত একমাস হল আমার দিন অপর্ণার মুখ দেখে শুরু হয় না। তার সেই রৌদ্রজ্জ্বল মুখ দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছি, কারণটা হল 'আকাশ'। আমার সেই ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ, অপর্ণার ঘুমঘুম চোখে তাকানো আর তার সেই মৃদু স্বরে বলা 'আজ কোথায় যাওয়ার ইচ্ছে?' সব থেকেই বহিষ্কৃত করেছে আমাকে; অপর্ণা।

এখন ভোর পাঁচটা থেকে সাতটা 'আকাশ' ওর ছায়া হয়ে থাকে। সকালে এসেই তার প্রথম ফরমায়েশ, "দাও তো একটু দুধ!" দুধে কর্নফ্লেক্স দিয়ে অপর্ণা ওর সামনে এনে দেয়। বাবু তখন সোফায় হেলান দিয়ে বসে এদিক-ওদিক তাকায়। দুধটা নিয়ে ওর পাশে বসে অপর্ণা। আকাশের তখন দ্বিতীয় প্রশ্ন, "কোন গরুর দুধ এটা? রমার মায়ের, না কি ওই বিষ্ণু গোয়ালার?"

অপর্ণা হেসে উত্তর দেয়, "রমার মায়ের..."

চামচে করে দুধে ডোবানো কর্নফ্লেক্স খেতে-খেতে বাবুর তৃতীয় প্রশ্ন, "আচ্ছা, একটা কথা বলতো। আমার নাম আকাশ কেন?"

অপর্ণা হেসে উত্তর দেয়, "তোমার নীচে সবাই ঠাঁই পাবো... দাদু, মা-বাবা সবাইকে এক ছাদের নিচে রাখতে হবে তোমায়। তুমি যে তাদের মাথা গোঁজার ছাদ আকাশ।"

আকাশ চুপ করে শোনে আর তারপর পঞ্চম, ষষ্ট, সপ্তম প্রশ্নের দিকে এগিয়ে যায়। এইভাবেই সপ্তাহের অন্তত: চারটে দিন চলে আমাদের। আমি ঘুম থেকে উঠে ডাইনিং এর কোনের দেওয়ালে হেলান দিয়ে সব দেখি। অপর্ণা তখন একবার করে আমার দিকে দেখে আর হাসে। দু'একবার আকাশের কথায় ওর চোখ ছলছল করে উঠতেও দেখেছি।

#২
সাত বছর বিয়ে হয়েছে আমাদের কিন্তু ভগবান আমাদের এখনও নিঃসন্তান করেই রেখেছেন। তার জন্য অপর্ণাকে অনেক গঞ্জনাও সহ্য করতে হয়েছে একসময়। তাই আমতলার বাড়ি ছেড়ে গত দু-মাস হল কলকাতায় বালিগঞ্জে একটা ফ্লাট নিয়েছি। যদিও গত কয়েক বছর এই বইপাড়াতে আসার সুবাদে আমার এখানে আসা-যাওয়া লেগেই থাকত। আর এখানেই গত একমাস আগে নীচের ফ্লাটের আকাশ বাবুর সাথে আমাদের পরিচয়। হঠাৎ করেই একদিন দুপুরে দেখি আমাদের সোফায় একজন পাঁচ-ছয় বছরের বাচ্চা বসে আছে আর এদিক-ওদিক দেখছে। অপর্ণা আর আমি ওকে আগেই দেখেছিলাম নীচের ফ্লাটে। তাই চিনতে অসুবিধা হয়নি। অপর্ণা সোফার কাছে গিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আকাশ বাবুর উত্তর এলো, "মা-বাবা ঝগড়া করছে। মা বলছে, বাবা তার জীবন নষ্ট করেছে; আর বাবা বলছে, মা তার জীবন নষ্ট করেছে। ওরা হয়ত ডিসাইড করতে পারছে না, আমি হেল্প করতে গেলাম, আমাকে তাড়িয়ে দিল। তাই আমি তোমাদের কাছে চলে এলাম। এবার একটু কার্টুন দেখাও তো..."

ওকে টিভিতে কাটুন চালিয়ে দিয়ে আমি আর অপর্ণা সিঁড়ি দিয়ে উঁকি মেরে দেখলাম বাইরে অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে আছে ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ। আর ভেতরে তুমুল ঝগড়া চলছে। অপর্ণা আমাকে খুব ধীরে বলল, "ওঁকে ডেকে নাও। আমাদের ঘরে না হয় বসুক।"

আমি মিনিট দুই ভেবে বললাম, "তা কি ঠিক হবে? ওঁদের নিজেদের ঘরের ব্যাপার..."

অপর্ণা আর আমাকে কিছু বলেনি। আমরা আবার উপরে চলে এসেছিলাম। সেই থেকে প্রায় প্রতিদিন ভোরে উঠে চলে আসত আকাশ আমাদের ফ্লাটে। সকাল আটটায় আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে ওঠা মেয়েটা এখন ভোর পৌনে পাঁচটা থেকে দরজা খুলে অপেক্ষা করত আকাশের। বুঝেছিলাম, আকাশের ওই পাকা-পাকা কথার মাঝের ছোট্ট নিষ্পাপ মনটাকে ভালোবেসে ফেলেছে অপর্ণা আর শুধু ওই কেন, আমিও। একসময় কেবল সকালের প্রথম রোদ অপর্ণার মুখে পড়ত, আর এখন পুরো আকাশটাই অপর্ণার ঝুলিতে দিয়ে দিয়েছেন ঈশ্বর।

প্রায় রাতে শুয়ে অপর্ণা ভেজা চোখে আমাকে প্রশ্ন করত, "আচ্ছা যিশু, আকাশ যদি আমাদের ছেলে হত?"

আমার কাছে কোনও উত্তর থাকত না। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠত অপর্ণা, বুকে টেনে জড়িয়ে ধরতাম তাকে। আসলে আমাদের দুজনের দুঃখ একই। তাই আমরা বুঝি, আমাদের দুজন-দুজনকে ছাড়া কোনও গতি নেই।

সেদিন আকাশের মা এসেছিল আমাদের ফ্লাটে। অনেকক্ষণ অপর্ণার সাথে গল্প করে গেছে। কথায়-কথায় অপর্ণা জিজ্ঞেস করেছিল তাদের স্বামী-স্ত্রীর এত ঝগড়ার কারণ। চোখে জল নিয়ে তিনি বলেছেন, মিঃ সামন্তের নাকি অন্য কোথাও অ্যাফেয়ার আছে। তিনি শুধু আকাশ আর ওই বুড়োটার মুখ দেখে এই বাড়িতে পরে আছেন। একেবারে সহ্য হয় না তার নিজের স্বামীকে ইত্যাদি ইত্যাদি। অপর্ণা বুঝিয়েছিল সন্তানের সামনে তাদের এই ঝগড়া আকাশের মাথায় খুব খারাপ এফেক্ট করতে পারে। ঐ মহিলা কতটা বুঝেছিলেন ঠিক জানি না, তবে ঝগড়ার আওয়াজ খুব কম আসত তারপর থেকে। ভেজা চোখে কথাগুলো বলেছিল অপর্ণা আমাকে। তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম আমি, তার সেই ভেজা চোখে অনেক জিজ্ঞাসা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম। হাতদুটো ধরে বললাম, "চিন্তা করো না অপর্ণা। তোমাকে ছাড়া কোনদিন কোনও অপর মহিলাকে ভাবতেও পারি না আমি..."

অপর্ণা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। ওর চোখের কোন বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। বিশ্বাসটা স্পষ্ট দেখছিলাম আটকে আছে ওর চোখে, পাশ থেকে অবিশ্বাসগুলো ঝড়ে পরছে।

#৩
দিনটা ছিল বুধবার। সাধারণত বুধবার সকালে আকাশ আসে না। সেদিনটা সকাল সাতটায় ওর স্কুল থাকে। পিটি ক্লাসের দিন একটু তাড়াতাড়ি শুরু হয় স্কুল। তাই অপর্ণার সেই রৌদ্রজ্জ্বল মুখটা দেখার সুযোগ হল আমার। এই গরমের সময় সূর্য্যি মামা একটু তাড়াতাড়িই আমাদের দর্শন দিয়ে দেন। ঘড়িতে দেখলাম পৌনে ছটা। এখন অবশ্য আর আটটা বাজে না অপর্ণার ঘুম ভাঙতে। প্রতিদিন ছ'টা নাগাদ উঠে যায় সে। তাই আমাকে আরও তাড়াতাড়ি উঠতে হয়। ফ্লাটের ব্যলকনি দিয়ে আকাশকে স্কুলে যেতে দেখতেই তার এই সকালে ওঠা। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে ডাক দিলাম, "অপর্ণা, ওঠো..."

আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে এলোমেলো চুলগুলো এক জায়গায় গুছিয়ে নিয়ে সে প্রশ্ন করল, "আজ কোথায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে?" সবে উত্তরটা দিতে যাবে দরজায় জোড়ে-জোড়ে করাঘাত শুনতে পেলাম। একপ্রকার বিরক্তই হলাম। অপর্ণার দিকে তাকিয়ে বললাম, "এত সকালে কে? কলিং বেল থাকতে দরজায় ধাক্কা মারছে কেন?"

জানিনা কি হল, অপর্ণা কেমন একটা জিজ্ঞাস্য মুখে আমার দিকে একবার তাকিয়ে হন্তদন্ত হয়ে খাট থেকে নেমে একপ্রকার দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলল। আমিও গেলাম পেছনে। সামনে দাঁড়িয়ে আকাশ, মুখটা একেবারে ফ্যাকাসে। আকাশকে দেখে একটু অবাক হলাম। অপর্ণার পাশ কাটিয়ে দ্রুত সোফায় এসে বসল সে। অপর্ণা তার পাশে এসে জিজ্ঞেস করল, "আজ স্কুলে যাওনি?"

আকাশ অপর্ণার মুখের দিকে তাকাল, ওর চোখদুটো কেমন যেন আতঙ্কে আছে। ছোট্ট-ছোট্ট গোল চোখদুটোতে কে বা কারা যেন একরাশ হতাশা এনে ঢেলে দিয়েছে। অপর্ণা ওকে কাছে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, "কি হয়েছে আকাশ?"

আমি এগিয়ে গেলাম ওদের কাছে। অপর্ণাকে দু'হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরল আকাশ। তারপর মৃদু স্বরে বলল, " মা ঝুলছে। বাবা কাঁদছে।"

বুকটা কেঁপে উঠল আমার। অপর্ণা আমার দিকে তাকাল। হঠাৎ করেই ঘরের বাতাসটা কেমন ভারি হয়ে এল। একগুচ্ছ আতঙ্ক এসে ঘিরে ধরল আমাদের। আকাশকে আরও কষে জড়িয়ে ধরল অপর্ণা। একদৌড়ে নিচে গেলাম। ওদের ফ্লাটের দরজা খেলাই ছিল। ডাইনিং এ বসে আছেন বৃদ্ধা। ভিজে চোখে আমার দিকে একবার তাকালেন। তারপর মাথাটা নিচু করে বললেন, "কাল রাতে ওদের দুজনের খুব ঝামেলা শুরু হয়। তাই আমি আকাশকে আমার ঘরে নিয়ে আসি। আর আজ সকালে..."

আর কিছু বলতে পারলেন না তিনি। আমি দৌড়ে গেলাম ভিতরের ঘরে। ঘরের দরজা খোলা ছিল। ভেতরে ঢুকে যা দেখলাম তাতে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো। মেঝেতে মাথায় হাত দিয়ে বসে মিঃ সামন্ত আর সিলিং ফ্যানের থেকে একটা শাড়ির সাহায্যে ঝুলছে মিসেস সামন্ত।

#
কিছুক্ষণ আগে পুলিশ এসে মিসেস সামন্তের দেহটা নামিয়ে নিয়ে গেছে পোস্টমর্টেম এর জন্য। মিঃ সামন্তকে এরেস্ট করা হয়েছে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অপরাধে। তিনি স্বীকার করেছেন নিজের পরকীয়ার কথা।

আকাশ অপর্ণার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে। একটু আগে ভাত আর ডাল-সেদ্ধ খাইয়ে দিয়েছে অপর্ণা ওকে। আজ আর কোনও প্রশ্ন করেনি আকাশ। তার মনে আজ উথাল-পাথাল। কিছুক্ষণ পরে অথবা আগামীকাল ওকে যেতে হবে শ্মশানে। মায়ের মুখাগ্নি করবে পাঁচ বছরের ছেলেটা। মা বাবার এই ভুলের খেসারত ওকে দিতে হবে সারাজীবন। অপর্ণার মুখের দিকে তাকাল আকাশ। অপর্ণা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। চোখ থেকে অনবরত জল পড়ছে অপর্ণার। আমি পাশে দাঁড়িয়ে সব দেখছি। একরাশ চাপা কষ্ট আজ আকাশের বুকে। ছোট্ট ওই বুকটা আসলেই জানে না সে কি হারাল। অপর্ণাকে প্রশ্ন করল আকাশ, " তুমি বলেছিলে আমি সবাইকে ধরে রাখব...ওরা বাবা-মাকে নিয়ে চলে গেল কেন?"

ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল অপর্ণা। আমার গলায় কান্নাটা দলা পাকিয়ে উঠল, ঢোঁক গিলে তাকে বেরোনোর অনুমতি দিলাম না। এগিয়ে গিয়ে অপর্ণার একটা হাত ধরলাম, আকাশ আমার দিকে তাকাল। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম, "তোমাকে এখন অন্যের আকাশ হতে হবে বাবু। তুমি তো কোনও একজনের নও, তুমি সবার। সবার আকাশ তুমি..."

অপর্ণা আমার মুখের দিকে তাকাল, আমি ওর চোখের দিকে। আজ থেকে এই আকাশ আমাদের, আমার আর অপর্ণার মাথা গোঁজার ছাদ।
( সমাপ্ত )
■ বিজয়ী গল্পটি ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আরও কিছু নির্বাচিত গল্পের তালিকা ,লেখক / লেখিকার নাম ও প্রকাশের তারিখ সহ নিচে দেওয়া হল-

পুটি
Writer - অনুশ্রী মাইতি
Read the Full story

রক্তমাংস
Writer - Anindya Rakshit
Read the Full story

ডোপ টেস্টে ধরা
Writer - Saikat Saha
Read the Full story

শ্রীরাধিকা
Writer - Dr. Bhargavi Chatterjea Bhattacharyya
Read the Full story

সময় যাত্রা
Writer - Fahmid Uddin Ariyan
Read the Full story

সমাজ এখনো কুসংস্কার থেকে মুক্তি পায়নি
Writer - দিশা সিংহ
Read the Full story

হাওরের নিশিভূত
Writer - Dr. Mohammad Ali Khan
Read the Full story

জিদ
Writer - jebunnesa jebu
Read the Full story

জীর্ণ পত্র
Writer - ভাস্কর পাল
Read the Full story

ঝিনুকের বাটি
Writer - পোকিবিয়ার ( ছদ্মনাম )
Read the Full story

দু'চাকা অভিযান
লেখক - দীপ্তেশ মাজী, বাবা- শ্রী শশধর মাজী, চেতলা রোড, আলিপুর, কলকাতা
Read the Full story

পিপীলিকার বিভীষিকা
লেখক - কুন্তল কুমার দে, বাবা - কাঞ্চন কুমার দে, বিজিটি রোড, ভদ্রকালী, হুগলী
Read the Full story

প্রতিবেশী
Writer - সুলেখা রায়
Read the Full story

ভালবাসার কি সত্যি অন্ত আছে
লেখিকা - সায়নী পাল, বাবা - পরিতোষ পাল, নন্দননগর, বেলঘড়িয়া
Read the Full story

চুপি চুপি
লেখিকা- শ্রীমতী কনা দত্ত ঘোষ, পিতা- স্বর্গীয় গোপাল চন্দ্র ঘোষ, শান্তিপুর, নদীয়া
Read the Full story

## এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য:
আমাদের উদ্দেশ্য বিশ্বময় লেখক ও পাঠকদের একটি সাহিত্যের মঞ্চ প্রদান করা। দূর-দূরান্তে অনেক ভাল লেখক / লেখিকা আছেন, যারা খুব ভাল গল্প লিখছেন, কিন্তু কোথাও প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। তেমনি দূর-দূরান্তে অনেক মনোযোগী পাঠক আছেন যারা নতুন লেখা পড়তে খুব ভালবাসেন কিন্তু পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। RiyaButu.com তাদের সকলের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সকলকে এক মঞ্চে নিয়ে আসতে চাইছে। বিশ্বময় মূল্যবান পাঠক / পাঠিকাদের কাছে বিশ্বময় লেখক / লেখিকাদের গল্প পৌঁছে যাক, এই আমাদের লক্ষ্য। পাশে আছি, পাসে পাব এই আশা রাখি।

নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার, ২০২১
স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ২০২১
ফলাফল
''নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার, ২০২১' এর বিজয়ী হয়েছেন

story-competition-2021
◕ লেখক অঙ্কন দাস
বাবার নাম: অমিয় দাস, সোন্দলপুর, অষ্টঘড়িয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ
গল্পের নামঃ বিসর্জন
Link: বিসর্জন


এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী আরও কিছু নির্বাচিত গল্পের তালিকা এবং লিংক নীচে দেওয়া হল:

■ ঋণ শোধ
লেখিকা- চারুলতা রায়চৌধুরী, শীতলাতলা রোড, নোনা চন্দনপুকুর, বারাকপুর, উত্তর ২৪ পরগণা , কোলকাতা
# প্রকাশিত হল 13 th june, 2021 ঋণ শোধ

■ রুমকির বাড়ি
লেখিকা- কাজী তৃনা লায়লা,
বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নিউমার্কেট, ঢাকা
# প্রকাশিত হল 16 th june, 2021 রুমকির বাড়ি

■ বিভেদের দেয়াল
- মুতাছিম নয়ন, পিতা - জিএম আছাফুর রহমান, চাঁদখালী, পাইকগাছা, খুলনা, বাংলাদেশ
# প্রকাশিত হল 20 th june, 2021 বিভেদের দেয়াল

■ এখানেই শেষ নয়
- জেবুন্নেছা জেবু, পিতা - এম এ মাজেদ, সতীশ বাবু লেইন, কোতোয়ালী থানা, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
# প্রকাশিত হল 23 th june, 2021 এখানেই শেষ নয়

■ রাজকুমারী
- সংঘমিত্রা রায়, Masjid Road, Karimganj, Assam
# প্রকাশিত হল 27 th june, 2021 রাজকুমারী

■ গরল
- সন্দীপা সরকার মুখাজী, তালপুকুর, শ্রীরামপুর, হুগলী
# প্রকাশিত হল 30 th june, 2021 গরল

■ কার্ভস্
- দিগন্ত পাল, দানেশ শেখ লেন, হাওড়া , পশ্চিমবঙ্গ
# প্রকাশিত হল 04 th july, 2021 কার্ভস

■ অচলা ফার্মেসী
লেখক: মেহের জান্নাত, বাবা- মো. আলতাফুর রহমান তাপাদার, সৈয়দপুর, সিলেট সদর, সিলেট
# প্রকাশিত হল 07 th july, 2021 অচলা ফার্মেসী

■ রংতা দেবীর জোগাড়
- রাজকুমার মাহাতো, মহেশতলা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, কলকাতা
# প্রকাশিত হল 11 th july, 2021 রংতা দেবীর জোগাড়

■ বৃত্তের কেন্দ্রে
- শ্রীপর্ণা দে, দুর্গাচরণ মিত্র স্ট্রিট, কলকাতা
# প্রকাশিত হল 14 th july, 2021 বৃত্তের কেন্দ্রে

■ দু নৌকায় পা
- সমরেশ মুখার্জী, মনিপাল, কর্ণাটক
# প্রকাশিত হল 18 th july, 2021 দু নৌকায় পা

■ আশা থাকলেও আলো পাওয়া যায় না
- Anusree Maity, Haripur, Dist- Purbamedinipur
# প্রকাশিত হল 21 th july, 2021 আশা থাকলেও আলো পাওয়া যায় না

■ অসময়ের ইতিবৃত্ত
- শান্তনু চ্যাটার্জী, ন্যাশানাল পার্ক, নৈহাট, উত্তর ২৪ পরগনা
# প্রকাশিত হল 25 th july, 2021 অসময়ের ইতিবৃত্ত

■ অপরাধী
- জয়িতা সিং মুন্ডা, থানা - বান্দোয়ান, জেলা- পুরুলিয়া
# প্রকাশিত হল 28 th july, 2021 অপরাধী

■ বন্ধুত্ব
- শুভজিৎ ঘরামী, মন্দির বাজার, দক্ষিন ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ
# প্রকাশিত হল 1st August, 2021 বন্ধুত্ব

■ নূপুর
- Susmita shil, Kuthipara, Gobardanga. North 24 parganas, West Bengal
# প্রকাশিত হল নূপুর

■ জীবন রং বদলায়
- অর্পিতা ভান্ডারী, ডায়মন্ড হারবার , দক্ষিণ 24 পরগনা‌ , পশ্চিমবঙ্গ
# প্রকাশিত হল জীবন রং বদলায়

■ আবৃত সত্য
- শাহরিয়ার ভুবন, ফেনী।, চট্টগ্রাম।, বাংলাদেশ
# প্রকাশিত হল আবৃত সত্য

■ শশাঙ্কের শীলমোহর
- Dr. Ipsita Bhattacharjee, Sahid Nagar, Dhakuria, Kolkata
# প্রকাশিত হল শশাঙ্কের শীলমোহর

■ মৃত্যুর উপাখ্যান
- সজীব পাল, বাঁশ পুকুর, সোনামুড়া ,সিপাইজলা, ত্রিপুরা
# প্রকাশিত হল মৃত্যুর উপাখ্যান

■ বোধিবৃক্ষ
- দীপ্তেশ মাজী, চেতলা রোড, কলকাতা
# প্রকাশিত হল বোধিবৃক্ষ

■ দত্তক কন্যা
- ডাঃ অনামিকা সরকার, কাদারাট নস্করপাড়া, নরেন্দ্রপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা
# প্রকাশিত হল দত্তক-কন্যা

■ গুরু-মারা বিদ্যা
- মুকুট রায়, Apcar Gardens ( South of Indian Bank), Asansol, West Bengal
# প্রকাশিত হল গুরু-মারা বিদ্যা

সেই পাগলীটি
- নন্দীতা সেন পাল, টাউন বড়দোয়ালী, আগরতলা, ত্রিপুরা
# প্রকাশিত হল সেই পাগলীটি

আমাদের ঠিকানা:
ধলেশ্বর - ১৩
আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম ), ভারত
৭৯৯০০৭

এই প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্য:
আমাদের উদ্দেশ্য বিশ্বময় লেখক ও পাঠকদের একটি সাহিত্যের মঞ্চ প্রদান করা। দূর-দূরান্তে অনেক ভাল লেখক / লেখিকা আছেন, যারা খুব ভাল গল্প লিখছেন, কিন্তু কোথাও প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। তেমনি দূর-দূরান্তে অনেক মনোযোগী পাঠক আছেন যারা নতুন লেখা পড়তে খুব ভালবাসেন কিন্তু পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। RiyaButu.com তাদের সকলের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সকলকে এক মঞ্চে নিয়ে আসতে চাইছে। বিশ্বময় মূল্যবান পাঠক / পাঠিকাদের কাছে বিশ্বময় লেখক / লেখিকাদের গল্প পৌঁছে যাক, এই আমাদের লক্ষ্য। পাশে আছি, পাসে পাব এই আশা রাখি।

নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার
স্বরচিত গল্প লেখার প্রতিযোগিতা, ২০২০ এর ফলাফল


আমাদের এই প্রতিযোগিতায় আমারা এমন ভাবে এত লেখক, লেখিকা ও পাঠক-পাঠিকাদের সাড়া পাব ভাবি নি। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও বাংলাদেশ এবং সুদূর ইউরোপ থেকেও প্রচুর লেখক ও লেখিকা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। অংশগ্রহণকারী সবাইকে RiyaButu.com থেকে জানাই অনেক-অনেক শুভেচ্ছা। এই বছর ( ২০২০ ইং ) এই প্রতিযোগিতার বিজয়ী হয়েছেন,
লেখক যোবায়ের ঋদ্ধি, সেহড়া ধোপাখলা, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ

story-competition-2020
উনার লেখা গল্পটি র নাম 'ক্ষমা করো'
গল্পটি পড়তে পাশের লিংকটিতে ক্লিক করুন ক্ষমা করো

◕ বাকী আরো যাদের গল্প খুব ভাল হয়েছে তাদের গল্পও আমরা RiyaButu.com এ প্রকাশ করলাম। নীচে সেই তালিকাটি দেওয়া হল। গল্পের লিংকগুলিও নির্দিষ্ট গল্পের পাশেই আছে।

■ কামিনী কথা
লেখক- রাজকুমার মাহাতো, মহেশতলা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
প্রকাশিত হল ১০ জুলাই, ২০২০
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন কামিনী কথা


■ বিপ্রকর্ষ
লেখিকা - মিঠু রায়, কোটাল হাঁট, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ
প্রকাশিত হল ১8 জুলাই, ২০২০
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন বিপ্রকর্ষ


■ হঠাৎ পাওয়া
লেখক - মামুন রশিদ, নরসিংহপুর সাগরপাড়া মুর্শিদাবাদ
প্রকাশিত হল ১৭ জুলাই, ২০২০
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন হঠাৎ পাওয়া


■ নৌকা
লেখক - সৌরভ দাস, কাকরাবন, উদয়পুর, ত্রিপুরা
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন নৌকা


■ কচুপাতা
লেখিকা - সুস্মিতা শীল, উত্তর ২৪ পরগনা
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন কচুপাতা


■ ওখানেই ঝরেছিল মানুষের ঘাম
লেখক - সুপ্রিয় ঘোষাল, যোধপুর পার্ক , গড়িয়াহাট, কলকাতা
প্রকাশিত হল ২৮ জুলাই, ২০২০
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন ওখানেই ঝরেছিল মানুষের ঘাম


■ মরণখাদ
লেখক - শান্তনু চ্যাটার্জী, নৈহাটি, উত্তর ২৪ পরগনা,
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন মরণখাদ


■ ফিরে আসা
লেখক - ভাস্কর পাল, ব্যারাকপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন ফিরে আসা


■ পুনরাবৃত্তি
রিফাহ রাফিয়া বারী,, জামালপুর, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন পুনরাবৃত্তি


■ পয়েটিক জাস্টিস
লেখিকা - কাশফিয়া নাহিয়ান, ধানমণ্ডি,ঢাকা বাংলাদেশ
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন পয়েটিক জাস্টিস


■ নীল খামে কাব্য
লেখিকা - এনা সাহা, নোনা চন্দনপুকুর,ব্যারাকপুর, কলিকাতা।
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন নীল খামে কাব্য


■ অনিচ্ছার নির্বাসন
সঞ্জীব পাল, সোনামুড়া , ত্রিপুরা
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন অনিচ্ছার নির্বাসন


■ দেখিলাম ফিরে
লেখিকা - দীপশিখা দত্ত, ব্যারাকপুর, জিলা চব্বিশ পরগনা (উত্তর), কলিকাতা
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন দেখিলাম ফিরে


■ ক্ষনীকস্মৃতি
লেখিকা - অনুশ্রী মাইতি, Haripur, Medinipur, West Bengal
প্রকাশিত হল
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন ক্ষনীকস্মৃতি

এই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে RiyaButu.com এর উদ্যোগে।
আমাদের ঠিকানা:
ধলেশ্বর, রোড নং -১৩
আগরতলা, ত্রিপুরা ( পশ্চিম ), ভারত
৭৯৯০০৭
মো. নম্বর: +৯১ ৮৯৭৪৮৭০৮৪৫
Whatsapp: ৬০০৯৮৯০৭১৭
E-mail ID:
riyabutu.com@gmail.com
riyabutu5@gmail.com
এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে যেকোনো প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের এখুনি ফোন করুন।

নগেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার
স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা ২০১৯ এর ফলাফল


RiyaButu.com আয়োজিত 'স্বরচিত গল্প প্রতিযোগিতা-২০১৯' এর বিজয়ী ছিলেন,
story-competition-2019    Big Photo
সুপ্রিয় ঘোষাল, যোধপুর পার্ক, গড়িয়াহাট দক্ষিণ, কলকাতা – ৬৮

উনার লেখা গল্পটির নাম আশ্রয়
গল্পটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন আশ্রয়



## Disclaimer: RiyaButu.com is not responsible for any wrong facts presented in the Stories / Poems / Essay / Articles / Audios by the Writers. The opinion, facts, issues etc are fully personal to the respective Writers. RiyaButu.com is not responsibe for that. We are strongly against copyright violation. Also we do not support any kind of superstition / child marriage / violence / animal torture or any kind of addiction like smoking, alcohol etc. ##


◕ RiyaButu.com, এই Website টি সম্পর্কে আপনার কোনও মতামত কিংবা পরামর্শ, কিংবা প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় আমাদের বলুন। যোগাযোগ:
E-mail: riyabutu.com@gmail.com / riyabutu5@gmail.com
Phone No: +91 8974870845
Whatsapp No: +91 6009890717